ওজন বেশি, কমাতে হবে। এ জন্য বাড়াতে হবে দেহের বিপাক হার। তা হলে ক্যালরি তেমন না কমিয়েও কমানো যাবে দেহের ওজন। অবাক ব্যাপার হলো, দৈনন্দিন কিছু অভ্যাস বদলিয়ে বিপাককর্মের ওপর বড় প্রভাব ফেলা যায়। সহজভাবে বলা যায়, শরীর যে হারে ক্যালরি দহন করে, সেই হার হলো বিপাক হার। খুব কম লোকেরই বিপাক হার দ্রুত, আর বেশি ওজনের লোক যারা, এদের বিপাক হার সম্ভবত ধীরগতির। যা হোক, বিপাক হার দ্রুত হলে ওজন হ্রাস করা সহজ অন্যদের তুলনায়।
পান করুন বরফ মেশানো জল: খাবারের সঙ্গে জল, জল থেকে বঞ্চিত হলে হবে না। বরফশীতল জল পান করলে শরীর ক্যালরি দহন করে। শরীরের রাসায়নিক কাজকর্মের ৯০ শতাংশ ঘটে জলীয় পরিবেশে। তাই জল পান করা উচিত প্রচুর পরিমাণ।
সম্ভব হলে দিনে দুবার ব্যায়াম: কঠোর ব্যায়ামটি সকালে করলে ভালো হয়। এরপর রাতের আহারের পর হাঁটা। এতে ২৪ ঘণ্টা দ্রুত ক্যালরি দহন সম্ভব।
ওয়েট ট্রেনিং করে দীর্ঘমেয়াদি বিপাক হার বাড়ানো সম্ভব: ভার উত্তোলনও ভালো ব্যায়াম। চর্বি যত ক্যালরি পোড়ায়, পেশি এর থেকে বেশি ক্যালরি দহন করে। সুগঠিত পেশি বড় প্রয়োজন। প্রতিটি পেশি ছোট্ট কারখানার মতো, অবিরাম ক্যালরি পুড়িয়ে চলেছে, এমনকি শয়নে, নিদ্রায়, স্বপ্নে এবং ব্যায়ামের সময় তা আরও হয় উজ্জীবিত।
ঠিকমতো আহার: ওজন হ্রাসের জন্য কোনো বেলারই খাওয়া বাদ দেওয়া ঠিক নয়। কোনো বেলার খাবার না খেলে সংকেত চলে যায় মগজে দেহের বিপাক হার কমিয়ে দেওয়ার জন্য। কারণ দেহে তখন পোড়ানোর মতো পর্যাপ্ত ক্যালরি নেই। বিপাক হার নিচুতে থাকলে ক্যালরি পুড়বে খুব কম। তখন চর্বি জমবে শরীরে, বাড়বে শরীরের ওজন।
সময়মতো আহার: দিনে পাঁচ বেলা খাওয়া ভালো। আহারের পর বিপাক হার উঁচুতে থাকে প্রায় চার ঘণ্টা, এরপর ধীর হয়ে আসে। বিপাক বাড়ানোর জন্য খেতে হয় অন্তত পাঁচ বেলা, যাতে শরীর চলে, দহন হয় ক্যালরি। ব্যায়াম করেও দেহের বাড়তি ওজন ঝরানো যায়। দেখতে হবে ব্যায়ামের পর চার ঘণ্টার মধ্যে যেন খাওয়া হয়। সে সময় বিপাক হার থাকে উঁচুতে, সব ক্যালরি তখন দহন হয়। ফলে ওজনও হ্রাস পায় শরীরের।
অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী
পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস, বারডেম হাসপাতাল
সাম্মানিক অধ্যাপক, ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ২৬, ২০১০