Daffodil Computers Ltd.

E-Health / Protect Your Health => For All / Others => Topic started by: bbasujon on January 12, 2012, 05:06:26 PM

Title: ঠান্ডা প্রতিরোধের সাতকাহন
Post by: bbasujon on January 12, 2012, 05:06:26 PM
শীতের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত সমস্যা। ওষুধের দোকানগুলোতে তাই বিক্রিবাট্টাও বেড়ে গেছে। শীত মৌসুমে রোগ এড়াতে মুড়িমুরকির মতো ওষুধ না খেয়ে সামান্য সচেতন হোন। বিব্রতকর রোগগুলো হওয়ার আশঙ্কা কমে যাবে। ওষুধের বিকল্প হিসেবে নিচের পদ্ধতিগুলোতে অভ্যস্ত হলে ঠান্ডার রোগ পালাবে এমনিতেই।

১. বারবার হাত ধোঁয়া
অধিকাংশ ঠান্ডাজনিত ভাইরাস সরাসরি সংস্পর্শে সংক্রমিত হয়। কারও কাছ থেকে এই ভাইরাসগুলো আমাদের নিত্যদিনের ব্যবহার্য জিনিস যেমন টেলিফোন, মোবাইল, কিবোর্ড—এগুলোর মাধ্যমে একজন থেকে অন্যজনে ছড়িয়ে পড়ে। এই জীবাণুগুলো মানুষের দেহ ছাড়াও ঘণ্টার পর ঘণ্টা কখনো কখনো কয়েক সপ্তাহ বেঁচে থাকে। এই সময়ে তাই সারা দিনই কয়েকবার করে হাত ধুতে হবে। আর যদি হাত ধোঁয়ার সুযোগ না থাকে। এক হাত দিয়ে আরেক হাত কয়েক মিনিট ধরে ভালো করে ঘষতে হবে। এতেও ঠান্ডার জীবাণু কিছুটা দূর হবে।

২. মুখে হাত দেওয়া যাবে না
ঠান্ডা এবং ফ্লু ভাইরাসগুলো মানুষের দেহে প্রবেশ করে সাধারণত চোখ, নাক এবং মুখ দিয়ে। খেলার ছলে শিশু হাত মুখে পুরে দেয়। হামাগুড়ি দিয়ে বেড়ায় সারা ঘর। একজনের কোল থেকে শিশু ঘুরে বেড়ায় অন্য কোলে। এভাবেই কোনো এক সময় সংক্রমিত হয়ে পড়ে শিশু। নিজের এবং শিশুর ঠান্ডা এড়াতে তাই হাত পরিষ্কার না করে মুখমণ্ডলে হাত দেওয়া যাবে না।

৩. জলপান
জল শরীরের ভেতরকার তন্দ্রগুলোর সুরক্ষায় কাজ করে। শরীর থেকে বের করে দেয় ক্ষতিকর উপাদান। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ৮ আউন্স পরিমাণের ৮ গ্লাস পানীয় দরকার। আমরা কি প্রতিদিন আমাদের প্রয়োজনীয় পানিটুকু গ্রহণ করছি? এটা কিন্তু বোঝা যাবে সহজেই প্রস্রাবের রং দেখে। যদি তার রং জলের মতো হয় তবে ঠিক আছে কিন্তু রং যদি গাঢ় হলুদ হয়, তাহলে বুঝতে হবে শরীরে জলের ঘাটতি আছে। তাই জলপান করতে হবে আরও।

৪. স্যনা নেওয়া
বিশেষজ্ঞরা এখনো খুব জোর দিয়ে বলতে পারছেন না যে স্যনা ঠান্ডা প্রতিরোধে কার্যকর। কিন্তু ১৯৮৯ সালের জার্মানির এক গবেষণায় দেখা যায় যারা সপ্তাহে দুই স্যনা নেন, অন্যদের তুলনায় তাদের ঠান্ডা লাার প্রবণতা অনেক কম। এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাটা এমন, যখন স্যনা নেওয়া হয় তখন উচ্চ তাপমাত্রায় গরম বাতাস শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়ায় দেহের ভেতরে প্রবেশ করে। এই তাপমাত্রায় সাধারণত ঠান্ডার জীবাণুগুলো বাঁচতে পারে না।

৫. ব্যায়াম নিত্যদিন
হূদপিণ্ডের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় ব্যায়াম। রক্ত চঞ্চল হয়ে ওঠে শরীরে। অক্সিজেন ফুসফুস থেকে দ্রুত ছড়য়ে পড়ে কোষ থেকে কোষে। শরীরে তৈরি হয় তাপ। সেই সঙ্গে ঘাম। ফলে শরীরের তৈরি হয় ভাইরাস প্রতিরোধী কোষ।

৬. ধূমপান না
অতি ধূমপায়ীদের ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি। থাকে অন্যদের তুলনায়। ধোঁয়া নাসারন্ধ্র শুষ্ক করে ফেলে এবং নাকের ভেতরের সিলাগুলো কর্মক্ষমতা হারায়। এই সিলার স্বাভাবিক নড়াচাড়ায় ঠান্ডার ভাইরাসগুলো নাসারন্ধ্র থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হয়। কিন্তু ধূমপানের ফলে এই অংশটি দুর্বল হয়ে পড়ায় প্রায় বিনা বাধায় ঠান্ডার জীবাণুগুলো ঢুকে পড়ে দেহে। ঠান্ডা থেকে বাঁচতে ছাড়তেই হবে ধূমপান।

৭. দৈ খেতে হবে
দৈ উপাদেয় খাদ্য তো বটেই, তাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়েছে বেশ কিছু গবেষণা। সেখানে বলা হয়, প্রতিদিন অল্প ফ্যাটের এক কাপ দই ঠান্ডা সংক্রমণের পরিমাণ কমিয়ে দেয় শতকরা ২৫ ভাগ। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দৈ-এ থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়া দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কার্যকরী করে। এবং ঠান্ডাজনিত রোগের বিরুদ্ধে শক্তিবলয় তৈরি করতে সাহায্য করে।

সিদ্ধার্থ মজুমদার
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ডিসেম্বর ০৮, ২০১০