Daffodil Computers Ltd.

E-Health / Protect Your Health => E- Health For Child => Topic started by: bbasujon on January 11, 2012, 06:48:48 PM

Title: মাথায় আঘাত থেকে খিঁচুনি
Post by: bbasujon on January 11, 2012, 06:48:48 PM
১৮ মাস বয়স দিয়ার। খুব শান্তশিষ্ট, হাসি-খুশি মেয়ে। বাবা-মার একমাত্র সন্তান। বাবা-মা উভয়ই চাকরি করেন। সে জন্য কাছেই নানুর বাবা, ওখানে রেখে যান। ওই দিন নানু একটা কাজে বাইরে যাবেন বলে বাসার কাজের মেয়ের কাছে রেখে যান। কিন্তু কাজে গিয়েও মা বারবার ফোনে দিয়ার খোঁজখবর নেন।
কাজ শেষে বাসায় ফিরে এসে দিয়াকে কোলে তুলে নেন, কিন্তু অন্য দিনের মতো দিয়া কথা বলছে না, বরং খ্যান খ্যান করছে। কাজের মেয়েকে জিজ্ঞাসা করায় জানাল, আপনি ছিলেন না, তাই ওর মন খারাপ। ওই দিন রাতে দিয়া বেশ কান্না করল। শরীরও হালকা গরম। দু-তিনবার পড়ে গেল হাঁটতে গিয়ে। পরের দিন সকাল থেকে দিয়ার খিঁচুনি শুরু হলো। তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নেওয়া হলো। খিঁচুনি কোনো ওষুধে কমছে না। তখন মাথার সিটিস্ক্যান করে জানা গেল, মাথার পেছনের ডান হাড়ের নিচে এবং ডান মগজের ভেতরে প্রচুর রক্তপাত। কিন্তু হঠাৎ করে এই রক্তপাতের কারণ কী? চিকিৎসকেরা বললেন, যেখানে রক্তপাত হয়েছে (সাবডুরাল, সব আরাকনয়েড ও সেরিব্রাল হেমোরেজ) তাতে মনে হচ্ছে, মাথার পেছনে আঘাত করায় এই রক্তপাত হয়েছে। কিন্তু কে আঘাত করেছে?
বাসায় এসে দেখে কাজের লোক উধাও। তাতে মনে হয়, কাজের মেয়েটা হয়তো মাথাটা ধরে দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা দিয়েছে।
যাহোক এক-দেড় মাস যমের সঙ্গে যুদ্ধ করে দিয়া বাসায় এল।
ছয় মাস পর মা খেয়াল করলেন, দিয়া মাঝেমধ্যে শূন্য দৃষ্টিতে একদিকে এক-দেড় মিনিট তাকিয়ে থাকে। মা অতটা আমল দেননি। একদিন দিয়ার জ্বর হলো। একটু পরেই দেখলেন, তার বাঁ পা থেকে খিঁচুনি শুরু হলো, তারপর সারা শরীরে খিঁচুনি ছড়িয়ে পড়ল।
আবার হাসপাতালে নেওয়া হলো। চিকিৎসক বললেন, ব্রেনের যেখানে রক্তপাত হয়েছিল, ওখানে একটা দাগ পড়েছে, সুতরাং ওখান থেকে খিঁচুনি হচ্ছে। ওই দাগ না মেলানো পর্যন্ত তাকে ওষুধ খেতে হবে। তার মানে তাকে দুই-তিন বছর ওষুধ খেতে হবে।

উপদেশ
 মাথার আঘাত থেকে ব্রেনে রক্তপাত হতে পারে এবং ওই স্থান থেকে খিঁচুনি হতে পারে।
 মাঝেমধ্যে একইভাবে একদিকে তাকিয়ে থাকাও এক ধরনের খিঁচুনি।
 যাদের খিঁচুনি হওয়ার সম্ভাবনা আছে, তাদের জ্বর হলেই খিঁচুনি হতে পারে। সুতরাং জ্বর কমিয়ে রাখুন।
 বাচ্চাকে কার কাছে রেখে যাচ্ছেন, সেদিকে খেয়াল করুন।

সেলিনা ডেইজী
সহযোগী অধ্যাপক,
নিউরোলজি বিভাগ ঢাকা মেডিকেল কলেজ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১০