Daffodil Computers Ltd.

E-Health / Protect Your Health => For All / Others => Topic started by: bbasujon on January 13, 2012, 04:41:31 PM

Title: চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা: প্রতারিত জনগণ
Post by: bbasujon on January 13, 2012, 04:41:31 PM
অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসার পাশাপাশি বিকল্প চিকিৎসা-পদ্ধতি বা অল্টারনেটিভ মেডিসিন বিশ্বের সর্বত্র স্বীকৃত। গাছগাছড়ার ভেষজ চিকিৎসা থেকে শুরু করে আকুপাংচার, হাইড্রোথেরাপি, অ্যারোমাথেরাপি ইত্যাদি ব্যতিক্রমী চিকিৎসা বিভিন্ন দেশে চালু আছে। হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদ কিংবা ইউনানি পদ্ধতিতে চিকিৎসা তো অনেক দেশে সরকারিভাবে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেই দেওয়া হয়। চিকিৎসার মূল লক্ষ্য রোগীকে সুস্থ করা, তা সম্ভব না হলে উপসর্গগুলো কমানো এবং অবশ্যই কোনো ক্ষতি না করা। তাই যে পদ্ধতিতেই চিকিৎসা দেওয়া হোক না কেন, তার পেছনে যথেষ্ট বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা থাকা জরুরি। ভেষজ চিকিৎসা হলেও তা যথাযথ হতে হবে, এর পেছনে পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে, মনগড়া যা খুশি তা করার সুযোগ কারোর নেই।
আমাদের দেশেও অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসার পাশাপাশি অন্যান্য চিকিৎসা-পদ্ধতি চালু আছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে একই সঙ্গে চালু আছে অপচিকিৎসা। বিশেষ করে, ভেষজ বা হারবাল চিকিৎসার নামেই এসব অপচিকিৎসা করা হয় বেশি। রাস্তার ফুটপাত থেকে শুরু করে অলিগলিতে গজিয়ে ওঠা এক-দুই রুমের ‘চেম্বার’ থেকে এসব চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসা প্রদানকারী ‘চিকিৎসক’ নিজেকে নানা রকম আজগুবি উপাধিতে ভূষিত করেন। নিজেকে চিকিৎসক দাবি করলেও এঁদের সিংহ ভাগেরই ন্যূনতম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জ্ঞানটুকুও নেই। তবে মানুষকে ঠকানোর জন্য যথেষ্ট ফন্দিফিকির তাঁদের জানা থাকে। তাই কেউ কাল্পনিক স্থান থেকে চিকিৎসা শিখে আসার দাবি করেন, কেউ বা বংশপরম্পরায় চিকিৎসাজ্ঞানসম্পন্ন হিসেবে পরিচয় দেন, কেউ ধর্মগ্রন্থকে জ্ঞানের উৎস হিসেবে দাবি করেন, কেউ বা স্রেফ স্বপ্নেই ওষুধের সন্ধান পেয়ে যান। এমনও দেখা যায়, বড় কোনো ওলি-আল্লাহর নাম ব্যবহার করে তাঁর কাছ থেকে পাওয়া ওষুধ হিসেবে চালিয়ে দেন।
চটকদারি কাজ-কারবার
দেখা যায় ফুটপাত বা রাস্তার ধারে বৃত্তাকার লোকের জটলা, মাঝ থেকে মাইকে কারও গলা ভেসে আসছে। নানা অঙ্গভঙ্গিতে আকর্ষণীয়ভাবে বিভিন্ন রোগের লক্ষণ এবং সর্বরোগ নিরাময়কারী ওষুধের কথা বলে যাচ্ছেন। তাঁর সামনে হরেক রকমের গাছের বাকল, শিকড়, ফল বা কোনো প্রাণীর অঙ্গবিশেষ। লোকজনও মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাঁর কথা শুনছে। এ ধরনের দৃশ্য ফুটপাত থেকে শুরু করে গ্রামগঞ্জ, হাটবাজার, লঞ্চ-বাস-রেলস্টেশন—সর্বত্রই একটি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। অনেকে এভাবে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, ‘নির্দিষ্ট সময়ে আপনার রোগ ভালো করতে না পারলে পুরো ওষুধের টাকা ফেরত দিয়ে দেব, এ গ্যারান্টি দিচ্ছি।’ এ ধরনের চটকদার কথাবার্তায় বা বিজ্ঞাপন দিয়ে সরল মানুষকে বিভ্রান্ত করে ওষুধ কিনতে বাধ্য করায় এসব অপচিকিৎসাকারীর কোনো জুড়ি নেই। নিত্যনতুন পন্থায় তাঁরা তাঁদের পণ্যের প্রচার চালিয়ে যান। ফুটপাতে মাইক দিয়ে নানা কথার তুবড়ি ছুটিয়ে এসব ব্যবসা চলে। পণ্য বিক্রি করা হয় বাসে, রেলস্টেশনে, মার্কেটে, মেলায়। প্রচারণা চালানো হয় লিফলেট দিয়ে। এসব লিফলেট আবার চলতি গাড়ির ভেতর ছুড়ে ফেলা হয়। এ ছাড়া পোস্টার, সাইনবোর্ড তো আছেই। এসব প্রচারণায় তাঁরা যে শুধু সুচিকিৎসার দাবি করেন তা-ই নয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ১০০ ভাগ সাফল্যের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়। এভাবে সমাজের নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তদের তাঁরা প্রলোভন দেখান। কেব্ল টিভি, ডিভিডি বা পত্রপত্রিকার মাধ্যমে বড় বড় বিজ্ঞাপন ছাড়াও আকর্ষণীয় ছবির মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে সুশিক্ষিত মধ্যবিত্তদের, এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে উচ্চবিত্তদেরও ফাঁদে ফেলা হচ্ছে।
বিভিন্ন শ্রেণীর গ্রাহককে বিভিন্ন পন্থায় আকর্ষণ করা হচ্ছে। কাল্পনিক রোগ আবিষ্কার করে, মানবদেহের স্বাভাবিকতাকে অসুখ হিসেবে প্রচার করে সেসবের ওষুধ বিক্রি করা হচ্ছে। মূলত স্বল্প শিক্ষিত যুবক-যুবতী, যাঁরা নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগেন, তাঁদের এভাবে আকর্ষণ করা হচ্ছে। আবার যাঁরা ধর্মভীরু, তাঁদের ফাঁদে ফেলতে প্রচারণা চালানো হয় টুপি-দাড়ি পরা কাউকে দিয়ে, মহিলাদের জন্য বোরকা পরা নারীদের দিয়ে। অন্যদিকে যাঁরা আধুনিক হিসেবে নিজেকে দেখতে পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য একই পণ্য প্রচার হয় ভিন্ন আঙ্গিকে। দেখা যায় স্যুট-টাই পরা কেউ তথাকথিত বৈজ্ঞানিক যুক্তি দিয়ে পণ্যের গুণাগুণ বর্ণনা করছেন। মানুষের মানসিক দুর্বলতা বা অনুভূতিকেও তাঁরা চতুর পন্থায় ব্যবহার করে থাকেন। ক্যানসারে বা অন্য কোনো জটিল অসুখে আক্রান্ত মৃতপ্রায় রোগীর স্বজনের অসহায়ত্বকে ব্যবহার করতে ‘জীবনের শেষ চিকিৎসা’-জাতীয় স্লোগান ব্যবহার করে থাকেন। নিঃসন্তান দম্পতিদের মানসিক যাতনাকে পুঁজি করে তাঁদের সহজেই প্রতারিত করতে সক্ষম হন। এমনকি অনেক উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিও এভাবে প্রতারিত হন। তবে এসব অপচিকিৎসাকেন্দ্রের প্রতারণার মূল লক্ষ্য থাকে দরিদ্র শ্রেণীর শিক্ষার আলোবিহীন মানুষজন, যাদের খুব সহজেই যেকোনো অলীক বস্তু বিশ্বাস করানো যায়। এদের স্বল্প মূল্যে সুচিকিৎসার আশ্বাস দিয়ে নিয়ে আসা হয়, এরপর নানা বাহানায় টাকা নিয়ে কাল্পনিক ওষুধ দিয়ে সর্বস্বান্ত করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
সর্বরোগের মহৌষধ
ভেষজ বা হারবালের নামে যেসব অসুখের চিকিৎসা করা হয়, তার মধ্যে আছে মূলত স্বাস্থ্য ভালো করা তথা ওজন বাড়ানো, যৌন সমস্যা, হাঁপানি, বাত-ব্যথা, দাঁতের চিকিৎসা, অর্শ, গেজ, ভগন্দর, হেপাটাইটিস, এইডস, ক্যানসার, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস ইত্যাদি। মূলত দীর্ঘমেয়াদি বা ক্রনিক অসুখ, যা ভালো হতে অনেক সময় লাগে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ আরোগ্য হয় না, সেসব রোগই এঁদের লক্ষ্য। কেউ কেউ আবার এমন ওষুধও বিক্রি করেন, যা কি না সব রোগ ভালো করে থাকে।
এসব কাল্পনিক ওষুধে যে কোনো রোগ ভালো হয় না, তা বলাই বাহুল্য। এসবের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। বরং এতে শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব ওষুধ নানা রকমের শিকড়-বাকড় ও লতাপাতা দিয়ে তৈরি করা হয়, হয়তো প্রস্তুতকারী নিজেও সেসবের নাম জানেন না। এসব খেয়ে অনেকেই পেটের পীড়া থেকে শুরু করে যকৃৎ ও কিডনির গুরুতর সমস্যায় আক্রান্ত হন। অনেক সময় এসব ওষুধের উপাদান মানুষের শরীরে বিষক্রিয়া ঘটায়, কখনো বা মারাত্মক অ্যালার্জির মতো হয়, অনেক সময় পুরো শরীরের চামড়াই উঠে যেতে থাকে। এ ছাড়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, এসব অপচিকিৎসা করতে করতে অনেক সময় ও অর্থ ব্যয় হয়ে যায়। বাছবিচারহীনভাবে ওষুধ সেবনের ফলে সৃষ্ট গুরুতর স্বাস্থ্যজটিলতার সৃষ্টি হয়। যে অসুখ একসময় নিরাময়যোগ্য ছিল, তা এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে প্রচলিত চিকিৎসায়ও তা আর ভালো করা যায় না, চিকিৎসকদেরও যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। বিশেষ করে, ক্যানসারের চিকিৎসায় এটা প্রায়ই দেখা যায়। আমাদের অনেকের ধারণা, ক্যানসার মানেই এর কোনো চিকিৎসা নেই। তাই কেউ কেউ ক্যানসার হলে চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে এসব অপচিকিৎসাকারীর শরণাপন্ন হন। এতে মূল্যবান সময় অপচয় হয়। অথচ আধুনিক চিকিৎসায় অনেক ক্যানসার এখন পুরোপুরি নিরাময় সম্ভব। শুধু সময়মতো না আসায় এঁদের অনেককেই আর ভালো করা যায় না। এ ছাড়া এসব চিকিৎসায় সর্বস্বান্ত হয়ে যখন রোগী হাসপাতালে আসেন, তখন দেখা যায় ন্যূনতম ওষুধ কেনারও সামর্থ্য নেই। এভাবে এসব হাতুড়ে চিকিৎসায় লাভ তো হয়ই না, বরং আরোগ্য লাভের পথও বন্ধ হয়ে যায়।
যেমন ইচ্ছা স্টেরয়েড
আরেকটি সমস্যা হলো চতুর প্রতারক অনেক সময় ভেষজ ওষুধের সঙ্গে প্রচলিত ওষুধও মিশিয়ে দেন। যেমন হাঁপানির ওষুধে উচ্চমাত্রার স্টেরয়েড-জাতীয় ওষুধ মিশিয়ে দেওয়া হয়। ফলে এসব ওষুধ খেলে রোগীর সাময়িক ভালো লাগে। কিন্তু তাঁরা জানেন না কোন রোগীকে কোন স্টেরয়েড কী মাত্রায়, কত দিন দিতে হয়, এর কী কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে। ফলে দীর্ঘদিন এসব ওষুধ উচ্চমাত্রায় খেয়ে অনেকে ভয়াবহ স্বাস্থ্য সমস্যায় পড়েন। মোটা হওয়ার জন্যও অনেকে উচ্চমাত্রায় স্টেরয়েড দিনের পর দিন খাওয়ান। এতে ওজন বাড়ে বৈকি, এর সঙ্গে সঙ্গে কুশিংস সিনড্রোম নামে মারাত্মক প্রাণঘাতী রোগ দেহে বাসা বাঁধে, জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে এবং একপর্যায়ে রোগী মানতে বাধ্য হন যে তিনি আগেই ভালো ছিলেন। একইভাবে এঁরা যৌন সমস্যায় ভায়াগ্রা-জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করেন, রুচি বৃদ্ধির জন্য দেন পেরি-অ্যাকটিন, দাঁত পরিষ্কারের জন্য দেন হাইড্রোক্লোরিক এসিড। এসব ওষুধের বৈজ্ঞানিক ব্যবহার সম্পর্কে তাঁদের কোনো ধারণাই নেই। ফলে অপ্রয়োজনে, ভুল ওষুধ ব্যবহারে রোগীর গুরুতর সমস্যা দেখা দেয়, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। এ কথা সত্য যে বিজ্ঞানের চরম উন্নতি ও অত্যাধুনিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং অনেক আবিষ্কারের যুগেও অনেক রোগের কার্যকর ওষুধ আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। অনেক রোগই এখনো ভালো করা যায় না। সেখানে এ ধরনের অপচিকিৎসক কীভাবে ১০০ ভাগ সুস্থ করার গ্যারান্টিসহ চিকিৎসা দিয়ে থাকেন?
বিভ্রান্ত হবেন না
হারবাল চিকিৎসা আমাদের দেশে স্বীকৃত। এ ক্ষেত্রে অনেক অভিজ্ঞ জ্ঞানী চিকিৎসকও আছেন, যাঁরা স্বীকৃত পদ্ধতিতে কার্যকর ওষুধ দিয়ে থাকেন। সঠিক পন্থায় ব্যবহূত আয়ুর্বেদিক বা ইউনানি-জাতীয় ভেষজ ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও কম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ভেষজ ওষুধ সংক্রামক ও দীর্ঘমেয়াদি রোগে কার্যকর। কিন্তু তার মানে এই নয়, কোনো পড়াশোনা ও অভিজ্ঞতা ছাড়াই কাল্পনিক স্বউদ্ভাবিত ওষুধকে নানা রকম চটকদার নাম দিয়ে বিভিন্ন ধরনের অসুখের মহৌষধ বলে দাবি করবেন আর মানুষের চিকিৎসা করবেন। বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই—এমন কোনো চিকিৎসা কেউ করার দাবি করতে পারেন না। এতে মানুষকে বিভ্রান্ত ও প্রতারিত করা হয়। অথচ অনেকেরই হয়তো জানা নেই যে ওষুধের প্রচারণা মেডিকেল নীতিমালা পরিপন্থী, প্রচলিত আইনও যা সমর্থন করে না।
জনগণকে অবশ্যই এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। তাঁরা যেন এসব চটকদার বিজ্ঞাপনে ভুলে গিয়ে এ ধরনের অপচিকিৎসাকারীদের কাছে ছুটে না যান। বিশেষ করে, যৌনরোগ, হাঁপানি, বাত, ব্যথা ইত্যাদি ক্ষেত্রেই প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। তাই এসব রোগীকে বিশেষভাবে সাবধান থাকতে হবে। গণমাধ্যমগুলোকে শুধু বাণিজ্যিকভাবে বিজ্ঞাপন প্রচার করার ক্ষেত্রে একটু সতর্ক হতে হবে এবং এসব চটকদার বিজ্ঞাপনের সত্য-মিথ্যা যাচাই করে নিতে হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও মিডিয়া মানুষকে সচেতন করতে পারে। এভাবে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা করে মানুষকে যাঁরা মৃত্যুর পথে ঠেলে দিচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

এ বি এম আবদুল্লাহ
অলংকরণ: তুলি ডিন, মেডিসিন অনুষদ, অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ১১, ২০১১