জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ১৯৯৭ এবং এর সংশোধনী
বাংলাদেশে ইতোপূর্বে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনায় নারী উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচী ও কার্যক্রম গ্রহণ করা হলেও তা ছিল বিচ্ছিন্ন এবং সমন্বয়হীন৷ কিন্তু ১ঌঌ৫ সালে বেইজিং সম্মেলনে নারী উন্নয়ন কর্মপরিকল্পনায় নারী উন্নয়নের লক্ষ্যে যে ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করা হয়েছিল যা সংক্ষেপে পিএফএ (প্লাটফর্ম ফর একশন) নামে পরিচিত তার আলোকে প্রথম বারের মত একটি নারী উন্নয়ন নীতি ও কর্মপরিকল্পনা প্রনয়ন করা হয়েছে৷ যার প্রধান লক্ষ্য নির্যাতিত ও অবহেলিত এ দেশের বৃহত্তম নারী সমাজের ভাগ্য উন্নয়ন করা৷ বাংলাদেশের নারীসমাজের নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন ইসু্য নিয়ে ব্যাপকভিত্তিক আন্দোলনের ফলেও নারী নীতিটি প্রণীত হয়৷ নারী সমাজ আশার আলো দেখে, কেননা এই নীতিমালা প্রণয়নের মধ্য দিয়ে নারীর প্রতি হাজার বছরের শোষণ ও বৈষম্য বিলোপ হবে, নারী সম-অধিকার লাভ করবে এইটিই ছিল সবার আশা৷
বাংলাদেশে প্রণীত নারী নীতিটি ১৯৯৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী সংস্থা NCWD (National Committee for Women Development) কর্তৃক অনুমোদিত হয় এবং ১৯৯৭ সালেই ৮-ই মার্চ বিশ্ব নারী দিবসে এ নীতিটি ঘোষিত হয়৷ নীতিটিতে বাংলাদেশের নারীদের সাংবিধানিক নিশ্চয়তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছিল৷
নারী উন্নয়ন নীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ
১৯৯৬ সালের ১২ ই জুন জাতীয় নির্বাচনে দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বর্তমান সরকার (তত্কালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার) দেশে প্রথম বারের মত নারী উন্নয়ন নীতি প্রদান করেছেন, যার প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে যুগ যুগ ধরে নির্যাতিত ও অবহেলিত এদেশের বৃহত্তর নারী সমাজের ভাগ্য উন্নয়ন করা৷
সংশোধনী ২০০৪: ১৯৯৬ সালের ১২ ই জুন জাতীয় নির্বাচনে দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বর্তমান সরকার দেশে প্রথম বারের মত নারী উন্নয়ন নীতি প্রদান করেছেন৷ এ লাইনটি বাদ দেওয়া হয়েছে৷
নীচে এই নীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সমূহ দেওয়া হলো :
জাতীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে নারী পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠা করা ;
রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও পারিবারিক জীবনের সকল ক্ষেত্রে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ;
নারীর রাজনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা ;
নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা ;
নারীকে শিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদ হিসাবে গড়ে তোলা ;
নারী সমাজকে দারিদ্র্যের অভিশাপ থেকে মুক্ত করা ;
নারী পুরুষের বিদ্যমান বৈষম্য নিরসন করা ;
সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিমন্ডলে নারীর অবদানের যথাযথ স্বীকৃতি প্রদান করা ;
নারী ও মেয়ে শিশুর প্রতি সকল প্রকার নির্যাতন দূর করা ;
নারী ও মেয়ে শিশুর প্রতি বৈষম্য দূর করা ;
রাজনীতি, প্রশাসন ও অন্যান্য কর্মক্ষেত্রে, আর্থ-সামাজিক কর্মকান্ড, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া এবং পারিবারিক জীবনের সর্বত্র নারী পুরুষের সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা ;
নারীর স্বার্থের অনুকূল প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও আমদানী করা এবং নারীর স্বার্থ বিরোধী প্রযুক্তির ব্যবহার নিষিদ্ধ করা ;
নারীর সুস্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য উপযুুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করা ;
নারীর জন্য উপযুক্ত আশ্রয় এবং গৃহায়ন ব্যবস্থায় নারীর অগ্রাধিকার নিশ্চিত কর;
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সশস্ত্র সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত নারীর পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা ;
বিশেষ দুর্দশাগ্রস্ত নারীর চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা করা ;
বিধবা, অভিভাবকহীন, স্বামী পরিত্যাক্তা, অবিবাহিত ও সন্তানহীন নারীর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা ;
গণ মাধ্যমে নারী ও মেয়ে শিশুর ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরাসহ জেন্ডার প্রেক্ষিত প্রতিফলিত করা ;
মেধাবী ও প্রতিভাময়ী নারীর সৃজনশীল বিকাশে সহায়তা দেয়া ;
নারী উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সহায়ক সেবা প্রদান করা ৷
নারী উন্নয়ন নীতিমালার বিস্তারিত বর্ননা নীচে দেওয়া হলো :
১৷ নারীর মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার বাস্তবায়ন
v মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার সকল ক্ষেত্রে, যেমন, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ইত্যাদি ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ যে সম-অধিকারী, তার স্বীকৃতি স্বরূপ নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ করা ;
v নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদ (সিডও) বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা ;
v নারীর মানবাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদ্যমান আইন সংশোধন ও প্রয়োজনীয় নতুন আইন প্রণয়ন করা ;
v বিদ্যমান সকল বৈষম্যমূলক আইন বিলোপ করা এবং আইন প্রণয়ন ও সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত কমিশন বা কমিটিতে নারী আইনজ্ঞদের অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করা ;
v স্থানীয় বা রাষ্টীয় পর্যায়ে কোন ধর্মের, কোন অনুশাসনের ভুল ব্যাখ্যার ভিত্তিতে নারী স্বার্থের পরিপন্থী এবং প্রচলিত আইন বিরোধী কোন বক্তব্য বা অনুরূপ কাজ করা বা কোন উদ্যোগ নেয়া যাবে না ;
v বৈষম্যমূলক কোন আইন প্রণয়ন না করা বা বৈষম্যমূলক কোন সামাজিক প্রথার উণ্মেষ ঘটতে না দেয়া;
v গুণগত শিক্ষার সকল পর্যায়ে, চাকুরীতে, কারিগরী প্রশিক্ষণে, সম পারিতোষিকের ক্ষেত্রে, কর্মরত অবস্থায় স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তায়, সামাজিক নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য পরিচর্যায় নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত কর;
v মানবাধিকার ও নারী বিষয়ক আইন সম্পর্কে শিক্ষা প্রদান ও সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করা ;
v পিতা ও মাতা উভয়ের পরিচয়ে সন্তানের পরিচিতির ব্যবস্থা করা, যেমন জণ্মনিবন্ধীকরণ, সকল সনদপত্র, ভোটার তালিকা, ফরম, চাকুরীর আবদেনপত্র, পাসর্পোট ইত্যাদিতে ব্যক্তির নাম প্রদানের সময় পিতা ও মাতার নাম উল্লেখ করা ;
২৷ মেয়ে শিশুর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সাধন এবং সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নতুন আইন প্রণয়ন করা
v বাল্যবিবাহ, মেয়ে শিশু ধর্ষণ, নিপীড়ন, পাচার এবং পতিতাবৃত্তির বিরুদ্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ কর;
v পরিবারের মধ্যে এবং বাইরে মেয়ে শিশুর প্রতি বৈষম্যহীন আচরণ এবং মেয়ে শিশুর ইতিবাচক চিত্র তুলে ধরা ;
v মেয়ে শিশুর চাহিদা যেমন, খাদ্য, পুষ্টি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা ;
v শিশুশ্রম বিশেষ করে মেয়ে শিশুশ্রম দূরীকরণ কর্মসূচী বাস্তবায়নের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া ;
৩৷ নারীর প্রতি সকল প্রকার নির্যাতন দূরীকরণ
v পারিবারিক ও সামাজিক পর্যায়ে এবং কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি শারীরিক, মানসিক ও যৌন নিপীড়ন, নারী ধর্ষণ, পতিতাবৃত্তিতে নিয়োগ, যৌতুক ও নারীর প্রতি সহিংসতা দূর করা ;
v নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সম্পকী©ত প্রচলিত আইন যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে সংশোধন এবং নতুন আইন প্রণযন করা ;
v নির্যাতিত নারীকে আইনগত সহায়তা দেয়া ;
v নারী পাচার বন্ধ ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করা ;
v নারীর প্রতি নির্যাতন দূরীকরণ এবং এক্ষেত্রে আইনের প্রয়োগের জন্য বিচার ব্যবস্থায় পুলিশ বাহিনীর সর্বস্তরে বর্ধিত হারে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা ;
v বিচার বিভাগ ও পুলিশ বিভাগকে নারীর অধিকার সংশ্লিষ্ট আইন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া ও জেন্ডার সংবেদনশীল করা ;
v নারী ও মেয়ে শিশু নির্যাতন ও পাচার সম্পকী©য় অপরাধের বিচার ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পন্ন করার লক্ষ্যে বিচার পদ্ধতি সহজতর করা৷
৪৷ সশস্ত্র সংঘর্ষ ও নারীর অবস্থান
v সশস্ত্র সংঘর্ষ ও জাতিগত যুদ্ধে নারীর অধিকতর নির্যাতিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিরুদ্ধে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা ;
v সংঘর্ষ বন্ধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা ;
v আন্তর্জাতিক শান্তি প্রতিষ্ঠার মিশনে নারী প্রতিনিধি অন্তভুক্ত করা ;
৫৷ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ
v নারী শিক্ষা বৃদ্ধি, নারী পুরুষের মধ্যে শিক্ষার হার ও সুযোগের বৈষম্য দূর করা এবং উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় নারীকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে সক্রিয় ও স্পষ্ট নীতি অনুসরণ করা ;
v আগামী দশ বছরে নিরক্ষরতা দূর করার সর্বাত্নক প্রচেষ্টা গ্রহণ করা, বিশেষতঃ মেয়ে শিশু ও নারী সমাজের শিক্ষা প্রশিক্ষণের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া ;
v বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে একটি করে প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা ;
v মেয়েদের জন্যে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত অবৈতনিক করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা ;
v টেকসই উন্নয়ন ও অব্যাহত অর্থনেতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে নারীর জন্য আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচী গ্রহণ এবং শক্তিশালী করা ;
v শিক্ষার ক্ষেত্রে নারী ও মেয়ে শিশুর সমান অধিকার নিশ্চিত করা, শিক্ষার সকল পর্যায়ে অসমতা দূর করা, শিক্ষাকে সর্বজনীন করা, ভর্তির হার বৃদ্ধিসহ নিরক্ষরতা দূর করা এবং মেয়ে শিশুকে বিদ্যালয়ে ধরে রাখার লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা ;
v জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে সকল স্তরের পাঠ্যসূচীতে নারী-পুরুষ সমতা প্রেক্ষিতে সংযোজন করা ;
v নারীর দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সকল প্রশিক্ষণে নারীকে সমান সুযোগ দেয়া ;
v নারী ও মেয়ের প্রতি দৃষ্টি রেখে বিদ্যমান নীতিসমূহের খাতওয়ারী সময়ভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা ;
v কারিগরী প্রযুক্তিগত ও উচ্চ শিক্ষাসহ সকল পর্যায়ে নারীর অংশ গ্রহণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করা ;
৬৷ ক্রীড়া ও সংস্কৃতি
v ক্রীড়া ক্ষেত্রে নারীর বর্ধিত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা ;
v স্থানীয় পর্যায়ে নারীর জন্য পৃথক ক্রীড়া কমপ্লেক্স গড়ে তোলা ;
v সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে নারীর বর্ধিত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা ;
v নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাণে নারীকে উত্সাহিত করার লক্ষ্যে সরকারী অনুদানের ব্যবস্থা করা ;
৭৷ জাতীয় অর্থনীতির সকল কর্মকান্ডে নারীর সক্রিয় ও সমঅধিকার নিশ্চিতকরণ
v অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান সমূহের সিদ্ধান্ত গ্রহণ পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং নারী-পুরুষের মধ্যে বিরাজমান পার্থক্য দূর করা ;
v অর্থনৈতিক নীতি (বাণিজ্যনীতি, মুদ্রানীতি, করনীতি প্রভৃতি) প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করা ;
সংশোধনী ২০০৪ : অর্থনৈতিক নীতি (বাণিজ্যনীতি, মুদ্রানীতি, করনীতি প্রভৃতি) প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে নারীর সংবিধানসম্মত অধিকার নিশ্চিত করা ; ( এখানে সমান অধিকার কথাটি বাদ দেওয়া হয়েছে)
v নারীর ক্ষমতায়নের প্রতি লক্ষ্য রেখে সমষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়নে ও কর্মসূচীতে নারীর চাহিদা ও স্বার্থ বিবেচনায় রাখা ;
v সমষ্টিক অর্থনৈতিক নীতির প্রয়োগে বিরূপ প্রতিক্রিয়া প্রতিহত করার লক্ষ্যে নারীর অনুকূলে গড়ে তোলা ;
v সম্পদ, কর্মসংস্থান, বাজার ও ব্যবসায় নারীকে সমান সুযোগ ও অংশীদারিত্ব দেয়া ;
সংশোধনী ২০০৪ : কর্মসংস্থান, বাজার ও ব্যবসায় নারীকে সমান সুযোগ দেয়া ; (সম্পদ,অংশীদারিত্ব শব্দগুলো বাদ দেওয়া হয়েছে)
v শিক্ষাপাঠ্যক্রম, বিভিন্ন পুস্তকাদিতে নারীর অবমূল্যায়ন দূরীভূত করা এবং নারীর ইতিবাচক ভাবামূর্তি তুলে ধরা ;
v নারী-পুরুষ শ্রমিকদের সমান মজুরী ও কর্মস্থলে নিরাপত্তা প্রদান এবং চাকুরী ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করা ;
v নারীর অংশগ্রহণ প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নারীর অবদানের স্বীকৃতি দেয়া ;
v জাতীয় অর্থনীতিতে নারীর অবদান প্রতিফলনের জন্যে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বু্যরোসহ সকল প্রতিষ্ঠানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা ;
v সরকারের জাতীয় হিসাবসমূহে গার্হস্থ্য শ্রমসহ সকল নারী শ্রমের সঠিক প্রতিফলন নিশ্চিত করা ;
v নারী যেখানে অধিক সংখ্যায় কর্মরত আছেন সেখানে যাতায়াত ব্যবস্থা, বাসস্থান, বিশ্রামাগার, পৃথক প্রক্ষালনকক্ষ এবং দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপনসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা৷
৭.১ নারীর দারিদ্র দূরীকরণ
v দরিদ্র নারী শ্রমশক্তির দক্ষতা বৃদ্ধিকল্পে তাদের সংগঠিত করে ও প্রশিক্ষণ দিয়ে নতুন এবং বিকল্প অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুযোগ সৃষ্টি করা ;
v দরিদ্র নারীকে উত্পাদনশীল কর্মে এবং অর্থনৈতিক মূলধারায় সম্পৃক্ত করা ;
v অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিত্সা, শিক্ষাসহ নারীর সকল চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে জাতীয় বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা ;
v জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে নারীর দারিদ্র দূরীকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়তা দান ও অনুপ্রাণিত করা৷
৭.২ নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন
v নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে জরুরী বিষয়াদি যথা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, জীবনব্যাপী শিক্ষা, কারিগরী শিক্ষা, তথ্য, উপার্জনের সুযোগ, উত্তরাধিকার, সম্পদ, ঋণ প্রযুক্তি এবং বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অর্জিত সম্পদসহ ভূমির উপর অধিকার ইত্যাদির ক্ষেত্রে নারীর পূর্ণ ও সমান সুযোগ এবং নিয়ন্ত্রণের অধিকার দেয়া এবং সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নতুন আইন প্রণয়ন করা৷
সংশোধনী ২০০৪ : নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে জরুরী বিষয়াদি যথা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, জীবনব্যাপী শিক্ষা, কারিগরী শিক্ষা, তথ্য, উপার্জনের সুযোগ, ঋণ, প্রযুক্তি এবং বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ ইত্যাদির ক্ষেত্রে নারীর পূর্ণ ও সমান সুযোগ এবং নিয়ন্ত্রণের অধিকার দেয়া এবং সেই লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নতুন আইন প্রণয়ন করা৷ (এখানে "উত্তরাধিকার", "সম্পদ" এবং "ভূমির উপর অধিকার" শব্দগুলো বাদ দেওয়া হয়েছে)৷
৭.৩ নারীর কর্মসংস্থান :
v নারী শ্রমশক্তির শিক্ষিত ও নিরক্ষর উভয় অংশের কর্মসংস্থানের জন্যে সর্বাত্নক উদ্যোগ গ্রহণ করা ;
v চাকুরী ক্ষেত্রে নারীর বর্ধিত নিয়োগ করার লক্ষ্যে প্রবেশ পর্যায়সহ সকল ক্ষেত্রে কোটা বৃদ্ধি এবং কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা ;
v সকল নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে সরকার অনুসৃত কোটা ও কর্মসংস্থান নীতির আওতায় চাকুরী ক্ষেত্রে নারীকে সকল প্রকা