রক্ত তৈরির জন্য জরুরি উপাদান হলো আয়রন। এই আয়রন প্রচুর পরিমাণে রয়েছে গরু বা ছাগলের কলিজায়। রক্তের প্রধান উপাদানের নাম লোহিত রক্ত কণিকা (আরবিসি)। এই কণিকার পরিমাণ বৃদ্ধি ও পুষ্ট করার জন্য আয়রনের গুরুত্ব অপরিহার্য। বড় কোনো অপারেশনের পরে, প্রচুর রক্তক্ষরণের পর, গর্ভাবস্থায়, সন্তান জন্মদান বা মাতৃদুগ্ধদানকালীন কলিজা যথেষ্ট উপকারী। তবে হূৎপিণ্ডের বাইপাস সার্জারি বা রিং পরানো, উচ্চ রক্তচাপজনিত রক্তক্ষরণের পরে কলিজা খাওয়া অনুচিত। কারণ, এতে দেহে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। শিশু থেকে ৩০-৩৫ বছর বয়স্ক মানুষের জন্য যথেষ্ট দরকারী হলো কলিজা। এতে ভিটামিন ‘এ’, আমিষ রয়েছে প্রচুর পরিমাণ। এই উপাদানগুলো দেহের বর্ধনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চমাত্রার ভিটামিন বি-সিক্সেরও বসতি কলিজায়। শীতকালীন ঠান্ডা-কাশির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে কলিজার ভিটামিন ‘এ’।
আমাদের শরীরের শিরা-উপশিরার ভেতর দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হয়। এই শিরা- উপশিরার দেয়ালকে প্রসারিত করে কলিজার কোলাজেন ও ইলাস্টিন নামের উপকরণ। সেলেনিয়াম নামের আরও একটি জরুরি উপাদানের বসবাস এই কলিজায়। সেলেনিয়াম হ্রাস করে কোলন ক্যানসারের পরিমাণ, শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি, ইনফেকশন, শরীরের জয়েন্টে ব্যথা, কৃমির পরিমাণ। ঠান্ডাজনিত জ্বরে, টনসিলাইটিস, সর্দি সৃষ্টিকারী ভাইরাস নামক জীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করে জিংক। কলিজায় রয়েছে মাত্রাধিক জিংক। তাই ছোটদের জন্য মুরগির কলিজাও উপকারী। উচ্চ রক্তচাপ, চল্লিশের ওপরে বয়স, ডায়াবেটিক ও রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি—এমন ব্যক্তিদের জন্য কলিজা বাদ দেওয়াই উত্তম।
ফারহানা মোবিন
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ডিসেম্বর ১৪, ২০১১