Daffodil Computers Ltd.

E-Health / Protect Your Health => For All / Others => Topic started by: bbasujon on January 16, 2012, 05:13:41 PM

Title: ঘুম বাড়াবে স্মৃতিশক্তি
Post by: bbasujon on January 16, 2012, 05:13:41 PM
শরীরের স্বাভাবিক কাজকর্মের জন্য খাদ্য ও ব্যায়ামের মতো ঘুমও আবশ্যক। বস্তুত ঘুম দরকার বেঁচে থাকার জন্য। স্মৃতিশক্তি সংহত বা দৃঢ় করার জন্যও ঘুম চাই। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে পড়া বা শেখা বিষয়গুলোকে মনে রাখার জন্য ঘুম দরকার। ব্যাপারটি ছাত্রদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বলেন বোস্টনের হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের ঘুম গবেষক জেফরি এম ইলেনবোগেন।
সামনে পরীক্ষা। বইয়ের বিষয়গুলো পড়ছি, মুখস্থ করছি। পরীক্ষার সময় শেখা বা মুখস্থ বিষয়গুলো মনে আসতে হবে। এ জন্য বিষয়গুলো মস্তিষ্কে সংহত বা দৃঢ় হওয়া প্রয়োজন। নতুন কোনো বিষয় শেখার পূর্বশর্ত, তা মস্তিষ্কে স্থিত, সংহত বা দৃঢ় হওয়া। পড়া পড়ে মগজে ঢোকানো, পঠিত বিষয়গুলো মগজে স্থিত করা এবং পরে ব্যাপারগুলো মনে করতে পারা—এই তিনটি স্তরে ভাগ করা যেতে পারে কোনো কিছু শেখার ব্যাপারকে।
এর মধ্যে পড়া পড়ে মগজে ঢোকানো এবং পরে বিষয়গুলো মনে করতে পারা—এ দুটো স্তর সম্পন্ন হয় জেগে থাকা অবস্থায়। আর শেখা, পঠিত বা মুখস্থ বিষয় মগজে স্থিত হওয়ার ব্যাপারটি ঘটে ঘুমের সময়। ঘুমের সময় মগজ স্মৃতিশক্তিকে যে সংহত করে, তার প্রমাণ বেরিয়ে এসেছে ইলেনবোগেনের এক গবেষণায়। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে কারেন্ট বায়োলজির ১১ জুলাই ২০০৬ সংখ্যায়।
ইলেনবোগেন ঘুমের কোনো সমস্যা নেই এ রকম ১৮ থেকে ৩৯ বছর বয়সী ৪৮ জন স্বাস্থ্যবান লোকের ওপর গবেষণাটি পরিচালনা করেন। প্রথমে ওই ৪৮ জনকে দৈবচয়ন ভিত্তিতে সমান দুটি গ্রুপে ভাগ করে প্রত্যেককে দৈবচয়ন ভিত্তিতে ২০টি দুই শব্দবিশিষ্ট জিনিসের নাম, যেমন ‘ব্ল্যাংকেট অ্যান্ড ভিলেজ’, মুখস্থ করতে দেওয়া হয়।
একটি গ্রুপকে শব্দগুলো মুখস্থ করতে দেওয়া হয় রাত নয়টায়। তারপর তাদের ঘুমাতে দেওয়া হয় সাত ঘণ্টা। পরে ওই জোড়া শব্দগুলো তাদের মনে আছে কি না, সে পরীক্ষা নেওয়া হয় সকাল নয়টায়। অর্থাত্ মুখস্থ করার ১২ ঘণ্টা পর। অন্য গ্রুপকে শব্দগুলো মুখস্থ করতে দেওয়া হয় সকাল নয়টায়। তারপর ঘুমানো বা ঝিমোনোর সুযোগ না দিয়ে ঠিক ১২ ঘণ্টা পর রাত নয়টায় ওই জোড়া শব্দগুলো তাদের মনে আছে কি না, সে পরীক্ষা নেওয়া হয়। দেখা যায়, ঘুমের ফলাফল ভালো। যে গ্রুপ ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছে, সে গ্রুপ ঘুমহীন গ্রুপের চেয়ে পরীক্ষায় ১৩ শতাংশ ভালো করেছে। হাইফা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রেইন অ্যান্ড বিহেভিয়ার রিসার্চ সেন্টারের গবেষক আভি কারনি ও মারিয়া কোরমান তাঁদের গবেষণায় দেখেছেন, দিনের বেলায় ৯০ মিনিটের হালকা ঘুমও স্মৃতিশক্তিকে দীর্ঘস্থায়ী করতে সহায়ক। প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞানবিষয়ক জার্নাল ন্যাচার নিউরোসায়েন্সে, ২০০৮ সালের জানুয়ারি সংখ্যায়।
আরও অল্প ঘুমও স্মৃতিশক্তিকে কিছুটা সংহত করতে পারে। এমনকি ছয় মিনিটের ঘুমও স্মৃতিশক্তিকে সংহত করতে পারে—এ রকম ফলই পেয়েছেন জার্মানির ডুসেলডর্ফ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা তাঁদের গবেষণায়। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের নিউরনগুলো ঠিকমতো কাজ করতে পারে না, শেখা জিনিস মস্তিষ্কে সংহত হয় না।
ফলে আগের শেখা বিষয়গুলো আমরা ভালো মনে করতে পারি না। অতএব, মনে করার শক্তি বাড়ানোর জন্য ঘুম চাই।

মো. শহীদুল্লাহ্
কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ
কমিউনিটি বেজড্ মেডিকেল কলেজ ময়মনসিংহ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, নভেম্বর ২৫, ২০০৯