Author Topic: তৃষ্ণা মেটায়…  (Read 3454 times)

bbasujon

  • Administrator
  • VIP Member
  • *****
  • Posts: 1826
  • I want to show my performance at any where
    • View Profile
    • Higher Education
তৃষ্ণা মেটায়…
« on: January 16, 2012, 10:51:49 AM »
তীব্র পিপাসায় এক গ্লাস পানি তৃপ্ত করে শরীর ও মন। কিন্তু তাতেই কি মিটছে শরীরের প্রয়োজন? আমাদের কতটুকু পানি পান করা উচিত, অনেকেই হয়তো জানি না। জানলেও এ সম্পর্কে নানা বিভ্রান্তি আছে। তাই তো পানি পান নিয়ে নানা পরামর্শ।

কী আছে পানিতে?
পানির নিজস্ব কোনো শক্তি নেই। খাদ্যের এ উপাদানটিতে নেই কোনো ক্যালোরি, চর্বি। শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোর কার্যক্রমে সাহায্য করে। জানান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ঋতু, বয়স, ওজনভেদে পানি পান করা উচিত। পিপাসা মেটানো ছাড়াও নানা শারীরবৃত্তির কাজ করে থাকে পানি।

কেন খাবেন পানি

হজমক্ষমতা বাড়ায়।
অ্যাজমার টান উঠলে কুসুম গরম পানি খেলে আরাম হয়।
শরীরের তাপমাত্রা ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। গ্যাস্ট্রিক, অ্যালসার ও বুক-জ্বালা থেকে খানিকটা রেহাই পাওয়া যায়।
প্রস্রাবের প্রদাহ দূর করে।
কিডনিসংক্রান্ত সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করে।
শরীরে পানিস্বল্পতা দূর করে ভারসাম্য বজায় রাখে।

পানি পানের পরিমাণ
ঋতু, বয়স, ওজন ও লিঙ্গভেদে একেকজন একেক পরিমাণ পানি পান করে। তবে নারী থেকে পুরুষেরা পরিমাণে বেশি পানি পান করে। অনেকে ভাবে, শিশুদের কম পানি পান করলেও চলবে। এটি ঠিক নয়। প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের দিনে আট থেকে ১০ গ্লাস বা দুই থেকে তিন লিটার পানি পান করা দরকার। অন্যদিকে পুরুষদের প্রায় ১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে। এক থেকে ১০ কেজি ওজনের শিশুকে ১০০ সিসি/কেজি তরল পান করাতে হবে। ১১ থেকে ২০ কেজি ওজনের জন্য ১০০০ সিসি/কেজি ও ২০ কেজির বেশি ওজনের শিশুর জন্য ১৫০০ সিসি/কেজি তরল পান করাতে হবে। এ ক্ষেত্রে পানি পান করানোই ভালো। তবে শীতকালের তুলনায় গরমকালেই মানুষ বেশি পানি পান করে। গরমে ঘাম বেশি হয়। পানিস্বল্পতাও তখন দেখা দেয়। কিন্তু কীভাবে বুঝবেন আপনি পানিস্বল্পতায় ভুগছেন? জেনে নিন পানিস্বল্পতার লক্ষণ:
এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, পানিস্বল্পতা দেখা দিলে নাভির স্পন্দন কমে যায়। মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। এ ছাড়া সাধারণ কিছু লক্ষণও দেখা দেয়। পিপাসা বেড়ে যায়। জিহ্বা শুকিয়ে যায়। মাথা ঘোরে। চোখ কোটরে ঢুকে যায়। প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়। চেহারায় মলিনতা দেখা দেয়। ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে পড়ে। শরীরে দুর্বলতা দেখা দেয়।
পানিস্বল্পতা দূর করার একমাত্র সমাধান পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা। বমি বা ডায়রিয়া না হলে ওরস্যালাইন খাওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে সামান্য লবণ মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
গর্ভাবস্থায়: গর্ভবতী মায়ের শরীরে আরেকটি প্রাণের অস্তিত্ব থাকে। ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। সে কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে এ সময় থেকে এক লিটার বেশি পানি পান করতে হবে। এ ছাড়া বুকের দুধ খাওয়ানোর সেই ছয় মাসেও মায়ের বেশি পানি পান করা উচিত। বুকের দুধ তৈরির জন্য শরীরে প্রয়োজনীয় পানি থাকা দরকার।

পানি পানের নিয়ম-কানুন
ডায়েট কাউন্সেলিং সেন্টারের পুষ্টিবিদ সৈয়দা শারমিন আক্তার মনে করেন, পানি খাওয়ার কোনো সুনির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন নেই। তবে কিছু ক্ষেত্রে খানিকটা মেনে চলা ভালো। তিনি জানান, রক্তে ৯৬ শতাংশই পানি থাকে। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখা পানিই পান করা উচিত। তিনি আরও জানান, অনেকেই মনে করে, বেশি পানি পান করলে শরীরের ওজন বেড়ে যায়। আসলে অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করলে শরীরের চর্বিগুলো জমাট বাঁধে। সে কারণে অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করা উচিত নয়।
সকালে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস পানি খেতে হবে। এতে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমে যাবে। খাওয়ার রুচি বাড়বে। ওজন কমাতে লেবুপানি খান অনেকে। এটি ঠিক নয়, লেবুপানিতে সামান্য মধুও মেশানো উচিত। এতে জীবনীশক্তি বেড়ে যায়।
খাওয়ার ন্যূনতম ১০ মিনিট পরে পানি খাওয়া উচিত। তা না হলে হজমে অসুবিধা হতে পারে।
গরমে বাইরে বের হলে সারা দিনের জন্য এক বোতল পানি নিতে ভুলবেন না। প্রয়োজনে গ্রিন টির পানীয়ও নিতে পারেন। এতে শক্তি বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া রসালো, পানিযুক্ত ফলও খাওয়া উচিত। ব্যায়াম বা হাঁটার মধ্যে প্রতি ১৫ মিনিট পর আধা গ্লাস পানি খাওয়া উচিত। অবশ্যই গরমে বেশি চা বা কফি খাবেন না। বরং তখন ফলের শরবত খেতে পারেন।
প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি পানের দরকার নেই। আসল কথা হলো, শরীর, মন ও ত্বক সুস্থ-সতেজ রাখতে হলে পানি খেতে ভুলবেন না।

তৌহিদা শিরোপা
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মে ১৮, ২০১০
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection