শিশুদের কেউ কেউ একেবারেই চুপচাপ থাকতে পছন্দ করে। কেউ বা সারাক্ষণ বাড়িঘর মাতিয়ে রাখে। যাকে বলা যায় অতিচঞ্চলতা। এ কারণে অনেক সময় পরিবারের সদস্যরা বিরক্তি অনুভব করে থাকেন। অভিভাবকেরা শিশুর বাড়তি চাঞ্চল্য কিংবা অতি শান্ত স্বভাবের কারণে চিন্তিত হয়ে ওঠেন মাঝেমধ্যেই। শরণাপন্ন হন চিকিৎসকের।
সম্প্রতি একদল গবেষক অভিভাবকদের এই অহেতুক ভয়কে দূর করার প্রয়াস পেয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, শিশুর যেকোনো ধরনের মানসিক অবস্থার রয়েছে কার্যকারণ।
তাঁদের অভিমত, রাতে যেসব শিশুর ভালো ঘুম হয়, তারা সাধারণত ধীরস্থির স্বভাবের হয়ে থাকে। অন্যদিকে যারা এর বিপরীত, তাদের মধ্যে অতিরিক্ত চঞ্চলতা দেখা যায়।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, রাতে অন্তত আট ঘণ্টা ভালো ঘুম হলে শিশুদের অতিচঞ্চল স্বভাব ধীরে ধীরে কমে যেতে পারে। একই কারণে তাদের অন্যান্য নেতিবাচক আচরণও (যদি থাকে) দূর হতে পারে।
ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কি বিশ্ববিদ্যালয় ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ অ্যান্ড ওয়েলফেয়ারের একদল গবেষক সাত-আট বছর বয়সী ২৮০ জন শিশুর ঘুম ও তাদের আচার-আচরণের নানা দিকের ওপর সমীক্ষা চালান।
গবেষণা প্রতিবেদনে তাঁরা উল্লেখ করেছেন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাঁরা বলেছেন, শিশুর অতিরিক্ত চঞ্চল ভাবের কারণে আপাতদৃষ্টিতে তাদের ক্লান্ত মনে না হলেও এতে শিশুর সামগ্রিক আচরণের ওপর প্রভাব পড়ে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা হয় নেতিবাচক। যাকে বলা হয় অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভ ডিজঅর্ডার (এডিএইচডি)। গবেষকদের মতে, পর্যাপ্ত ভালো ঘুম শিশুর স্বাস্থ্য ভালো রাখে। একই সঙ্গে এডিএইচডি হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। তাই রাতে শিশুদের নিরবচ্ছিন্ন সুখনিদ্রার দিকে খেয়াল রাখাটা জরুরি।
বিবিসি হেলথ নিউজ অবলম্বনে
কাজী ফাহিম আহমেদ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মে ২০, ২০০৯