ধারা-৩১। উপ-প্রশাসক এবং সহকারী প্রশাসকগণের ক্ষমতা এবং কর্তব্যসমূহঃ
সরকার এবং প্রশাসকের নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে উপ-প্রশাসক এবং সহকারী প্রশাসকগণ এই অধ্যাদেশানুসারর সরকারের পুর্বানুমতি গ্রহণ করিয়া প্রশাসক সরকারী গেজেটে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাহা যেই কর্তব্য অর্পণ করেন বা নির্দিষ্ট করিয়া দেন তাহা উপ-প্রশাসক এবং সহকারী-প্রশাসক সম্পন্ন করিতে পারিবেন।
ধারা-৩২। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মুতাওয়াল্লীকে অপসারণ এবং বিশ্বাস ভঙ্গের জন্য তাহার দায়-দায়িত্বঃ
(১) এই অধ্যাদেশে অথবা বর্তমানে প্রচলিত কোনো আইনে অন্য কোনো বিধান বলবত থাকা সত্বেও প্রশাসক স্বেচ্ছায়, অথবা যে কোনো ব্যক্তির দরখাস্তের উপর একজন মুতাওয়াল্লীকে নিয়ে বর্ণিত কারণসমূহের দরুন অপসারণ করিতে পারেন-
(ক) বিশ্বাস ভঙ্গের অবস্থাপনা করার, অবৈধ কার্যকলাপের অথবা অন্যায়রুপে আত্মসাত্ করার জন্য; অথবা
(খ) মুতাওয়াল্লীর কোনো কার্য দরুন ওয়াকফ সম্পত্তির কোনো ক্ষতিসাধন করা, অথবা যথাযথ কার্য-পরিচালনা করায় ওয়াকফ নিয়ন্ত্রন অথবা সংরক্ষণে হানি করা; অথবা
(গ) এই অধ্যাদেশের অধীনে মুতাওয়াল্লী একাধিকবার দন্ড প্রাপ্ত হইয়া থাকিলে, অথবা
(ঘ) যদি বর্তমানের মুতাওয়াল্লী অনুপযুক্ত, অযোধ্য,অমনোযোগী, অথবা অন্য প্রকারে অবাঞ্চিত বলিয়া বিবেচিত হন।
তবে,শর্ত এই যে,কোনো মুতাওয়াল্লী এইভাবে অপসারণ করার আদেশ দেওয়ার পূর্বে তাহাকে নিজের বক্তব্য রাখিবার সুযোগ দিতে হইবে।
(২) উপধারা (১) অনুসারে প্রদত্ত আদেশের বিরুদ্ধে ক্ষুন্ন মুতাওয়াল্লীকে তাহার ভার বুঝাইয়া না দেওয়া পর্যন্ত তাহার কোনো আপিল গ্রহণীয় হইবে না।
(৩) উপধারা (২) অনুযায়ী জেলা জজ কর্তৃক আপিলের আদেশের বিরুদ্ধে উক্ত আদেশের নব্বই দিনের মধ্যে সুপ্রীমকার্টের হাইকোর্ট বিভাগে পুনঃপরীক্ষা করা যাইবে, এবং এই বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে।
(৪) কোনো মুতাওয়াল্লীকে অপসারণ করা হইলে,অথবা মুতাওয়াল্লী পদত্যাগ করিলে এবং তাহার পদত্যাগ গৃহীত হইলে, প্রশাসক তাহার স্থলে একজন নুতন মুতাওয়াল্লী নিয়োগ করিতে পারিবেন যাহার নিকট বিদায়ী মুতাওয়াল্লী প্রশাসক কর্তৃক নির্ধারিত তারিখের মতো ওয়াকফ সম্পত্তির দখল এবং ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত যাবতীয় দলিলাদি হস্তান্তর করিয়া দিবেন।
(৫) যদি (৪) উপধারা মতে বিদায়ী মুতাওয়াল্লী ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা এবং তদসংক্রান্ত যাবতীয় দলিলাদি পরবর্তী মুতাওয়াল্লীকে হস্তান্তর করিতে অপারগ হন অথবা অস্বীকার করেন তবে পরবর্তী মুতাওয়াল্লী অথবা প্রশাসক ডেপুটি-কমিশনারের নিকট দরখাস্ত করিতে পারেন। অতঃপর ডেপুটি কমিশনার বিদায়ী মুতাওয়াল্লীকে উচ্ছেদ করিয়া দিবেন এবং অবস্থা বিশেষে ওয়াকফ সম্পত্তি এবং তদসংক্রান্ত দলিলাদি উত্তরবর্তী মুতাওয়াল্লীকে কিংবা প্রশাসককে হস্তান্তর করিবেন।
(৬) যদি তিনি মুতাওয়াল্লীকে বিশ্বাস ভঙ্গ করেন, অথবা ওয়াকফ সম্পত্তির ক্ষতি সাধনমুলক কোনা কাজ করেন, তবে তাহাকে ওয়াকফ সম্পত্তির অথবা উহার স্বত্বভোগীদের ক্ষতিপূরণ দান করিতে হইবে।
ধারা-৩৩। ওয়াকফ সম্পত্তি হস্তান্তর করিতে প্রশাসকের ক্ষমতাঃ
এই অধ্যাদেশের অপর কোনো স্থানে বা বর্তমানে প্রচলিত, অথবা কোনো ওয়াকফ দলিলে কিংবা কোনো চুক্তিতে বিপরীত কোনো বিধান থাকা সত্বেও প্রশাসক সরকারের পূর্ব অনুমোদন গ্রহণ করিয়া ওয়াকফের উন্নতি সাধনকল্পে, কিংবা ওয়াকফের হিতার্থে উহার যে কোনো অংশ হস্তান্তর করিতে পারিবেন।
ধারা-৩৪। বিজ্ঞপ্তির মাধ্যেম প্রশাসক ওয়াকফ সম্পত্তির কার্যভার গ্রহণ করিতে পারেনঃ
(১) এই অধ্যাদেশের অপর কোনো স্থানে অথবা বর্তমানে প্রচলিত আইনে, অথবা কোনো আদালতের ডিক্রি বা আদেশ, অথবা কোনো দলিল দস্তাবেজে কোনো বিধান থাকিলেও সরকারী গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রশাসক ওয়াকফের অন্তর্গত যেই সম্পত্তি যাহাতে মন্দির,বেদী,দরগাহ,ইমামবাড়া,অথবা অপরাপর ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান অন্তভূক্ত উহাদের পরিচালনা,নিয়ন্ত্রণ,ব্যবস্থাপনা এবং সংরক্ষণের ভার গ্রহণ করিতে পারিবেন।
(২) (১) উপধারামতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর যথাসম্ভব শীঘ্র প্রশাসক এই জাতীয় বিজ্ঞপ্তিতে বর্ণিত ওয়াকফ সম্পত্তি সম্পর্কে মুতাওয়াল্লীকে নোটিশ দেওয়াইবেন এবং নির্ধারিত তারিখে উক্ত ওয়াকফ সম্পত্তি সংশ্লিষ্ট যাবতীয় দলিল দস্তাবেজ তাহাকে অর্পণ করিতে নির্দেশ দিবেন। অতঃপর মুতাওয়াল্লী নির্ধারিত তারিখে উহা অর্পণ করিতে ব্যর্থ হইলে প্রশাসক ডেপুটি কমিশনারের নিকট দরখাস্ত করিবেন এবং সেই অনুযায়ী ডেপুটি কমিশনার উক্ত মুতাওয়াল্লীকে উত্খাত করিবেন এবং প্রশাসককে ওয়াকফ সম্পত্তির দখল দিবেন।
(৩) উপধারা (১) অনুসারে তাহার দ্বারা গৃহীত ওয়াকফ সম্পত্তি প্রশাসক তাহার অধস্তন কোনো অফিসার,অথবা কোনো প্রতিনিধির অথবা সরকারী মুতাওয়াল্লীর মাধ্যমে বা তিনি প্রয়োজন মনে করিলে মন্দির, মঠ, দরগাহ, ইমামবাড়া, অথবা অপরাপর ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে একটি নির্বাহী সমিতি নিয়োগ করিয়া উহা পরিচালনা করাইতে পারেন।
(৪) উপধারা (৩) অনুসারে নির্বাহী সমিতি নিযুক্ত হইলে সংশ্লিষ্ট ওয়াকফ সম্পত্তির মুতাওয়াল্লী,ব্যবস্থাপক,অথবা সাজ্জাদানশীন (যদি থাকেন) এবং ডেপুটি কমিশনার অথবা তাহার প্রতিনিধি উক্ত সমিতির সদস্য হইবেন এবং এইরুপ প্রত্যেক সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক উক্ত সমিতির সদস্যগণ হইতে প্রশাসক কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন।
(৫) উপধারা (১) অনুসারে প্রশাসক কর্তৃক গৃহীত ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনার জন্য উপধারা (৩) অনুযায়ী নিযুক্ত অফিসার, অথবা প্রতিনিধি, অথবা সরকারী মুতাওয়াল্লী, অথবা ব্যবস্থাপনা সমিতি এইরুপ প্রত্যেক ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনার অনুমোদন সাপেক্ষে প্রস্তুত করিবেন যাহা প্রশাসক তাহার বিবেচনানুযায়ী রুপান্তরিত করিতে পারিবেন।
(৬) (১) উপধারা অনুযায়ী গৃহীত ওয়াকফ সম্পত্তির সম্পূর্ণ হিসাব প্রশাসক চালু রাখিবেন এবং নির্ধারিত নিয়মানুযায়ী এই সম্পত্তির আয় ও ব্যয় সম্পর্কে ও তত্সহ এই উদ্দেশ্যে প্রশাসক ও তাহার প্রতিষ্ঠানের খরচাদির বিস্তৃত বিবরণ সংরক্ষণ করিবেন,এবং তাহার নিয়ন্ত্রধীন এই সম্পত্তি বাবদ প্রাপ্ত ও উসুলকৃত সমস্ত অর্থ ওয়াকফ তহবিলে জমা করিতে হইবে।
নিবেন। মুতাওয়াল্লী নিয়োগের ক্ষেত
ধারা-৩৫। প্রশাসকের আদেশ বা বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে দরখাস্ত এবং আপিলঃ
(১) মুতাওয়াল্লী অথবা যে সম্পত্তি সম্পর্কে ৩৪ ধারার (১) উপধারার অধীন বিজ্ঞপ্তি প্রদান করা হইয়াছে তাহাতে দাবিদার কোনো ব্যক্তি অনুরুপ বিজ্ঞপ্তির দ্বারা সংক্ষুব্ধ হইলে,বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বা অনুরুপ আদেশ প্রদানের তিন মাসের মধ্যে, উক্ত ওয়াকফ সম্পত্তি বা উহার অংশ বিশেষের উপর এখতিয়ার সম্পন্ন জেলা জজের নিকট এই মর্মে ঘোষণা প্রদানের জন্য আবেদন করিতে পারিবেন যে-
(ক) উক্ত সম্পত্তি ওয়াকফ সম্পত্তি নহে; বা
(খ) উক্ত সম্পত্তি ওয়াকফ সম্পত্তি,তবে তাহা আবেদনে বর্ণিত সীমার অন্তর্গত।
(২) জেলা জজ পক্ষগণের বক্তব্য শুনিবার পর যেরূপ উপযুক্ত মনে করিবেন সেরূপ আদেশ দান করিতে পারিবেন,অথবা তিনি যদি মনে করেন যে উক্ত আবেদন অযথা বিরক্তি ও বিলম্বের উদ্দেশ্যে করা হইয়াছে তবে তিনি কোনো সাক্ষীকে হাজির হইতে বা কোনো দলিল পেশ করিতে বাধ্য করার জন্য কোনো পর ওয়ানা ইস্যু করিতে,কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া অস্বীকার করিতে পারিবেন,এবং আবেদন সংক্ষিপ্তভাবে খারিজ করিয়া দিতে পারিবেন।
(৩) (২) উপ-ধারার অধীনে জেলা জজের সিদ্ধান্তের দ্বারা সংক্ষুদ্ধ কোনো ব্যক্তি অনুরুপ আদেশ প্রদানের ষাট দিনের মধ্যে হাইকোর্টে আপিল করিতে পারিবেন।
(৪) জেলা জজের সিদ্ধান্ত,অথবা আপিলের ক্ষেত্রে,হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।
ধারা-৩৬। ডেপুটি কমিশনার অথবা অপরাপরদের মাধ্যমে ক্ষমতা প্রয়োগঃ
এই সম্পর্কে গঠিত কোনো বিধান সাপেক্ষে এই অধ্যাদেশ বলে প্রশাসককে যেই ক্ষমতা আরোপ করা হইয়াছে যেই জেলায় সংশ্লিষ্ট ওয়াকফ সম্পত্তি অবস্থিত সেই জেলায় ডেপুটি কমিশনারের মাধ্যমে,অথবা তাহার দ্বারা এই উদ্দেশ্যে সময়ে সময়ে নিযুক্ত অন্য কোনো ব্যক্তিকে তাহার যেই কোনো ক্ষমতা ডেপুটি কমিশনারকে অথবা পূর্ববর্তী যেই কোনো অফিসারকে অর্পণ করিতে পারেন এবং যে কোনো সময় উহা রহিত করিতে পারেন।
ধারা-৩৭। অনুসন্ধান অথবা হিসাব নিরীক্ষা করার জন্য দরখাস্তঃ
যে কোনো ওয়াকফে কোনো স্বার্থ থাকিলে তিনি ওয়াকফের পরিচালনা অথবা উহার পরীক্ষা ও নিরীক্ষা করার ব্যাপারে একটি হলফনামার দ্বারা সমর্থিত দরখাস্ত প্রশাসকের নিকট দাখিল করিতে পারিবেন;অতঃপর প্রশাসক উক্ত দরখাস্ত পাওয়ার পর এবং উহাতে বর্ণিত তথ্যসমূহের সত্যতা সম্বন্ধে যদি উহা বিশ্বাস করার ন্যায় সংগত কারণ দেখেন যে ওয়াকফের সম্পত্তি সঠিকভাবে পরিচালনা করা হইতেছে না, তবে তিনি উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করিবেন।
তবে শর্ত এই যে হিসাব পরীক্ষা-নিরীক্ষার দরখাস্ত উক্ত দরখাস্ত দাখিল করার সময় হইতে তিন বত্সরের অধিককাল সময়ের পূর্বেকার সময়ের দাখিল করা যাইবে না।
ধারা-৩৮। এই অধ্যাদেশের অধীন প্রশাসকের তদন্তের ক্ষমতাঃ
এই অধ্যাদেশের অধীন প্রশাসকের তদন্তের উদ্দেশ্যে, প্রশাসকের সমন জারীর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট পক্ষসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও সাক্ষীগণকে হাজির হইতে বাধ্য করার, তাহাদিগকে পরীক্ষা করার,দলিলপত্র পেশ করিতে বাধ্য করার এবং সাক্ষীগণকে পরীক্ষা করার জন্য কমিশন ইস্যু করার সেইরুপ ক্ষমতা থাকিবে যেরুপ ক্ষমতা ১৯০৮ সালের দেওয়ানী কার্যবিধির অধীন দেওয়ানী আদালতের রহিয়াছে।
(২) প্রশাসক দন্ডবিধির ১৮৮ ধারার উদ্দেশ্যে একজন সরকারী কর্মচারী এবং ১৮৯৮ সালের ফৌজদারী কার্যবিধির ১৯৫ ধারা ও ৩৫ পরিচ্ছেদের উদ্দেশ্যে দেওয়ানী আদালত বলিয়া গণ্য হইবেন।
ধারা-৩৯। অব্যবস্থা হইতে ওয়াকফকে রক্ষাকরণঃ
৩৭ ধারার অধীন অনুসন্ধান করিবার পর প্রশাসক যদি এই অভিমত পোষণ করেন যে ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যাপারে এমনভাবে অব্যবস্থা হইয়াছে যাহার জন্য উক্ত ওয়াকফ সম্পত্তির অথবা উহার স্বত্বভোগীদের স্বার্থে উহাকে অধিকতর নিয়ন্ত্রণ অথবা অবধানের অধীন তত্বাবধান রাখা প্রয়োজন, তাহা হইলে তিনি ৩৪ ধারার বিধানানুসারে নিজে উহার পরিচালনা, নিয়ন্ত্রণ, ব্যবস্থাপনা এবং সংরক্ষণের ভার গহণ করিতে পারিবেন অথবা উক্ত ওয়াকফ সম্পত্তিকে এই অধ্যাদেশের এইরুপ বিধানাবলীর আওতায় যেই পর্যন্ত রাখিতে পারিবেন যে নির্দিষ্ট সময়ে তিনি উপযুক্ত বলিয়া মনে করেন।
ধারা-৪০। নির্দেশের জন্য মুতাওয়াল্লীর দরখাস্ত করিবার ক্ষমতাঃ
(১) যে কোনো মুতাওয়াল্লী ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে অথবা প্রশাসনের ব্যাপারে, অথবা ওয়াকফ দলিলের কোনো বিষয়ের ব্যাখ্যাকরণের জন্য প্রশাসকের নিকট তাহার মতামত, উপদেশ ও নির্দেশের জন্য দরখাস্ত করিতে পারিবেন এবং প্রশাসক উক্ত বিষয়াদি সম্পর্কে তাহার অভিমত, উপদেশ ও নির্দেশ দিবেন।
তবে শর্ত থাকে যে, প্রশাসক যদি প্রশ্নটি যথোপযুক্তভাবে নিস্পত্তি করিতে না পারেন, তাহা হইলে যে এলাকায় ওয়াকফ সম্পত্তি বা ইহার অংশ অবস্থিত সেই এলাকার জেলা জজের নিকট বিষয়টি উত্থাপন করিতে পারিবেন; অতঃপর মুতাওয়াল্লী উক্ত আদালতে দরখাস্ত করিলে আদালত উপধারা (২) ও (৩) অনুয়ায়ী উক্ত ব্যাপারে অভিমত, উপদেশ ও নির্দেশ দিবেন।
(২) (১) উপধারার অধীন দরখাস্ত পাইবার পর প্রশাসক অবিলম্বে উহার উপর তাহার অভিমত, উপদেশ বা নির্দেশ দিবেন, অথবা দরখাস্তের শুনাণীর জন্য একটি তারিখ ধার্য করিবেন এবং উহার একটি অনুলিপি ও তত্সহ উক্ত নির্ধারিত তারিখ সম্বন্ধে ওয়াকফ সম্পত্তিতে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণের উপর নোটিস জারী করিবার নির্দেশ দিতে পারিবেন অথবা তিনি যরুপে উপযুক্ত মনে করেন সেইরুপে তথ্য প্রকাশ করিবেন।
(৩) (২) উপধারার অধীন নির্ধারিত যে কোনো তারিখে অথবা শুনানী মুলতবী থাকিলে পরবর্তী যে কোনো তারিখে প্রশাসক তাহার অভিমত, উপদেশ বা নির্দেশ দিবার পূর্বে দরখাস্ত সম্পর্কে উপস্থিত সকল ব্যক্তিদের শুনানীর জন্য ন্যায়ঙ্গত সুযোগ দিবেন।
(৪) প্রশাসকের কিংবা আদালতের অভিমত, উপদেশ অথবা নির্দেশ অনুসারে কার্য সম্পাদনকারী প্রত্যেক মুতাওয়াল্লী তাহার দায়িত্ব মোতাবেক দরখাস্তের বিষয়বস্তু সম্পর্কে কর্তব্য সম্পাদন করিয়াছেন বলিয়া মনে করিতে হইবে।
তবে শর্ত থাকে যে, এইরুপে অভিমত উপদেশ অথবা নির্দেশ লাভের জন্য কোনো মুতাওয়াল্লী প্রতারণা অথবা কোনো তথ্য ইচ্ছাকৃতভাবে গোপন রাখিবার বা মিথ্যা বর্ণনার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইলে অতঃপর এমন কিছু বর্ণিত হয় নাই যাহা তাহাকে ক্ষতিপূরণ করা হইতে রেহাই দেয়।
ধারা-৪১। সংরক্ষিত তহবিল সৃষ্টিঃ
সরকারকে অথবা স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে খাজনা, অভিকর এবং কর প্রদানের নিমিত্ত এবং ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষণের জন্য বিধান করিবার উদ্দেশ্যে প্রশাসক যেরুপ উপযুক্ত মনে করেন ওয়াকফ সম্পত্তির আয়-হইতে যেইরুপ কায়দায় একটি সংরক্ষিত তহবিল সৃষ্টি ও সংরক্ষণের নির্দেশ দিতে পারিবেন।
ধারা-৪২। মুতাওয়াল্লীর খেলাপের ক্ষেত্রে পাওনা প্রদানের ক্ষমতাঃ
(১) সরকার কিংবা যে কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষের খাজনা, অভিকর এবং কর প্রদান করিতে কোনো মুতাওয়াল্লী অস্বীকার করিলে কিংবা প্রদান না করিলে প্রশাসক ওয়াকফ তহবিল হইতে পাওনা প্রদান করিবেন; এবং উহা ওয়াকফ সম্পত্তি হইতে উদ্ধার করিতে অগ্রসর হইতে পারিবেন এবং মুতাওয়াল্লীর নিকট হইতে পাওনার উপর শতকরা সাড়ে বারো টাকা হারে ক্ষতিপূরণও আদায় করিতে পারিবেন।
(২) (১) উপধারার অধীন পাওনা যে কোনো পরিমাণ অর্থ সরকারী দাবী আদায় আইন, ১৯১৩ (১৯১৩ সনের ৩নং আইন)- এ