ঘুমাতে চাইলেও যাঁদের ঘুম আসে না, তাঁদের যন্ত্রণার শেষ নেই। নির্ঘুম রাত কেটে গেলে আসে দিন, ঘুমের রেশ থেকে যায় তখনো। তাই কাজে আসে না গতি। এ ক্ষেত্রে অনেকেই নিরুপায় হয়ে বেছে নেন ঘুমের ওষুধ। কিন্তু ঘুমের ওষুধ শরীরের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। অথচ সহজ কতগুলো নিয়ম মেনে চললেই কিন্তু খুব সহজে ঘুমের দেখা পেতে পারেন আপনি।
সকালের খাবারে
সকালের খাবার বেলা করে খাওয়া যাবে না। দুপুরের খাবারও খেতে হবে ঠিক সময়ে। খাদ্য পরিপাকে শরীরের ভেতর যে কর্মযজ্ঞ চলে, সেটি রাতের ঘুমের ভারি অসুবিধা করে। আয়েশ করে ভূরিভোজ দিনের বেলাতেই থাকুক। আর রাতটা হবে পরিমিত আহারের।
জলপানে
শরীরের প্রয়োজনেই জল খেতে হবে প্রচুর। দিন-রাতে আট আউন্স গ্লাসের আট থেকে ১০ গ্লাস জল খেতে হয়। যাঁরা নিত্যদিন ব্যায়াম করেন, তাঁরা এর সঙ্গে বাড়িয়ে নিন আরও কয়েক গ্লাস। তবে ঘুমাতে যাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে চার আউন্সের বেশি জল খাবেন না। নিরবচ্ছিন্ন ঘুমের জন্য এটা যে দরকারি।
ক্যাফেইন পরিহার
দুপুরের পর থেকেই ক্যাফেইন মিশেলের খাবার বর্জন করুন। চা ক্যাফেইনে ভরপুর। ক্যাফেইন কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র উত্তেজিত করে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে চা তো নয়ই।
সকালের ব্যায়াম
ব্যায়াম তো এক ধরনের কায়িক পরিশ্রম। আর পরিশ্রমে ঘুম ভালো হওয়ার কথা। কিন্তু হয় উল্টোটা। ব্যায়াম শরীরে কোষের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়, এতে ঘুম আসে দেরিতে। ঘুমাতে যাওয়ার আগে নয় ব্যায়াম। করতে হবে ভোরে।
শুধু ঘুম এলেই
ঘুম না এলেও শুধু শুধু বিছানায় গড়াগড়ি বাদ থাকুক না। চোখে ঘুম নামলেই বিছানায় যান। আর বিছানায় যাওয়ার ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে যদি ঘুম না আসে, খানিকক্ষণ হেঁটে আসুন অন্য ঘরে। খানিকটা সময় বই পড়ার পেছনেও ব্যয় করতে পারেন। ঘুম আসবে আপনাতেই।
নিত্যদিনের ঘুমে
নিয়মে বেঁধে ফেলুন ঘুম। রাতে ঘুমানোর আর সকালের ওঠার সময় নির্দিষ্ট করে নিন। টানা কিছুদিন মেনে চলুন নিজের বানানো নিয়ম। শরীর এতেই অভ্যস্ত হয়ে যাবে।
মেডিটেশন অথবা ইয়োগা
ঘুমের সহায়ক হতে পারে ইয়োগা অথবা মেডিটেশন। আলাদা করে কোনো জোগাড়যন্ত্রের প্রয়োজন নেই একেবারেই। প্রথমে চোখের পাতা বন্ধ করুন। মাত্র পাঁচ থেকে ১০ মিনিট নিজের শ্বাস-প্রশ্বাসে ধ্যান দিন। চোখের পাতা সত্যিকার ঘুমে ভারী হয়ে আসবে একসময়।
সিদ্ধার্থ মজুমদার
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারী ০২, ২০১০