• Welcome to Daffodil Computers Ltd..
 

News:

Daffodil Computers Limited is a leading It solution & education solution public company with a good relation to customers it has earned big respect from clients

Main Menu

সিফিলিস

Started by bbasujon, January 12, 2012, 09:02:20 PM

Previous topic - Next topic

bbasujon

সিফিলিস একটি জটিল যৌন সংক্রামক রোগ। নামটি এসেছে ফন্সাক্যাসটেরো নামক একজন চিকিৎসক, জ্যোতির্বিদ ও কবি (১৪৮৩-১৫৫৩) এর লেখা একটি কবিতা থেকে। কবিতার নায়কের নাম ছিল সিফিলাস, সে একজন মেষ পালক ছিল। ঈশ্বর ও ধর্ম নিন্দা করার জন্য তাকে একটি নতুন রোগ দিয়ে শাস্তি দেয়া হয়।

বলা হয়ে থাকে, আমেরিকা আবিষ্কারের পর (১৪৯২) কলম্বাসের নাবিকদের মাধ্যমে সিফিলিস রোগটি ইউরোপে আসে। সংক্রমিত নাবিকরা নেপলস অবরোধে অংশ নেয়ার সময় (১৪৯৫) ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মার্সিনারিদের সাথে একত্রে থাকে। সৈনিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে ছড়িয়ে পড়ার ফলে সারা ইউরোপে রোগটি ছড়িয়ে পড়ে­ ষোল শতকের মাঝামাঝি রোগটা জাপানে পৌঁছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সিফিলিসের প্রাদুর্ভাব নাটকীয়ভাবে বেড়ে যায়। বাংলাদেশে এ রোগের প্রভাব ব্যাপক, শহর এলাকায় রোগটা সচরাচর বেশি পরিলক্ষিত হয়। বন্দর নগরীতে এবং শিল্প এলাকায় এই রোগের সংক্রমণ বেশি।

ট্রেপোনেমা প্যালিডাম নামক জীবাণুর সংক্রমণে সিফিলিস রোগ ঘটে। জীবাণুটি ১৯০৫ সালে আবিষ্কার করেন প্রাণিবিজ্ঞানী এফ শাওডিন এবং চর্ম বিশেষজ্ঞ ই হফম্যান।

শরীরে মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার আগে রোগটি ধরা পড়লে সহজে চিকিৎসা করা যায়।

সংক্রমণের উৎস : আক্রান্ত ব্যক্তির ত্বক ও শ্লেষ্মাঝিল্লির ক্ষত, লালা, বীর্য, যোনি থেকে নিঃসৃত রস ও রক্ত।

যেভাবে রোগটি ছড়ায়ঃ
-আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে সরাসরি যৌন সঙ্গম করলে।
-আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে পায়ুপথে সঙ্গম কিংবা মুখ মৈথুন করলে অথবা চুম্বন বিনিময় করলে।
-রক্তসঞ্চালন কিংবা ইনজেকশনের মাধ্যমে।
-গর্ভাবস্খায় আক্রান্ত মায়ের কাছ থেকে সন্তানের মধ্যে।

প্রাথমিক গোটা : অধিকাংশ ক্ষেত্রে সিফিলিস আক্রান্ত পুরুষের লিঙ্গমুণ্ডুতে কিংবা লিঙ্গমুণ্ডুর ত্বকে গোটা ওঠে; নারীর ক্ষেত্রে গোটা ওঠে যোনির ঠোঁট কিংবা ক্লাইটরিসে। গোটাটি প্রথমে একটি ছোট লাল দানার মতো শুরু হয়, তার পর তা ভেজা ও ধীরে ধীরে ক্ষয় হতে থাকে। গোড়ার দিকে তা বোতামের মতো শক্ত অনুভূত হয়। এটা দেখতে খুব ছোট কিংবা আঙুলের নখের মতো হতে পারে। অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে চিকিৎসা অর্থহীন, কারণ জীবাণু শরীরের গভীরে প্রবেশ করে।

রোগের উপসর্গ সিফিলিসের প্রাথমিক স্তর : শরীরে জীবাণু প্রবেশের সাধারণত ১০ থেকে ৪০ দিন পর সরাসরি সংক্রমিত স্খানে ব্যথাহীন গোটা ওঠে। যৌনাঙ্গ ছাড়া এই গোটা মলদ্বার, ঠোঁট কিংবা স্তনের বোঁটাতে হতে পারে। কাছাকাছি গ্রন্থিগুলো ফুলে উঠতে পারে। চার থেকে ১০ সপ্তাহের মধ্যে গোটা চলে যায়। প্রথম স্তরে রোগ সারানো খুব সহজ হয়।

সিফিলিসের দ্বিতীয় স্তর : সংক্রমণের ৬ সপ্তাহ থেকে তিন মাস পর সব শরীরে ত্বকে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। মাথার চুল পড়ে। মাথা ব্যথা, সামান্য জ্বর এবং গ্রন্থিগুলো ফোলা হতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তি তীব্রভাবে সংক্রমিত হয়, তার মুখের ত্বক যদি ছিঁড়ে যায় তাহলে চুমুর মাধ্যমে রোগ ছড়াতে পারে। প্রায় এক বছরের মধ্যে রোগের চিহ্নগুলো মিলিয়ে যায়।

সিফিলিসের শেষ স্তর : স্খিরতার কাল থেকে ৩০ বছর পর (সুপ্ত স্তর) রোগটি শরীরের যেকোনো অংশকে আক্রমণ করতে পারে। সাধারণত হৃৎপিণ্ড, রক্তনালী, মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুরুজ্জু আক্রান্ত হয়। অন্যান্য প্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে মুখে ঘা, ত্বক, হাড় ও লিগামেন্টের ক্ষয়। বড় ধরনের প্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে অন্ধ হয়ে যাওয়া, অঙ্গ অসাড়, উন্মাদনা এবং মৃত্যু। শারীরিক ক্ষতি পূরণ করা যায় না।

জন্মগত সিফিলিস : গর্ভাবস্খায় আক্রান্ত মায়ের কাছ থেকে গর্ভফুলের মাধ্যমে গর্ভস্খ শিশু সিফিলিসে আক্রান্ত হতে পারে। এ ধরনের এক-তৃতীয়াংশেরই গর্ভপাত হয় কিংবা মৃত সন্তান প্রসব ঘটে। প্রাথমিক গর্ভাবস্খায় মায়ের চিকিৎসা করালে শিশু রক্ষা পায়।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা : সেরোলজিক্যাল পরীক্ষার মাধ্যমে সিফিলিসের জীবাণু ধরা পড়ে। সিফিলিসে আক্রান্ত হওয়ার চার সপ্তাহ থেকে সেরোলজিক্যাল পরীক্ষাগুলো পজিটিভ হয়। মাঝে মধ্যে ভ্রান্তিমূলক পজিটিভ হতে পারে। ভিডিআরএল এবং আরপিআর পরীক্ষা অন্য সংক্রমণ কানেকটিভ ইস্যুর অসুখে পজিটিভ হয়। ফলাফল বিশেষ পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করা যায়। যদি সিফিলিস সন্দেহ করা হয় তাহলে লাইপয়ডাল এন্টিজেন এবং বিশেষ পরীক্ষাগুলো একত্রে করা হয়।

সুপ্তস্তরে স্নায়ুজনিত অসুস্খতা পৃথক কিংবা নিশ্চিত করার জন্য সিএসএফ পরীক্ষা করা হয়।

সিফিলিসের সেরোলজিক্যাল পরীক্ষা : ভিডিআরএল (ভেনেরাল ডিজিজ রিসার্স ল্যাবরেটরি) পরীক্ষা। -আরপিআর (র‌্যাপিড প্লাজমা রিয়াজিন) -টিপিএইচএ (ট্রেপোনেমা প্যালিডাম হেমাগ্লুটিনেশন অ্যাসেই)। -এফটিএ-এবিএস (ফ্লুরোসেন্ট ট্রেপোনেমাল এন্টিবডি এবসর্বড) -ট্রেপোনেমাল এনজাইম-লিংকড) ইম্যুনোসরবেন্ট (ELISA)।

চিকিৎসা : অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা করাতে হবে, নইলে পরে দেখা দিতে পারে নানা জটিলতা।

লেখকঃ ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল
উৎসঃ দৈনিক নয়াদিগন্ত, ২৫শে নভেম্বর ২০০৭
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection