General Category > Law of Bangladesh

শিশু অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন

(1/4) > >>

bbasujon:
(১৯৭৪ সালের ৩৯ নম্বর আইন)

ঢাকা, ২২ জুন, ১৯৭৪

সংসদ কর্তৃক নিম্নলিখিত আইনটি ২১ জুন ১৯৭৪ তারিখে রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করিয়াছে এবং এতদ্বারা সর্বসাধারণের অবগতির জন্য প্রকাশ করা যাইতেছে :

শিশুদের হেফাজত, রক্ষণ ও পরিচালনা এবং বাল-অপরাধীদের বিচার ও সাজা সম্পর্কিত আইন একীভূত ও সংশোধনকল্পে প্রণীত আইন ৷

যেহেতু শিশুদের হেফাজত, রক্ষণ ও পরিচালনা এবং বাল-অপরাধীদের বিচার ও সাজা সম্পর্কিত আইন একীভূত ও সংশোধন করিবার জন্য এটি আইন প্রণয়ন সমীচীন ;

সেহেতু এতদ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :

প্রথম ভাগ

প্রাথমিক

 

১ ৷ সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন ৷ -
(১)    এই আইন শিশু আইন, ১৯৭৪ নামে অভিহিত হইবে ৷
(২)   

সরকার সরকারি গেজেটে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে যেইরূপ নির্ধারণ করিবেন সেইরূপ এলাকাসমূহে এবং সেই সকল তারিখে এই আইন বলবত্‍ হইবে ৷

২৷ সংজ্ঞাসমূহ ৷- বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-

(ক)' প্রাপ্ত বয়স্ক ' অর্থ এইরূপ ব্যক্তি যিনি শিশু নহেন ৷

(খ) অনুমোদিত আবাস ' অর্থ এইরূপ কোনো প্রতিষ্ঠান যাহা শিশুদেরকে গ্রহণ ও হেফাজত করিবার জন্য অথবা তাহাদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ নিরোধের উদ্দেশ্যে এবং উহার তত্ত্বাবধানে ন্যস্ত কোনো শিশুকে তাহার জন্মগত ধর্মের  বিধান মোতাবেক পালন করিবার বা করিবার সুযোগ প্রদানের জন্য কোনো সমিতি অথবা ব্যক্তিবর্গ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এবং সরকার কর্তৃক স্বীকৃত;

(গ) 'ভিক্ষা করা' অর্থ-

(অ)
   

গান গাওয়া, নাচ দেখানো, ভাগ্য গণনা করা, পবিত্র স্তবক পাঠ করা অথবা কলাকৌশল দেখানো, ভান করিয়া হউক বা না হউক, প্রভৃতি দ্বারা, কোনো প্রকাশ্য স্থানে ভিক্ষা চাওয়া বা গ্রহণ করা;

(আ)
   ভিক্ষা চাহিবার বা গ্রহণের উদ্দেশ্যে কোনো বেসরকারি আঙিনায় প্রবেশ করা

(ই)
   কোনো ক্ষত, ঘা, জখমী, বিকলাঙ্গতা, কিংবা ব্যধি, ভিক্ষা প্রাপ্তি বা আদায়ের উদ্দেশ্যে প্রদর্শন করা বা অনাবৃত করিয়া রাখা;

(ঈ)
   

জীবন ধারণের দৃশ্যতঃ কোনো উপায় নাই বলিয়া প্রকাশ্য স্থান সমূহে এইরূপ অবস্থায় ও পন্থায় ঘুরিয়া বেড়ানো বা অবস্থান করা যাহা দ্বারা বুঝা যায় এইরূপ ভাবেই ভিক্ষা চাহিয়া বা গ্রহণ করিয়া তিনি বাঁচিয়া আছেন, এবং

(উ)
   

 ভিক্ষা চাওয়া বা গ্রহণ করিবার উদ্দেশ্যে নিজেকে আলামত হিসাবে ব্যবহৃত হওয়ার জন্য অনুমতি দেওয়া,

(ঘ)
   

'প্রত্যয়িত ইনষ্টিটিউট' অর্থ সরকার কর্তৃক স্থাপিত কোনো প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান অথবা ১৯ ধারার অধীনে সরকার কর্তৃক প্রত্যয়িত কোনো প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, শিল্প বিদ্যালয় অথবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান;

(ঙ)
   

'প্রধান পরিদর্শক'  অর্থ ৩০ ধারার অধীনে নিয়োগ প্রাপ্ত প্রত্যয়িত ইনষ্টিটিউট সমূহের প্রধান পরিদর্শক;

(চ)
   

'শিশু' অর্থ ১৬ বত্সরের কম বয়স্ক কোনো ব্যক্তি এবং প্রত্যয়িত ইনিস্টিটিউটে বা অনুমোদিত আবাসে প্রেরিত অথবা আদালত কর্তৃক কোনো আত্নীয় বা অন্য উপযুক্ত ব্যক্তির হেফাজতে সোপর্দকৃত শিশুর ক্ষেত্রে সেই শিশু যে তাহার পূর্ণ সময়কাল আটক থাকে, উক্ত সময়ে তাহার বয়স ১৬ বত্‍সর পূর্ণ হইলেও;

(ছ)
   'কার্যবিধি'  অর্থ ১৯৯৮ সনের ফৌজদারি কার্যবিধি (১৮৯৮ সনের ৫ নং আইন);

(জ)
   

 ''অভিভাবক'' বলিতে কোনো শিশু কিংবা বাল-অপরাধীদের ক্ষেত্রে এইরূপ ব্যক্তি অর্ন্তভূক্ত যিনি আদালতের মতে, শিশু বা বাল-অপরাধী সম্পর্কে গৃহীত কার্যধারা মানিয়া লইতে উক্ত শিশু বা বাল-অপরাধীর যথার্থ দায়িত্ব অথবা নিয়ন্ত্রণের ভার সাময়িকভাবে গ্রহণ করেন;

(ঝ)
    ''কিশোর আদালত' অর্থ ৩ ধারার অধীনে প্রতিষ্ঠিত আদালত;

(ঞ)
   

''নিরাপদ স্থান'' বলিতে রিমান্ড হোম অথবা এইরূপ অন্য কোনো উপযুক্ত স্থান কিংবা প্রতিষ্ঠান অন্তর্ভূক্ত যাহার দখলদার বা ব্যবস্থাপক সাময়িকভাবে শিশুকে গ্রহণ করিতে ইচ্ছুক যেখানে অনুরূপ রিমান্ড হোম বা অন্য উপযুক্ত স্থান কিংবা প্রতিষ্ঠান নাই সেখানে, কেবল পুরুষ শিশুদের ক্ষেত্রে, এইরূপ ব্যবস্থা সম্পন্ন থানা যাহার মধ্যে শিশুগণকে অন্যান্য অপরাধী হইতে পৃথকভাবে হেফাজতে রাখার বন্দোবস্ত রহিয়াছে;

(ট)
    ''নির্ধারিত''  অর্থ এই আইনের অধীনে প্রণীত বিধি দ্বারা নির্ধারিত

(ঠ)
    ''প্রবেশন অফিসার''  অর্থ ৩১ ধারার অধীনে নিয়োগপ্রাপ্ত-প্রবেশন অফিসার;

(ড)
   

 ''তত্ত্বাবধান'' অর্থ শিশুর পিতা-মাতা, অভিভাবক, আত্নীয় কিংবা কোনো উপযুক্ত ব্যক্তি কর্তৃক শিশুর যথাযথ দেখাশুনা ও হেফাজত নিশ্চিত করিবার উদ্দেশ্যে কোনো প্রবেশন অফিসার বা অন্য কোনো ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে শিশুকে ন্যস্ত রাখা; এবং

(ণ)
    ''বাল-অপরাধী'' অর্থ এইরূপ কোনো শিশু যাহাকে অপরাধ করিতে দেখা গিয়াছে ৷

bbasujon:
দ্বিতীয় ভাগ

এই আইনের অধীন এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতসমূহের ক্ষমতা ও দায়িত্ব

ধারা-৩: কিশোর আদালতসমূহ

কার্যবিধিতে কোনো কিছু থাকা সত্ত্বেও সরকার গেজেট বিজ্ঞপ্তি দ্বারা কোনো স্থানীয় এলাকার জন্য এক বা একাধিক কিশোর আদালত প্রতিষ্ঠা করতে পারিবেন ।

ধারা-৪: কিশোর আদালতের ক্ষমতা প্রয়োগের এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতসমূহ

এই আইন দ্বারা ,কোনো কিশোর আদালতের উপর অর্পিত ক্ষমতা সমূহ প্রয়োগ করিতে পারিবেন-
(ক)    হাইকোর্ট বিভাগ
(খ)    দায়রা আদালত
(গ)    অতিরিক্ত দায়রা জজ এবং সহকারী দায়রা জজের আদালত
(ঘ)    মহাকুমা ম্যাজিস্ট্রেট, এবং
(ঙ)    প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট

তাহা, মূল মামলার বিচারিক আদালত বা আপীল আদালত অথবা পুনর্বিচারের এখতিয়ার সম্পন্ন আদালত যাহাই হোক না কেন ।

ধারা-৫: কিশোর আদালতের ক্ষমতাসমূহ, প্রভৃতি

(১) কোনো স্থানীয় এলাকার জন্য কিশোর আদালত গঠন করা হইলে এইরূপ আদালত অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত কোনো শিশুর সকল মামলার বিচার করিবেন এবং এই আইনের অধীনে অন্যান্য সকল কার্যধারার কাজকর্মও নিষ্পত্তি করিবেন ,কিন্তু এই আইনের ৬ষ্ঠ ভাগে উল্লিখিত কোনো অপরাধের জন্য অভিযুক্ত কোনো প্রাপ্ত বয়স্কের মামলার বিচার করিবার ক্ষমতা এইরূপ আদালতের থাকিবে না ।

(২) কোনো স্থানীয় এলাকার জন্য কিশোর আদালত গঠন করা না হইলে ,কোনো অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত শিশুর বিরুদ্ধে আনীত কোনো মামলার বিচার করা অথবা এই আইনের অধীন অন্য কোনো কার্যধারার কাজকর্ম বা নিষ্পত্তি করার ক্ষমতা প্রদত্ত আদালত ব্যতীত অন্য কোনো আদালতের থাকিবে না ।

(৩) কোনো কিশোর আদালত অথবা ৪ ধারার অধীনে ক্ষমতাপ্রাপ্ত দায়রা আদালতের অধস্তন কোনো আদালতের নিকট যখন প্রতীয়মান হয় যে,কোনো শিশু যে অপরাধে অভিযুক্ত হয়েছে তাহা কেবল দায়রা আদালতেই বিচার্য ,তখন উহা মামলাটি অবিলম্বে দায়রা আদালতে ,এই আইনে বিবৃত পদ্ধতিতে বিচারের জন্য বদলী করিবেন ।

ধারা-৬: শিশু ও প্রাপ্ত বয়স্কের একত্রে বিচার অনুষ্ঠিত হইবে না

(১) কার্যবিধির ২৩৯ ধারা বা আপাততঃ বলবত্ অন্য কোনো আইনে কোনো কিছু থাকা সত্ত্বেও কোনো শিশুকে কোনো প্রাপ্ত বয়স্কের সঙ্গে কোনো অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত বা বিচার করা চলিবে না ।

(২) যদি কার্যবিধির ২৩৯ ধারা বা আপাততঃ বলবত্‍ অন্য কোনো আইনের অধীনে অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত কোনো শিশুকে প্রাপ্ত বয়স্কের সঙ্গে বিচার করা যাইত কিন্তু (১) উপ-ধারার  বিধানাবলীর কারণে তা করা যায় না ,তাহা হইলে আদালত উক্ত অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ করিয়া উক্ত শিশুর এবং উক্ত প্রাপ্ত বয়স্কের বিচার পৃথকভাবে করিবার নির্দেশ দিবেন ।

ধারা-৭: কিশোর আদালতের অধিবেশন, প্রভৃতি

(১) কিশোর আদালত নির্ধারিত স্থানে, দিনে এবং পদ্ধতিতে উহার অধিবেশন বসিবে ।

(২) কোনো শিশু অভিযুক্ত রহিয়াছে এমন কোনো মামলার বিচারের ক্ষেত্রে , আদালত যে ভবনে বা কামরায় ,যে দিবসে বা যে সময়ে সাধারণত অধিবেশন বসে, তত্‍ ভিন্ন অন্য কোনো ভবন বা কামরায় অথবা অন্য কোনো দিবসে বা সময়ে অধিবেশন বসিবে ।

ধারা-৮ : দায়রার বিচার্য মামলায় প্রাপ্ত বয়স্ককে দায়রায় সোপর্দ করিতে হইবে

(১) কোনো শিশু কোনো অপরাধ সংঘটনের দায়ে কোনো প্রাপ্ত বয়স্কের সহিত একত্রে অভিযুক্ত হইলে এবং উক্ত অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণকারী আদালতের মতে মামলাটি দায়রা আদালতে প্রেরণের উপযুক্ত বলিয়া প্রতীয়মান হইলে,আদালত মামলাটির শিশু সর্ম্পকিত অংশ উহার প্রাপ্তবয়স্ক সর্ম্পকিত অংশ হইতে পৃথক করিয়া ফেলিবার  পর নির্দেশ দিবেন যে, শুধুমাত্র প্রাপ্ত বয়স্ককে দায়রা আদালতে বিচারের জন্য সোপর্দ করিতে হইবে ।

(২) অতঃপর শিশু সর্ম্পকিত মামলাটি উক্ত স্থানীয় এলাকার জন্য কোনো কিশোর আদালত থাকিলে , উক্ত আদালতে অথবা না থাকিলে এবং উক্ত অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণকারী আদালত ৪ ধারার অধীনে ক্ষমতাপ্রাপ্ত না হইয়া থাকিলে ৪ ধারার অধীনে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো আদালতে বদলী করিতে হইবে ।

তবে শর্ত থাকে যে, শিশু সর্ম্পকিত মামলাটি যদি কার্যবিধির দ্বিতীয় তফসিল অনুসারে শুধুমাত্র দায়রা আদালতে বিচার্য হয় তাহা হইলে ৫ (৩) ধারার অধীনে দায়রা আদালতে বদলী করিতে হইবে ।

ধারা-৯: কিশোর আদালতে উপস্থিত ব্যক্তিগণ

এই আইনের বিধান ব্যতীত ,নিম্নলিখিত ব্যক্তিগণ ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি কিশোর আদালতের এজলাসে উপস্থিত থাকিবেন না :
(ক)    আদালতের সদস্যগণ ও অফিসারগণ;
(খ)    আদালতের উত্থাপিত মামলা অথবা কার্যধারার পক্ষগণ এবং পুলিশ অফিসারগণ মামলা অথবা কার্যধারার সহিত সরাসরি সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তিগণ;
(গ)    শিশুর পিতামাতা অথবা অভিভাবক; এবং
(ঘ)    উপস্থিত হইবার জন্য আদালত কর্তৃক বিশেষভাবে অনুমোদিত অন্যান্য ব্যক্তিগণ ।

ধারা-১০: আদালত হইতে যে সকল ব্যক্তি প্রত্যাহারিত হইবেন

কোনো মামলা বা কার্যধারার শুনানীর কোনো পর্যায়ে আদালত যদি শিশুটির স্বার্থে তাহার পিতামাতা, অভিভাবক অথবা দম্পত্তি অথবা শিশু নিজে সমেত কোনো ব্যক্তিকে আদালত হইতে প্রত্যাহার করা সমীচীন মনে করেন তাহা হইলে আদালত এইরূপ প্রত্যাহারের নির্দেশ দিবেন এবং অনুরূপ ব্যক্তিগণ আদালত ত্যাগ করিবেন ।

ধারা-১১: হাজিরা হইতে শিশুর অব্যাহতি

কোনো মামলা বা কার্যধারার শুনানীর কোনো পর্যায়ে আদালত যদি উক্ত শুনানীর উদ্দেশ্যে শিশুটির হাজির থাকা অনাবশ্যক বলিয়া মনে করেন, তবে আদালত তাহাকে হাজিরা হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে এবং তাহার অনুপস্থিতিতেই উক্ত মামলা বা কার্যধারার শুনানী চালাইয়া যাইতে পারিবেন ।

ধারা-১২: শিশুর সাক্ষ্য প্রদানকালে কতিপয় ব্যক্তির আদালত হইতে প্রত্যাহার

শালীনতা অথবা নৈতিকতা বিরোধী কোনো অপরাধ সংক্রান্ত মামলা বা কার্যধারার শুনানীর কোনো পর্যায়ে যদি কোনো শিশুকে সাক্ষী হিসেবে তলব করা হয়, তবে উক্ত মামলা বা কার্যধারার শুনানীকারী আদালত উহার মতে উপযুক্ত ব্যক্তিগণকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিবেন এবং তদনুসারে তাহারা প্রত্যাহার হইবেন । তবে উক্ত মামলা বা কার্যধারার পক্ষগণ, তাহাদের আইন-উপদেষ্টাগণ এবং মামলা বা কার্যধারা সংশ্লিষ্ট অফিসারগণকে এই ধারার অধীনে প্রত্যাহার করিতে হইবে না ।

ধারা-১৩ : অভিযুক্ত শিশুর পিতা-মাতার আদালতে হাজিরা, প্রভৃতি

(১) এই আইনের অধীনে আদালতে নীত শিশুর পিতামাতা অথবা অভিভাবক বর্তমান থাকিলে এবং তাহার সন্ধান পাওয়া গেলে অথবা তিনি যুক্তিসঙ্গত দূরত্বে বসবাস করিলে ,এই আইনের অধীনে যে আদালতে কোনো কার্যধারা গ্রহণ করা হয় সেই আদালতে হাজির হইতে নির্দেশ দেয়া যাইতে পারে ,যদি না আদালত এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে তাহাকে হাজির হইতে নির্দেশ দেয়া যুক্তিসঙ্গত হইবে না ।

(২) শিশুটিকে গ্রেফতার করা হইলে যে থানায় তাহাকে আনা হয় সেই থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার অবিলম্বে শিশুর পিতা-মাতা অথবা অভিভাবককে ,যদি তাহাকে খুঁজিয়া পাওয়া যায়,এইরূপ গ্রেফতার সর্ম্পকে অবহিত করিবেন এবং যে আদালতে শিশুটিকে হাজির করা হইবে সেই আদালতে হাজির হইবার জন্য তারিখ নির্দিষ্ট করিয়া তাহার প্রতি নির্দেশ দানের ব্যবস্থা করাইবেন ।

(৩) যে পিতা-মাতা বা অভিভাবককে এই ধারার অধীনে হাজির হইবার নির্দেশ দেওয়া হইবে তাহাকে শিশুটির যথার্থ দায়িত্বশীল বা নিয়ন্ত্রণকারী পিতা-মাতা বা অভিভাবক হইতে হইবে :

তবে শর্ত থাকে যে ,এইরূপ পিতা-মাতা বা অভিভাবক যদি পিতা না হইয়া থাকেন তবে পিতাকেও হাজির হইতে নির্দেশ দেওয়া যাইতে পারে ।

(৪) যে ক্ষেত্রে এই কার্যধারা রুজু হওয়ার  পূর্বে শিশুটিকে আদালতের আদেশ দ্বারা তাহার পিতা-মাতার হেফাজত বা দায়িত্ব হইতে অপসারণ করা হইয়াছে সেইক্ষেত্রে কোনো প্রকারেই এই ধারার অধীনে শিশুটির পিতা-মাতাকে আদালতে হাজির হইতে নির্দেশ দেওয়া যাইবে না ।

(৫) এই ধারার কোনো কিছু শিশুর মাতা বা মহিলা অভিভাবককে হাজির হওয়ার নির্দেশ দান করে বলিয়া গণ্য হইবে না, তবে এইরূপ কোনো মাতা বা মহিলা অভিভাবক কোনো উকিল বা এজেন্টের মাধ্যমে আদালতে হাজির হইতে পারেন ।

ধারা-১৪: মারাত্নক রোগাক্রান্ত শিশুকে অনুমোদিত স্থানে প্রেরণ

(১) এই আইনের কোনো বিধান অনুযায়ী আদালতে নীত কোনো শিশু যদি এইরূপ রোগাক্রান্ত থাকে যে তাহাকে দীর্ঘদিন চিকিত্সা করা প্রয়োজন, অথবা এইরূপ শারীরিক বা মানসিক যন্ত্রণাগ্রস্ত হয় যে তাহার চিকিত্সা প্রয়োজন, তাহা হইলে আদালত শিশুটিকে কোনো হাসপাতালে অথবা এই আইনের অধীনে প্রণীত বিধি অনুযায়ী স্বীকৃত কোনো স্থানে প্রয়োজনীয় চিকিত্সার জন্য যতদিন আবশ্যক মনে করেন ততদিনের জন্য প্রেরণ করিবেন ।

(২) যে ক্ষেত্রে আদালত (১) উপধারার অধীনে কোনো সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগে আক্রান্ত শিশুর ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন সেই ক্ষেত্রে আদালত শিশুটির বৈবাহিক সূত্রে কোনো অংশীদার বা তাহার অভিভাবকের নিকট, যে ক্ষেত্রে যাহা হয়, তাহাকে ফেরত দেওয়ার পূর্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করা শিশুটির স্বার্থের অনুকূল হইবে বলিয়া সন্তুষ্ট হইলে ,শিশুটির অনুরূপ বৈবাহিক সূত্রে অংশীদার অথবা অভিভাবককে এই মর্মে নির্দেশ দিবেন যে, তাহাদের শিশুটি পুনঃসংক্রামিত হইবে না এই মর্মে ডাক্তারী পরীক্ষা দাখিল পূর্বক আদালতের সন্তুষ্টি বিধান করিতে হইবে ।

ধারা-১৫: আদেশ প্রদানকালে আদালত যে সকল বিষয় বিবেচনা করিবেন

এই আইনের অধীনে কোনো আদেশ প্রদানের উদ্দেশ্যে আদালত নিম্নলিখিত বিষয়গুলির প্রতি লক্ষ্ রাখিবেন -
(ক)    শিশুর চরিত্র ও বয়স ;
(খ)    শিশুর জীবন যাপনের পরিবেশ ;
(গ)    প্রবেশন অফিসার কর্তৃক প্রণীত রির্পোট ; এবং
(ঘ)    শিশুটির স্বার্থে যে সকল বিষয় বিবেচনায় গ্রহণ করিতে হইবে বলিয়া আদালত মনে করেন সে সকল বিষয়:

তবে শর্ত থাকে যে ,যখন কোনো শিশু কোনো অপরাধ করিয়াছে মর্মে পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যাদি লিপিবদ্ধ করিবার পর উপরি উক্ত বিষয়াদি বিবেচনার্থে গ্রহণ করিবেন ।

ধারা-১৬ : প্রবেশন অফিসারের রির্পোট এবং অন্যান্য রির্পোট গোপনীয় গণ্য করিতে হইবে

১৫ ধারায় আদালত কর্তৃক বিবেচিত প্রবেশন অফিসারের রির্পোট অথবা অন্য কোনো রির্পোট গোপনীয় বলিয়া গণ্য হইবে :

তবে শর্ত থাকে যে ,এইরূপ রির্পোট যদি শিশুটি বা তাহার পিতামাতা কিংবা অভিভাবকের চরিত্র ,স্বাস্থ্য অথবা আচরণ অথবা জীবন যাপনের পরিবেশ সংক্রান্ত হয় তবে আদালত সমীচীন মনে করিলে উক্ত রির্পোটের সারমর্ম ,উক্ত শিশু কিংবা সংশ্লিষ্ট পিতামাতা অথবা অভিভবাককে জানাইতে পারিবেন এবং তাহাদিগকে রির্পোটে বর্ণিত বিষয়াদির সহিত প্রাসঙ্গিক হয়,এইরূপ সাক্ষ্য প্রদানের সুযোগ দিতে পারিবেন ।

ধারা-১৭ ; মামলায় জড়িত শিশুর পরিচয় ,ইত্যাদি প্রকাশ নিষিদ্ধ

কোনো সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন বা সংবাদফলক প্রভৃতি অথবা সংবাদ এজেন্সী এই আইনের অধীনে আদালতে উত্থাপিত কোনো মামলা বা কার্যধারায় কোনো শিশু জড়িত থাকিলে উহার বিস্তারিত বর্ণণা এবং এইরূপ শিশকে শনাক্তকরণে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সাহায্য করে এইরূপ কিছু বা শিশুর ছবি প্রকাশ করিবে না ;

তবে শর্ত থাকে যে, মামলার বিচারকারী অথবা কার্যধারা গ্রহণকারী আদালত ,যদি উহার মতে এইরূপ রির্পোট প্রকাশ করা শিশু কল্যাণের স্বার্থে অনুকূল হইবে এবং সংশ্লিষ্ট শিশুর স্বার্থের কোনো ক্ষতি হইবে না বলিয়া মনে করেন ,তবে কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া উক্ত আদালত এইরূপ কোনো রির্পোট প্রকাশের অনুমতি দিতে পারিবেন ।

ধারা-১৮ : আওতা বহির্ভূত না হইলে ১৮৯৮ সনের ফৌজদারী কার্যবিধির বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে

এই আইন অথবা ইহার অধীনে প্রণীত বিধির সুস্পষ্ট বিধান অনুযায়ী ব্যতীত , এই আইনের অধীনে মামলার বিচার এবং কার্যধারা গ্রহণের ক্ষেত্রে কার্যবিধিতে বর্ণিত বিধানাবলী অনুসরণ করিতে হইবে

bbasujon:
তৃতীয় ভাগ

প্রত্যায়িত ইনস্টিটিউট ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান সমূহ

১৯৷ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা ও প্রত্যয়ন ৷-
(১)   

সরকার শিশু এবং বাল-অপরাধীদেরকে গ্রহণের জন্য প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করিতে পারিবেন ৷
 (২)   

সরকার প্রত্যায়ন করিতে পারিবেন যে (১) উপ-ধারার অধীনে প্রতিষ্ঠিত নহে এইরূপ কোনো প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট অথবা কোনো শিশু বিদ্যালয় কিংবা অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিশু অথবা বাল-অপরাধীদের জন্য উপযুক্ত ৷

২০৷ রিমান্ড হোম ৷-

কোনো আদালত অথবা পুলিশ কর্তৃক প্রেরিত শিশুদের আটক রাখা, রোগ নির্ণয় এবং শ্রেণী বিভাগের উদ্দেশ্যে সরকার রিমান্ড হোম প্রতিষ্ঠা এবং পরিচালনা করিতে পারিবেন ৷

২১৷ ইনস্টিটিউট ইত্যাদি প্রত্যয়ন অথবা স্বীকৃতি দানের শর্তাবলী ৷-

এই আইনের উদ্দেশ্যে কোনো প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, শিল্প বিদ্যালয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা অনুমোদিত যে শর্তাবলী সাপেক্ষ প্রত্যয়ন অথবা স্বীকৃতি দান করা যাইবে সরকার সেই শর্তাবলী নির্ধারণ করিবেন ৷       

২২৷ প্রত্যয়িত ইনস্টিটিউট সমূহের ব্যবস্থাপনা ৷-

(১) নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য ১৯(১) ধারার অধীনে প্রতিষ্ঠিত প্রত্যেকটি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের জন্যে সরকার একজন তত্ত্বাবধায়ক এবং একটি পরিদর্শক কমিটি নিয়োগ করিবেন, এবং অনুরূপ তত্ত্বাবধায়ক এবং কমিটি এই আইনের উদ্দেশ্যে ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপক বলিয়া গণ্য হইবেন ৷

(২) ১৯(২) ধারার অধীনে প্রত্যয়িত প্রতিটি ইনস্টিটিউট, বিদ্যালয় অথবা প্রতিষ্ঠান উহার গভর্নিং বডির ব্যবস্থাধীন থাকিবে এবং উহার সদস্যগণ এই আইনের উদ্দেশ্যে ইনস্টিটিউট, বিদ্যালয় অথবা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক বলিয়া গণ্য হইবেন ৷

২৩৷ ব্যবস্থাপকগণের সহিত পরামর্শ ৷-

কোনো শিশুকে কোনো প্রত্যয়িত ইনস্টিটিউটে প্রেরণের পূর্বে আদালত উহার ব্যবস্থাপকগণের সহিত পরামর্শ করিবেন ৷

২৪৷ প্রত্যয়িত ইনস্টিটিউট ও অনুমোদিত আবাস সমূহে ডাক্তারী পরিদর্শন ৷-

সরকার কর্তৃক এতদসংক্রান্ত ক্ষমতা প্রদত্ত কোনো রেজিষ্টার্ড চিকিত্‍সক প্রত্যয়িত  ইনস্টিটিউট বা অনুমোদিত আবাসের স্বাস্থ্যসম্মত ব্যবস্থাদি এবং উহার বাসিন্দাগণের স্বাস্থ্য সম্পর্কে প্রধান পরিদর্শকের নিকট রিপোর্ট প্রদানের উদ্দেশ্যে উহার ব্যবস্থাপক বা অন্যান্য ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তিগণকে নোটিশ প্রদান পূর্বক বা বিনা নোটিশে যে কোনো সময়ে যে কোনো প্রত্যয়িত ইনস্টিটিউট অথবা অনুমোদিত আবাস পরিদর্শন করিতে পারিবেন ৷

২৫৷ সরকারের প্রত্যয়নপত্র প্রত্যাহারে ক্ষমতা ৷-

সরকার কোনো প্রত্যায়িত ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপনায় অসন্তষ্ট হইলে, উহার ম্যানেজারের প্রতি নোটিশ জারি করিয়া যে কোনো সময়ে ঘোষণা করিতে পারিবেন যে, উক্ত  ইনস্টিটিউটের প্রত্যাযন পত্র নোটিশে উল্লেখিত তারিখে প্রত্যাহার করা হইল এবং উক্ত তারিখ হইতে উক্ত প্রত্যাহার কার্যকর হইবে এবং ইনস্টিটিউট অতঃপর প্রত্যায়িত ইনস্টিটিউট বলিয়া গণ্য হইবে না :

তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ নোটিশ জারির পূর্বে প্রত্যয়িত ইনস্টিটিউটের ম্যানেজারকে কেন প্রত্যায়ন পত্র প্রত্যাহার করা হইবে না, তাহার কারণ দর্শাইবার জন্য যুক্তসঙ্গত সুযোগ প্রদান করা হইবে ৷

২৬৷ ব্যবস্থাপক কর্তৃক প্রত্যয়ন পত্র সমর্পণ ৷ -

কোনো প্রত্যয়িত ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপকগণ, প্রধান পরিদর্শকের মাধ্যমে তাহাদের অভিপ্রায় উল্লেখ করিয়া সরকারকে ছয় মাসের লিখিত নোটিশ প্রদান করিয়া ইনস্টিটিউটের প্রত্যায়ন পত্র সমর্পণ করিতে পারিবেন এবং তদনুসারে নোটিশ প্রদানের তারিখ হইতে ছয় মাস অতিবাহিত হইলে এবং উক্ত সময়ের পূর্বে নোটিশটি প্রত্যাহার না করা হইলে, প্রত্যায়ন পত্রের সমর্পণ কার্যকর হইবে এবং ইনস্টিটিউটের প্রত্যায়িত মর্যাদা লোপ পাইবে ৷

২৭৷ প্রত্যায়ন পত্র প্রত্যাহার অথবা সমর্পণের ফলাফল ৷-

কোনো প্রত্যায়িত ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপকগণ উহার প্রত্যায়নপত্র প্রত্যাহার বা সমর্পণ সংক্রান্ত নোটিশ ক্ষেত্রমত প্রাপ্তি বা প্রদানের তারিখের পর এই আইনের অধীনে কোনো শিশু কিংবা বাল-অপরাধীকে কোনো প্রত্যায়িত ইনস্টিটিউটে গ্রহণ করিবেন না :

তবে শর্ত থাকে যে উপরি উক্ত তারিখে প্রত্যায়ন পত্রের প্রত্যাহার বা সমপর্ণ কার্যকর না হওয়া অবধি ইনস্টিটিউটে আটক কোনো শিশু অথবা বাল-অপরাধীকে শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, বাসস্থান, বস্ত্র ও খাদ্য প্রদানের ব্যাপারে ব্যবস্থাপকগণের দায় দায়িত্ব যতক্ষণ সরকার অন্য প্রকার নির্দেশ প্রদান না করেন ততক্ষণ পর্যন্ত অব্যাহত থাকিবে ৷

২৮৷ প্রত্যায়ন পত্র প্রত্যাহার বা সমর্পণের পর নিবাসীগণ সম্পর্কে ব্যবস্থা ৷-

কোনো ইনস্টিটিউটের প্রত্যায়িত মর্যাদা লোপ পাইলে সেখানে আটক শিশু অথবা বাল অপরাধীকে সম্পূর্ণরূপে অথবা সরকার কর্তৃক আরোপিত শর্তে খালাস দিতে হইবে অথবা এই আইনের খালাস ও বদলি সংক্রান্ত বিধানাবলী মোতাবেক প্রধান পরিদর্শকের আদেশক্রমে অন্য কোনো প্রত্যয়িত ইনস্টিটিউটে বদলি করা যাইতে পারে ৷

২৯৷ প্রত্যায়িত ইনস্টিটিউট এবং অনুমোদিত আবাস পরিদর্শন ৷-

প্রত্যেকটি প্রত্যায়িত ইনস্টিটিউট এবং অনুমোদিত আবাস ও উহার সকল বিভাগ সকল সময়ে প্রত্যায়িত ইনস্টিটিউটের প্রধান পরিদর্শক, পরিদর্শক অথবা সহকারী পরিদর্শক কর্তৃক পরিদর্শনের জন্য উম্মুক্ত থাকিবে এবং প্রতি ছয় মাসে অন্ততঃ একবার পরিদর্শন করা হইবে ৷

তবে শর্ত থাকে যে, যে যেক্ষেত্রে শুধুমাত্র বালিকাদের অভ্যর্থনার জন্য এইরূপ কোনো ইনস্টিটিউট থাকে এবং প্রধান পরিদর্শক এইরূপে পরিদর্শন না করেন, সে ক্ষেত্রে, সম্ভব হইলে, প্রধান পরিদর্শক কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে অনুমোদিত কোনো মহিলা এইরূপ পরিদর্শন করিবেন ৷

bbasujon:
চতুর্থ ভাগ

অফিসারবৃন্দ, তাহাদের ক্ষমতা ও কর্তব্য

৩০ ৷ প্রধান পরিদর্শক, ইত্যাদি নিয়োগ ৷ -

(১)  সরকার, প্রত্যায়িত ইনস্টিটিউটের জন্য একজন প্রধান পরিদর্শক এবং তাহার সহায়তাকল্পে সরকারী বিবেচনামতে উপযুক্ত সংখ্যক পরিদর্শক ও সহকারী পরিদর্শক নিয়োগ করিবেন ৷

(২) প্রধান পরিদর্শকের এই আইনে বর্ণিত এবং যেরূপ নির্ধারণ করা হয় সেইরূপ ক্ষমতা ও কর্তব্য থাকিবে ৷

(৩) প্রত্যেক পরিদর্শক বা সহকারী পরিদর্শক, প্রধান পরিদর্শকের সেইরূপ ক্ষমতা লাভ করিবেন ও কর্তব্য পালন করিবেন যেইরূপ সরকার নির্দেশ দিবেন এবং প্রধান পরিদর্শকের নির্দেশানুযায়ী কাজ করিবেন ৷

৩১৷ প্রবেশন অফিসার নিয়োগ ৷-

(১) সরকার প্রত্যেক জেলায় একজন প্রবেশন অফিসার নিয়োগ করিতে পারিবেন :

তবে শর্ত থাকে যে, যে ক্ষেত্রে কোনো জেলায় এইরূপ নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি না থাকে যে ক্ষেত্রে কোনো জেলায় এইরূপ নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি না থাকে যে ক্ষেত্রে মামলা বিশেষের জন্য এই জেলায় আদালত কর্তৃক সময়ে সময়ে অন্য যে কোনো ব্যক্তি প্রবেশন অফিসার রূপে নিযুক্ত হইবেন ৷

(২) প্রবেশন অফিসার স্থানীয় কিশোর আদালত অথবা সেখানে এইরূপ আদালত নাই সেখানে দায়রা আদালতের তত্ত্বাবধানে এবং পরিচালনায় এই আইনের অধীন তদীয় কর্তব্য সম্পাদন করিবেন ৷

(৩) প্রবেশন অফিসার, এই আইনের অধীনে প্রণীত বিধি এবং আদালতের নির্দেশাবলী সাপেক্ষ-
(ক)    যুক্তিসঙ্গত বিরতিতে নিজে শিশুকে পরিদর্শন করিবেন অথবা করিতে সুযোগ দিবেন;
(খ)    লক্ষ্য রাখিবেন যে, শিশুটিকে আত্নীয় অথবা যাহার তত্ত্বাবধানে রাখা হইয়াছে তিনি মুচলেকার শর্ত পালন করিতেছেন;
(গ)    শিশুর আচরণ সম্পর্কে আদালত রিপোর্ট দিবেন ;
(ঘ)    উপদেশ দিবেন, সহায়তা করিবেন এবং বন্ধু ভাবাপন্ন করিয়া তুলিবেন এবং প্রয়োজনে তাহার জন্য উপযুক্ত কর্মসংস্থানের চেষ্টা করিবেন; এবং
(ঙ)    অন্য কোনো নির্ধারিত কর্তব্য পালন করিবেন ৷

bbasujon:
পঞ্চম ভাগ

দুস্থ ও অবহেলিত শিশুদের যত্ন ও হেফাজতের জন্য ব্যবস্থা

৩২ ৷ যে সকল শিশুকে গৃহহীন, দুস্থ ইত্যাদি অবস্থায় পাওয়া যায় ৷ -

(১) কোনো প্রবেশন অফিসার কিংবা সাব-ইন্সপেক্টরের নিম্ন পদমর্যাদার নয় এমন পুলিশ অফিসার অথবা সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতা প্রদত্ত অন্য কোনো ব্যক্তি কিশোর আদালত বা ৪ ধারা অধীনে ক্ষমতা প্রাপ্ত আদালতে, তাহার মতে শিশু বিবেচিত কোনো ব্যক্তিকে হাজির করিতে পারিবেন, যাহার-

(ক) কোনো গৃহ, নির্দিষ্ট কোনো বাসস্থান অথবা জীবন ধারণের কোনো দৃশ্যমান উপায় নাই, অথবা নিয়মিত ও যথাযথভাবে অভিভাবকের ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারেন এইরূপ কোনো পিতা মাতা বা অভিভাবক নাই; অথবা

(খ) ভিক্ষা করিতে দেখা গিয়াছে অথবা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কোনো কাজ এইরূপ অবস্থায় করিতে দেখা যায় যাহা উক্ত শিশুর মঙ্গলের পরিপন্থী ;

(গ) দুস্থ অবস্থায় নিপতিত দেখা যায় অথবা যাহার পিতা মাতা বা অভিভাবক যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করিতেছে ; অথবা

(ঘ) এইরূপ পিতা-মাতা অথবা অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে রহিয়াছে, যিনি প্রায়ই স্বভাবতঃ শিশুটিকে অবহেলা করে অথবা তাহার সহিত নিষ্ঠুর আচরণ করে; অথবা

(ঙ) যাহাকে সাধারণত কোনো কুখ্যাত অপরাধী অথবা পতিতার সঙ্গেঁ পাওয়া যায় যে তাহার পিতা মাতা কিংবা অভিভাবক নহে; অথবা

(চ) যে এইরূপ কোনো বাড়িতে অবস্থান করিতেছে অথবা প্রায়ই যাতায়াত করিতেছে যাহা পতিতা বৃত্তির কাজে কোনো পতিতার ব্যবহারের অধীনে রহিয়াছে এবং সে উক্ত পতিতার শিশু নহে; অথবা

(ছ) যে প্রকারান্তরে কোনো অসত্‍ সঙ্গে পতিত হইতে পারে অথবা নৈতিক বিপদের সম্মুখীন হইতে পারে অথবা অপরাধের জীবনে প্রবেশ করিতে পারে ৷

(২) উপ-ধারা (১) -এ উল্লেখিত কোনো শিশুকে যে আদালতে হাজির করা হয় সে আদালত তথ্যাদি পরীক্ষা করিবেন এবং এইরূপ পরীক্ষার সারমর্ম লিপিবদ্ধ করিবেন এবং যদি মনে করেন যে, আরও তদন্ত করিবার পর্যাপ্ত কারণ রহিয়াছে তবে তদুদ্দেশ্যে তারিখ ধার্য করিবেন ৷

(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীনে তদন্তের জন্য ধার্য দিবসে অথবা অন্য কোনো পরিবর্তিত তারিখ যে পর্যন্ত কার্যধারা মুলতবি থাকে সেই তারিখে আদালত এই আইনের অধীনে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইতে পারে উহার পক্ষে এবং বিপক্ষে যে সকল প্রাসঙ্গিক সাক্ষ্য প্রদত্ত হইতে পারে তাহা শুনিবেন এবং লিপিবদ্ধ করিবেন এবং যেরূপ উপযুক্ত মনে করেন সেইরূপে পুনরায় তদন্ত করিতে পারেন ৷

(৪) এইরূপ তদন্ত করিয়া আদালত যদি সন্তুষ্ট হন যে, উক্ত ব্যক্তি (১) উপ-ধারায় বর্ণিত একটি শিশু এবং তদানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা সমীচীন তাহা হইলে আদালত তাহাকে কোনো প্রত্যায়িত ইনস্টিটিউটে অথবা অনুমোদিত আবাসে প্রেরণের আদেশ দিতে পারিবেন অথবা তাহাকে কোনো আত্নীয় কিংবা আদালতে কর্তৃক উল্লেখিত এবং শিশুটির বয়স ১৮ বত্সর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত অথবা কোনো সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য তত্ত্বাবধান করিতে ইচ্ছুক অন্য কোনো ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে নির্ধারিত পদ্ধতিতে সোপর্দ করিবার আদেশ দিতে পারিবেন ৷

(৫) যে আদালত শিশুকে কোনো আত্নীয় অথবা অন্য উপযুক্ত ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে প্রেরণের আদেশ দেন, আদেশ প্রদানকালে এইরূপ আত্নীয় অথবা অন্য ব্যক্তিকে জামিনদার ছাড়া এই মর্মে একটি মুচলেকা সম্পাদনের নির্দেশ দিতে পারিবেন যে, তিনি শিশুটির সদাচারণের জন্য এবং শিশুটির সত্‍ এবং পরিশ্রমী জীবন যাপনের নিশ্চয়তা বিধানের অন্যান্য যে সকল শর্ত আদালত আরোপ করিবেন সেই সকল শর্ত পালনের জন্য দায়ী থাকিবেন না ৷

৬) যে আদালত শিশুটিকে আত্নীয় অথবা অন্য উপযুক্ত ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে সোপর্দের জন্য এই ধারার অধীনে আদেশ প্রদান করেন সেই আদালত অতিরিক্ত আদেশ প্রদান করিতে পারেন যে, শিশুকে প্রবেশন অফিসার অথবা কর্তৃক উল্লেখিত অন্য ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে রাখা যাইতে পারে ৷

৩৩ ৷ অবাধ শিশু ৷-

(১) যে ক্ষেত্রে কোনো শিশুর পিতা মাতা বা অভিভাবক কোনো কিশোর আদালতে অথবা ৪ ধারার অধীনে ক্ষমতা প্রাপ্ত আদালতে অভিযোগ করেন যে তিনি শিশুটিকে নিয়ন্ত্রণ করিতে অক্ষম, সে ক্ষেত্রে আদালত তদন্তের পর যদি সন্তুষ্ট হন যে শিশুটি সম্পর্কে ব্যবস্থা গ্রহণ করা সমীচীন  তবে অনধিক তিন বত্‍সর মেয়াদে তাহাকে কোনো প্রত্যায়িত ইনস্টিটিউটে অথবা অনুমোদিত আবাসে প্রেরণের আদেশ দিতে পারেন ৷

(২) আদালত যদি সন্তষ্ট হন যে, শিশুটির বাড়ির পরিবেশ সন্তোষজনক, শিশুটিকে প্রত্যায়িত ইন্সিটিউটে অথবা অনুমোদিত আবাসে প্রেরণের পরিবর্তে শুধুমাত্র তাহাকে তত্ত্বাবধান করা প্রয়োজন, তাহা হইলে শিশুটিকে অনধিক তিন মাসের মেয়াদে কোনো প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে ন্যস্ত করিতে পারিবেন ৷

Navigation

[0] Message Index

[#] Next page

Go to full version