এক্স-রে কী?
সহজভাবে এক্স-রে হচ্ছে একধরনের কৃত্রিমভাবে তৈরি তেজস্ক্রিয় রশ্মি, যা দিয়ে মানবদেহের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং স্থানভেদে চিকিৎসাও প্রদান করা হয়। এটি রঞ্জনরশ্মি নামেও পরিচিত। ১৮৯৫ সালে জার্মান পদার্থবিদ ডব্লিউ সি রোয়েন্টজেন এটি আবিষ্কার করেন।
এক্স-রের মাত্রা
রেগুলেশন ১৯৯৯ অনুযায়ী যেকোনো সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে এ মাত্রা সারা বছরে এক মিলি সিভার্টের অনধিক। তবে যত কম তেজস্ক্রিয় বিকিরণের কাছে যাওয়া যায় ততই মঙ্গল।
এক্স-রে কি ক্ষতিকর?
অবশ্যই। যদিও শরীর অল্পদিনের মাঝেই সে ক্ষতি পুষিয়ে নেয়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি অপূরণীয়। এতে শরীরের স্থায়ী কোষ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। মনে রাখতে হবে, মাত্র একটি এক্স-রে কণা একটি মূল্যবান কোষ ধ্বংসের জন্য যথেষ্ট। তবে সবসময় সবারই যে একই রকম ক্ষতি হবে বা হবেই বা এটা তর্কসাপেক্ষ।
এর ফলাফল কি?
যদি মানব ভ্রূণ সৃষ্টির শুরুতে কোন কোষ নষ্ট হয়, এর প্রভাব ওই শিশুটির ওপর পড়তে পারে। শিশুটি বিকলাঙ্গ হয়ে জন্ম নিতে পারে অথবা হতে পারে মানসিক প্রতিবন্ধি। আবার কারণে অকারণে বারবার এক্স-রে করালে শরীরের জনন কোষগুলোর (শুক্রাশয় বা ডিম্বাশয়) ওপর এর প্রতিক্রিয়ার কারণে প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে যারা এক্স-রের সংস্পর্শে থাকেন বা থাকবেন তাদের ত্বকের ক্যানসার, লিউকোমিয়া, চোখে ছানি পড়া, খাদ্য নালীর ক্যানসার ইত্যাদি হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে।
তাহলে কি এক্স-রে করা যাবে না?
অবশ্যই যাবে। এটি একটি অল্প খরচে ও স্বল্প সময়ে অতি প্রয়োজনীয় একটি পরীক্ষা। উন্নত বিশ্বে যে কেউ ইচ্ছে করলেই এক্স-রে পরীক্ষা লিখতে বা করাতে পারে না। এ ক্ষমতা সেখানে নির্দিষ্ট কিছু ডাক্তারের হাতে থাকে। আমাদের দেশে যত্রতত্র এর ব্যবহার হয়ে থাকে, তাই আমরা যদি একটু সচেতন হই তাহলে অনেকাংশে-এর খারাপ প্রতিক্রিয়া থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারব।
মো. ফরহাদ হোসেন
সহকারী অধ্যাপক, রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগ
সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, সিলেট।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ১৫, ২০১১