ক্ষীণতনু হতে চায় এখন সবাই। ওজন হারাতে চায় সবাই, শরীর থেকে বাড়তি যেটুকু আছে। পানি উজ্জীবিত করে দেহ বিপাক, জলপানে পেট লাগে ভরাট। তাই ক্যালরিভর্তি কোমলপানীয়ের বদলে এক গ্লাস পানি হতে পারে শ্রেষ্ঠ পানীয়। প্রতিবেলার আহারের আগে এক গ্লাস পানি পান করে নিন।
বেশি বেশি পানি পানে উজ্জীবিত হয় বিপাক—যদি হিমশীতল হয় গ্লাসটি। এই পানিকে উষ্ণ করতে কাজ করতে হয় শরীরকে—তাই সে প্রক্রিয়ায় পোড়ে কিছু ক্যালরি।
পানি অ্যালার্জি বাড়ায় শরীরে।
নিজেকে যদি ক্লান্ত, নিঃশেষিত মনে হয়, তাহলে উত্তোলিত হওয়ার জন্য এক গ্লাস পানি পান করুন। শরীর পানিশূন্য হলে ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়।
রক্তকে শরীরের কোষে কোষে অক্সিজেন ও পুষ্টিকণা বয়ে নিয়ে যেতে সহায়তা করে পানি। শরীর যথেষ্ট পানি পেলে, সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালিত করতে হূদযন্ত্রকে এত কঠোর শ্রম করতে হয় না।
কমে মনের চাপ, পানি পানে।
মগজের টিস্যুর ৮৫ শতাংশ হলো পানি। পানিশূন্য হলে শরীর, শরীর ও মন দুটোই চাপগ্রস্ত হয়। তৃষ্ণার্ত বোধ করলে শরীরে পানি কম, বুঝতে হবে।
চাপ কমাতে হলে কাজের ডেস্কে রাখুন এক গ্লাস পানি, নিয়মিত চুমুকে চুমুকে পান করুন পানি।
পানি সহায়তা করে পেশির টোন নির্মাণে।
নিয়মিত পানি পানে পেশির খিঁচুনি রোধ হয়, দেহের হাড়ের গিঁটগুলো থাকে সজল, জলসিক্ত।
সজল থাকে যদি কেউ, তাহলে বেশি সময় ব্যায়াম করা যায়, শরীর কাবু হয় না।
ত্বক হয় পরিপুষ্ট।
শরীরে নিকদন থাকলে দেহরেখা কুঞ্চন হয় আরও স্পষ্ট, প্রকট। পানি হলো প্রাকৃতিক ‘বিউটি ক্রিম’।
পানি পানে ত্বককোষ হয় জলসিঞ্চিত, এরা ফুলে ওঠে, মুখাবয়ব হয় তরুণ। পানি ধুয়ে নিয়ে যায় মল, ময়লা, বর্জ্য। উন্নত করে রক্ত চলাচল ও প্রবাহ। তাই মুখাবয়ব হয় পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন ও উদ্দীপ্ত।
পানির সঙ্গে থাকুন নিয়মিত।
আঁশ যেমন প্রয়োজন, তেমনি পরিপাকের জন্য পানিও বড় প্রয়োজন।
শরীরের অন্ত্রে পরিপাকের পর বর্জ্য ও মলকে লঘু করার জন্য এবং সাবলীল গমনের জন্য পানি খুব প্রয়োজন।
পানিশূন্য হলে শরীর সব পানি শুষে নেয়, মলান্ত্র হয়ে পড়ে শুষ্ক এবং মল হয় কঠিন, কোষ্ঠবদ্ধতা হয় পরিণতি।
পানি পানে কমে কিডনি পাথুরির ঝুঁকি।
পূর্ণবয়স্ক এমনকি শিশুরা কম পানি পান করে বলে বেড়ে যাচ্ছে কিডনি পাথুরির হার। পানি মূত্রের খনিজ ও লবণকে লঘু করে, যে খনিজ লবণ ঘন থাকলে কিডনি পাথুরি হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
লঘুমূত্র হলে কিডনিস্টোনের ঝুঁকি কমে, তাই পানি পান করুন প্রচুর।
যথেষ্ট পানি পান করছেন তো?
সাধারণত পুষ্টিবিদদের সূত্র হলো ৮×৮। প্রতিদিন ৮ আউন্স পরিমাণ গ্লাসের ৮ গ্লাস পানি পান করুন। ব্যায়াম করলে বা বেশি ঘামলে আরও বেশি পানি প্রয়োজন হতে পারে।
অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী
পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস, বারডেম হাসপাতাল
সাম্মানিক অধ্যাপক, ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ০৩, ২০১১