Author Topic: আগ্নেয়গিরির ভস্ম ও স্বাস্থ্য  (Read 3391 times)

bbasujon

  • Administrator
  • VIP Member
  • *****
  • Posts: 1826
  • I want to show my performance at any where
    • View Profile
    • Higher Education
সম্প্রতি আইসল্যান্ডের আগ্নেয়গিরিগুলো থেকে অগ্ন্যুৎপাত হচ্ছে। ভস্ম ছড়িয়ে পড়ছে আকাশে। ইউরোপের আকাশে ছাই ছড়িয়ে পড়ছে। সে অঞ্চলে বেশির ভাগ বিমান চলাচল বন্ধ রয়েছে। অনেক বিমানবন্দরে যাত্রীরা আটকা পড়েছেন, দুঃসহ সময় কাটছে তাঁদের। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও এ নিয়ে চিন্তিত।
বায়ুবাহিত শিলাচূর্ণ ও কাচের কণা স্বাস্থ্যের জন্য কত বড় ঝুঁকি হতে পারে, তাও চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ব্রিটিশ স্বাস্থ্য গ্রুপের মতামত হলো, এ পর্যন্ত যা দেখা যাচ্ছে এতে মনে হয়, সম্ভাব্য স্বাস্থ্যঝুঁকি এত গুরুতর নয়। তবে যাঁদের হাঁপানি বা শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা রয়েছে, তাঁরা সতর্কতা অবলম্বন করতে পারেন।
ছাই আকাশ থেকে মাটিতে পড়লে তবে তা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি হতে পারে, ব্রিটেনের কিছু এলাকায় ভস্ম পড়েছে মাটিতেও। জাতীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা সংস্থার পরামর্শ হলো, যাঁদের শ্বাসযন্ত্রে সমস্যা রয়েছে, তাঁরা তাঁদের সঙ্গে ইনহেলার বহন করবেন, প্রয়োজনে যাতে কাজে লাগাতে পারেন বা চোখে চুলকানি বা গলায় চুলকানির মতো উপসর্গ হলে ঘরের ভেতর থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
বাতাসে ধোঁয়াশা বা ধূলিযুক্ত ছায়া দেখলে অথবা গন্ধকের গন্ধ বা কড়া অম্ল গন্ধ শনাক্ত করলেও এমন ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিভাগের পরিচালক ম্যারিয়ানিরা বলেন, লোকজন ঘরের বাইরে গলা ও ফুসফুসে অস্বস্তি অনুভব করলে, নাক দিয়ে পানি ঝরা, চোখে চুলকানি—এসব হলে ঘরের ভেতর, অন্দরে সত্বর যেতে হবে আর ঘরের বাইরে কাজকর্ম বা চলাফেরা কমাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু ভস্মের কণার পরিমাণ দেশে দেশে কম-বেশি হয় তাই এ ব্যাপারে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশও মেনে চলা উচিত।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বক্তব্য, আকাশে ভস্মকণা ছড়িয়ে পড়ার কারণে এ পর্যন্ত গুরুতর কোনো স্বাস্থ্য সমস্যার রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।
তবে ব্রিটেনের কোনো কোনো অঞ্চলে ভস্ম মাটিতে পড়তে শুরু করেছে এবং কোনো কোনো অঞ্চলের লোকজন যানবাহনের ওপর হালকা ধূলিরস্তর দেখতে পেয়েছেন। কোনো কোনো অঞ্চলে বাতাসে গন্ধকের গন্ধ পাওয়া গেছে।
ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের একজন মুখপাত্র বলেন, ছাইয়ের কণা মাটিতে পড়লেও এর ঘনত্ব বা পরিমাণ এত কম যে গুরুতর ক্ষতির আশঙ্কা কম। যাঁরা চোখে কন্টাক্ট লেন্স পরেন তাঁদের কিছুটা অস্বস্তি হতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভস্মে কণাগুলোর আয়তন ও ঘনত্ব মেপে চলেছে এবং দেখা গেছে ২৫ শতাংশ কণার আয়তন ১০ মাইক্রনের কম (এক মিলিমিটারের ১০০ ভাগ)। কণা যত ক্ষুদ্র হবে, শ্বাসের সঙ্গে একে গ্রহণ করা হবে সহজ, শ্বাসযন্ত্রের অসুখের আশঙ্কাও হবে বেশি।
এ ছাড়া কৃষি আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হবে কি না, প্রাণী বিনাশ হবে কি না, এ নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। আগ্নেয়গিরির ভস্মে যে বড় পরিবেশ ঝুঁকি তা হলো গবাদিপশু যখন ভস্ম মিশ্রিত তৃণ ভোজন করবে তখন এর ফ্লোরাইড ক্ষতি করতে পারে এদের। তবে স্কটল্যান্ডে ধূলিকণায় এবং নরওয়ের ধূলিতেও ফ্লোরাইড কম পরিমাণে রয়েছে।

অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরীর কলম থেকে
আকাশ জোড়া আগ্নেয়গিরির ছাই ভস্ম পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস, বারডেম হাসপাতাল
সাম্মানিক অধ্যাপক, ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, এপ্রিল ২১, ২০১০
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection