স্বাস্থ্য গবেষণা
ধূমপান ও মদ্যপানের কুফলের দীর্ঘ তালিকায় আরেকটি সংযোজন আলঝেইমারসের ঝুঁকি। যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক জানিয়েছেন, ধূমপায়ী ও মদ্যপায়ীদের স্মৃতিবিনাশী রোগ আলঝেইমারসে দ্রুত আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। আলঝেইমারস রোগে আক্রান্ত ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের ওপর পরিচালিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যারা দিনে দুই পেগের বেশি মদ খায়, তারা অন্যদের তুলনায় গড়ে পাঁচ বছর আগে আলঝেইমারসে আক্রান্ত হয়। অন্যদিকে, যারা দৈনিক ২০টির বেশি সিগারেট খায়, তারাও অধূমপায়ীদের চেয়ে বছর দুয়েক আগে এ রোগে আক্রান্ত হয়। গবেষকেরা বলেছেন, যারা একই সঙ্গে ধূমপায়ী ও মদ্যপায়ী, তাদের অধূমপায়ী ও অমদ্যপায়ীদের তুলনায় ছয়-সাত বছর আগে অ্যালঝেইমারস রোগের লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করে। এই দলের প্রধান গবেষক ফ্লোরিডার মাউন্ট সিনাই মেডিকেল সেন্টারের ডা· রঞ্জন দুয়ারা বলেন, আলঝেইমারস রোগের জিনবাহী বা ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করে এ রোগে আক্রান্ত হওয়া বিলম্বিত করা সম্ভব।
দ্রুত খাওয়া স্থূলতার কারণ!
কাজের চাপে শুধু যে নড়ার সময়ই পান না তা নয়, অনেকে যেন খাওয়ার সময়ও পান না। শুধু অফিসেই নয়, বিভিন্ন জায়গায়ই দেখা যায় লোকজনকে কারণে বা অকারণে খুব দ্রুত, তাড়াহুড়ো করে খেয়ে নিতে, যাকে বলা যায় ‘দৌড়ের ওপরে’ খাওয়া। অনেকের জন্য এই দৌড়ের ওপরে খাওয়া আবার এক ধরণের স্টাইলও। জেনে রাখুন, গপাগপ করে খাওয়ার এই অভ্যাস অনেকের মুটিয়ে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যারা দ্রুত খেতে অভ্যস্ত, তাদের ক্ষেত্রে মোটা হয়ে যাওয়ার প্রবণতা অন্যদের তুলনায় দ্বিগুণ। যারা তাড়াহুড়ো করে খায়, তারা অন্যদের তুলনায় বেশি ক্যালোরি গ্রহণ করে। দ্রুত খাওয়ার ফলে খানাপিনা যথেষ্ট হয়েছে, মস্তিষ্ক এই সংকেত পাঠানোর আগেই অতিরিক্ত খাবার পেটে ঢুকে পড়ে। ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলসের স্থূলত্ব-বিশেষজ্ঞ ডা· এলিজাবেথ ড্যানি উইলসন বলেছেন, খাওয়ার জন্য আলাদা সময় রাখা; পরিবার, সহকর্মী বা বন্ধুদের সঙ্গে একত্রে বসে খাওয়া; গল্প করতে করতে খাওয়া-এই অভ্যাসগুলো ধীর গতিতে খেতে সহায়তা করে। ফলে, মস্তিষ্ক সঠিক সময়ে খাওয়া বন্ধ করার নির্দেশ দিতে পারে, অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ করে মুটিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিও কমে।
রিডার্স ডাইজেস্ট ও বিবিসি হেলথ অনলাইন
অবলম্বনে ডা· মুনতাসীর মারুফ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারী ২৫, ২০০৯