Author Topic: শিশুর কানের সমস্যা লাঘবে  (Read 3164 times)

bbasujon

  • Administrator
  • VIP Member
  • *****
  • Posts: 1826
  • I want to show my performance at any where
    • View Profile
    • Higher Education
এক. বহিঃকর্ণের প্রদাহ
নদীমাতৃক বাংলাদেশ। এ দেশের খাল-বিল, পুকুর-নদী পানিতে টইটম্বুর হয়ে থাকে বছরের অধিকাংশ সময়। আর তাতে কলাগাছের ভেলা বানিয়ে হোক বা এমনিতে ঘোর বর্ষণের সঙ্গে তাল রেখে ঝাঁপ দেবে দামাল শৈশব। এতক্ষণ ধরে পানিতে থাকলে কানে কিছু সমস্যা তো হতেই পারে।
ওটাইটিস এক্সটারনাকে বলা হয় সাঁতারুদের কান। বাইরের কর্ণের ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙাশ জীবাণুঘটিত সংক্রমণ। কর্ণপথের বাইরের অংশ বাইরের ভুবনের শব্দ নাক-কানের ড্রামে পৌঁছে দেয়। এর ত্বক ছিঁড়ে শুকনো হয়ে একজিমাও হতে পারে। আবার মধ্যকর্ণ প্রদাহ হলে সৃষ্ট পুঁজ কর্ণ পর্দা ভেদ করে বাইরে বেরিয়ে এসে এখানে ঘা তৈরি করতে পারে।
রোগলক্ষণাদি: বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শিশুদের তেমন জ্বর থাকে না। তবে কর্ণের বাইরের অংশ বেশ ফোলা, লালচে ও তপ্তভাব থাকে। শিশু বেশ অস্বস্তিতে থাকে। প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে।
চিকিৎসা: চিকিৎসক অসুখের ধরন অনুযায়ী ব্যবস্থাপত্র দেবেন। সাধারণ মাত্রায় কানের ড্রপস ও ব্যথানিরোধক প্যারাসিটামলে কাজ হয়। কখনো বা মুখে খাবার অ্যান্টিবায়োটিকস লাগে।
প্রতিরোধ
 স্নানের পর পর বাচ্চার মাথার পানি সাততাড়াতাড়ি শুকনো তোয়ালে দিয়ে শুকিয়ে নেওয়া এবং তারও আগে মাথার পানি যেন কানের ভেতরে না ঢুকে পাশ দিয়ে ঝরে যায়, সে ব্যবস্থা অবলম্বন করা।
 কান থেকে ১২ ইঞ্চি দূরে রেখে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করে কান ও পাশের চুল শুকিয়ে নিতে হবে।
 কখনো যেন কানে কোনো বস্তু ঢোকানো না হয়। কখনো এ কাজে কটন বাড যেন ব্যবহূত করা না হয়।

দুই. শিশু কানের মোম
ইয়ার ওয়াক্স। বলা হয় কানের খৈল। মধ্যকর্ণের বাইরে এটি তৈরি হয়। মেডিকেল নাম সেরুমেন। অনেক দরকারি কাজ সম্পাদন করে। কানের ড্রাম ও কর্ণনালি শুকনো রাখতে, তাতে যেন জীবাণু প্রবেশ অবাধ না হয়, ময়লা, ধুলাবালু ভেতরে ঢুকে কর্ণপর্দায় যেন আঘাত না করে, তাই এ ব্যবস্থা। গোসলের সময় কার্য সমাধা শেষে এই কানের খৈল আপনাআপনি ঝরে বেরিয়ে যায়। এটা বের করে আনার জন্য কোনো ব্যবস্থা নিতে হয় না। নিয়মিত স্বাস্থ্যকর স্নান এর জন্য যথেষ্ট।
 কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেশি মোম ভেতরে আটকে গেলে শিশু কানে ব্যথা, কানে শোনার সমস্যা—এসব নিয়ে আসতে পারে। এ অবস্থায় তার চিকিৎসা করাতে হবে। কিউরিটি ও অটোসকোপসংবলিত ব্যবস্থাপনায় এর সহজ সুরাহা হয়ে যায় কয়েক মিনিটে।
 তবে আপনার শিশু যদি কানে ব্যথার কথা জানায় এবং কানের মোম বাইরে থেকে দেখা যায়, তবে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে আলতোভাবে তা আপনি বের করে নিয়ে আসতে পারেন। কখনো কটন সোয়াব, আঙুল বা কিছু ঢুকিয়ে তা বের করে আনার চেষ্টা চালাবেন না। এতে করে কানের পর্দা ছিঁড়ে যেতে পারে। শিশু বধির হয়ে যাওয়ার মতো জটিলতা তৈরি হয়। তা ছাড়া কানের খৈল ভেতরে ঢুকে গিয়ে ইনফেকশন তৈরি করে। অল্প বয়সী শিশু যখন কানে সব সময় হাত রাখে, তখন তা কানের ব্যথা বা এ রকম কোনো সমস্যা নির্দেশ করে। মা-বাবা অনেক সময় এ থেকে লাঘবের জন্য বাইরের প্রচলিত ব্যবস্থা মেনে নেন। কিন্তু সোজাসাপ্টা পরামর্শ হলো, এসব ব্যবস্থা শিশুর কানের জন্য ক্ষতিকর। চিকিৎসক ছাড়া শিশুর কানের জন্য যাতে অন্য কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হয়।

প্রণব কুমার চৌধুরী
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ০৭, ২০১১
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection