Daffodil Computers Ltd.

E-Health / Protect Your Health => E- Health For Child => Topic started by: bbasujon on January 12, 2012, 07:51:41 AM

Title: অ্যালার্জি প্রতিরোধের সহজ কৌশল
Post by: bbasujon on January 12, 2012, 07:51:41 AM
সম্প্রতি অ্যাজমা বা অ্যালার্জি থেকে শিশুদের যাতে রক্ষা করা যায়, সে বিষয়ে ব্যাপক গবেষণা চলছে। অ্যাজমা বা অ্যালার্জির প্রাদুর্ভাব নির্ভর করে মুলত জেনেটিক এবং পরিবেশের ওপর। পরিবেশগত বিষয়গুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রেখে শিশুদের কীভাবে ভালো রাখতে পারি, সে ব্যাপারে কিছু আলোচনা করা হলো। একসময় শিশুদের অ্যাজমা/অ্যালার্জিতে তাদের খাদ্যাভ্যাসের প্রভাব নিয়ে বেশ বিতর্ক ছিল। সাম্প্রতিক সময়ের গবেষণায় অ্যাজমা/অ্যালার্জির সঙ্গে বাচ্চাদের খাদ্যাভ্যাসের সম্পর্ক বেশ ভালোভাবেই পরিলক্ষিত হয়েছে। যেসব শিশু নিয়মিত (৬ মাস) শুধু মায়ের বুকের দুধ পান করে, তাদের চেয়ে যারা টিনের কৌটার দুধ বা অন্যান্য ডেইরি দুধ পান করে, তাদের অ্যাজমা/অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি পরিলক্ষিত হয়।

পরিবারে বা বংশে অ্যাজমা/অ্যালার্জি আছে এমনসব শিশুদের নিয়ে একটি গবেষণা করা হয়। বিভিন্ন খাদ্যাভ্যাসের ওপর ভিত্তি করে এসব শিশুকে পাঁচটি গ্রুপে ভাগ করা হয় এবং তাদের ১৮ মাস বয়স পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করা হয়। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, যেসব শিশু শুধু বুকের দুধ পান করেছে (এবং যে সময় তাদের মায়েরা হাইপোঅ্যালার্জিক খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করেছেন), তাদের মধ্যে শতকরা বিশ ভাগ ছেলেমেয়ের ওপর গবেষণায় দেখা যায়, তাদের অ্যাজমা এবং একজিমা হয়। পরবর্তী গ্রুপ যারা নিয়মিত বুকের দুধ পান করেছে কিন্তু ওই সময় তাদের মায়েরা অ্যালার্জিক খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থেকেছে, তাদের শতকরা ৪০ ভাগ পরে অ্যাজমা, অ্যালার্জি, একজিমা ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হয়। যেসব শিশু মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি অন্যান্য টিনজাত দুধ বা খাদ্য গ্রহণ করেছে এবং তাদের মায়েরা খাদ্য গ্রহণে কোনো পরিবর্তন করেননি, তাদের শতকরা ৭০ ভাগ পরবর্তী সময়ে অ্যাজমা, অ্যালার্জি এবং একজিমাসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়।

এছাড়া যেসব শিশুকে খুব তাড়াতাড়ি শক্ত খাবারে অভ্যস্ত করানো হয়, তাদের অ্যাজমা/অ্যালার্জির ঝুঁকি বেশি। অ্যালার্জির ঝুঁকিময় শিশু বা যেসব শিশুর অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি, তাদের প্রথম ৪-৬ মাস শক্ত খাবার না দেয়াই ভালো এবং প্রথম ১২ মাস তাদের গরুর দুধ, বাদাম, ময়দা এবং মাছ না দেয়া ভালো। অনুরুপভাবে জন্মের পর কয়েক মাস যেসব শিশু ধুলোবালি, ধোঁয়া, পরাগ রেণু, মাইট, মোল্ড ইত্যাদির সংস্পর্শে আসে, তাদের পরবর্তী সময়ে অ্যাজমা, অ্যালার্জি, একজিমা ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই শিশুদের ধুলাবালি, ধোঁয়া, পরাগ রেণু, মাইট, মোল্ড ইত্যাদির সংস্পর্শে আসার আগেই ফিল্টার মাস্ক পরিধান করা উচিত। সুতরাং শিশুদের এসবের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য যেটা দরকার, সেটা হচ্ছে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ। যেখানে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, সেখানে বাধ্যতামুলক ফিল্টার মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। তাহলে অ্যালার্জি/অ্যাজমা থেকে অনেকটা রেহাই পাওয়া যাবে।

দৈনিক আমারদেশ, ১৬ ডিসেম্বর ২০০৭
লেখকঃ ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাস
লেখকঃ অ্যালার্জি ও অ্যাজমা রোগ বিশেষজ্ঞ, সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও বিভাগীয় প্রধান, অ্যালার্জি অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল ইমনোলজি বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, ঢাকা