Daffodil Computers Ltd.
E-Health / Protect Your Health => For All / Others => Topic started by: bbasujon on January 13, 2012, 04:55:05 PM
-
মন যদি হয় মেঘলা আকাশ। শ্রাবণের মেঘ। হতাশ মন। বিষণ্ন। তখন হয়তো প্রয়োজন হতে পারে পেশাদারি পরামর্শ। কিন্তু তবু এসব উপসর্গ একটু হালকা করতে সামান্য কিছু যদি করা যায়, মন্দ কী? ব্যায়াম, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন, এমনকি পোষা বিড়ালের সঙ্গে খুনসুটি মনমেজাজ হতে পারে চনমনে।
তুলতুলে মিনিটা বড় বন্ধু। ওকে জড়িয়ে ধরে খেলু খেলু করে মেজাজকে হালকা করেন অনেকে। শুধু তা কেন, অপরের জন্য কাজ করা, একটু খেয়াল করা অন্যদের, মনকে করে হালকা।
স্মার্ট খাওয়া। তুলে ধরে শরীর মন। মনের সঙ্গে শরীরের সম্পর্ক বড়ই নিবিড়। স্বাস্থ্যকর সুষম খাবার মেজাজ ভালো রাখতে বেশ কাজ দেয়। প্রচুর ফল, সবজি, মোটা শস্য উজ্জীবিত করে মনকে, শরীরকেও।
দেখা গেছে বিষণ্ন মনকে হালকা করতে ওমেগা ৩ মেদ-অম্ল ও বি১২ ভিটামিন কাজ দেয়। তৈলাক্ত মাছ যেমন স্যামন, ম্যাকরিল, টুনাতে আছে সেই মেদ-অম্ল। আমাদের দেশের সামুদ্রিক মাছে। তৈলযুক্ত মাছেও। ফ্ল্যাক্সসিড, বাদাম, সয়াবিন ও গাঢ় সবুজ শাকসবজিতেও।
সিফুড ও চর্বি কম দুধজাত দ্রব্যে আছে বেশ ভিটামিন বি১২। কট্টর নিরামিষভোজী যাঁরা মাছ মাংস একেবারে খান না এঁরা ফর্টিফাইড শস্য, দুধজাত দ্রব্য ও সাপ্লিমেন্ট থেকে পান বি১২।
মন তোলার জন্য লো-ফ্যাট শর্করা
‘সেরোটনিন’ নামে যে মগজের রাসায়নিক, মন ভালো করার জন্য এর অবদান অস্বীকার করার নয়। শর্করা খেলে মগজে সেরোটনিনের মান বাড়ে। লো-ফ্যাট শর্করা যেমন পপকর্ন, সেঁকা আলু, ক্রাকারস, প্যাস্টা। সবজি, ফল, গোটা শস্য থেকে আসে আঁশ।
ক্যাফেইন গ্রহণ করতে হবে কম,
দুই কাপ তো হয়েছে। তৃতীয় কাপ কেন? বেশি কফি খেলে মেজাজ যায় বিগড়ে, নার্ভাসও লাগে। উদ্বিগ্ন মনে হয়। তাই সোডা, কফি, কোলা কম গ্রহণ করলে মন ভালো হয়। রাতে ঘুমও হয় ভালো।
ব্যথা-বেদনার সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে বিষণ্নতা, মন খারাপ। তাই ব্যথার চিকিৎসা করলে মনও ভালো হয়।
চাই ব্যায়াম। ওষুধের চেয়েও ভালো কাজ করে ব্যায়াম। সে জন্য ম্যারাথন দৌড় দিতে হবে কেন? রমনার উদ্যানে জীবনসঙ্গী বা বন্ধুর সঙ্গে হাঁটুন ৪০ মিনিট। শরীর মন ভালো হবে। রাতে হবে ভালো ঘুম।
কেবল হাঁটা কেন? দৌড়াতে পারেন। সাইকেল চালানো। গলফ স্কিপিং ব্যাডমিন্টন। টেনিস। সাঁতার। বাগানে কাজ করা। যাই ভালো লাগে উপভোগ করা যায় এমন ব্যায়াম। একসঙ্গে অন্যদের সঙ্গেও ব্যায়াম করতে পারেন। রোদের আলো যেন বেশি পান। জানেন তো গাঢ় অন্ধকার দিনে মন খারাপ লাগে বেশি। রোদ উঠলে স্ফূর্তি। রোদেলা দিনে বের হবেন অবশ্য।
নিজের সৃজনশীল শক্তি আরও আবিষ্কার করুন। ছবি আঁকা, ছবি তোলা, গান করা, সেলাই ফোঁড়াই, লেখালেখি। মনের অনুভূতিকে নাড়া দেওয়া, অনুভূতিকে প্রকাশ করা। সৃজনশীল কর্ম করলে মন ভালো হয়। নিজের স্বপ্ন, এতে কি যে আনন্দ!
চাপ ও দুশ্চিন্তা বিষণ্নতাকে আরও গাঢ় করে তোলে। সেরে উঠতে সময় নেয়। মনকে শিথিল করলে রিলাক্স করতে পারলে শান্তি আসে মনে। তাই ধ্যানচর্চা ও যোগ ব্যায়াম। গান শোনা একান্তে। দীর্ঘক্ষণ স্নান।
সক্রিয়কর্মে ব্রতী হন।
কাজে জড়িয়ে পড়ার মধ্যে মনের আনন্দ। কোনো ভালো কাজে। একত্রে কয়েকজন মিলে, মন ভালো হবে।
জীবনে থাকুক বন্ধু, স্বজন
যারা অবলম্বন দেবে দুঃসময়ে। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিন, স্ফূর্তি করুন। বন্ধের দিন কাটান পরিবারের অন্যদের সঙ্গে। মন ভালো হবে।
চাই স্বাস্থ্যকর ঘুম।
সুনিদ্রা। নিটোল ঘুমে কাটে মনের মেঘ। রোদ ওঠে ঝিকমিক।
মদ্যপান ও ধূমপান বর্জন।
দেখবেন মন ভালো হবে।
বিষণ্নতার জন্য চিকিৎসা প্রয়োজন হলে তাও চালিয়ে যেতে হবে।
ডাক্তারের পরামর্শ তো আছেই।
অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী
পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস
বারডেম হাসপাতাল, সাম্মানিক অধ্যাপক ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, অক্টোবর ১২, ২০১১