ডা· প্রণব কুমার চৌধুরী
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ
উচ্চতা নির্ণয়
শিশুর উচ্চতা নির্ণয়ের সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি আছে। উচ্চতার পরিমাপ গ্রোথ চার্টে (শিশু কতটুকু বাড়ছে তার তালিকা) নিয়ে দেখা হয়। বোঝা গেল উচ্চতায় সে তালিকার নিচের দিকে অবস্থান করছে।
এ ছাড়া মা-বাবা, অভিভাবক লক্ষ করেছেন সমবয়সীদের তুলনায় তাঁদের বাচ্চা বেশ খাটো। সঙ্গে কিছু স্বাস্থ্য-সমস্যার লক্ষণও বিশেষভাবে মিলতে পারে। এবার প্রয়োজন শিশু খাটো কেন তার কারণ খুঁজে বের করা।
কারণ খোঁজা
খাটো শিশুর কারণ অনুসন্ধানে বেশ কিছু ইতিহাস জানা দরকার। গর্ভকাল, প্রসবকাল ও ছোট বয়সে তার স্বাস্থ্য কেমন ছিল, স্বাস্থ্যের বর্তমান অবস্থা এবং শিশুর পুষ্টিমান কেমন আছে-এসব।
শিশুর চারপাশের পরিবেশ তার ওপর কোনো মানসিক নির্যাতন ও অবহেলার চিত্র উদ্ঘাটন করা জরুরি। মা-বাবার উচ্চতা ও তাদের বয়ঃসন্ধিকালের সূচনাবর্ষ হিসাবে নেওয়া হয়। এ হিসাবে শিশুর গ্রোথ চার্টের ওপর প্রতিস্থাপন করতে হয়।
শিশু খাটো হওয়ার প্রধান দুই কারণ
ক·
– শিশু সুস্থ আছে, তবে খাটো।
– মা-বাবাও উচ্চতায় খাটো।
– শিশুর বোন-এইজ তার বয়সের সঙ্গে কাছাকাছি অবস্থানে। এ হলো ফ্যামিলিয়েল শর্ট স্টেচার। পারিবারিক কারণে খাটো শিশু। পুরো বিষয় মা-বাবাকে বোঝানো যায়। আশ্বস্ত করানো যায়। চিকিৎসার দিকটি শিশুবিশেষজ্ঞ সামলাবেন ওষুধের প্রয়োজন যদি থাকে।
খ·
– সাধারণত স্বাস্থ্য বেশ ভালো।
– বয়ঃসন্ধিকাল অঙ্কুরিত হয়নি।
– দেরিতে বয়ঃপ্রাপ্তির পারিবারিক ইতিহাস থাকে।
– বোন-এইজে পেছানো।
– উচ্চতার গতি শ্লথ, তবে বয়ঃপ্রাপ্তির দ্বিতীয়ার্ধে বেশ তাড়াতাড়ি বেড়ে এ পিছিয়ে থাকা পুষিয়ে নেয়। এ হলো কনস্টিটিউশনাল ডিলে অব গ্রোথ। এটি জেনেটিকভাবে নির্ধারিত শ্লথ চরিত্রের বাড়ন।
এখানে শিশু যে খাটো থাকে তা নয়, তার বয়ঃসন্ধিকাল অর্জনও দেরিতে আসে। এ ক্ষেত্রেও মা-বাবাকে আশ্বস্ত করা যায়। ওষুধের প্রয়োজন হলে বা যদি কোন বিশেষ ধরনের পরীক্ষার প্রয়োজন হয় তাহলে শিশুবিশেষজ্ঞ শিশুর মা-বাবাকে সেটা জানাবেন।
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ০২, ২০০৮