বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক শিশু বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের পড়াশোনার পরিবেশ বহাল রাখা বর্তমানের এক মুখ্য আলোচ্য বিষয়। নানা সমস্যার বেড়াজালে চলে বিদ্যালয়গুলো। তবুও ‘শিশুবান্ধব বিদ্যালয়’ সনদ পেতে ন্যূনতম কয়েকটি সুপরিবেশ বজায় রাখার কথা বলা হচ্ছে—
এক.
দৈহিক শাস্তিকে ‘না’ বলা। শারীরিক শাস্তি বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অনেক ক্ষতি ডেকে আনে (যেমন বিদ্যালয়ভীতি)।
দুই.
পিঠে ভারী ব্যাগ আর না। এতে তৈরি হয় ‘স্কুলব্যাগ সিনড্রোম’—পিঠে, ঘাড়ে ব্যথা এসব। স্কুলব্যাগের ওজন শিশুর নিজ ওজনের ১০ শতাংশেরও কম হতে হবে। পঞ্চম থেকে ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত স্কুলে বই রাখার বন্দোবস্ত করা গেলে ভালো। ফাইল সিস্টেম চালু থাকলে পিঠে ঝোলানো বোঝা কম হবে।
তিন.
প্রয়োজনমতো টয়লেট: প্রতি ৬০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একটা ইউরিনাল এবং প্রতি ১০০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একটা ল্যাট্রিন থাকা আবশ্যক এবং তা ছেলে ও মেয়েদের জন্য পৃথক হতে হবে।
চার.
বিদ্যালয়ে নিরাপদে আসা-যাওয়ার ব্যবস্থা। দুই বা তিন চাকার গাড়ি ব্যবহার না করানো। এবং যানবাহনে বেশি ঠাসাঠাসি করে শিক্ষার্থী বহন না করা।
পাঁচ.
স্কুলে পর্যাপ্তসংখ্যক শ্রেণীকক্ষ ও খেলার মাঠ থাকা বাঞ্ছনীয়।
এক শ্রেণীকক্ষে সর্বোচ্চ ৪০ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করলে খুব ভালো।
শ্রেণীকক্ষ যেন ৪০০ স্কয়ার ফুট বা ১০০ স্কয়ার ফুট/প্রতিজন শিক্ষার্থী হিসেবে থাকে।
ফার্নিচারে যেন ব্যাক রেস্ট ও ডেস্কওয়ার্ক করার সুবিধা পাওয়া যায়।
নার্সারি ও প্রাইমারি স্কুল একতলা বিল্ডিংয়ের হতে হবে।
সব স্কুল বিল্ডিংয়ে বারান্দা থাকবে।
খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে ন্যূনতম চার ঘণ্টা সময় বরাদ্দ।
উচ্চবিদ্যালয়ের জন্য কমপক্ষে ১০ একর এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য কম করে হলেও পাঁচ একর পরিমাণের খেলার মাঠ থাকা উচিত।
প্রণব কুমার চৌধুরী
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ০৬, ২০১১