Author Topic: যে সমস্যা গুরুত্বের সাথে নিতে হবে  (Read 4839 times)

bbasujon

  • Administrator
  • VIP Member
  • *****
  • Posts: 1826
  • I want to show my performance at any where
    • View Profile
    • Higher Education
অণ্ডকোষে ব্যথা হলে কিংবা অণ্ডথলির (যে থলির মধ্যে অণ্ডকোষ থাকে) একপাশে বা দু’পাশে ব্যথা হলে সেটাকে অবশ্যই গুরুত্বের সাথে নিতে হবে। যেকোনো বয়সের পুরুষদের, এমনকি নবজাতকেরও অণ্ডথলিতে ব্যথা করতে পারে। অণ্ডকোষ হলো পুরুষদের প্রজনন অঙ্গ। শরীরে দু’টি অণ্ডকোষ থাকে এই অঙ্গ বা গ্রন্থিগুলো খুবই সংবেদনশীল। খুব সামান্য আঘাতেও ব্যথা হতে পারে। অণ্ডকোষ বা অণ্ডথলিতে যেকোনো ধরনের ব্যথা হলেই চিকিৎসাগত সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।

অণ্ডকোষ বা অণ্ডথলিতে ব্যথা হঠাৎ হতে পারে অথবা তীব্র হতে পারে। এ ব্যথা আঘাতের কারণে হতে পারে, ব্যথার সাথে অণ্ডকোষ ফুলে যেতে পারে। রোগী বমি বমি ভাব কিংবা বমি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

অণ্ডথলিতে ব্যথার সঙ্গে রোগীর অণ্ডথলিতে চাকা, জ্বর, অণ্ডথলির ত্বক লাল, প্রস্রাবে রক্ত, মূত্রনালি পথে অস্বাভাবিক নিঃসরণ, গলা ফুলে যাওয়া প্রভৃতি উপসর্গ থাকলে যতদ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। যদি সময়মতো চিকিৎসা করা না হয় তাহলে বন্ধ্যাত্ব ও পুরুষত্বহীনতা ঘটতে পারে। রোগীর তীব্র বা দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা থাকবে। অনেক সময় রোগীর অপারেশন করে অণ্ডকোষ ফেলে দেয়ার প্রয়োজন হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অণ্ডকোষের ব্যথার উৎস অণ্ডকোষ নয়, ব্যথা শুরু হয় অণ্ডথলি এলাকায়। অণ্ডকোষের কাজ হলো শুক্রাণু তৈরি করা। তাই অণ্ডকোষকে সুস্থ রাখা অপরিহার্য। প্রতিটি অণ্ডকোষের উপরে থাকে এপিডিডাইমিসকে সুরক্ষা দেয়।

অণ্ডকোষে ব্যথার কারণ : অণ্ডকোষ কিংবা অণ্ডথলির ব্যথার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে-

সংক্রমণ বা প্রদাহ : অণ্ডকোষের প্রদাহ বা সংক্রমণের সাথে সবচেয়ে যে সাধারণ অবস্থাটি সম্পৃক্ত তা হলো এপিডিডাইমাইটিস। এপিডিডাইমাইটিস হলো একটি বা দু’টি এপিডিডাইমিসের প্রদাহ। এপিডিডাইমিসে সংক্রমণ হলে সেই সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে অণ্ডকোষে। এটা যেকোনো বয়সে হতে পারে এবং হঠাৎ করে হতে পারে।

সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ হয় তরুণ ও যুবকদের। এ সংক্রমণের প্রধান কারণ হলো যৌনবাহিত ব্যাকটেরিয়া, বিশেষ করে ক্ল্যামাইডিয়া ও গনোরিয়া।

আঘাত : অণ্ডকোষের আঘাতজনিত ব্যথার সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো স্পোর্টস ইনজুরি বা খেলাধুলা জনিত আঘাত। যদি আঘাত পাওয়ার পর ব্যথা এক ঘণ্টার বেশি স্থায়ী থাকে তাহলে জরুরি চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

আঘাত পাওয়ার পর একটা চাকা দেখা দিতে পারে। আবার নাও পারে। আঘাত পাওয়ার পর অবশ্যই অণ্ডকোষ পরীক্ষা করে দেখতে হবে।

অণ্ডকোষে টরসন বা প্যাঁচ খাওয়া : অণ্ডকোষে প্যাঁচ খাওয়া একটি জরুরি অবস্থা। এ ক্ষেত্রে অণ্ডকোষে রক্ত সরবরাহ বাধাগ্রস্থ হয়। অণ্ডকোষে প্যাঁচ খেলে অণ্ডথলিতে ব্যথা করে ও ফুলে যায়। যদি ৫-৬ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা করা না হয় তাহলে আক্রান্ত অণ্ডকোষের টিস্যু মরে যেতে পারে। যদিও এ সমস্যা নবজাতক এবং বয়ংসন্ধিকালে ছেলেদের (১৮ বছরের নিচে) বেশি হয়। তবে এটা যে কোনো বয়সে হতে পারে।

অণ্ডকোষের উপাদেয় প্যাঁচ খেলেও অণ্ডকোষে প্যাঁচ খাওয়ার মতো একই অনুভূতি হতে পারে। অণ্ডকোষে প্যাঁচ খেলে জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হয় কিন্তু অণ্ডকোষের উপাদেয় প্যাঁচ খেলে সেটা জরুরি অবস্থা নয়। কোনো জটিলতা ছাড়াই ব্যথা সাধারণত এক সপ্তাহ স্থায়ী থাকে।

ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল
লেখক : জেরারেল ও ল্যাপারোস্কপিক সার্জন। চেম্বার : কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬ এলিফ্যান্ট রোড (বাটা সিগনাল ও হাতিরপুল বাজারের সংযোগ সড়কের মাঝামাঝি), ঢাকা। মোবাইল : ০১৭১৬২৮৮৮৫৫।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, অক্টোবর ৩১, ২০০৯
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection