মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০
[১৯৯০ সনের ২০নং আইন]
------------------------------------------------------------------
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ এবং মাদকাসক্তদের চিকিত্সা ও পুনর্বাসনকল্পে প্রণীত আইন; যেহেতু মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ এবং মাদকাসক্তদের চিকিত্সা ও পুনর্বাসনকল্পে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনী; সেহেতু এতদ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইলঃ
ধারা -১ (সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন)
(১) এই আইন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০ নামে অভিহিত হইবে ।
(২) ইহা ১৩৯৬ বাংলা সালের ১৯শে পৌষ মোতাবেক ১৯৯০ সালের ২রা জানুয়ারি হইতে কাযর্কর হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
ধারা -২ ( সংগা )
বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইন-
(ক) ''অধিদফতর'' অর্থ এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর;
(খ) ''এ্যালকোহল'' অর্থ স্পিরিট এবং যেকোনো ধরনের মদ বা পাঁচ শতাংশের অধিক এ্যালকোহল যুক্ত যেকোনো তরল পদার্থ ইহার অন্তর্ভুকক্ত হইবে;
(গ) ''চিকিত্সা অর্থ: Medical and Dental Council Act, 1980 (xvi of 1980)-এর Section 2-এর Clause (I) ও (m)-এ সংজ্ঞায়িত registered dentists ও registered medical Practitioner এবং Bangladesh Veterinary Practitioner Ordinance, 1982 (xxx of 1982)-এর Section 2(g) সত্যায়িত registered Veterinary Practitioner ইহার অর্ন্তুভুক্ত হইবে;
(ঘ) ''ডিস্টিলারী'' অর্থ এ্যালকোহল তৈয়ারির যেকোন কারখানা;
(ঙ)''তফসিল'' অর্থ এই আইনের অধীনের সহিত সংযুক্ত যেকোনো তফসিল;
(চ) ''পারমিট'' অর্থ এই আইনের অধীন প্রদত্ত পারমিট;
(ছ) 'পাস' অর্থ এই আইনের অধীন প্রদত্ত পাস;
(জ) 'বিধি' অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;
(ঝ) 'বোর্ড' অর্থ এই আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বোর্ড;
(ঞ) 'ব্রিউয়ারী'' অর্থ বিয়ার জাতীয় মাদকদ্রব্য প্রস্তুত যেকোন কারখানা বা কেন্দ্র;
(ট) 'মহা-পরিচালক' অর্থ এই আইনের অধীন নিযুক্ত মহা-পরিচালক;
(ঠ) 'মাদকদ্রব্য' অর্থ প্রথম তফসিলে উল্লেখিত যেকোনো দ্রব্য;
(ড) 'ক-শ্রেণীর মাদকদ্রব্য'' ''খ-শ্রেণীর মাদকদ্রব্য'' ও 'ঘ-এর শ্রেণীর মাদকদ্রব্য অর্থ প্রথম তফসিলে উল্লিখিত যথাক্রমে ক-শ্রেণীর মাদকদ্রব্য, খ-শ্রেণীর মাদকদ্রব্য ও গ-শ্রেণীর মাদকদ্রব্য;
(ঢ) 'মাদকাসক্ত' অর্থ শারীরিক বা মানসিকভাবে মাদকদ্রব্যের উপর নির্ভরশীল ব্যক্তি বা অভ্যাস বশে মাদকদ্রব্য ব্যবহারকারী;
(ণ) 'মাদকাসক্তি' 'নিরাময় কেন্দ্র' অর্থ এই আইনের অধীনে স্থাপিত বা ঘোষিত মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র;
(ত) 'লাইসেন্স' অর্থ এই আইনের অধীন প্রদত্ত লাইসেন্স;
(থ) 'স্থান' বলিতে যেকোনো বাড়িঘর, যানবাহন স্থিতাবস্থায় বা চলমান যেভাবেই থাকুক না কেন এবং বিমান বন্দর, সামদ্রিক বন্দর ও বৈদেশিক ডাকঘর, বহিরাগমন চেক পোস্ট ও শুল্ক ফাঁড়ি ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে ।
ধারা-৩ ( আইনের প্রাধান্য )
আপাততঃ বলবত অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন এই আইন ও এই আইনের অধীন প্রণীত কোনো বিধির বিধানাবলী কার্যকর থাকিবে ।
ধারা -৪( জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বোর্ড প্রতিষ্ঠা )
(১) এই আইনের উদ্দেশ্যে পূরণকল্পে জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বোর্ড নামে একটি বোর্ড থাকিবে ।
(২) বোর্ড নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে৷ যথাঃ
(ক) 'স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী, যিনি উহার চেয়ারম্যানও হইবেন;
(খ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
(গ) (১৯৯৩ সনের ৩০ নং আইন দ্বারা বিলুপ্ত);
(ঘ) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
(ঙ) শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
(চ) তথ্য মন্ত্রণালয় বা বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
(ছ) সমাজকল্যাণ ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে বা বিভাগে দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
(জ) অর্থ মন্ত্রণালয় বা বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
(ঝ) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বা বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
(ঞ) স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বা বিভাগের দায়িত্বে মন্ত্রী;
(ট) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় বা বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
(ঠ) যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বা বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী;
(ড) সচিব, আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়;
(ডড) সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়;
(ঢ) সরকার কর্তৃক মনোনীত একজন প্রখ্যাত সমাজ সেবক;
(ণ) সরকার কতৃর্ক মনোনীত একজন প্রখ্যাত লোক হিতৈষী ব্যক্তি;
(ত) সরকার কর্তৃক মনোনীত একজন প্রখ্যাত সাংবাদিক;
(দ) সরকার কর্তৃক মনোনীত একজন প্রখ্যাত চিকিত্সক বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞ;
(ধ) মহা-পরিচালক, যিনি বোর্ডের সচিব হইবেন ।
(৩) উপধারা (২)-এ উল্লিখিত কোনো মন্ত্রণালয় বা বিভাগে যদি মন্ত্রী না থাকেন, তাহা হইলে ঐ মন্ত্রণালয় বা বিভাগের প্রতিমন্ত্রী যদি থাকেন, বোর্ডের সদস্য হইবেন ।
(৪) বোর্ডের কোনো মনোনীত সদস্য তাঁহার মনোনয়নের তারিখ হইতে দুই বত্সরের জন্য সদস্যপদে বহাল থাকিবেন ।
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার যেকোনো সময় তাঁহার মনোনয়ন বাতিল করিতে পারিবে ।
(৫) সরকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগ্যে কোনো মনোনীত সদস্য স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন ।
ধারা -৫ ( বোর্ডের দায়িত্ব ও কর্তৃব্য )
বোর্ডের নিম্নরূপ দায়িত্ব ও কর্তৃব্য থাকিবে; যথাঃ
(ক) মাদবদ্রব্য সৃষ্ট সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া রোধকল্পে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন এবং উহা বাস্তবায়নের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ;
(খ) মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সংগ্রহের জন্য যেকোনো ধরনের গবেষণা বা জরিপ পরিচালনা;
(গ) মাদকদ্রব্য উত্পাদন, সরবরাহ, ব্যবহার ও নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন;
(ঘ) মাদকাসক্তদের চিকিত্সা ও পুনর্বাসন সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ;
(ঙ) মাদকদ্রব্যের কুফল সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও প্রচারমূলক কার্যক্রম গ্রহণ;
(চ) মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সহিত যোগাযোগ স্থাপন এবং এতদসংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রমের সমন্বয় সাধন; এবং
(ছ) উপরিউক্ত দায়িত্ব পালন ও কর্তব্য সম্পাদনের জন্য যেকোন ব্যবস্থা গ্রহন ।
ধারা-৬ ( সভা )
(১) এই ধারায় অন্যান্য বিধানাবলী সাপেক্ষে বোর্ড উহার সভার কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে ।
(২) বোর্ডের সকল সভা উহার চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে ও সময়ে অনুষ্ঠিত হইবে ।
(৩) চেয়ারম্যান বোর্ডের সকল সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং তাহার অনুপস্থিতিতে তত্কর্তৃক মনোনীত বোর্ডের অন্য কোনো সদস্য সভাপতিত্ব করিবেন।
(৪) বোর্ডের মোট সদস্যদের এক-চতুর্থাংশের উপস্থিতিতে উহার সভার কোরাম গঠিত হইবে ।
(৫) বোর্ড গঠনে কোনো ত্রুটি রহিয়াছে বা উহাতে কোনো শূন্যতা রহিয়াছে শুধুমাত্র এই কারণে বোর্ডের কোনো কার্য বা কার্যধারা বেআইনী হইবে না বা তত্সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না ।
ধারা-৭ ( জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বোর্ড )
তহবিল: (১) মাদকদ্রব্য ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করা এবং মাদকাসক্তদের চিকিত্সা ও পুনর্বাসন করার প্রয়োজনে সরকারী সাধারণ বাজেট বরাদ্দের অতিরিক্ত অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্যে জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বোর্ড, জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বোর্ড তহবিল নামে একটি স্বতন্ত্র তহবিল গঠন করিতে পারিবে ।
(২) উক্ত তহবিলে নিম্নবর্ণিত অর্থ জমা হইবে । যথাঃ
(ক) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
(খ) কোনো বিদেশী সরকার বা সংস্থা বা কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা কতৃর্ক প্রদত্ত অনুদান;
(গ) কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কতৃর্ক প্রদত্ত অনুদান;
(ঘ) কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;
(ঙ) অন্য কোন উত্স হইতে প্রাপ্ত অর্থ;
(৩) তহবিলে জমাকৃত অর্থ কোনো তফসিলী ব্যাংকে রাখা হইবে ।
(৪) বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও ফরমে তহবিল রক্ষণ ও উহার অর্থ ব্যয় করা যাইবে ।
(৫) বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও কর্তৃপক্ষের দ্বারা তহবিলের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিরীক্ষিত হইবে ।
(৬) তহবিল নিরীক্ষা কতৃর্পক্ষ তহবিল সংক্রান্ত যাবতীয় বহি ও অন্যান্য দলিল নিরীক্ষা করিতে পারিবে এবং প্রয়োজনবোধে বোর্ডের যেকোন এবং অধিদফতরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবে ।
(৭) তহবিলের হিসাব নিরীক্ষার পর নিরীক্ষা কর্তৃপক্ষ সরকারের নিকট নিরীক্ষা প্রতিবেদন পেশ করিবে ।
ধারা -৮( মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর )
(১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর নামে একটি অধিদফতর স্থাপন করিবে ।
(২) বোর্ডের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অধিদফতর সহায়তা প্রদান করিবে এবং বোর্ডের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য অধিদফতর দায়ী থাকিবে ।
ধারা -৯ ( এ্যালকোহল ব্যতীত মাদকদ্রব্যের উত্পাদন ইত্যাদি নিষিদ্ধ )
(১) এ্যালকোহল ব্যতীত মাদকদ্রব্যের চাষাবাদ, উত্পাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বহন, পরিবহন, আমদানি, রফতানি, সরবরাহ, ক্রয়-বিক্রয়, ধারণ, সংরক্ষণ, গুদামজাতকরণ, প্রদর্শন ও ব্যবহার করা যাইবে না ।
(২) কোনো মাদকদ্রব্যের উত্পাদনে ব্যবহৃত হয় এই প্রকার কোনো দ্রব্য বা উদ্ভিদের চাষাবাদ, উত্পাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বহন, আমদানি, রফতানি, সরবরাহ, ক্রয়-বিক্রয়, ধারণ, সংরক্ষণ, গুদামজাতকরণ, প্রদর্শন ও ব্যবহার করা যাইবে না ।
(৩) উপধারা (১) ও (২)-এ যাহা কিছু থাকুক না কেন, উক্ত উপধারা দ্বয়ে উল্লেখিত কোনো মাদকদ্রব্য, দ্রব্য বা উদ্ভিদ কোনা আইনের অধীন অনুমোদিত কোনো ঔষধ প্রস্তুতের জন্য বা কোনো বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য প্রয়োজন হইলে উহা এই আইনের অধীন প্রদত্ত-
(ক) লাইসেন্স বলে উত্পাদন প্রক্রিয়াজাতকরণ, আমদানি, রফতানি, সরবরাহ, ক্রয়-বিক্রয়, ধারণ, সংরক্ষণ, গুদামজাতকরণ ও প্রদর্শন করা যাইবে;
(খ) পারমিটবলে ব্যবহার করা যাইবে;
(গ) পাস বলে বহন বা পরিবহন করা যাইবে ।
ধারা -১০ (এ্যালকোহল উত্পাদন ইত্যাদি সম্পর্কে বিধান )
(১) এই আইনের অধীন প্রদত্ত লাইসেন্স ব্যতিরেকে কোনো ব্যক্তি-
(ক) কোনো ডিস্টিলারী বা ব্রিউয়ারী স্থাপন করিতে পারিবেন না;
(খ) কোনো এ্যাকোহল উত্পাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বহন, পরিবহন, আমদানি, রফতানি, সরবরাহ, ক্রয়-বিক্রয়, ধারণা, সংরক্ষণ, গুদামজাতকরণ, প্রদর্শন ও ব্যবহার করিতে পারিবেন না;
(গ) কোনো এ্যালকোহল ঔষধ তৈরির উপাদান হিসাবে ব্যবহার করিতে পারিবেন না ।
(২) এই আইনের অধীন প্রদত্ত পারমিট ব্যতীত কোনো ব্যক্তি এ্যালকোহল পান করিতে পারিবেন না; এবং চিকিত্সার প্রয়োজনে অন্যূন সিভিল সার্জন বা মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের কোনো সহযোগী অধ্যাপকের লিখিত ব্যবস্থাপত্রের ভিত্তি ব্যতীত কোনো মুসলমানকে এ্যালকোহল পান করার জন্য পারমিট দেওয়া যাইবে না ।
(৩) উপধারা (২)-এর অধীন প্রদত্ত ব্যবস্থাপত্র যে রোগের চিকিত্সার জন্য এ্যালকোহল ব্যবহার করা আবশ্যিক সেই রোগের নাম উল্লেখ করিতে হইবে এবং উক্তরূপ আবশ্যকতা সম্পর্কে ব্যবস্থাপত্রে চিকিত্সকের প্রত্যয়ন থাকিতে হইবে ।
(৪) এই ধারায় যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো বিদেশী নাগরিক লাইসেন্স প্রাপ্ত বারে বসিয়া এ্যালকোহল পান করিতে পারিবেন ।
(৫) কূটনৈতিক পাসপোর্টধারী বিদেশী নাগরিক বা শুল্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত পাসবইধারী বা প্রচলিত ব্যাগেজ রুলস-এর দ্বারা স্বীকৃত ব্যক্তির ক্ষেত্রে, ক্ষেত্রমত এ্যালকোহল আমদানি, রফতানি, ক্রয়, বহন, সংরক্ষণ বা পানের ব্যাপারে এই ধারায় কোন কিছু প্রযোজ্য হইবে না ।
ধারা -১১ ( লাইসেন্স ইত্যাদি প্রদান)
(১) এই আইনের অধীন প্রদেয় লাইসেন্স, পারমিট ও পাস, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, ফরমে, শর্তে এবং ফী প্রদান করিলে মহাপরিচালক বা তাহার নিকট হইতে এতদূদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা কতৃর্ক প্রদান করিতে পারিবেন ।
(২) উপধারা (১)-এর অধীন কোনো লাইসেন্স, পারমিট বা পাস-এর মেয়াদ উহাতে উল্লিখিত শর্তে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত অথবা উহা প্রদানের তারিখ হইতে সংশ্লিষ্ট অর্থ বত্সর শেষ হওয়া পর্যন্ত বলবত থাকিবে ।
তবে শর্তে থাকে যে, এই আইনের কোনো বিধান বা লাইসেন্সের শর্ত লংঘন করা না হইলে কোনো ল্যাবরেটরী, ডিস্টিলারী বা ব্রিউয়ারীর জন্য প্রদত্ত লাইসেন্স, বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফী প্রদানে বত্সর ভিত্তিক নবায়ন করা যাইবে ।
ধারা -১২ ( লাইসেন্স ইত্যাদি প্রদানের ব্যাপারে বিধিনিষেধ)
(১) এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন লাইসেন্স বা পারমিট পাইবার যোগ্য হইবে না, যদি-
(ক) তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যূন তিন মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাঁহার মুক্তিলাভের পাঁচশত টাকার অধিক অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং দণ্ডের টাকা আদায় করার পর তিন বত্সরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে;
(খ) তিনি এই আইনের অধীন কোনো অপরাধের জন্য আদালত কতৃর্ক দণ্ডিত হন;
(গ) তিনি এই আইনের অধীন প্রদত্ত লাইসেন্স বা পারমিটের কোনো শর্ত ভঙ্গ করেন এবং সেজন্য তাহার উক্ত লাইসেন্স বা পারমিট বাতিল হইয়া যায় ।
ধারা -১৩ ( মাদকদ্রব্যের ব্যবস্থাপত্র সম্পর্কে বিধিনিষেধ )
(১) মহা-পরিচালকের নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে লিখিত অনুমোদন ব্যতিরেকে কোন চিকিত্সক 'ক' শ্রেণীর বা 'খ' শ্রেণীর কোনো মাদকদ্রব্য ঔষধ হিসাবে ব্যবস্থাপত্র দিতে পারিবেন না ।
(২) চিকিত্সক ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তি 'গ' শ্রেণীর কোনো মাদকদ্রব্য ঔষধ হিসাবে ব্যবস্থাপত্র দিতে পারিবেন না ।
(৩) উপধারা (১) বা (২)-এর অধীন প্রদত্ত ব্যবস্থাপত্রের ভিত্তিতে একবারের অধিক মাদকদ্রব্য ক্রয় করা যাইবে না ।
ধারা -১৪ ( মাদকদ্রব্যের দোকান সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করার ক্ষমতা )
(১) কোনো জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা পুলিশ কমিশনার যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, তাঁহার এখতিয়ারাধীন কোনো এলাকায় আইন-শৃংখলা রক্ষার্থে কোনো মাদকদ্রব্যের দোকান সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা প্রয়োজন তাহা হইলে তিনি লিখিত আদেশ দ্বারা অনধিক পনের দিনের