• Welcome to Daffodil Computers Ltd..
 

News:

Daffodil Computers Limited is a leading It solution & education solution public company with a good relation to customers it has earned big respect from clients

Main Menu

বয়স ও শরীর

Started by bbasujon, January 13, 2012, 06:34:58 PM

Previous topic - Next topic

bbasujon

আমাদের শরীরের নানা অংশ বুড়ো হয় বিভিন্ন সময়।
বুড়ো হওয়া অনিবার্য ব্যাপার, তবে বড় চিকিৎসকেরা প্রকাশ করেছেন শরীরের বিভিন্ন অংশ কখন অধোগতি হতে শুরু করে, বেশি চিহ্ন পড়ে ফুসফুস ও মগজে।
ফরাসি চিকিৎসকেরা পেয়েছেন, পুরুষের শুক্রের গুণগত মান কমতে থাকে বয়স ৩৫ হতে হতে। মগজের বুড়ো হওয়া শুরু হয় বয়স ২০ হতে হতে। আমাদের বয়স যত বাড়ে, স্নায়ুকোষের সংখ্যা অর্থাৎ মগজে নিউরোনের সংখ্যা কমতে থাকে। ১০০ বিলিয়ন নিউরোন দিয়ে শুরু অথচ ২০ বছর বয়স থেকে কমতে থাকে সংখ্যা। ৪০ বছর বয়স থেকে দিনে ১০ হাজার নিউরোন হারাই আমরা। এর প্রভাব পড়ে স্মৃতিশক্তি, সমন্বয়শক্তি ও মগজের কাজকর্মের ওপর।
'পাচকনালির বুড়ো হওয়া শুরু হয় ৫৫ বছর বয়স থেকে। স্বচ্ছ-সুস্থ পাচকনলে রয়েছে ক্ষতিকর ও হিতকর ব্যাকটেরিয়ার সুন্দর ভারসাম্য। তবে বয়স ৫৫ হলে হিতকর ব্যাকটেরিয়া কমতে থাকে, বিশেষ করে বৃহদন্ত্রে', বলেন লন্ডন মেডিকেল স্কুলের ইম্যুনোলজির অধ্যাপক টম ম্যাকডোনাল্ড। ফলে আমাদের হজম ভালো হয় না, পেটের অসুখের ঝুঁকি বাড়ে। বয়স যত বাড়ে, কোষ্ঠ হওয়ার আশঙ্কা তত বাড়ে, পাকস্থলী, কলিজা, অগ্ন্যাশয় ও ক্ষুদ্রান্ত্রের পাচকরস ক্ষরণ কমে যায়।
স্তনের বুড়ো হওয়া শুরু হয় বয়স ৩৫ হওয়ার পর থেকে। মধ্য ত্রিশে নারীর স্তন থেকে টিস্যু ও মেদহানি হতে থাকে, আয়তন ও পূর্ণতা হ্রাস পেতে থাকে। ৪০ থেকে সামান্য ঝুলে পড়া শুরু হয়।
মূত্রাশয় বুড়ো হওয়া শুরু করে ৬৫ বছর বয়স থেকে। ৬৪ হলে মূত্রাশয়ের নিয়ন্ত্রণ খর্ব হতে থাকে। নারীদের মূত্রথলির সমস্যা বেশি হয়, কারণ ঋতুস্রাব বন্ধের পর ইস্ট্রোজেন মান হ্রাস পাওয়া মূত্রপথ, যে পথ দিয়ে প্রস্রাব বের হয়, সেই মূত্রপথের টিস্যু পাতলা ও দুর্বল হতে থাকে, ফলে মূত্রথলির অবলম্বন দুর্বল হয়ে যায়। বয়স্ক লোকের মূত্রাশয়ের ধারণক্ষমতা তরুণদের অর্ধেক—৩০ বছর বয়সী তরুণের প্রায় দুই কাপ এবং ৭০ বছরের বুড়োর প্রায় এক কাপ তরল।
ফুসফুস বুড়ো হতে থাকে ২০ বছর বয়স থেকে। ফুসফুসের ক্ষমতা ২০ বছর বয়স থেকে ধীরে ধীরে কমতে থাকে। ৪০ বছর বয়সে অনেকের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়, শ্বাসক্রিয়াকে যে পেশি ও পাঁজর নিয়ন্ত্রণ করে, তা দৃঢ় হতে থাকে। কণ্ঠস্বরে বার্ধক্য আসে ৬৫ বছর বয়স থেকে।
বয়স্ক হলে কণ্ঠস্বর শান্ত ও কর্কশ হতে থাকে। স্বরযন্ত্রের নরম টিস্যু দুর্বল হয়ে যায়। এতে কণ্ঠের স্বরগ্রাম, দরাজভাব ও মান কমতে থাকে। নারীর কণ্ঠস্বর হয় খসখসে ও নিচু গ্রামের, পুরুষের হয়, পাতলা ও উঁচু।
চোখের বুড়ো হওয়া ঘটে চল্লিশে। দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য চশমা ছাড়া কাছে দেখতে কষ্ট হয় অনেকের। হূদযন্ত্রও বুড়ো হয় ৪০ থেকে। বয়স যত হয়, হূদযন্ত্র সারা শরীরে ঠিকমতো রক্ত পাম্প করতে পারে না। অত জোরে পারে না, কারণ রক্তনালিগুলোর স্থিতিস্থাপকতা কমে। এদিকে বেশি চর্বি খেলে করোনারি ধমনির ভেতর চর্বির স্তর পড়ে, রোধ হয় নালিপথ, রক্ত কম যায় হূৎপিণ্ডে। তখন ঘটে বেদনা—এনজাইনা। ৪৫-ঊর্ধ্ব পুরুষ ও ৫৫-ঊর্ধ্ব নারীর হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি খুব বেশি।
যকৃতের জরা আসে ৭০ বছর বয়স থেকে। শরীরের এই যন্ত্রে জরা আসে ধীরে।
কিডনি দুটো বুড়ো হতে থাকে বয়স ৫০ থেকে। কিডনির সঙ্গে সঙ্গে নেফ্রোন—কিডনির পরিস্রাবক নালি যা বক্ত থেকে বর্জ্য নিঃসরণ করে, এগুলোও বুড়ো হতে থাকে।
প্রোস্টেটের জরা আসে পঞ্চাশে।
লন্ডনের প্রোস্টেট সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক রগার কার্বি বলেন, বয়সের সঙ্গে প্রোস্টেটের স্ফীতি ঘটতে পারে, এমন সমস্যায় বারবার পস্রাব করার ইচ্ছা হয়। একে বলে বিনাইন প্রোস্টেটিক হাইপারপ্লাশিয়া (বিপিএইচ), ৫০-ঊর্ধ্ব অর্ধেক পুরুষকে প্রভাবিত করে, তবে ৪০-এর নিচে বিরল। প্রোস্টেট যখন পুং যৌন হরমোন টেসটোসটেরোন প্রচুর পরিমাণে শুষে নেয়, যা প্রোস্টেটের কোষগুলোর বাড়বাড়ন বাড়ায়।
হাড় বুড়ো হতে থাকে ৩৫ বছর বয়স থেকে। সারা জীবন, ওস্টিওক্লাস্ট নামে কোষ ভাঙতে থাকে। পুরোনো হাড়ের পরিবর্তে গড়ে ওঠে ওস্টিওব্লাস্ট কোষদের সাহায্যে। শিশুদের হাড়ের বাড়ন দ্রুত কঙ্কালে গড়ে উঠতে সময় নেয় মাত্র দুই বছর। বড়দের ক্ষেত্রে সময় লাগে ১০ বছর। মধ্য ২০ পর্যন্ত হাড়ের ঘনত্ব বাড়তে থাকে। তবে ৩৫ বছর বয়সে স্বাভাবিক জরার অংশ হিসেবে হাড়ের ক্ষয় ঘটতে থাকে।
দাঁতের বুড়ো হওয়া শুরু হয় ৪০ থেকে। বয়স যত হয়, লালা রস ঝরে তত কম। লালারস ব্যাকটেরিয়া ধুয়ে নেয়, তাই লালা কমে যাওয়ায় দাঁত ও মাড়ির ক্ষয় বাড়তে থাকে।
'পেশিগুলো বুড়ো হতে থাকে ৩০ হলে পর। পেশি অবিরাম গড়ছে ও ভাঙছে, তরুণদের শরীরে এর সমতা ঠিক থাকে। বয়স ৩০ হওয়ার পর ভাঙন বেশি হয় গড়ার চেয়ে', বলেন প্রফেসর রবার্ট মুটস। ৪০ হলে পর প্রতিবছর পেশি ক্ষয় হয় ০.৫-২ শতাংশ। নিয়মিত ব্যায়ামে এটি রোধ হয়।
শ্রুতিশক্তি জরাগ্রস্ত হতে থাকে মধ্য ৫০ থেকে। ৬০-এর ঊর্ধ্বে অর্ধেক মানুষ বয়সের কারণে শ্রুতিশক্তি হারায়।
ত্বকের বুড়ো হওয়া শুরু ২০-এর পর থেকেই। স্বাদ ও গন্ধচেতনা ৬০ হলে শুরু।
জিবের ওপর ১০ হাজার স্বাদকোরক নিয়ে জীবনের শুরু। জীবনের পরবর্তী সময় এটি অর্ধেকে নেমে আসতে পারে। ৬০ হলে পর স্বাদ ও গন্ধচেতনা হ্রাস পেতে থাকে স্বাভাবিক জরা হিসেবেই।
উর্বরতা জরার কবলে পড়ে ৩৫ বছর থেকে।
নারীর ঊর্বরতা হ্রাস পেতে থাকে বয়স ৩৫-এর পর থেকে। ডিম্বাশয়ে ডিম্বের সংখ্যা ও মান কমতে থাকে। জরায়ুর আস্তরণ পাতলা হতে থাকে, নিষিক্ত ডিম্বকে ধারণ করার ক্ষমতা কমে, শুক্রবীজের জন্যও সৃষ্টি হয় বিরূপ পরিবেশ।
কেশ পাকতে শুরু করে ৩০ হলে।
পুরুষের কেশহানি শুরু ত্রিশে। ত্বকের পৃষ্ঠদেশে অতি ক্ষুদ্র থলি ফলিকল থেকে কেশের উদ্গম। প্রতিটি ফলিকল থেকে কেশ গজায় প্রায় তিন বছর, এরপর পড়ে যায়, গজায় নতুন কেশ। বেশির ভাগ লোকের পক্ব কেশ দু-একটা অন্তত থাকবেই পঁয়ত্রিশে। আমরা যখন তরুণ, তখন কেশফলিকল থেকে উৎপন্ন বন্ধক মেলানোসাইট কালো করে রাখে চুল।

অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী
পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস, বারডেম হাসপাতাল
সাম্মানিক অধ্যাপক, ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ১২, ২০১০
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection