• Welcome to Daffodil Computers Ltd..
 

News:

Daffodil Computers Limited is a leading It solution & education solution public company with a good relation to customers it has earned big respect from clients

Main Menu

ভালো থাকুন রজঃ নিবৃত্তির পরও

Started by bbasujon, January 13, 2012, 08:25:33 AM

Previous topic - Next topic

bbasujon

দুরন্ত কৈশোর পেরিয়ে পূর্ণাঙ্গ নারী হয়ে উঠতে শরীর ও মনে নানা রকম পরিবর্তন, যেমন—রজঃস্রাব হয় (১২-১৪ বছর বয়সে), তেমনি ৪৫-৫২ বছরের পূর্ণাঙ্গ নারীর শরীর ও মনে আসে বড় পরিবর্তন। এর মধ্যে অন্যতম হলো রজঃ নিবৃত্তি বা মেনোপজ। এটা এ জন্য হয় যে প্রতিটি নারীর ডিম্বাশয় থেকে যে মেয়েলি হরমোন নিঃসৃত হয়ে নারীকে পূর্ণাঙ্গতা দিয়েছিল, সে হরমোনগুলো কমে যেতে থাকে। ফলে এ সময় নারীর শারীরিক, মানসিক ও মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন সূচিত হয় এবং এ পরিবর্তন তাকে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রাখে।
সাধারণত ৪৫ থেকে ৫২ বছর বয়সে হলেও কারও চল্লিশের পরপরই মাসিক বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আবার কারও ৫৪ বছর বয়স পর্যন্ত মাসিক হতে পারে। মেনোপজ হলে নানা পরিবর্তন আসে শরীর ও মনে।
শারীরিক পরিবর্তন: ত্বক মোটা ও রুক্ষ হয়, শরীর স্থূল হয়, ওজন বাড়ে, স্তন শুকিয়ে যেতে থাকে।
মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন: অনেকেই ভ্রান্ত ধারণায় থাকেন যে রজঃ নিবৃত্তি মানেই জীবন শেষ, নারীত্ব শেষ, স্বামীর ভালোবাসা শেষ। তাই বিষণ্নতা, অস্থিরতা, অবসাদগ্রস্ত থাকা, অল্পতেই ক্লান্তি বোধ করা, অকারণে রুক্ষ খিটখিটে মেজাজ, অমনোযোগ, মাথা ধরা, অনিদ্রা, হাত-পা অবশ মনে হওয়া প্রভৃতি সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেকের খাবারে অরুচি, ডিসপেপসিয়া, পেট ফুলে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। বেশির ভাগ নারীর বুক ধড়ফড় করা, বুকে ব্যথা, হট ফ্লাশ (নাক-মুখে গরম অনুভূতি হওয়া)—এটাকে মেনোপজের প্রথম এবং প্রধান লক্ষণ বলা যেতে পারে, যা দিনে দু-একবার বা রাতেও হতে পারে। এতে ঘুমের মধ্যেও প্রচণ্ড ঘাম হতে পারে।
অন্যান্য পরিবর্তন: এ সময় যোনি শুকিয়ে যেতে থাকে, তাই তাঁরা মনে করেন যে যৌনতা কমে যাচ্ছে। এ ছাড়া ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা, স্তনে ব্যথা, গিঁটে ব্যথা, ত্বকের সমস্যা, হাড় নরম হয়ে যাওয়া ও ভেঙে যাওয়ার প্রবণতা বেশি হয়।
চিকিত্সা ও প্রতিকার
তিনটি পর্যায়ে চিকিত্সা দেওয়া যেতে পারে।
প্রথম ধাপ: কাউন্সেলিং, যা কুসংস্কার, ভূতে ধরা বা পুরুষ হয়ে যাওয়ার মতো ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে প্রয়োজন। রজঃ নিবৃত্তি জীবনের একটা ধাপ বা পরিবর্তন, কিন্তু জীবন শেষ হওয়া নয়। যাঁদের হট ফ্ল্যাশ বা ঘাম বেশি বেশি হয়, তাঁদের চা, কফি, অ্যালকোহল, গরমপানি দিয়ে গোসল, গরমে বসা, বিছানায় গরম কাপড় ব্যবহার বাদ দিতে হবে। নিয়মিত ও পরিমিত ব্যায়াম, ঠান্ডাপানি, ভিটামিন ই, ডি, ক্যালসিয়াম, ছোট মাছ, শাকসবজি, রঙিন ফলমূল, দেশীয় প্রাকৃতিক খাবার খুব উপকারে আসবে।
দ্বিতীয় ধাপ: প্রয়োজনে ঘুমের ওষুধ, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের চিকিত্সা, মনের দুর্বলতা কমানোর জন্য ট্রাংকুলাইজার বা বিটা ব্লকার দেওয়া যেতে পারে।
তৃতীয় ধাপ: কিন্তু যখন সমস্যা এতটাই প্রকট যে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে কাজ হচ্ছে না, তখন হরমোন (প্রতিস্থাপনীয়) বা এইচআরটি দেওয়া যেতে পারে। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে এবং নিয়মিত ফলোআপ করতে হবে।
জরায়ু না থাকলে সর্বাপেক্ষা কম ডোজ ইস্ট্রোজেন এবং জরায়ু থাকলে প্রতিমাসে শেষ ১০ দিনে প্রজেস্টেরন যোগ করতে হবে।
যেহেতু একজন নারীর জীবনের এক-তৃতীয়াংশ সময় মেনোপজের পর পার হয় এবং এই সময়টা ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক উন্নয়নের শ্রেষ্ঠ সময়, তাই তাঁকে এ সময় সর্বসেরা কাউন্সেলিং ও চিকিত্সা দেওয়া সব দিক থেকেই মঙ্গলজনক। কেননা নারী-পুরুষের সম্মিলিত সমন্বিত সহমর্মিতা আর সহযোগিতায় পরিবার, সমাজ ও দেশ সমৃদ্ধিশালী হয়ে উঠবে।

হামিদা বেগম
স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, নভেম্বর ১১, ২০০৯
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection