শুনতে একটু অদ্ভূত লাগলেও একথা সত্যি যে আমাদের জীবনে কান্নার খুবই প্রয়োজন। আর আমাদের মস্তিষ্কের প্রায় একই জায়গা থেকেই কান্না ও হাসি দু’টিরই অনুভূতি আসে। হাসি ঠিক যেভাবে রক্তচাপ কমায়, শরীরকে ঝরঝরে ও তরতাজা রাখে কান্নাও ঠিক তাই করে। নিউরোসাইকোলজিস্ট, সম্প্রতি গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন যে কান্না মানসিক চাপ কমায়। গবেষণায় দেখা যায় যে ৮৫ ভাগ মহিলা ও ৭৩ ভাগ পুরুষরা কান্নার পর ভাল বোধ করছেন, তাদের মানসিক চাপ কমে যাচ্ছে। শুধু শারীরিকভাবে ভাল বোধ করাই না কান্নার ফলে কিন্তু পরিবেশ বদলে যায় তা খেয়অল করেছেন কি? আপনার আশেপাশের রাগত লোকজন আর গরম পরিবেশ কিন্তু বদলে যাচ্ছে। লোকজন আপনার প্রতি সহানুভূতি হচ্ছে, আর আপনার বন্ধু আপনার দিকে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে।
অনেক সময় আমরা বুঝতেই পারি না যে আমাদের মন খারাপ হয়ে আছে, বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে। হঠাৎ হয়তো কেঁদে ফেলার পর তা প্রকাশ পায়। নিজের মনের অনুভূতি তখন বুঝতে পারি নিজেই। মনের দুঃখিত অনুভূতি প্রকাশ না করে থাকা অর্থাৎ না কেঁদে থাকা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই খারাপ ব্যাপার। গবেষণায় দেখা গেছে এতে করে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে, শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে, তার কর্মক্ষমতা কমে যেতে পারে। দুঃখিত হয়েও না কান্না করাটা ডিপ্রেশন বা বিষণ্নতার একটি প্রধান লক্ষণ। আর আমরা কতটা কাঁদতে পারি তা ঠিক করে আমাদের জিন। আবার মহিলা পুরুষের মাঝেও কিছু ভিন্নতা আছে। পুরুষের তুলনায় মহিলারা চারগুণ বেশি কাঁদে।
কান্না পেলে কান্না করাটাই ভাল। কাঁদলে মন হালকা হয়’ সেই পুরনো কথাই আবার প্রামণ করলেন নিউরো সাইক্লোজিস্টগণ। সুস্বাস্থ্যের জন্য, মানসিক চাপ পরিহার করতে, কর্মদক্ষতা বাড়াতে তাই হাসির পাশাপাশি প্রয়োজনে কান্না কাটিরও দরকার আছে। কান্না পেলে কাঁদবেন কারো সামনে হোক কিংবা আড়ালে!
ডা. ওয়ানাইজা
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, অক্টোবর ৩১, ২০০৯