শীতকালীন সবজি হলেও বাজারে সারা বছরই মটরশুঁটি পাওয়া যায়। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এর বসতি। মটরশুঁটি দীর্ঘদিন রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করা যায় বলে বাজারে বছরজুড়েই এর উপস্থিতি। সবুজ মটরশুঁটিতে রয়েছে উচ্চমানের ভিটামিন এ।
মটরশুঁটির ভিটামিন এ চোখে পুষ্টি জোগায়, ছোটদের রাতকানা রোগ দূর করতে সাহায্য করে। সুস্থভাবে কোষ বিভাজনের মাধ্যমে শরীরকে করে রোগহীন। এতে ভিটামিন সি রয়েছে প্রায় ২৬ মিলিগ্রাম। ভিটামিন সি ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ায়। শীতকালে ত্বক খসখসে হয়ে যায়। ভিটামিন সি ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে, চুল ঝরে যাওয়া রোধ করে। মটরশুঁটির খোসায় রয়েছে আঁশজাতীয় উপাদান, যা কোষ্ঠকাঠিন্য, চর্মরোগ দূর করে, কোলন-পাকস্থলীর ক্যানসারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, যাঁরা নিয়মিত মটরশুঁটি খান, তাঁদের বার্ধক্য আসে তুলনামূলকভাবে দেরিতে। চর্মরোগ, ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে মটরশুঁটির রয়েছে অগ্রণী ভূমিকা। নিকোটিনিক এসিড নামক এক ধরনের এসিড রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করে। পরিণামে শিরা-উপশিরার দেয়ালে চর্বি জমতে পারে না। বিশেষত মস্তিষ্কের স্ট্রোক প্রতিরোধ করে এই সবজি। কারণ, দেহের যেকোনো স্থানে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয় মটরশুঁটি। চোখের ছানি দূর করতে ও চোখ ওঠা রোধ করতে মটরশুঁটির রয়েছে যথেষ্ট অবদান। মটরশুঁটির ক্যালসিয়াম, আয়রন দাঁত, হাড়ের গঠন মজবুত করে, দাঁতের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
এতে চর্বি রয়েছে খুবই নগণ্য পরিমাণ। তাই উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরলের রোগী ও ডায়াবেটিকে আক্রান্ত ব্যক্তিরা দুশ্চিন্তামুক্ত হয়ে মটরশুঁটি খান।
শীতকালের সবুজ মটরশুঁটি সংরক্ষণ করে ও শুকিয়ে—দুভাবেই বাজারে বিক্রি করা হয়। শুকনো মটরশুঁটির খোসায় রয়েছে টাটকার তুলনায় বেশি আঁশ, যা খাবার হজমে সাহায্য করে। এটি রক্তের বাড়তি চিনির মাত্রা কমিয়ে দেয় এবং দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দ্বিগুণ করে।
ফারহানা মোবিন
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ২৬, ২০১০