ইনফ্লুয়েঞ্জা নাক, গলা ও ফুসফুসের একটি মারাত্মক রোগ। এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ। শীতকালে এ রোগের প্রকোপ বেশি হলেও বছরের অন্যান্য সময়ও এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।
কারা ঝুঁকিতে আছে?
* পাঁচ বছর বয়সের কম শিশু।
* ৬৫ বছরের বেশি বয়সী বৃদ্ধ।
* অন্যান্য বয়সী যাদের হূৎপিণ্ড, ফুসফুস, কিডনি, লিভারের সমস্যা আছে।
* যাদের হাঁপানি ও ডায়াবেটিস আছে।
* যাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম।
লক্ষণসমূহ
হঠাৎ জ্বর, শুকনো কাশি, সর্দি, মাথাব্যথা, মাংসপেশি ও গিঁটে ব্যথা। যদিও এই লক্ষণসমূহ এক সপ্তাহের মধ্যে ভালো হয়ে যায়, তবুও মাঝেমধ্যে যারা এই রোগের ঝুঁকিতে থাকে, বিশেষ করে শিশুরা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়; এমনকি তাদের মৃত্যুও হতে পারে।
কীভাবে ছড়ায়?
যখন একজন এ রোগে আক্রান্ত হয়, তার হাঁচি-কাশির মাধ্যমে অন্যদের শরীরে এ রোগের জীবাণু ছড়ায়। হাতের মাধ্যমেও এই রোগজীবাণু ছড়াতে পারে।
সাধারণত যেখানে জনসমাগম বেশি, যেমন—নার্সারি, স্কুল, হাটবাজার, মসজিদ ইত্যাদি স্থানে একজনের কাছ থেকে অনেক মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়।
প্রতিরোধ কীভাবে করবেন?
শিশু ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হলে মা-বাবার উচিত হবে তাকে স্কুলে না পাঠানো। বড়দের হলেও যেখানে জনসমাগম হয়, সেখানে যাওয়া থেকে তারা বিরত থাকবেন। আক্রান্ত রোগীর সঙ্গে হাত মেলাবেন না, অথবা সঙ্গে সঙ্গে হাত ধুয়ে ফেলবেন।
আক্রান্ত রোগী কাশি বা হাঁচি দেওয়ার সময় টিস্যু পেপার দিয়ে নাক, মুখ ঢেকে নেবেন এবং বারবার হাত ধোবেন।
এ ছাড়া এই রোগটি টিকা দেওয়ার মাধ্যমেও প্রতিরোধ করা যায়। এই টিকা আমাদের দেশে পাওয়া যায়। টিকা সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং অত্যন্ত কার্যকরী। যেসব শিশু বা বয়স্ক ব্যক্তি ঝুঁকিতে আছেন, তাঁরা টিকা নিতে পারেন।
চিকিৎসা
জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল দেবেন। বারবার শরীর স্পঞ্জ করে দেবেন। বেশি করে পানি, শরবত, ফলের রস খেতে দেবেন।
যদি নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা যায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
অধ্যাপক তাহমীনা বেগম
শিশু বিভাগ, ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ ও বারডেম
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারী ০২, ২০১০