General Category > Law of Bangladesh

নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন

<< < (2/7) > >>

bbasujon:
পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ, ১৯৮৫

[১৯৮৫ সালের ১৮ নং আইন]

পারিবারিক আদালত গঠনের ব্যবস্থাকল্পে প্রণীত অধ্যাদেশ, যেহেতু পারিবারিক আদালত স্থাপন এবং এতদসংশ্লিষ্ট বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা সমীচীন; সেহেতু ১৯৮২ সনের ২৪শে মার্চের ফরমান অনুসারে ও এই সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে সক্ষমকারী সমস্ত ক্ষমতা প্রয়োগক্রমে তিনি নিম্নোক্ত অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করিতে মর্জি করিয়াছেন:

ধারা

১৷ সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, আওতা এবং প্রবর্তন:

 (১) অত্র অধ্যাদেশ "পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ, ১৯৮৫" নামে অভিহিত হইবে ৷

 (২) ইহা রাঙ্গামাটি, বান্দরবান এবং খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাসমূহ ব্যতীত সমস্ত বাংলাদেশে প্রযোজ্য হইবে ৷

 (৩) সরকার সরকারী গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে যে তারিখ ধার্য্য করিবে সেই তারিখ হইতে ইহা কার্যকর হইবে ৷

ধারা

২৷ সংজ্ঞা সমূহ:

 (১) বিষয় অথবা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছুর অবর্তমানে, অত্র অধ্যাদেশে -

(ক) 'বিধি' (Code) বলিতে ১৯০৮ সনের দেওয়ানী কার্যবিধি (১৯০৮ সনের ৫ নং আইন)-কে   বুঝাইবে৷

(খ) 'পারিবারিক আদালত' বলিতে অত্র অধ্যাদেশের অধীনে স্থাপিত পারিবারিক আদালতকে

(গ) 'নির্ধারিত' বলিতে অত্র অধ্যাদেশের অধীনে প্রণীত বিধিসমূহ কর্তৃক নির্ধারিত বুঝাইবে৷

 (২) সংজ্ঞায়িত নহে অথচ অত্র অধ্যাদেশে ব্যবহৃত এমন শব্দ এবং শব্দসমষ্টি যথাক্রমে বিধিতে উল্লেখিত শব্দ এবং শব্দসমষ্টির অনুরূপ অর্থবহ হইবে৷

ধারা

৩৷ অন্যান্য আইনের উপর অত্র অধ্যাদেশের প্রাধান্য (কার্যকারিতা):

বর্তমান বলবত অন্য কোন আইনে যাহাই থাকুক না কেন, অত্র অধ্যাদেশের বিধানসমূহ কার্যকর হইবে৷

ধারা

৪৷ পারিবারিক আদালত স্থাপন:

 (১) যতগুলো সহকারী জজ আদালত আছে ততগুলো পারিবারিক আদালত থাকিবে৷

 (২) অত্র অধ্যাদেশের উদ্দেশ্যসমূহ সাধনার্থে সকল সহকারী জজ আদালত পারিবারিক আদালত হিসাবে গণ্য হইবে৷

সকল সহকারী জজ পারিবারিক আদালতের বিচারক হইবেন৷

ধারা

৫৷ পারিবারিক আদালতের এখতিয়ার:

১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ (১৯৬১ সনের ৮নং অধ্যাদেশ)- এর বিধানাবলী সাপেক্ষে কোন পারিবারিক আদালতের পাঁচটি বিষয়াদির সকল অথবা যেকোনটির সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়ে যেকোন মামলা গ্রহণ, বিচার এবং নিষ্পত্তি করার একক এখতিয়ার থাকবে ৷ বিষয়গুলো হলো:

(ক) বিবাহবিচ্ছেদ, (খ) দাম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধার, (গ) মোহরানা, (ঘ) ভরণপোষণ ও (ঙ) সন্তান-সন্ততিগণের অভিভাবকত্ব ও তত্ত্বাবধান ৷

ধারা

৬৷ মামলা দায়েরকরণ:

(১) এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী প্রত্যেক মোকদ্দমা সেই পারিবারিক আদালত আরজি উপস্থাপনের মাধ্যমে দায়ের করিতে হইবে যাহার স্থানীয় এখতিয়ারের মধ্যে  -

    (ক) নালিশের কারণটি সম্পূর্ণ অথবা আংশিকভাবে উদ্ভূত হইয়াছে; অথবা

    (খ) পক্ষগণ বসবাস করেন অথবা সর্বশেষ একসঙ্গে বসবাস করিয়াছিলেন৷

শর্ত থাকে যে, বিবাহবিচ্ছেদ, দেনমোহর অথবা ভরণপোষণের নিমিত্ত মামলার ক্ষেত্রে যে এলাকায় স্ত্রী সাধারণতঃ বসবাস করিতেছে সেই এলাকার আদালতেরও এখতিয়ার থাকিবে ৷

(২) যেক্ষেত্রে এখতিয়ারবিহীন কোন আদালত আরজি দাখিল করা হয় সেইক্ষেত্রে -

   (ক) আরজিটি যে আদালতে দাখিল করা উচিত ছিল সেই আদালতে উপস্থাপনের জন্য ফেরত দেওয়া হইবে;

  (খ) আরজি ফেরতদানকারী আদালত, তত্‍বরাবরে আরজি উপস্থাপনের ও ইহার প্রত্যর্পণের তারিখ, আরজি দাখিলকারী পক্ষের নাম ও প্রত্যর্পণের কারণসমূহের সংক্ষিপ্ত বিবরণ আরজির উপর লিপিবদ্ধ করিবেন৷

(৩)  আরজিতে বিরোধ সম্বন্ধীয় প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্যাবলী অন্তর্ভুক্ত থাকিবে ও একটি তফসিল অবশ্যই আরজির অন্তর্ভুক্ত থাকিবে যাহাতে আরজির সমর্থনে যে সকল সাক্ষীকে ডাকিতে ইচ্ছুক তাহাদের নাম ও ঠিকানাসমূহও থাকিবে৷

শর্ত থাকে যে, বাদী আদালতের অনুমতিক্রমে পরবর্তী যেকোন স্তরে যেকোন ডাকিতে পারে - যদি আদালত ন্যায়বিচারের স্বার্থে উক্তরূপ সাক্ষ্য গ্রহণ সমীচীন মনে করেন ৷

(৪) আরজিতে নিম্নোক্ত বিবরণসমূহ অন্তর্ভুক্ত থাকিবে; যথা:

    (ক) যেই আদালতে মামলা দায়ের করা হইল উহার নাম;

    (খ) বাদীর নাম, বর্ণনা এবং বাসস্থান;

    (গ) বিবাদীর নাম, বর্ণনা এবং বাসস্থান;

    (ঘ) যেক্ষেত্রে বাদী অথবা বিবাধী নাবালক কিংবা অপ্রকৃতিস্থ ব্যক্তি হয় সেইক্ষেত্রে উক্ত মর্মে বর্ণনা

   (ঙ) নালিশের কারণঘটিত তথ্যসমূহ ও যেই স্থানে এবং যেই তারিখ নালিশের কারণের উদ্ভব হইয়াছে সেই স্থান এবং তারিখ;

   (চ) আদালতের এখতিয়ার প্রদর্শনকারী তথ্যসমূহ;

   (ছ) বাদী কর্তৃক প্রার্থিত প্রতিকার ৷

(৫) বাদী তাহার দাবির সমর্থনে সাক্ষ্য হিসাবে তাহার দখলাধীন অথবা ক্ষমতা কোন দলিলের উপর নির্ভর করিলে তিনি আরজি উপস্থাপনকালে আদালত উহা পেশ করিবেন ও একই সঙ্গে উক্ত দলিল অথবা উহার অবিকল বা ফটোকৃত প্রতিলিপি আরজির সহিত নথিভুক্তির জন্য একটি লিস্টভুক্ত করিবেন ৷

(৬) যেক্ষেত্রে বাদী তাহার দাবির সমর্থনে সাক্ষ্য হিসাবে তাহার স্বীয় দখল বা আয়ত্তাধীন এমন কোন দলিলের উপর নির্ভর করেন সেইক্ষেত্রে তিনি উক্ত দলিলটি আরজির সহিত সংযোজন করণার্থে একটি ফিরিস্তিভুক্ত করতঃ সংশ্লিষ্ট দলিলটি কাহার দখলে অথবা আয়ত্তাধীনে রহিয়াছে তাহা বর্ণনা করিবেন ৷

(৭) মামলার বিবাদীগণের উপর জারি করার নিমিত্ত বিবাদীগণের সংখ্যার দ্বিগুণ সংখ্যক তফসিলসহ আরজির সত্যায়িত প্রতিলিপি এবং ৫ ও ৬ নং উপধারায় বর্ণিত দলিলের তালিকা দ্বিগুণ পরিমাণ আরজির সহিত থাকিবে ৷

(৮) নিম্নলিখিত কারণে আরজি অগ্রাহ্য বা নাকচ হইবে -

 (ক) ৭ উপধারা অনুযায়ী যেক্ষেত্রে আরজির সঙ্গে তফসিলও দেওয়া হয় ;

 (খ) যেক্ষেত্রে ৭(৫) ধারা অনুযায়ী সমন জারির খরচ এবং নোটিসের জন্য পোস্টাল খরচ পরিশোধ না   করা হয়;   (গ) যেক্ষেত্রে আরজি উপস্থাপনের সময় ২২ ধারা অনুযায়ী ফী পরিশোধ না করা হয়৷

(৯) যেক্ষেত্রে আরজি উপস্থাপনের সময় বাদী আদালতে কোন দলিল দাখিল করা উচিত অথবা উহা আরজির সহিত সংযুক্ত করার জন্য কোন লিস্টভুক্ত করা উচিত এবং যদি উহা উক্তরূপে দাখিল বা লিস্টভুক্ত না করা হয় তবে মামলার শুনানির সময় আদালতের অনুমতি ব্যতীত উহা আর তাহার পক্ষে সাক্ষ্য হিসাবে ব্যবহার করা যাইবে না৷

 শর্ত থাকে যে, বিশেষ অবস্থা ব্যতীত আদালত ঐরূপ অনুমতি প্রদান করিবেন না ৷

ধারা

৭৷ সমন ও নোটিসসমূহ ইস্যুকরণ:

(১) পারিবারিক আদালতে আরজি উপস্থাপন করা হইলে পর আদালত -

(ক) সাধারণভাবে অনধিক ত্রিশ দিনের মধ্যে বিবাদীর হাজির হওয়ার নিমিত্ত একটি তারিখ ধার্য্য করিবেন ;

(খ) বিবাদীর প্রতি নির্ধারিত তারিখে হাজির হওয়ার এবং উপস্থাপিত দাবির জবাব দানের নিমিত্ত সমন জারি করিবেন ;

(গ) বিবাদীর নিকট প্রাপ্তি স্বীকারপত্রসহ রেজিষ্ট্রি ডাকযোগে মামলার নোটিস প্রেরণ করিবেন ৷

 (২) (১) ১নং উপধারা অনুযায়ী ইস্যুকৃত প্রত্যেকটি সমন ও প্রেরিত প্রত্যেকটি নোটিসের সহিত আরজির নকল এবং ৬(৫) ও ৬(৬) ধারায় বর্ণিত দলিলসমূহের তালিকাসমূহ সংযোজিত থাকিবে৷

(৩) ১নং উপধারার খ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রেরিত সমন দেওয়ানী কার্যবিধি আইনের ৫নং আদেশের ৯, ১০, ১১, ১৬, ১৭, ১৮, ১৯-ক, ২০, ২১, ২৩, ২৪, ২৬, ২৭, ২৮ এবং ২৯ নং রুলসমূহে বর্ণিত উপায়ে জারি করা হইবে ; ও অনুরূপে জারিকৃত সমন বিবাদীর উপর যথোচিত জারি বলিয়া গণ্য হইবে৷

 (৪) ১ নং উপধারার গ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রেরিত নোটিস বিবাদীর উপর যথোচিতভাবে জারিকৃত বলিয়া গণ্য হইবে যখন বিবাদী কর্তৃক স্বাক্ষরিত বলিয়া প্রকাশকারী প্রাপ্তি স্বীকার পত্রটি আদালত গৃহীত হয় বা আদালত নোটিস বহনকারী ডাকটি ডাক কর্মচারীর এই মমেᐂ লিখিত মন্তব্যসহ ফেরত পায় যে, বিবাদীর গ্রহণাথেᐂ প্রেরিত বহনকারী ডাকটি তত্‍বরাবরে অপᐂণ করিলে পর তিনি উহা গ্রহণে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করিয়াছেন৷

শর্ত থাকে যে, যেক্ষেত্রে নোটিসটি সঠিক ঠিকানাযুক্ত, ডাকমাশুল পরিশোধিত এবং প্রাপ্তি স্বীকারপত্রসহ রেজিষ্ট্রি ডাকযোগে যথোচিতভাবে প্রেরিত হইয়াছিল সেক্ষেত্রে নোটিস প্রেরণের তারিখ হইতে ত্রিশদিন অতিবাহিত হইলে পর প্রাপ্ত স্বীকারপত্রটি  হারাইলে বিপথে চালিত হইলে বা অন্যবিধ যেকোন কারণে উক্ত সময় মধ্যে আদালত ফেরত না আসিলেও উহা যথোচিতভাবে জারি হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে৷

(৫) ১ নং  উপধারার খ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রেরিত সমন জারি খরচ দেওয়ানী কার্যবিধি আইনে এইরূপ সমনের জারি খরচের সমান হইবে ও ১নং উপধারার গ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রেরিত নোটিসের জন্য ডাক খরচ আরজি দাখিলকালে বাদী কর্তৃক প্রদত্ত হইবে৷

 সমন এবং নোটিস জারির উপায়: ইহা দুইভাবে জারি করা যাইবে:

(ক) বিবাদীর উপর ব্যক্তিগতভাবে সমন জারি এবং (খ) ডাকযোগে পত্র প্রেরণ করিয়া নোটিস জারি৷

(ক) বিবাদীর উপর ব্যক্তিগতভাবে সমন জারি : ব্যক্তিগতভাবে সমন জারির পদ্ধতি দেওয়ানী কার্যবিধি আইনের ৫নং আদেশের ৯-১৯ নিয়মে বর্ণিত আছে ৷ বিবাদী আদালতের এখতিয়ারভুক্ত এলাকার মধ্যে বসবাস করিলে অথবা বিবাদী পক্ষে উক্ত এলাকায় সমন গ্রহণ করিবার মত ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন প্রতিনিধি থাকিলে আদালতের পদাতিক বাদীর খরচে তাহার উপর সমন জারি করিতে হইবে ৷ শুধু তাহাই নহে, একাধিক বিবাদী থাকিলে প্রত্যেকের উপর সমন জারি করিতে হইবে৷ সংশ্লিষ্ট মামলার বিবাদীকে না পাওয়া গেলেও তাহার পক্ষে সমন গ্রহণের মত ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন প্রতিনিধি না থাকিলে বিবাদীর সহিত বসবাসকারী এক পরিবারভুক্ত যেকোন সাবালক পুরুষ ব্যক্তির উপর বিবাদীর পক্ষে সমন জারি করা যাইতে পারে ৷ স্মরণ রাখা কর্তব্য যে, পরিবারের কোন ভৃত্যকে পরিবারের লোক হিসাবে  গণ্য করা যাইবে না ৷

সমন জারিকারক সমন প্রদান করিবার সময় সমনের প্রাপ্তিস্বীকার স্বরূপ মূল সমনের উপর বিবাদীর বা তাহার প্রতিনিধির স্বাক্ষর গ্রহণ করিবেন ৷ উক্তরূপ স্বাক্ষর দিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করিলে অথবা বিবাদীর বাসস্থানে উপস্থিত হইয়া সকল চেষ্টা সত্ত্বেও বিবাদীকে না পাওয়া গেলে অথবা যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে তাহার ফিরিবার সম্ভাবনা না থাকিলেও তাহার পক্ষে সমন গ্রহণের কোন ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির সহিত ও সাক্ষাত্‍ না পাওয়া গেলে, জারিকারক যে গৃহে বিবাদী সাধারণতঃ বসবাস করে অথবা ব্যবসা করে সেই গৃহের বহির্দ্বারে অথবা গৃহের অন্য কোন প্রকাশ্য অংশে সমন লটকাইয়া জারি করিতে পারেন ৷ এইক্ষেত্রে যেই ব্যক্তি উক্ত গৃহ শনাক্ত করিয়াছে ও যাহাদের উপস্থিতিতে এইরূপভাবে সমন জারি করা হইয়াছে তাহাদের নাম ও ঠিকানা মূল সমনের পৃষ্ঠে লিখিত হইবে এবং সম্ভব হইলে তাহাদের স্বাক্ষর মূল সমনের পৃষ্ঠে গ্রহণ করিতে হইবে ৷ তত্‍পর জারিকারক এফিডেফিট সম্বলিত বিবৃতিসহ উহা আদালতে ফেরত দিতে হইবে৷

(খ) ডাকযোগে পত্র প্রেরণ করিয়া নোটিস জারি: ডাকযোগে সমন জারির পদ্ধতি দেওয়ানী কার্যবিধি আইনের ৫নং আদেশের ৫নং আদেশের ৫নং আদেশের ২১-৩০ নিয়মে বর্ণিত আছে৷ বিবাদী কারাগারে আটক থাকিলে কারাগারের কর্মচারীর মাধ্যমে অথবা ডাকযোগে সমন জারি করা যাইতে পারে৷ কোন বিবাদী বাংলাদেশের বাহিরে বসবাস করিলে এবং দেশে তাহার কোন ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি না থাকিলে তাহার বিদেশস্থিত ঠিকানায় ডাকযোগে সমন প্রেরণ করা যাইতে পারে৷

বিবাদী কোন সৈনিক, বৈমানিক বা নাবিক হইলে আদালত ঐ সমন এবং ইহার একটি নকল বিবাদীকে প্রদান করিবার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট ডাকযোগে পাঠাইবেন৷ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উহা বিবাদীর উপর জারি করিয়া ও সম্ভব হইলে বিবাদীর লিখিত প্রাপ্তিস্বীকারসহ ঐ সমন জারিকারক আদালতে পাঠাইবেন৷ বিবাদী কোন সরকারী কর্মচারী, রেল কর্মচারী, অথবা স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী, হইলে সমন ও ইহার একটি নকল বিবাদীর উপর জারি করার অনুরোধপত্রসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অথবা অফিস প্রধানের নিকট ডাকযোগে পাঠাইবেন৷ উক্ত কর্তৃপক্ষ বা অফিস প্রধান উক্তরূপে উহা জারি করিয়া উহা আদালতে ফেরত পাঠাইবেন৷

ধারা:

৮৷ লিখিত জবাব:

(১) বিবাদীর হাজিরার নিমিত্ত নির্ধারিত তারিখে বাদী এবং বিবাদী পারিবারিক আদালতে হাজির হইবেন ও বিবাদী আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত জবাব উপস্থাপন করিবেন৷

তবে শর্ত থাকে যে, বিবাদী প্রার্থনা করিলে এবং উপযুক্ত কারণ প্রদর্শন করিলে আদালত অনধিক ২১ দিন পর জবাব দেওয়ার জন্য অন্য একটি তারিখ ধার্য্ করিতে পারেন৷

(২) লিখিত জবাবে উক্ত আত্মরক্ষার সমর্থনে হাজির করা হইবে এমন সাক্ষীগণের নাম এবং ঠিকানাসমূহ লিখিত জবাবের অন্তর্ভুক্ত থাকিবে৷

শর্ত থাকে যে, বিবাদী আদালতের অনুমতিক্রমে পরবর্তী যেকোন স্তরে যেকোন সাক্ষী ডাকিতে পারেন; যদি ন্যায়বিচারের স্বার্থে আদালত উক্তরূপ সাক্ষ্যগ্রহণ সমীচীন মনে করেন ৷

(৩) বিবাদী তাহার লিখিত জবাবের সমর্থনে সাক্ষ্য হিসাবে তাহার দখলাধীন অথবা আয়ত্তাধীন কোন দলিলের উপর নির্ভর করিলে তিনি লিখিত জবাব উপস্থাপনকালে আদালতে পেশ করিবেন এবং একই সময় উক্ত দলিল অথবা উহার অবিকল বা ফটোস্ট্যাট প্রতিলিপি লিখিত জবাবের সহিত নথিভুক্তির জন্য একটি লিস্টভুক্ত করিবেন৷

(৪) যেক্ষেত্রে বিবাদী তাহার লিখিত জবাবের সমর্থনে সাক্ষ্য হিসাবে তাহার স্বীয় দখলাধীনে অথবা আয়ত্তাধীনে নাই এমন কোন দলিলের উপর নির্ভর করেন সেক্ষেত্রে তিনি উক্ত দলিলের বিষয়টি লিখিত জবাবের সহিত সংযোজন করণার্থে একটি তালিকাভুক্ত করতঃ দলিলটি কাহার দখলে অথবা আয়ত্তাধীনে রহিয়াছে তাহা বর্ণনা করিবেন৷

(৫) মামলায় যতজন বাদী রহিয়াছে তফসিলসহ লিখিত জবাবের ততগুলো অবিকল নকল তত্সহ ৩ ও ৪ নং উপধারায় বর্ণিত দলিলের ফিরিস্তির ততগুলো অবিকল নকল লিখিত জবাবের সহিত থাকিবে৷

 (৬) ৫ নং উপধারায় বর্ণিত তফসিলসহ লিখিত জবাব, দলিলসমূহ এবং দলিলসমূহের তালিকায় নকল আদালতে উপস্থিত বাদীকে অথবা তাহার প্রতিনিধি অথবা এডভোকেটকে প্রদান করিতে হইবে৷

 যেক্ষের(৭) যেক্ষেত্রে জবাব উপস্থাপনের সময় বিবাদী আদালতে কোন দলিল দাখিল করা উচিত অথবা উহা জবাবের সহিত সংযুক্ত করিবার জন্য কোন লিস্টভুক্ত করা উচিত এবং যদি উহা উক্তরূপে দাখিল বা ল

bbasujon:
পারিবারিক আদালত বিধিমালা, ১৯৮৫

------------------------------------------------------------------

 

১৯৮৫ সালের পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশের ২৬ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার নিম্নলিখিত বিধিমালা প্রণয়ন করিলেন; যথাঃ

 

বিধি -১ (সংক্ষিপ্ত শিরোনাম )

এই বিধিমালা 'পারিবারিক আদালত বিধিমালা, ১৯৮৫' নামে অভিহিত হইবে ।

 

বিধি-২ ( সংজ্ঞাসমূহ )

অত্র বিধিমালা বিষয়ে অথবা প্রসঙ্গে বিপরীত কিছু না থাকিলে-

(ক) 'ফরম' বলিতে অত্র বিধিমালার সঙ্গে সংযুক্ত ফরমকে বুঝাইবে ।

(খ) 'অধ্যাদেশ' বলিতে পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ, ১৯৮৫ (১৯৮৫ সনের ১৮নং আইন)-কে বুঝাইবে ।

 

বিধি -৩ (মামলার রেজিস্ট্রি বই)

কোনো আপিল জেলা জজের আদালতে দায়ের করা হইলে উহার বিবরণ 'খ' ফরমে রক্ষিতব্য রেজিস্ট্রি বইতে অন্তর্ভুক্ত করিতে হইবে ।

 

বিধি-৪ (আপীলের রেজিস্ট্র বই )

কোনো আরজি পারিবারিক আদালতে দায়ের করা হইলে উহার বিবরণ খ ফরমে রক্ষতব্য রেজিস্ট্রি বইতে অন্তর্ভুক্ত করিতে হইবে ।

 

বিধি -৫ ( ডিক্রির ফরম )

অত্র অধ্যাদেশের প্রত্যেক মামলার রায় প্রদানান্ত 'গ' ফরমে ডিক্রি লিখিতে হইবে ও ভারপ্রাপ্ত জজ উহাতে দস্তখত দিতে হইবে ও ডিক্রি পারিবারিক আদালতের সীলমোহর যুক্ত হইবে ।

 

বিধি-৬ (জরিমানার রসিদের ফরম)

যেক্ষেত্রে অত্র অধ্যাদেশের ১৮ অথবা ১৯ ধারা মোতাবেক কোনো জরিমানা প্রদান করা হয় বা অত্র অধ্যাদেশের আওতায় পারিবারিক আদালত কোনো অর্থ অথবা সম্পত্তি জমা নেয় অথবা আদায় করে সেক্ষেত্রে 'ঘ' ফরমে রসিদ প্রদান করিতে হইবে এবং উহা ক্রমিক নম্বর যুক্ত হইতে হইবে ও উহার চেকমুড়ি পারিবারিক আদালতে রক্ষিত হইবে ।

 

বিধি -৭ (জরিমানা ইত্যাদির রেজিস্ট্রি বই )

পারিবারিক আদালত কতৃর্ক জমা নেওয়া অথবা আদায়কৃত এবং ব্যয়কৃত সমস্ত জরিমানা, অর্থ অথবা সম্পত্তি 'ঙ' ফরমে কোনো রেজিস্ট্রি হইতে অন্তর্ভুক্ত করিতে হইবে ।

 

বিধি -৮ (পক্ষের উপর নোটিশ )

যদি পারিবারিক আদালত কোনো পক্ষের প্রাপ্য কোনো অর্থ গ্রহণ করেন তবে পারিবারিক উহা পাওয়ার পক্ষের প্রতি নোটিশ জারি করাইবেন ও উক্ত পক্ষকে উহা গ্রহণের নিমিত্ত তাহার দরখাস্তের ৭ দিনের ভিতর উহা প্রদান করিবেন ।

 

বিধি -৯ (পারিবারিক আদালতের রেকর্ডসমূহ এবং রেজিস্ট্রি বই )

দেওয়ানী আদালতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য সুপ্রীম কোর্টের বিধিসমূহ অনুযায়ী যথাবিধানকৃত সময়ের নিমিত্ত সংরক্ষণ করিতে হইবে ।

 

বিধি -১০ (রেকর্ডসমূহ ও উহা পরিদর্শন)

(১) বিরোধের কোনো পক্ষের দরখাস্তের ভিত্তিতে পারিবারিক আদালত চল্লিশ পয়সা ফী প্রদানের পর বিরোধ বিষয়ক পারিবারিক আদালতের রেকর্ডসমূহ পরিদর্শনের অনুমতি দিবেন ।

(২) মামলার কোনো পক্ষের দরখাস্তের ভিত্তিতে প্রতি একশত চল্লিশ অথবা উহার অংশবিশেষ শব্দের নিমিত্ত চল্লিশ পয়সা হারে ফী প্রদানের পর পারিবারিক আদালত উহার রায়, ডিক্রি অথবা আদেশের অথবা অপরাপর কার্যক্রমের অথবা অত্র বিধিসমূহ অনুযায়ী রক্ষিত কোনো রেজিস্ট্রি বইতে অন্তর্ভুক্তির অথবা ইহাদের কোনো অংশ বিশেষের প্রত্যায়িত প্রতিলিপি সরবরাহ করিতে হইবে ।

 

বিধি-১১ ( পারিবারিক আদালতের সীলমোহর )

(১) প্রতিটি পারিবারিক আদালতের অফিসে উক্ত আদালতের সীলমোহর রাখিতে হইবে এবং উহা আকারে বৃত্তাকারে হইবে ও পারিবারিক আদালত এবং স্থানের নাম থাকিবে ।

(২) অত্র অধ্যাদেশ অথবা বিধিমালার অধীনে দেওয়া সমস্ত সমন, আদেশ, ডিক্রি প্রতিলিপি এবং অপরাপর কাগজপত্রে পারিবারিক আদালতের সীলমোহর ব্যবহার করিতে হইবে ।

তথ্য সূত্র : জনগূরুত্বপূর্ণ  আইন

bbasujon:
মুসলিম বিবাহবিচ্ছেদ আইন, ১৯৬১

[১৯৩৯ সালের ৮নং আইন]

------------------------------------------------------------------

 

ধারা -১ (সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রয়োগযোগ্যতার সীমা )

(১) অত্র আইন মুসলিম বিবাহবিচ্ছেদ আইন, ১৯৩৯ নামে পরিচিত হইবে ।

(২) ইহা সমস্ত বাংলাদেশে কার্যকর হইবে ।

(৩) বিবাহবিচ্ছেদ ও ডিক্রি লাভের কারণসমূহঃ মুসলিম আইন অনুসারে কোনো বিবাহিতা স্ত্রীলোক নিম্নলিখিত এক বা একাধিক কারণে তাহার বিবাহবিচ্ছেদের ডিক্রি পাওয়ার অধিকারণী হইবে ।যথাঃ

(১) চার বত্‍সরকাল পর্যন্ত স্বামী নিখোঁজ;

(২) দুই বত্সরকাল পর্যন্ত স্বামী তাহাকে ভরণপোষণ প্রদানে অবহেলা করিয়াছে বা ব্যর্থ হইয়াছে ।

 

ধারা-২ (বিবাহবিচ্ছেদের ডিক্রির কারণসমূহ )

(১) ১৯৬১ সনের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের বিধান অমান্য করিয়া স্বামী অপর কোনো স্ত্রী গ্রহণ করিয়াছে;

(২) সাত বত্সর বা ততোধিক সময়ের জন্য স্বামী কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইয়াছে;

(৩) যুক্তসঙ্গত কারণ ব্যতীত স্বামী তিন বত্সরকাল যাবত তাহার বৈবাহিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হইয়াছে;

(৪) বিবাহের সময় স্বামী পুরুষত্বহীন ছিল এবং তাহার ঐরূপ অবস্থা অব্যাহত আছে;

(৫) দুই বত্সর পর্যন্ত স্বামী অপ্রকৃতিস্থ রহিয়াছে বা কুষ্ঠরোগ অথবা মারাত্মক যৌন রোগে ভুগিতে থাকে;

(৬) বয়স ১৬ বত্সর পূর্ণ হইবার আগে তাহাকে তাহার বাবা অথবা অন্য কোনো অভিভাবক বিবাহ দিয়াছে ও বয়স ১৮ বত্সর পূর্ণ হইবার আগে সে (স্ত্রীলোক) উক্ত বিবাহ নাকচ করিয়াছে । শর্ত থাকে যে, বিবাহে যৌনমিলন ঘটে নাই ।

(৭) স্বামী-স্ত্রীর সহিত নিষ্ঠুর আচরণ করে; যেমন-

(ক) তাহাকে স্বভাবতঃই আক্রমণ করে বা নিষ্ঠুর আচরণের মাধ্যমে তাহার জীবন দুর্বিসহ করিয়া তোলে যদি ঐরূপ আচরণ শারীরিক নির্যাতন নাও হয়; বা

(খ) খারাপ চরিত্রের নারীগণের সঙ্গে থাকে অথবা ঘৃণ্য জীবনযাপন করে; বা

(গ) তাহাকে নৈতিকতাহীন জীবনযাপনে বাধ্য করিতে চেষ্টার করে; বা

(ঘ) তাহার সম্পত্তি হস্তান্তর করে বা উক্ত সম্পত্তিতে তাহার আইনসঙ্গত অধিকার প্রয়োগে বাধা সৃষ্টি করে; বা

(ঙ) তাহাকে তাহার ধর্ম বিশ্বাস অথবা ধর্ম চর্চায় বাধা প্রদান করে; বা

(চ) যদি তাহার একাধিক স্ত্রী থাকে তবে কোরআনের নির্দেশ অনুযায়ী সে তাহার সহিত ন্যায়সঙ্গতভাবে ব্যবহার না করে;

(৮) মুসলিম আইন অনুযায়ী বিবাহবিচ্ছেদের নিমিত্ত বৈধ বলিয়া স্বীকৃত অপর কোন কারণে শর্ত থাকে যে-

(ক) কারাদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত ৩নং উপধারায় বর্ণিত কারণে ডিক্রি দেওয়া হইবে না;

(খ) ১নং উপধারায় বর্ণিত কারণে উহার তারিখ হইতে ছয় মাস কাল পর্যন্ত কার্যকর হইবে না; এবং স্বামী যদি উক্ত সময় মধ্যে ব্যক্তিগতভাবে বা কোনো ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধির মাধ্যমে উপস্থিত হইয়া আদালতকে সন্তোষজনক উত্তর দেয় যে সে দাম্পত্য দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত আছে তবে আদালত উক্ত ডিক্রি নাকচ করিবেন;

(গ) ৫নং উপধারায় বর্ণিত কারণে ডিক্রি দেওয়ার আগে আদালত স্বামীর আবেদনক্রমে তাহাকে আদেশ প্রদান করিতে পারেন যে, অত্র আদেশের তারিখ হইতে ১ বত্সরকালের মধ্যে সে আদালতের নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রমাণ করিতে হইবে যে, সে পুরুষত্বহীনতা হইতে আরোগ্য লাভ করিয়াছে; এবং যদি স্বামী উক্ত সময় মধ্যে ঐরূপে আদালতকে সন্তুষ্ট করিতে পারে তবে উক্ত কারণে কোনো ডিক্রি দেওয়া হইবে না ।

 

ধারা-৩ (নিরুদ্দেশ স্বামীর উত্তরাধিকারদের উপর নোটিশ প্রদান )

২নং ধারার ১নং উপধারার প্রযোজ্য মামলায়-

(ক) আরজি দাখিল করিবার তারিখে স্বামীর যদি মৃত্যু ঘটিত তবে মুসলিম আইন অনুসারে যাহারা তাহার উত্তরাধিকারী হইতে তাহাদের নাম, ঠিকানা আরজিতে লিপিবদ্ধ করিতে হইবে;

(খ) ঐরূপ ব্যক্তিগণের উপর মামলার নোটিশ জারি করিতে হইবে; এবং

(গ) উক্ত মামলার শুনানিতে তাহাদের বক্তব্য পেশ করিবার অধিকার থাকিবে;

শর্ত থাকে যে, যদি স্বামীর কোনো চাচা এবং ভাই থাকে তবে সে অথবা তাহারা উত্তরাধিকারী না হইলেও মামলায় পক্ষভুক্ত হইবে ।

 

ধারা -৪ ( অন্য ধর্ম গ্রহণের পরিণতি )

বিবাহিতা মুসলিম মহিলা ইসলাম ধর্ম পরিত্যাগ অথবা উক্ত ধর্ম ব্যতীত অন্য কোনো ধর্ম গ্রহণ করিলে সেইজন্য তাহার বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে না ।

শর্ত থাকে যে, ঐরূপ ধর্ম ত্যাগ অথবা অন্য ধর্ম গ্রহণ করিবার পর উক্ত নারী ২ ধারায় উল্লেখিত যেকোন কারণে বিবাহবিচ্ছেদের ডিক্রি পাওয়ার অধিকারিণী হইবে ।

আরও শর্ত থাকে যে, কোনো বিধর্মী মহিলা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করিবার পর পুনরায় তাহার পূর্বে ধর্মে ফিরিয়া আসিলে অত্র ধারার বিধানসমূহ তাহার প্রতি প্রযোজ্য হইবে না ।

 

ধারা-৫ ( দেনমোহরের অধিকার খর্ব করিবে না )

অত্র আইনে বর্ণিত কোনো কিছু মুসলিম আইন অনুসারে বিবাহিতা কোনো মহিলার প্রাপ্য দেনমোহর অথবা উহার কোনো অংশের অধিকার তাহার বিবাহবিচ্ছেদ কতৃর্ক প্রভাবিত হইবে না ।

 

ধারা-৬ (১৯৩৭ সালের ১৬নং আইনের ৫ ধারা বাতিল )

১৯৩৭ সালের মুসলিম ব্যক্তিগত আইন (শরীয়ত) প্রয়োগ আইনের ৫ ধারা বাতিল ।

 

তথ্য সূত্র : জনগূরুত্বপূর্ণ  আইন

bbasujon:
মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিষ্ট্রীকরণ)

আইন, ১ঌ৭৪

(১ঌ৭৪ সনের ৫২ নম্বর অধ্যইন)

 

 [ মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রীকরণ সম্পর্কিত আইন একীকরণ ও সংশোধন করিবার জন্য আইন ]

 

যেহেতু মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রীকরণ সম্পর্কিত আইন একীকরণ ও সংশোধন করা সমীচীন;

সেহেতু উহা এতদ্বারা নিম্নরূপ বিধিবদ্ধ করা হইলঃ

 

১। সংক্ষিপ্ত শিরোণাম ও প্রয়োগ :

    (১) এই আইন মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিষ্ট্রীকরণ) আইন, ১ঌ৭৪ বলিয়া অভিহিত করা যাইতে পারে।

    (২) বাংলাদেশের সকল মুসলিম নাগরিকদের উপর যেখানেই তাহারা থাকুক না কেন, ইহা প্রযোজ্য হইবে।

২। সংজ্ঞা সমূহ : এই আইনে যদি বিষয়ে বা প্রসঙ্গে পরিপন্থী কোন কিছু না থাকে তাহা হইলেঃ-

    (ক) মহা-নিবন্ধন পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর জেনারেল অব রেজিষ্ট্রশন) ও নিবন্ধক (রেজিষ্টার) বলিতে যথাক্রমে ১ঌ০৮ সনের রেজিষ্ট্রীকরণ আইনের (১৯০৮ সনের ১৬) অধীনে ঐরূপ পদনামযুক্ত ও নিযুক্ত অফিসারদেরকে বুঝায়।

    (খ) নির্ধারিত বলিতে এই আইনের অধীনে প্রণীত বিধিমালা দ্বারা নির্ধারিত বুঝায়।

৩। বিবাহ রেজিষ্ট্রীকরণ : অন্য যে কোন আইন, প্রথা বা রীতিতে  যে কোন কিছু থাকা সত্ত্বেও মুসলিম আইন অনুযায়ী অনুষ্ঠিত প্রত্যেক বিবাহ এই আইনের বিধানাবলী অনুযায়ী রেজিষ্ট্রী করতে হবে।

 

৪। নিকাহ নিবন্ধক : এই আইনের অধীন বিবাহসমূহ রেজিষ্ট্রীকরণের উদ্দেশ্যে সরকার যেরূপ বিধিনির্দিষ্ট করিতে পারেন সেরূপ এলাকার জন্য যেরূপ প্রয়োজনীয় গণ্য করিতে পারে সেরূপ সংখ্যক নিকাহ নিবন্ধক বলিয়া অভিহিত ব্যক্তিকে অনুজ্ঞাপত্র মঞ্জুর করিবেন।
 

তবে শর্ত থাকে যে অনধিক একজন নিকাহ নিবন্ধক যে কোন একটি এলাকার জন্য অনুজ্ঞাপ্রাপ্ত হইবে।
 

৫। নিকাহ নিবন্ধকগণ কর্তৃক অনানুষ্ঠিত বিবাহ সম্পর্কে তাহাদের নিকট প্রতিবেদন করিতে হইবে :

    (১) নিকাহ নিবন্ধক কর্তৃক অনানুষ্ঠিত প্রত্যেক বিবাহ এই আইনের অধীনে রেজিষ্ট্রীকরণের উদ্দেশ্যে তাহার নিকট এইরূপ বিবাহ অনুষ্ঠিত করিয়াছেন এমন ব্যক্তি কর্তৃক প্রতিবেদন পেশ করিতে হইবে।

    (২) যে কেহ (১) উপ-ধারার বিধান লংঘন করিলে সে তিন মাস পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য মেয়াদের বিনাশ্রম কারাবাসে বা পাঁচশত টাকা পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য জরিমানায় বা উভয়বিধে শাস্তিযোগ্য হইবেন।

৬। তালাক রেজিষ্ট্রীকরণ :

    (১) কোন নিকাহ নিবন্ধক এখতিয়ারের মধ্যে মুসলিম আইন অনুযায়ী কার্যকরীকৃত তালাক রেজিষ্ট্রীকরণের জন্য তাহার নিকট পেশকৃত আবেদন পত্রের ভিত্তিতে উহা রেজিষ্ট্রী করিতে পারেন।

    (২) তালাক রেজিষ্ট্রিকরণের জন্য আবেদন তালাক কার্যকরী করিয়াছেন এমন ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণ কর্তৃক মৌখিকভাবে পেশকৃত হইবে ।

     

    তবে শর্ত থাকে যে, যদি মহিলা পর্দানশীল হন তাহা হইলে ঐরূপ আবেদন তাহার যথাযথভাবে কর্তৃত্বপ্রাপ্ত উকিল কর্তৃক পেশ করা যাইতে পারে।

     

    (৩) ১ঌ০৮ সনের রেজিষ্ট্রীকরণ আইনের (১৯০৮ সনের ১৬) অধীনে রেজিষ্ট্রীকৃত যে দলিলমুলে স্বামী স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা অর্পণ করিয়াছিল উক্ত দলিল অথবা ঐরূপ অর্পন করা হইয়াছে বলিয়া বিবাহ রেজিষ্ট্রী খাতায় অন্তভুক্তির সত্যায়িত প্রতিলিপি দাখিলকরণের ভিত্তিতে ব্যতীত নিকাহ নিবন্ধক তালাক-ই-তৌফিজ হিসাবে পরিচিত ধরনের কোন তালাক রেজিষ্ট্রী করিবেন না।

    (৪) যেক্ষেত্রে নিকাহ নিবন্ধক কোন তালাক রেজিষ্ট্রী করিতে অস্বীকার করেন, সেক্ষেত্রে ঐরূপ রেজিষ্ট্রীকরণের জন্য আবেদন করিয়াছিল এমন ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণ উক্ত অস্বীকৃতির ত্রিশ দিনের মধ্যে নিবন্ধকের নিকট আপীল পেশ করিতে পারেন এবং উক্ত আপীলের উপর নিবন্ধক কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত (বলিয়া গণ্য) হইবে।

৭। রেজিষ্ট্রীকরণের পদ্ধতি : নিকাহ নিবন্ধক  নির্ধারিত পদ্ধতিতে কোন বিবাহ বা তালাক রেজিষ্ট্রী করিবেন।

 

৮। রেজিষ্ট্রী খাতা : প্রত্যেক নিকাহ নিবন্ধক নির্ধারিত ফরমে বিবাহ ও তালাকের পৃথক রেজিষ্ট্রী খাতা রাখিবেন এবং ঐরূপ প্রত্যেক রেজিষ্ট্রী খাতায় প্রত্যেক বত্সরের শুরুতে নতুন সারির সূচনা ক্রমে সকল ভুক্তি ক্রমিক সারিতে সংখ্যাযুক্ত (করিতে) হইবে।
 

৯। পক্ষগণকে ভুক্তির প্রতিলিপি দিতে হইবে : কোন বিবাহ বা তালাকের রেজিষ্ট্রীকরণ সম্পূর্ন হওয়ার পর নিকাহ নিবন্ধক সংশ্লিষ্ট পক্ষগণকে খাতায় ভুক্তির সত্যায়িত প্রতিলিপি অর্পণ করিবেন এবং ঐরূপ প্রতিলিপির জন্য কোন খরচ আদায় করা হইবে না।
 

১০। নিয়ন্ত্রন ও তত্ত্বাবধান  :

    (১) প্রত্যেক নিকাহ নিবন্ধক তাহার অফিসের কর্তব্যাবলী নিবন্ধকের অধীক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণের অধীনে পালন করিবেন।

    (২) মহা-নিবন্ধন পরিদর্শক সকল নিকাহ নিবন্ধকগণের অফিসের উপর সাধারণ অধীক্ষণ চালাইবেন।

১১। অনুজ্ঞাপত্রের সংহরণ ও নিলম্বন : যদি সরকার বিশ্বাস করেন যে, নিকাহ নিবন্ধক তাহার কর্তব্যাবলী পালনে কোন অসদাচনের জন্য দোষী অথবা তাহার কর্তব্যাবলী পালনে অনুপযুক্ত বা দৈহিকভাবে অক্ষম, তাহা হইলে সরকার লিখিত আদেশবলে তাহার অনুজ্ঞাপত্র সংহরণ করিতে পারেন, অথবা আদেশের যেরূপ বিনির্দিষ্ট করা হইতে পারে সেরূপ অনধিক দুই বত্সর মেয়াদের জন্য তাহার অনুজ্ঞাপত্র নিলম্বিত করিতে পারেন।

     তবে শর্ত থাকে যে, ঐরূপ কোন আদেশ প্রদান করা হইবে না যদি নিকাহ নিবন্ধককে কেন ঐরূপ আদেশ প্রদান করা হইবে না উহার কারণ প্রদর্শনের যুক্তিসঙ্গত সুযোগ প্রদান করা হয়।
 

১২। রেজিষ্ট্রী খাতাসমূহের হেফাজত : প্রত্যেক নিকাহ নিবন্ধক ৮ ধারা অনুযায়ী তত্কর্তৃক রক্ষিত প্রত্যেকটি রেজিষ্ট্রী খাতা নিরাপদে রাখিবেন যতক্ষণ না উহা সম্পূর্ণ হয় এবং তিনি সংশ্লিষ্ট জিলা ত্যাগ করিলে বা অনুজ্ঞাপত্র ধারণ করা বন্ধ করিলে তখনই বা তত্পূর্বে নিরাপদ হেফাজতের জন্য নিবন্ধকের নিকট উহা হস্তান্তর করিবেন।
 

১৩। রেজিষ্ট্রী খাতাসমূহ পরিদর্শন : যে কোন ব্যক্তি নির্ধারিত ফি, যদি থাকে, প্রদানক্রমে নিকাহ নিবন্ধকের বা নিবন্ধকের অফিসে সেখানে রক্ষিত যে কোন রেজিষ্ট্রী খাতা পরিদর্শন করিতে পারেন অথবা উহাতে কোন ভুক্তির প্রতিলিপি পাইতে পারেন।
 

১৪। বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা :

    (১) সরকার অফিসিয়াল গেজেটে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই আইনের উদ্দেশ্যাবলী কার্যকরী করিবার জন্য বিধি প্রণয়ন করিতে পারেন।

    (২) বিশেষ করিয়া এবং পূর্ববর্তী ক্ষমতার সাধারণত্বের হানি না করিয়া উক্ত বিধিমালা-

        (ক) যে ব্যক্তিদেরকে ৪ ধারার অধীনে অনুজ্ঞাপত্র মঞ্জুর করা যাইতে পারে তা যাদের জন্য আবশ্যক যোগ্যতা সম্পর্কে,

        (খ) বিবাহ বা তালাক রেজিষ্ট্রীকরণের জন্য নিকাহ নিবন্ধককে প্রদেয় কি সম্পর্কে,

        (গ) বিধি প্রণয়ন আবশ্যক এমন অন্য যে কোন বিষয় সম্পর্কে বিধান করিতে পারে।

১৫। ১ঌ৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের (১ঌ৬১ সনের ৮অর্ডিন্যান্স) সংশোধন :
১৯৬১ সনের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের,

    (ক) ৩ ধারার (১) উপ-ধারায় কমা ও শব্দাবলী এবং মুসলিম বিবাহ রেজিষ্ট্রীকরণ শুধুমাত্র ঐ সকল বিধানাবলী অনুযায়ী সংঘটিত হইবে বাদ যাইবে।

    (খ) ৫ ধারা বাদ যাইবে।

    (গ) ৬ ধারার (১) উপ-ধারায় এই আইনের অধীন শব্দসমূহের পরিবর্তে ১ঌ৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিষ্ট্রীকরণ) আইনের (১ঌ৭৪ সনের ৫২ নম্বর আইন) অধীন শব্দসমূহ, কমা, অংক ও বন্ধকী বসিবে।

১৬। নিরসন :
১৮৭৬ সনের মুসলিম তালাক রেজিষ্ট্রীকরণ আইনের (১৮৭৬ সনের ১ নং বেঙ্গল আইন) এতদ্বারা নিরসন করা হইল।

 

১৭। বিদ্যমান নিকাহ নিবন্ধকগণ সম্পর্কিত বিধান :
এই আইনের প্রারম্ভের পূর্বে ১৯৬১ সনের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের (১৯৬১ সনের ৮) অধীনে অনুজ্ঞাপ্রাপ্ত সকল নিকাহ নিবন্ধকগণ এই আইনের অধীনে নিকাহ নিবন্ধক হিসাবে অনুজ্ঞাপ্রাপ্ত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

bbasujon:
সিলম বিবাহ আইন

(১৯৩৯ সালের ৮নং আইন)

[ ১৯৩৯ সালের ১৭ই মার্চ তারিখে গভর্ণর-জেনারেলের সম্মতিপ্রাপ্ত ]

    [ মুসলিম আইন অনুযায়ী বিবাহিতা মহিলার বিবাহ বিচ্ছেদের উপর আণীত মামলা সম্পর্কিত মুসলিম আইনের বিভিন্ন ব্যবস্থাবলীর একত্রীকরণ ও পরিস্কার ব্যাখ্যার জন্য এবং বিবাহিতা মুসলমান মহিলার ইসলাম ধর্ম পরিত্যাগের ফলে তাহার বিবাহ সম্পর্কের ক্ষেত্রে সৃষ্ট সন্দেহ দূরীকরণার্থে প্রণীত এাক্ট ]।

    যেহেতু, মুসলিম আইন অনুযায়ী বিবাহিতা মহিলার বিবাহ বিচ্ছেদের উপর আনীত মামলা সম্পর্কিত মুসলিম আইনের বিভিন্ন ব্যবস্থা একত্রীকরণ ও উহাদের পরিস্কার ব্যাখ্যার জন্য এবং বিবাহিতা মুসলমান মহিলার ইসলাম ধর্ম পরিত্যাগের ফলে তাহার বিবাহ সম্পর্কের ক্ষেত্রেও সৃষ্ট সন্দেহ দূরীকরণার্থে, এক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুভব করা যাইতেছে, সেইহেতু এতদ্বারা নিম্নলিখিত আইন পাশ করা হইতেছে :   

    ১।  (ক) সংক্ষিপ্ত শিরোনামঃ অত্র আইনকে ১৯৩৯ সালের মুসলমান বিবাহ বিচ্ছেদ আইন নামে অভিহিত করা যাইতে পারে।

           (খ) ইহা সমগ্র বাংলাদেশে প্রযোজ্য হইবে।

    ২। বিবাহ বিচ্ছেদের ডিক্রির হেতুবাদঃ নিম্নলিখিত যে কোন এক বা একাধিক হেতুবাদে মুসলিম আইন অনুযায়ী বিবাহিতা কোন মহিলা তাহার বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য ডিক্রি লাভের অধিকারিণী হইবেন, যথাঃ

        i) চার বত্‍সর যাবত্‍ স্বামী নিরুদ্দেশ হইলে;

        ii) স্বামী দুই বত্‍সর যাবত্‍ স্ত্রীর ভরণ-পোষণ দানে অবহেলা প্রদর্শন করিলে অথবা ব্যর্থ হইলে;

        ii-ক) স্বামী ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ব্যবস্থা লঙ্খন করিরা অতিরিক্ত স্ত্রী গ্রহণ করলে;

        iii) স্বামী সাত বত্‍সর বা তদুর্ধ্ব সময়ের জন্য কারাদন্ডে দন্ডিত হইলে;

        iv) স্বামী কোন যুক্তসঙ্গত কারণ ব্যতীত তিন বত্‍সর যাবত্‍ তাহার দাম্পত্য দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হইলে;

        v) বিবাহকালে স্বামীর পুরুষত্বহীনতা থাকিলে এবং উহা বর্তমানেও চলিতে থাকলে;

        vi) দুই বত্‍সর যাবত্‍ স্বামী পাগল হইয়া থাকিলে অথবা কুষ্ঠ ব্যাধিতে কিংবা ভয়ানক ধরণের উপদংশ রোগে ভুগিতে থাকলে;

       vii) আঠার বত্‍সর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে তাহাকে তাহার পিতা অথবা অন্য অভিভাবক বিবাহ করাইয়া থাকিলে এবং উণিশ বত্‍সর বয়স পূর্ণ হইবার পূর্বেই সে উক্ত বিবাহ অস্বীকার করিয়া থাকিলে; তবে, অবশ্য ঐ সময়ের মধ্যে যদি দাম্পত্য মিলন অনুষ্ঠিত না হইয়া থাকে;

       viii) স্বামী তাহার (স্ত্রীর) সহিত নিষ্ঠুর আচরণ করিলে, অর্থাত্‍   

        ক) অভ্যাসগতভাবে তাহাকে আঘাত করিলে বা নিষ্ঠুর আচরণ দ্বারা, উক্ত আচরণ দৈহিক পীড়নের পর্যায়ে না পড়িলও, তাহার জীবন শোচনীয় করিয়া তুলিয়াছে এমন হইলে;.

        খ) স্বামীর দূর্নাম রহিয়াছে বা কলঙ্কিত জীবন যাপন করে এমন স্ত্রীলোকদের সহিত মেলামেশা করিলে, অথবা

        গ) তাহাকে দূর্ণীত জীবন যাপনে বাধ্য করিবার চেষ্টা করিলে, অথবা

        ঘ) তাহার সম্পত্তি হস্তান্তর করিলে অথবা উহার উপর তাহার বৈধ অধিকার প্রয়োগে বাধা প্রদান করিলে, অথবা

        ঙ) তাহার ধর্মীয় কর্তব্য পালনে বাধা সৃষ্টি করিলে, অথবা

        চ) একাধিক স্ত্রী থাকিলে, সে কোরানের নির্দেশ অনুযায়ী ন্যায়পরায়নতার সহিত তাহার সঙ্গে আচরণ না করিলে;

        ix) মুসলিম আইন অনুযায়ী বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য বৈধ হেতু হিসাবে স্বীকৃত অন্য যে কোন কারণেঃ

        তবে অবশ্য-

        ক) কারাদন্ডাদেশ চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত ৩ নং হেতু বাদে কোন ডিক্রি প্রদান করা যাইবে না,

        খ) ১ নং হেতুবাদে প্রদত্ত ডিক্রিটি উহার প্রদানের তারিখ হইতে ৬ মাস পর্যন্ত কার্যকরী হইবে না এবং স্বামী উক্ত সময়ের মধ্যে স্বয়ং অথবা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কো এজেন্টের মাধ্যমে উপস্থিত হইয়া এই মর্মে যদি আদালতকে খুশী করিতে পারে যে, দাম্পত্য কর্তব্য পালনে প্রস্তুত রহিয়াছে, তাহা হইলে আদালত ডিক্রিটি রদ করিবেন; এবং

        গ) ৫ নং হেতুবাদে ডিক্রি প্রদানের পূর্বে, স্বামীর আবেদনক্রমে আদালতের আদেশের এক বত্‍সরের মধ্যে যে পুরুষত্বহীনতা হইতে মুক্তি লাভ করিয়াছে বা তাহার পুরুষত্বহীনতার অবসান ঘটিয়াছে এই মর্মে আদালতকে সন্তুষ্ট করিবার জন্য আদালত তাহাকে আদেশ দান করিতে পারেন এবং যদি সে উক্ত সময়ের মধ্যে আদালতকে এই মর্মে সন্তুষ্ট করিতে পারে, তাহা হইলে উক্ত হেতুবাদে কোন ডিক্রি প্রদান করা যাইবে না।   

    ৩। স্বামীর ঠিকানা জানা না থাকিলে তাহার উত্তরাধিকারীগণের উপর নোটিশ জারী করিতে হইবে

    যে মামলায় ২ ধারায় (১) উপ-ধারা প্রযোজ্য, সেখানে-

    ক) আর্জিতে ঐ সমস্ত লোকের নাম-ঠিকানা লিখিতে হইবে যাহারা আর্জি পেশ করিবার সময় স্বামী মারা গেলে মুসলিম আইনে স্বামীর উত্তরাধিকারী হইতেন;

    খ) ঐ ধরণের ব্যক্তিগণের উপর নোটিশ জারী করিতে হইবে, এবং

    গ) উক্ত মামলায় ঐ সকল ব্যক্তির বক্তব্য পেশ করিবার অধিকার থাকিবে।

    তবে অবশ্য ম্বামীর চাচা ও ভাই থাকিলে উহারা উত্তরাধিকারী না হইলেও উহাদিগকে অবশ্যই পক্ষভূক্ত করিতে হইবে।

    ৪। ধর্মান্তরের ফলঃ

কোন বিবাহিতা মুসলমান মহিলা ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করিলে অথবা ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্মে দীক্ষা গ্রহন করিলে উহাতেই তাহা বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটিবে না।

    তবে, অবশ্য এই জাতীয় ধর্ম ত্যাগ বা অন্য ধর্ম গ্রহণের পর মহিলাটি ২ ধারায় বর্ণিত অন্য কোন হেতুবাদে তাহার বিবাহ বিচ্ছিদের জন্য ডিক্রি গ্রহণের অধিকারিণী হইবেনঃ

    আরও এই যে, অত্র ধারার ব্যবস্থাবলী ঐ মহিলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না, যে কোন ধর্ম হইতে মুসলিম ধর্মে ধর্মান্তরিত হইয়াছিল এবং বর্তমানে স্বীয় পুরাতন ধর্মে পুনরায় দীক্ষা গ্রহণ করিল।

    ৫। দেহমোহরের অধিকার ক্ষুন্ন হইবে নাঃ

অত্র আইনে সন্নিবেশিত কোন কিছুই কোন বিবাহিতা মহিলার বিবাহ বিচ্ছেদের ফলে মুসলিম আইন অনুযায়ী তাহার প্রাপ্ত দেনমোহর অথবা উহার কোন অংশের উপর তাহার কোন অধিকারকেই ক্ষুন্ন করিবে না।

    ৬। ১৯৩৭ সালের মুসলিম ব্যক্তিগত আইন (শরিয়ত) প্রয়োগ আইনের ৫ ধারাটিকে এতদ্বারা বাতিল ঘোষণা করা হইল [ ১৯৪২ সালের ২৫ নং এ্যাক্ট দ্বারা বাতিল ঘোষিত হয় ]

Navigation

[0] Message Index

[#] Next page

[*] Previous page

Go to full version