বাচ্চার বাকস্ফুটনে নানা রকমের অসংলগ্নতা দেখা দিতে পারে। বাকযন্ত্রের নানা অংশের মধ্যে সঠিক সংযোগের অভাবও একটি কারণ। একে বলে ডিসআরথ্রিয়া। এক্ষেত্রে কথা বলাটা অস্পষ্ট রকমের হতে পারে। এমন হয় শিশু নাকি সুরে কথা বলছে। অনেক শিশু বাকস্ফুটনের নানা স্তরে কোনো কোনো কনসোনেন্ট বাদ দিয়ে কথা বলে বা কোনো কোনো ধ্বনি বারবার টেনে আনে। ফলে তার কথাগুলো বোঝার উপায় থাকে না- যদিও অনেক কথা যা সে বলে। সবচেয়ে বেশি ত্রুটি দেখা যায় জিভ যখন দাঁতের মাঝে উঠে আসে। এন হয়ে যায় ‘এস’। ৭ বছর বয়সেও ১০-১৩ শতাংশ শিশুর মাঝে বাকশক্তি বিকাশের সমস্যা দেখা যায়। কেউ কেউ এ দোষ শিশুর বাকস্ফুটনের অপরিপক্বতা বলে চিহ্নিত করেছেন। তবে শিশুর এ সচরাচর ‘লিসপ’ অসুবিধা বাদে অন্যান্য কথা বলার অস্পষ্টতা কোনোরূপ চিকিৎসা ছাড়াই শিশু যখন বড় হতে থাকে তখন আপনা আপনি সেরে যায়। শুধু ‘লিসপ’-এর ক্ষেত্রে স্পিচ থেরাপির প্রয়োজন পড়ে। শিশুরা সাধারণভাবে আরএলডব্লিউ ওয়াইটিএইচ এবং এফএস-এর আগেই জিডিকেওটি উচ্চারণ করতে শেখে। তবে শিশুর দেরিতে কথা বলতে পারা বা বাকস্ফুটনের যে কোনো সমস্যা নজরে এলেই তার কানে শোনা স্বাভাবিক আছে কি-না তা অবশ্যই পরীক্ষা করে নিতে হবে। মহামতি ইনগ্রাম বাচ্চার কথা বলার অসুবিধাগুলো চার গ্রেডে সাজিয়েছেন। ১. মৃদু- ডিসলোলিয়া। অধুনা বলা হয় ক্রোনোলজিক্যাল ডিসঅর্ডার। ২. মাঝারি- ভাষাশক্তিতে দুর্বল। কোনো লজিক্যাল সমস্যাও আছে। ৩. মারাত্মক- ভাষা চয়ন ও ভাব প্রকাশ- দুটোতেই ঘাটতি। জন্মগত শব্দ চয়নে দুর্বলতা। ৪. খুব মারাত্মক- সত্যিকারের শ্রবণ প্রতিবন্ধী এবং বধির।
ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, চট্টগ্রাম
সূত্রঃ দৈনিক ইত্তেফাক, আগস্ট , ২০০৯