Author Topic: কিছু অভ্যাস যা মানুষকে বুড়ো করে  (Read 3255 times)

bbasujon

  • Administrator
  • VIP Member
  • *****
  • Posts: 1826
  • I want to show my performance at any where
    • View Profile
    • Higher Education
আমরা বলেই আসছি, ধূমপান করলে এবং কড়া রোদে বেশিক্ষণ ঘোরাঘুরি করলে শরীরে অকালবার্ধক্য আসে। তবে আরও কিছু অভ্যাস আছে, যেগুলো সময়ের ঘড়িকে জোরে এগিয়ে নিয়ে যায়।
অনেক নারী আছেন, যাঁদের ঘরে-বাইরে দুই দিকই সামলাতে হয়। অফিস সেরে ঘরে এসেও বাচ্চা সামলানো, রান্নাবান্না, ধোয়াপালা করতে হয়। ঘুমোতে হয় অনেক রাতে।
ঘুমের সমস্যা শরীরের জন্য ভালো নয়। গবেষকেরা বলেন, এগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত হয় উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, শরীরে ওজন বৃদ্ধি—এমনকি দেখতে ক্লান্ত, বুড়ো লাগা পর্যন্ত। এই বয়সে প্রতি রাতে আট ঘণ্টাই ঘুমাতে হবে তা বলছি না, তবে প্রায়ই ঘুম যেন অগ্রাধিকার পায়, আপনার শরীর এ জন্য ধন্যবাদ জানাবে। প্রত্যেকের ঘুমের চাহিদা ভিন্ন ভিন্ন। তবে বেশির ভাগ মানুষের ঘুম প্রয়োজন সাত-আট ঘণ্টা। মিষ্টিমণ্ডা, চিনির জন্য এত আগ্রহ ভালো নয়।
মিষ্টিমিঠাই বেশি খেলে কোমরের বেড় বড় হবে। কেবল কি তাই! ত্বক হবে কোঁচকানো, খসখসে ও নিষ্প্রভ। দোষ দেওয়া যায় গ্লাইকানকে। রক্তের সুগার যুক্ত হয় প্রোটিনের সঙ্গে, তৈরি হয় ক্ষতিকর AGE (Advanced glycation end products)। যত বেশি চিনি খাওয়া হবে, তত বেশি AGE তৈরি হবে। পার্শ্বের ত্বক প্রোটিনেরও এতে ক্ষতি হবে, ভেঙে যাবে কোলাজেন, ইলাস্টিন, কুঁচকে যাবে ত্বক।
তাই চিনি খেতে হবে কম। মিষ্টি খাবার কদাচিৎ। সিরাপ, কোমল পানীয়, রসগোল্লা, পান্তুয়া—এসবের লোভ যে ছাড়তে হবে। তা না হলে বুড়ো হতে হবে অতি তাড়াতাড়ি।
চাপ তো থাকবেই, কিন্তু খুব বেশি চাপ কাজেকর্মে, ঘরে-বাইরে ক্ষতি করে শরীরের। এতে রক্তে বাড়ে স্ট্রেস হরমোন, কটিসোল ও নরইপিনেফ্রিনের মান, বাড়বে রক্তচাপ, পর্যুদস্ত হবে রোগ প্রতিরোধ শক্তি। জ্বর আসবে শরীরে।
চাপ এড়ানোর জন্য কৌশল। গভীর শ্বাসক্রিয়া-ব্যায়াম। দুই মিনিট, দুবার করে দৈনিক। মুখ দিয়ে জোরে শ্বাস ছাড়ুন। হুস শব্দে, এক থেকে চার গোনা পর্যন্ত নাক দিয়ে শ্বাস নিন ধীরে, শান্তভাবে। ধরে রাখুন শ্বাস এক থেকে সাত গোনা পর্যন্ত, এরপর শ্বাস ছাড়ুন আট গোনা পর্যন্ত, হুস শব্দে। পরপর তিনবার। এভাবে দুবার, সকালে ও সন্ধ্যায়।
কেবল যখন শরীর ভারী, তখনই ব্যায়াম করলে হবে? অন্য সময়?
দেহঘড়িকে পিছিয়ে দেওয়ার বড় যন্ত্র হলো ব্যায়াম। নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীর ও মন ভালো থাকে সব দিক দিয়ে। বার্ধক্যও শরীরে আসে ধীরে। যেকোনো বয়সে ব্যায়াম, দ্রুত হাঁটা, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা, যা ভালো লাগে। দিনে অন্তত ৩০ মিনিট। ১০ মিনিট করে করে ৩০ মিনিট করলেও হয়।

কানের ওপর এত নির্যাতন কেন?
এই যে জোরে বাজনা শোনা। হট্টগোলে থাকা। তাই গান শুনলেও লো ভলিউমে। প্রয়োজনে হট্টগোলের সময় কানে ছিপি এঁটে থাকুন। শ্রুতিহানির আশঙ্কা কমবে।
বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো বড় ভালো উপায় তরুণ থাকার জন্য।
পুরোনো বন্ধু। নতুন বন্ধু। বন্ধুরা তরুণ ও সজীব রাখে। হতে পারে ফেসবুক, ই-মেইল, ঘুরে বেড়ানো, বন্ধুদের সঙ্গে হঠাৎ আড্ডা। বুড়ো হওয়া ঠেকানোর বড় উপায়। ফল ও সবজি খান প্রায় প্রতিদিন।
এতে আছে যে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এ কারণে শরীর থাকে তরুণ। ফ্রি রেডিকেল, যা অত্যাচার করে দেহকোষের ওপর, ঘটায় জরা—এগুলো ধ্বংস করে এরা। তাই শাকসবজি ও ফল খেলে ভালো।
প্রতিদিন অন্তত তিন-চার বেলা। সব ধরনের চর্বিই বর্জন করলেন। কেন?
কঠিন চর্বি স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও ট্রান্সফ্যাট বর্জন করলেন, ভালো। হূৎপিণ্ড সুখকর হলো। তবে কেন সব চর্বি? মাছের চর্বি, জলপাই তেল, বাদামের চর্বি—এগুলো বড় ভালো স্বাস্থ্যের জন্য। ওমেগা-৩ মেদ অম্ল তো খুবই স্বাস্থ্যকর। মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, জলপাই তেল কমায় ক্ষতিকর এলডিএল, বাড়ায় এইচডিএল। তাই ভালো চর্বি খাবেন অবশ্যই। জীবনসঙ্গীর সঙ্গে রোমান্স ও ভালোবাসার ইতি টানতে হবে কেন? এতে সজীব-তরুণ থাকা যাবে অবশ্যই।

অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী
পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস, বারডেম হাসপাতাল, সাম্মানিক অধ্যাপক, ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ০২, ২০১১
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection