Author Topic: অসুস্থ হলে শিশুকে যা খাওয়াবেন  (Read 4630 times)

bbasujon

  • Administrator
  • VIP Member
  • *****
  • Posts: 1826
  • I want to show my performance at any where
    • View Profile
    • Higher Education
অসুখের সময় শিশুর খাদ্যপুষ্টিমান সঠিকভাবে রক্ষা করা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ অসুখে শিশুর ক্ষুধা কমে যায়। অসুস্থ অবস্থায় শরীরে আরও বেশি ক্যালরি কখনো সুনির্দিষ্ট কিছু পুষ্টির চাহিদা বেড়ে যায়। অসুস্থ হলে শিশুর মলের সঙ্গে পুষ্টি বেরিয়ে যায় বেশি, ব্যথাযুক্ত মুখের ঘা, বমি ভাব বা বমির কারণে শিশু প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার গ্রহণ করতে পারে না।
এসব সমস্যা কাটিয়ে অসুস্থ শিশু যাতে অপুষ্টিতে না পড়ে সে জন্য অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

খাওয়ানোর নিয়ম

    বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যান।
    খাবার খাওয়ানো কখনোই বন্ধ করে দেবেন না।
    দুই থেকে তিন ঘণ্টা পরপর শিশুকে অল্প পরিমাণ খাবার বারবার খেতে দিন।
    শিশু যদি একদম না-খেয়ে থাকে, প্রয়োজনে ন্যাকোগ্যাস্ট্রিক নলের সাহায্যে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
    শিশুর ক্ষুধা যখন ফিরে আসবে, তখন তার শারীরিক বৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য খাবারের রুটিন সাজিয়ে নিতে হবে।

কোন কোন খাবার দেবেন
এ সময় শিশুকে যে খাবার খেতে দেওয়া হবে তা অবশ্যই-

    সুস্বাদু হতে হবে।
    নরম বা ঠান্ডা তরল করে পরিবেশন করতে হবে, যাতে সে সহজে খেতে পারে।
    সহজপাচ্য খাবার হতে হবে।
    পুষ্টিমানসম্পন্ন ক্যালরি শক্তি ও পুষ্টিগুণে ভরপুর হতে হবে। এমন খাবার পরিবেশন করতে হবে, যা পর্যাপ্ত পরিমাণে শক্তি জোগাবে এবং যাতে থাকবে উচ্চমান প্রোটিন।
    শিশুকে বেশি স্মেহপদার্থ বা তেলযুক্ত খাবার খাওয়ানো দরকার। আর তা ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ক্যালরি ফ্যাট বা স্মেহজাতীয় খাবার থেকে পাওয়া গেলে ভালো।

এ ছাড়া শিশুর শক্তি জোগাতে স্বল্প পরিমাণে ঘন ঘন খাওয়ানোর চেষ্টা করতে হবে।
শিশুকে কোন খাবার খেতে দেওয়া হবে তা অনেকটা নির্ভর করে স্থানীয়ভাবে কী পাওয়া যাচ্ছে এবং সেসবের কেমন স্বাদ তার ওপর। দানাদার খাবার, মাছ, মাংস-এসব মিশ্র খাবার খাওয়ানো ভালো। তবে সব ক্ষেত্রে যেন তেল মেশানো হয় তা খেয়াল রাখতে হবে।

শিশুকে অল্প পরিমাণে বারবার খাওয়ানোয় উৎসাহ দিতে হবে। অল্পবয়সী শিশুর কাছে খাবার রেখে দিলে বা অন্য শিশুর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে খাওয়াতে গেলে সে যথেষ্ট খাবার নাও খেতে চাইতে পারে।

কিছু ব্যবস্থাপত্র
শিশুর নাক আটকে থাকলে খাবার খেতে অসুবিধা হয়। নাসারন্ধ্র খোলা রাখতে লবণপানির ফোঁটা নাকে ব্যবহার করা যেতে পারে।

শিশু যদি গুরুতর নিউমোনিয়া, ব্রংকিওলাইটিস বা অ্যাজমার সমস্যায় ভোগে, তাহলে দ্রুত ও কষ্টকর শ্বাস-প্রশ্বাসের কারণে খেতে পারে না। এ ছাড়া খাবার শ্বাস-প্রশ্বাসতন্ত্রে ঢুকে যাওয়ার মতো বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করে। এ অবস্থায় শিশুকে খাওয়ার জন্য কখনো জোর করবেন না। শিশুর যদি জ্বর বেশি থাকে, তাহলে জ্বর কমালে তার খিদে বাড়ে।

স্বল্পসংখ্যক শিশুর ক্ষেত্রে যখন কয়েক দিন ধরে শিশুকে কিছুই খাওয়ানো যায় না-যেমন মেনিনজাইটিসে অচেতন শিশু বা গুরুতর নিউমোনিয়ায় শিশুকে নলের সাহায্যে খাওয়ানোর দরকার হতে পারে। এ ক্ষেত্রে খাবার অল্প পরিমাণে বারবার দিতে হবে।

সুস্থ হওয়ার পর
সেরে ওঠার পর শিশু যতটুকু ওজন হারিয়ে ফেলেছে তা পূরণে সচেষ্ট হতে হবে সঠিক খাবার খাওয়ানোর মাধ্যমে। এ পর্যায়ে শিশুর খিদে বেড়ে যায়। এ সময় শিশুকে আগের চেয়ে বেশি করে খাওয়াতে হবে। অন্তত দিনে অতিরিক্ত এক বেলা খাবার দিতে হবে।

—————————–
ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, চট্টগ্রাম
প্রথম আলো, ২৩ এপ্রিল ২০০৮
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection