Daffodil Computers Ltd.

E-Health / Protect Your Health => For All / Others => Topic started by: bbasujon on January 13, 2012, 06:19:23 PM

Title: বলশক্তি শরীরে বাড়ুক সহজে
Post by: bbasujon on January 13, 2012, 06:19:23 PM
বেলা তিনটা বাজতে না বাজতেই চোখে ঘুম নামে। মনে হয় শরীরে কোনো বলশক্তি নেই।
এমন ক্লান্তি শরীর বেয়ে নামলে সমাধানের জন্য ক্যান্ডিবার, এক কাপ কফি, চা বা এনার্জি ড্রিংক ঠিক নয়। চিনি ও ক্যাফিন অবিলম্বে একটু জড়তা কাটাতে সাহায্য করবে এবং সামান্য চাঙা করবে ক্ষণকালের জন্য, কিন্তু এরপর একসময় আবার মিইয়ে যাবে শরীর, মনে হবে নিঃশক্তি।

কী করে উজ্জীবিত করা যায় শরীর? ১০ মিনিটেই
১. নিয়মিত প্রাতরাশ খেতে হবে: দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার বটে। একটি ভালো ও পুষ্টিকর প্রাতরাশ থেকে পাওয়া যায় সারা দিনের সজাগ, অফুরন্ত শক্তি কাজের জন্য। যাঁরা প্রতিদিন নিয়মিত প্রাতরাশ করেন এবং যাঁরা সকালবেলা কোনো কিছু খান না—এদের তুলনায় ক্লান্তির অভিযোগ করেন অনেক কম এবং চাপগ্রস্তও হন কম। প্রাতরাশে মিষ্টি-মিঠাই, পেস্ট্রি না খেয়ে আঁশ সমৃদ্ধ খাবার যেমন আটার রুটি, সবজি, ডিমের সাদা অংশের অমলেট, দধি—এসব খেলে শরীরে শক্তি থাকে অনেক বেশিক্ষণ। মাঝেমধ্যে গরম ওটমিলও খেতে পারেন। পপকর্ন, দুধ, খই, দধি বেলা যত বেশি হবে, ক্ষুধা খুব বেশি ঠেকাবে এই ভালো প্রাতরাশ।
২। যোগব্যায়াম করতে পারেন: ইয়োগার স্বাস্থ্যহিতকরী অনেক গুণই আছে, নানা দেহভঙ্গি, শ্বাসক্রিয়া, ব্যায়াম, প্রানায়াম, ধ্যানচর্চা ক্লান্তি এড়াতে বড় হাতিয়ার।
৩। সংগীতে ক্লান্তি যায় ধুয়ে মুছে: ধাবাজলে গা ধুতে ধুতে গুন গুন গান গাইতে দেখা যায় অনেককে। গুন গুন গানে বা স্নানঘর সংগীতে মন হয় বড় চাঙ্গা, উচাটন না হলেও উদ্দীপ্ত হয়। হ্রাস পায় দেহের স্ট্রেস হরমোন মান। তাই হাতে নিন চুলের ব্রাশ, ধরুন প্রিয় সংগীতের কলি, ভাজুন গুন গুন করে। যাবে দিনের ক্লান্তি ভুলে…।
৪। এক গ্লাস জল পান: শরীর চায় দেহের তরল যেন কাজকর্ম করে ঠিকঠাক। শরীর থেকে তরল হানি তো হচ্ছেই, শ্বাসক্রিয়ার সময়, ঘামের সময়, প্রস্রাবের সময়। এই তরল পূরণ করা চাই, তা না হলে শরীর হবে জলশূন্য এবং নিঃশেষিত প্রায়।
প্রতিদিন আট গ্লাস জল পান করতেই হবে, তা কেন? তবে শরীরকে সচল রাখার জন্য প্রচুর পানি পান করা চাই। যখন দেখা যাবে পিপাসা লাগছে না, প্রস্রাবের রং হালকা, তাহলে ঠিক আছে। সঙ্গে থাকবে জলের বোতল বাইরে বেরুলে।
৫। বাদাম খেলে ভালো: এক মুঠ আখরোট বা বাদাম, এতে আছে অনেক ম্যাগনেশিয়াম ও ফলিক এসিড, শক্তি উৎপাদনের জন্য।
৬। দারচিনি: দারচিনি দ্বীপের ভেতরে ঢোকার প্রয়োজন নেই। এর সুবাস এনার্জিকে তুলে দেয় উঁচুতে।
৭। সিঁড়ি বেয়ে উঠুন: লিফট নয়, সিঁড়ি বেয়ে উঠুন উঁচু তলায়। ব্যায়াম হলো বলবর্ধক, উজ্জীবক—যে ব্যায়ামই হোক। অক্সিজেনপূর্ণ রক্ত শরীরের মধ্য দিয়ে ধাবিত হয়ে পৌঁছাবে হূৎপিণ্ড, পেশি ও মগজে। সময় দিনে একটু ব্যায়াম করলে অনেক লাভ। মাত্র ১০ মিনিট ব্যায়ামে দিলেও এনার্জি মান যাবে তুঙ্গে। তাই উঠে দাঁড়ান, শরীরচর্চা করুন, যখনই সময় পান।
৮। আসুক রোদের আলো: রোদেলা দিনে যখন বাইরে যাবেন, মন ভালো হয়ে যাবে। উঁচুতে উঠবে এনার্জি লেভেল। কয়েক মিনিট যদি হাঁটেন নরম রোদে পরিষ্কার দিনে, মন-মেজাজ হবে চাঙা। বাড়বে আত্মমর্যাদা। ‘এ যেন আপন হতে বাহির হয়ে বাইরে দাঁড়া/বুকের মাঝে বিশ্বলোকের পাবি সাড়া’ রবিঠাকুর সত্যি বলেছেন।
৯। মগজের জন্য চাই জ্বালানি: শরীরে ও রক্তে যখন গ্লুকোজের মান কমে, মাথা ঝিমঝিম করে, শরীর কাঁপে, মাথা নুইয়ে পড়তে চায়, তখন একটু স্ন্যাকস খেয়ে নিতে হয় উজ্জীবিত হওয়ার জন্য। যেসব স্ন্যাকসে আমিষ ও ধীরে দহন হওয়া শর্করা থাকে, সে রকম নাশতা রক্তে সুগার দীর্ঘকাল বজায় রাখার জন্য বেশ উপযোগী। যেমন—কলা, খই, দধি ও তাজা ফল।

বন্ধুত্ব করুন
আবেগ-অনুভূতি আশ্চর্য সংক্রামক। যেসব লোক খুব নেতিবাচক, সব সময় দুঃখের কথা বলেন, তাঁরা শুষে নেয় অপরের শক্তি। আর যাঁরা ইতিবাচক, হাসিখুশি, উদ্দীপক, তাঁদের সঙ্গে থাকলে নিজের এনার্জি লেভেল এমনিতে বেড়ে যায়। তাই এনার্জি চোষা বাদুড়দের থেকে দূরে থাকুন। যেসব বন্ধুর একই লক্ষ্য ও শখ আছে, তাঁদের সঙ্গে থাকুন।

অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী
পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস, বারডেম হাসপাতাল
সাম্মানিক অধ্যাপক, ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ১৬, ২০১১