ভূমি জরিপ ব্যবস্থাপনা
প্রথম পরিচ্ছেদঃ ভূমি জরিপের আইন ও বিধি
সার্ভে আইন-১৮৭৫
(১৮৭৫ সালের ৫নং আইন)
প্রথম খন্ড
প্রারম্ভিক
ধারা-১। ( শিরোনাম ও বিস্তৃতি ) :
এই আইন সার্ভে আইন ১৮৭৫ নামে অভিহিত হইবে । এই আইন সমগ্র বাংলাদেশে প্রযোজ্য হইবে ।
ধারা-২। (ব্যাখ্যামূলক অংশ ) :
বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী না হইলে এই আইন-
'কালেক্টর' বলিতে কোনো জেলার কালেক্টর বা ডেপুটি কমিশনার এবং এই আইনের আওতায় বিশেষ বা সার্বিকভাবে কালেক্টরের ক্ষমতাপ্রাপ্ত যেই কোনো কর্মকর্তাকে বুঝাইবে ।
'ডেপুটি কালেক্টর' বলিতে যেই কোনো ডেপুটি কালেক্টরকে বুঝাইবে, যিনি এই আইনের আওতায় কালেক্টর বা জরিপ তত্ত্বাবধায়ক কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত।
'এস্টেট' অর্থ-কালেক্টর বা জেলা প্রশাসক কর্তৃক আইনানুগভাবে রক্ষিত রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করা আরোপিত বা নিস্কর জমি;
যেই কোনো খাসমহল এবং নিস্কর জমি, যাহা কোনো রেজিস্টারভুক্ত হয় নাই;
প্রচলিত আইনে সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো নাব্য নদী বা সমুদ্র ভাসিয়া উঠা যেই কোনো চর বা দ্বীপ;
এবং সিলেট জেলার নিম্নলিখিত বিষয়াবলী অন্তর্ভুক্ত হইবে :
যেই কোনো ভূমির বিষয়, যাহা তাত্ক্ষনিকভাবে বা ভবিষ্যতে ভূমি রাজস্ব প্রদান সাপেক্ষে কোনো নতুন চুক্তির আওতায় আসে;
কোনো ভূমি রাজস্ব প্রদান সাপেক্ষে অথবা ভূমি রাজস্বের ন্যায় পৃথকভাবে নিরূপিত পরিমাণ যদিও উক্ত পরিমাণের জন্য সরকারের সহিত কোনো চুক্তি অন্তর্ভুক্ত হয় নাই;
আসাম ল্যান্ড এন্ড রেভিনিউ রেগুলেশন ১৮৮৬-এর ৪র্থ অধ্যায়ে বর্ণিত রাজস্বের আওতাভুক্ত ও রাজস্বমুক্ত এস্টেটের সাধারণ রেজিস্টারে পৃথকভাবে অন্তর্ভুক্ত কেবল সরকারের জমি;
ব্যাখ্যা : কোনো জমি এইখানে বর্ণিত কোনো এস্টেটের পয়স্থি বা নদী বা সমুদ্র ভরাটের ফলে যেই রায়তিস্বত্বের পরিবৃদ্ধি ঘটিয়া বর্তমানে আইনে বলবত, তাহা উক্ত রায়তিস্বত্বের পরিবৃদ্ধি হিসাবে বিবেচিত, এরূপ এস্টেটের অংশ বলিয়া গণ্য হইবে।
'মৌজা'তে অন্তর্ভুক্ত হইবে গ্রাম, ক্ষুদ্র গ্রাম (হ্যামলেট), তোলা বা একই ধরনের এস্টেটের বিভক্তিকৃত অংশ, পরগণা বা অন্য কোনো স্থান, যেই নামেই তাহা পরিচিত হোক না কেন।
'দখলকার' বলিতে প্রত্যেক জমিদার, রায়ত, কৃষক এবং অন্যান্য ব্যক্তি, যাহারা জমির খাজনা প্রাপ্য বা এই মর্মে জমি দখল করিয়া রহিয়াছে যে, তাহা তাহার প্রাপ্য এবং জমির দখলীয় সকল রায়তকে বুঝাইবে;
'ধারা' বলিতে এই আইনের অধীনে ধারা বুঝাইবে;
'জরিপ'-এর অন্তর্ভুক্ত হইবে সীমানা চিহ্নিতকরণ, নদীতীর বরাবর ক্ষয়প্রাপ্ত বা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত জমি, নদীর গতি পরিবর্তনের ফলে পুনঃউদ্ভব বা নূতন উদ্ভবকৃত জমির পরিমাণ নির্ধারণ এবং জরিপের সহিত যুক্ত পূর্ববর্তী সকল কার্যক্রম।
'রায়তিস্বত্ব' উপরে বর্ণিত এস্টেটসমূহের ব্যতিক্রম ব্যতীত এবং যাহাদের কেবল দখলের অধিকার রহিয়াছে, ঐ সকল রায়ত ব্যতীত জমিতে সকল স্থায়ী স্বার্থ বুঝাইবে; সকল ঘাটওয়ালী জমিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
'রায়ত' বলিতে সকল বা যেই কোনো জমির মালিককে বুঝাইবে;
'জমিদার' বলিতে কোনো এস্টেটের সকল বা যেই কোনো মালিককে বুঝাইবে।
দ্বিতীয় খন্ড
জরিপ সংক্রান্ত
ধারা-৩। ( সরকার জরিপের আদেশ প্রদান করিতে পারিবেন ) :
সরকার প্রয়োজন মনে করিলে কোনো জেলা বা জেলার অংশ বা দেশের কোনো অঞ্চলে জরিপের আদেশ প্রদান করিতে পারিবেন এবং জরিপের মাধ্যমে সকল এস্টেট, রায়তিস্বত্ব, মৌজা অথবা মাঠের সীমানা চিহ্নিতকরণের আদেশ দিবেন ।
ধারা-৪। (সরকার জরিপ তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ করিতে পারিবেন ) :
পূর্ববর্তী ধারায় প্রদত্ত জরিপ আদেশ অনুসারে জরিপ কার্য পরিচালনার জন্য অথবা এ আইনের যেই কোনো বা সকল উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার জরিপ তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ করিতে পারিবেন, যিনি এই আইনের অধীন কালেক্টরের সকল বা যেই কোনো ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবেন; এবং সরকার এক বা একাধিক সহকারী তত্ত্বাবধায়ক এবং ডেপুটি কালেক্টর নিয়োগ করিতে পারিবেন, যাহারা এই আইনের অধীনে কালেক্টরের সেই সকল ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবেন, যেই সকল ক্ষমতা কালেক্টর বা জরিপ তত্ত্বাবধায়ক কর্তৃক তাহাদের প্রদত্ত হইবে এবং অন্যভাবে নহে ।
তবে শর্ত থাকে যে, দেশের কোনো অঞ্চলের জন্য জরিপ তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ করা সত্ত্বেও সরকার কালেক্টরকে এই আইনের অধীন উক্ত অঞ্চলের যেই কোনো দায়িত্ব প্রদান করিতে পারিবেন ।
ধারা-৫। ( কালেক্টর জমিতে প্রবেশের পূর্বে ঘোষণাপত্র প্রকাশ করিবেন ) :
কোনো জমিতে জরিপের উদ্দেশ্যে প্রবেশের পূর্বে যেই জমিতে জরিপ করা হইবে, তাহার মালিকের প্রতি, সংলগ্ন জমির মালিকের প্রতি এবং নিয়োগপ্রাপ্ত সকল ব্যক্তি বা তাহার ব্যবস্থাপনার সহিত জড়িত ব্যক্তি বা এই জমির সহিত অন্য কোনোভাবে সম্পর্কযুক্ত ব্যক্তিগণকে ব্যক্তিগতভাবে বা প্রতিনিধির মাধ্যমে কালেক্টর বা কালেক্টর কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সম্মুখে ঘোষণাপত্রে উল্লিখিত স্থান ও সময়ে তাহাদের ভূমির সীমানা চিহ্ন দেখাইয়া দেওয়ার জন্য এবং এইরূপ সীমানা নির্ধারণ ও সংশোধনে সহায়তা করিবার স্বার্থে উপস্থিত হওয়ার জন্য ঘোষণাপত্র জারি করিবেন ।
এইরূপ ঘোষণাপত্রে অনুলিপি প্রেরণ করিতে হইবে-
(১) জরিপের জমি যেই জেলায় অবস্থিত বলিযা জ্ঞাত, সেই জেলার জজকোর্ট এবং কালেক্টরের কার্যালয়ে;
(২) জরিপের জমি যেই অধিক্ষেত্রের মধ্যে অবস্থিত বলিয়া জ্ঞাত, সেই অধিক্ষেত্রের প্রত্যেক উপবিভাগীয় কার্যালয়, পুলিশ স্টেশন, মুন্সেফ কোর্ট এবং সাব-রেজিস্টারের অফিসে; এবং
(৩) কালেক্টর যেইরূপ সমীচিন মনে করিবেন, সেইরূপ স্থান বা স্থানসূমহে।
ধারা-৬। (কালেক্টর জমিতে প্রবেশ করিতে পারিবেন ) :
ঘোষণাপত্র জারির পর কালেক্টর এবং তাহার অধীনস্থ ক্ষমতাপ্রাপ্ত যেই কোনো ব্যক্তি জমিতে প্রবেশ করিতে পারিবেন এবং জরিপের ও সীমানা চিহ্নিতকরণের জন্য সকল কাজ ও প্রয়োজনীয় তদন্ত করিতে পারিবেন ।
ধারা-৭। (কালেক্টর বিশেষ নোটিশ জারি করিতে পারিবেন) :
কালেক্টর উপরে উপরিল্লিখিত যেই কোনো বিষয়ের প্রয়োজনে কোনো ব্যক্তিকে তাহার অথবা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তির নিকট নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে, যাহা নোটিশ জারির পনেরো দিনের কম নহে, হাজির হইবার জন্য বিশেষ নোটিশ জারি করিতে পারিবেন; এবং যাহার উপর এইরূপ বিশেষ নোটিশ জারি হইবে, তিনি নোটিশের চাহিদামতো হাজির হইতে এবং ৫ ধারা অনুসারে যেই কোনো কার্য করিতে এবং প্রয়োজনীয় যেই কোনো তথ্য, তিনি যতটুকু জানে, দিতে বাধ্য থাকিবেন।
ধারা-৮। (কালেক্টর সরবরাহকৃত মালামাল ও শ্রমের মূল্য প্রদান করিবেন) :
৫ ধারার যেই কোনো উদ্দেশ্যে কোনো মালামাল বা শ্রম সরবরাহ করা হইলে, কালেক্টর বা অধিযাপনকারী কর্মকর্তা এইরূপ মালামাল বা শ্রম সরবরাহকারীকে অবিলম্বে মূল্য পরিশোধ করিবেন।
ধারা-৯। (কালেক্টর দখলকারকে সীমানা রাখিয়া পরিষ্কার করিতে বলিতে পারিবেন) :
কালেক্টর বা কালেক্টর কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য কোনো জরিপ কর্মকর্তা বিশেষ নোটিশের মাধ্যমে কোনো জমির দখলকারকে জরিপের স্বার্থে প্রয়োজন হইলে গাছ, জঙ্গল, বেড়া বা ফসল কাটিয়া বা সরাইয়া সীমানা রেখা বা অন্য কোনো রেখা পরিষ্কার করিতে বলিতে পারিবেন।
ধারা-১০। (ক্ষতিপূরণ) :
পূর্ববর্তী ধারার অধিযাচন অনুসারে কোনো রেখা পরিষ্কারের জন্য যদি কোনো ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়, তাহা হইলে কালেক্টর যেই কোনো গাছ, জঙ্গল, বেড়া বা ফসলের প্রাক্কলিত মূল্য এবং প্রকৃতি নির্ধারণ ও লিপিবদ্ধ করিবেন এবং মালিককে তাহা পালন করিবার জন্য প্রয়োজনীয় খরচসহ উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করিবেন।
ধারা-১১। (আমিন বা জরিপ কর্মকর্তা নকশা বা কাগজপত্রে স্বাক্ষর করিবার জন্য লোকজনকে ডাকিতে পারিবেন) :
আমিন বা জরিপ কর্মকর্তা কোনো গ্রাম বা সুবিধামতো অঞ্চলের নকশা প্রণয়ন সম্পন্ন করিয়া এই সংক্রান্ত নকশা ও কাগজপত্র কালেক্টরের নিকট প্রেরণের পূর্বে, যাহাদের উপস্থিতি প্রয়োজন, তাহাদের নাম উল্লেখপূর্বক একটি সাধারণ নোটিশ গ্রামের সুবিধাজনক স্থানে টাঙঙ্গাইয়া দিবেন এবং যেই সকল ব্যক্তি গ্রামের বা কোনো এলাকার সীমানা চিহ্নিত করিয়াছিল, তাহাদেরকে নোটিশ জারির তিনদিনের মধ্যে তাহার নিকট হাজির হইয়া নকশা, ফিল্ড বই এবং এই জাতীয় কাগজপত্র পরিদর্শন করিবার জন্য ডাকিবেন। তাহারা এই ম্যাপ বা কাগজে স্বাক্ষর করিয়া প্রত্যয়ন করিবে যে, নকশায় তাহাদের দেখাইয়া দেয়া অনুসারে সীমানা অঙ্কন করা হইয়াছে; এবং এইভাবে তলবকৃত প্রত্যেক ব্যক্তি নকশা ও দলিলপত্র পরিদর্শনের জন্য আমিন বা জরিপ কর্মকর্তার সম্মুখে হাজির হইতে আইনত বাধ্য থাকিবে।
আপত্তির বিবরণ : যাহাকে তলব করা হইয়াছে, এমন ব্যক্তি নকশা ও দলিলপত্রে স্বাক্ষর প্রদানে আপত্তি দিতে চাহিলে লিখিতভাবে দিতে হইবে এবং এইরূপ আপত্তি উক্ত গ্রাম বা এলাকার নকশার সহিত সংযুক্ত করিয়া কালেক্টরের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।
নকশা বা কাগজপত্রে স্বাক্ষরের ফলাফল : এই ধারামতে নকশা বা দলিলপত্র সংযুক্ত কোনো স্বাক্ষরের দ্বারা ইহা বুঝাইবে যে, স্বাক্ষর দানকারী যেইভাবে চিহ্নিত করিয়াছেন, সেইভাবেই নকশায় তাহা উপস্থাপিত হইয়াছে এবং এইরূপ স্বাক্ষরের কারণে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পরবর্তী ধারা অনুসারে কালেক্টরের নিকট অন্য কোনো কারণে সীমানা সম্পর্কে আপত্তি দায়েরের ক্ষমতা ক্ষুন্ন হইবেনা।
ধারা-১২। (নকশা প্রাপ্তির পর কালেক্টর তাহার কার্যালয়ে প্রজ্ঞাপন টাঙ্গাইবেন) :
কালেক্টরের কার্যালয়ে নকশা বা সীমানা সংক্রান্ত কাগজপত্র পৌছাইবার পর কালেক্টর তাহার নিজের কার্যালয়ে এবং যাহা তিনি সঙ্গত মনে করিবেন, এইরূপ স্থানে প্রজ্ঞাপন লটকাইয়া নকশা ও মৌজা বা কোনো এলাকার সীমানা সংক্রান্ত কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তির পরির্দশনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হইয়াছে মর্মে জারি করিবেন; এবং কোনো ব্যক্তির কোনো আপত্তি থাকিলে প্রজ্ঞাপন জারির ছয় সপ্তাহের মধ্যে আপত্তি দাখিল করিবার নির্দেশ দিবেন, যেই সময়ের পর কালেক্টর জরিপের প্রয়োজনে চিহ্নিত সীমানা দৃঢ়করণ করিবেন।
কালেক্টর যখন বিশেষ নোটিশ ইস্যু করিবেন : যখন কালেক্টরের বিশ্বাস করিবার কারণ থাকে (হয় কোনো ব্যক্তি বা তাহার প্রতিনিধি নকশা এবং কাগজপত্রে জরিপ কর্মকর্তার নির্দেশমতো পূর্ববর্তী ধারার অধীনে স্বাক্ষর করিতে ব্যর্থ হয় অথবা অন্য কোনো কারণে) যে, স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা জমিদার কাগজে সীমানা যেইভাবে অাঁকা হইয়াছে বা উপস্থাপিত হইয়াছে, সেই বিষয়ে আপত্তি দিতে চাহে।
এইরূপ জমিদার বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য কোনো ব্যক্তির সম্মুখে হাজির হইতে বলিবেন, একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যাহা নোটিশ জারি হইতে এক মাসের কম হইবে না, হাজির হইয়া এই আইনের অধীনে প্রস্তুত নকশা ও অন্যান্য কাগজপত্রের সঠিকতা সম্পর্কে কোনো আপত্তি থাকিলে লিখিতভাবে জানাইবার জন্য কালেক্টর একটি বিশেষ নোটিশ জারি করিবেন।
এইরূপ নির্দিষ্ট সময়ে কোনো ব্যক্তি হাজির হইতে এবং নকশা ও কাগজপত্রে স্বাক্ষর দিতে বা লিখিত আপত্তি দিতে ব্যর্থ হইলে, কালেক্টর জরিপ ও আইনের উদ্দেশ্যে প্রণীত নকশা ও কাগজপত্র চূড়ান্তকরণের জন্য অগ্রসর হইবেন।
তবে শর্ত থাকে যে, বর্ণিত সময়ের মধ্যে যদি কোনো ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি নকশা ও কাগজপত্রের অনুলিপি গ্রহণের জন্য কালেক্টরের নিকট খরচ দাখিল করিয়া থাকে, তাহা হইলে কালেক্টর উক্ত অনুলিপি প্রস্তুতের আদেশ দিবেন এবং তাহার অফিসে নোটিশ জারির মাধ্যমে উক্ত প্রতিনিধিকে নোটিশে উল্লিখিত, তবে জারির তারিখ হইতে পনেরো দিনের কম নহে, সময়ের মধ্যে স্বাক্ষর বা লিখিত আপত্তি দেয়ার সুযোগ দিবেন।
এই ধারামতে কোনো লিখিত আপত্তি দাখিল হইলে, কালেক্টর প্রয়োজন মনে করিলে পুনরায় তদন্ত করিয়া, যেইরূপ সঙ্গত মনে করিবেন, সেইরূপ আদেশ দিবেন এবং যদি প্রাপ্ত আপত্তি তদন্ত করিয়া যুক্তিসঙ্গত মনে না হয়, তাহা হইলে আপত্তিকারীর নিকট হইতে এইরূপ পুনরায় তদন্তের জন্য ব্যয় আদায়ে নির্দেশ দিবেন।
ধারা-১৩। (পরে আপত্তি প্রদানকারীকে পুনরায় তদন্তের খরচ জমা দিতে হইবে) :
পূর্ববর্তী ধারার বিশেষ নোটিশ ও বিজ্ঞপ্তি অনুসারে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো ব্যক্তি নকশা দেখিতে ও কাগজপত্র স্বাক্ষর করিতে বা লিখিত আপত্তি দাখিল করিতে ব্যর্থ হইলে, কালেক্টর কর্তৃক জরিপের উদ্দেশ্যে সীমানা চূড়ান্তকরণের পূর্বে যেই কোনো সময়, ম্যাপ ও কাগজপত্রের সঠিকতা সম্পর্কে লিখিত আপত্তি দাখিল করিতে পারিবেন।
তাহার আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে পুনঃতদন্তের প্রয়োজন হইলে কালেক্টর তাহাকে প্রয়োজনীয় খরচ জমা দিতে নির্দেশ দিবেন; এবং উক্ত ব্যক্তি কালেক্টর কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় খরচ দিতে ব্যর্থ হলে, এই আইনের উদ্দেশ্যে সাধারণভাবে ধরিয়া নেয়া হইবে যে, তিনি নকশা ও কাগজপত্রের সঠিকতা মানিয়া লইয়াছেন।
যদি কোনো আপত্তিকারী তদন্তের প্রয়োজনীয় খরচ জমা দেন, তবে কালেক্টর উক্ত খরচে পুনরায় তদন্ত করাইবেন এবং যদি কালেক্টর আপত্তি যুক্তিসঙ্গত মনে না করিয়া থাকেন, তাহা হইলে উক্ত তদন্ত অনুষ্ঠানের জন্য কালেক্টর বা অন্য কোনো ব্যক্তি কর্তৃক যেই খরচ হইবে, তাহা জমাকৃত টাকা অপেক্ষা অর্ধেক হইলে উক্ত অতিরিক্ত টাকা আদায়ের নির্দেশ দিবেন।
তবে শর্ত থাকে যে, নির্ধারিত সময়ের পরে আপত্তিকারী যেই কোনো ব্যক্তির নিকট এইরূপ পরবর্তী আপত্তির বিষয়ে পুনরায় তদন্ত অনুষ্ঠানের পূর্বে কোনো অবস্থাতেই খরচ আদায় করা যাইবে না।
দ্বিতীয় ক-খন্ড
ধারা-১৩ক। (সরকার নদী তীর ক্ষয়, বৃদ্ধি এবং নতুন উদ্ভবকৃত জমি জরিপের জন্য আদেশ দিতে পারিবেন) : সরকার প্রয়োজন মনে করিলে কোনো নদী তীর ক্ষয় অথবা বৃদ্ধি নির্ধারণ, সময়ে সময়ে নদীজনিত কারণে জমির পুনঃউদ্ভব বা নতুন জমির উদ্ভব নির্ধারণের জন্য কোনো [/siz