E-Health / Protect Your Health > E- Health For Women

গর্ভকালীন সমস্যা

(1/4) > >>

bbasujon:
গর্ভকালীন সমস্যা

প্রতি বছর গর্ভকালীন বিভিন্ন জটিলতায় আমাদের দেশের বহু নারীর মৃতু্য হয়৷ গর্ভকালীন বিভিন্ন জটিলতা ও সমস্যা সম্পর্কে অজ্ঞতা ও সচেতনতার অভাবে মা ও শিশু উভয়ের জীবনই ঝঁুকিপূর্ণ হতে পারে৷ তাই এ ধরনের সমস্যাগুলো সম্পর্কে ধারণা দেয়া এবং এ থেকে নিরাপদ থাকার কিছু পরামর্শ দেয়া হলো৷ মনে রাখবেন গর্ভকালীন সমস্যা বিষয়ে সচেতনতা ও সঠিক পরিচর্যাই পারে মা ও শিশুর জীবন বাঁচাতে৷

গর্ভকালীন বিভিন্ন সমস্যা নিচে দেওয়া
১.  গর্ভপাত
২.  প্রি-এক্লাম্পশিয়া
৩.  এক্লাম্পশিয়া
৪.  ফিস্টুলা
৫.  পেরিনিয়াম ছিঁড়ে যাওয়া
৬.  প্রসবপূর্ব সেবা
৭.  প্রসবোত্তর সেবা

bbasujon:
গর্ভপাত
যদি কোনো কারণে গর্ভস্থ ভ্রূণ আটাশ সপ্তাহ বা সাত মাসের পূর্বে মাতৃজঠর বা জরায়ু থেকে বের হয়ে যায় তবে তাকে গর্ভপাত বা এ্যাবরশন বলে৷

কারণ
গর্ভপাতের কারণগুলোকে মোটামুটি দুভাগে ভাগ করা যায়-
১. ভ্রুণের অস্বাভাবিকতা বা ক্রমোজমের ত্রুটি
২. গর্ভবতী মায়ের শরীরের নানা ত্রুটির জন্য গর্ভপাতের আশংকা থাকে৷ যেমন-

    * গর্ভবতীর যদি গর্ভাবস্থায় খুব জ্বর হয় এবং তাপমাত্রা ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপরে উঠে যায়৷
    * গর্ভবতীর যদি গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ বেড়ে যায়৷
    * গর্ভবতীর যদি ডায়াবেটিস থাকে এবং তা যদি পূর্বে শনাক্ত করা না হয়ে থাকে এবং অনিয়ন্ত্রিত থাকে৷
    * গর্ভবতীর যদি কিডনীর অসুখ (নেফ্রোটিক সিনড্রোম) থাকে৷
    * গর্ভবতী যদি গর্ভাবস্থায় হাম রোগে আক্রান্ত হয়৷
    * গর্ভবতী যদি গর্ভাবস্থায় কলেরা রোগে আক্রান্ত হয়৷
    * থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে৷
    * জরায়ুর টিউমার বা জরায়ুর গঠনগত কোনও ত্রুটি থাকলে৷
    * জরায়ুতে গর্ভফুল বা প্ল্যাসেন্টা যদি খুব নিচে নেমে আসে তাহলেও বাচ্চা নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে৷
    * আগের গর্ভাবস্থা যদি ইচ্ছাকৃতভাবে গর্ভপাত করানো হয়৷
    * মায়ের শরীরে প্রোজেস্টেরোন হরমোন কম থাকার কারণে গর্ভপাত হতে পারে৷
    * গর্ভবতী যদি অত্যধিক মদ্যপান বা ধূমপানে আসক্ত হন তবে গর্ভপাত হতে পারে৷
    * গর্ভবতী যদি প্রবল মানসিক পীড়ণে থাকেন বা চরম শোক দুঃখ পান তাহলে গর্ভপাত হতে পারে৷
    * গর্ভাবস্থায় পেটে আঘাত পেলে, অত্যধিক পরিশ্রম, বাস বা ট্রেনে অনেক দূরে যাতায়াত করলে গর্ভপাত হতে পারে৷

গর্ভপাতের শ্রেণীবিভাগ নিচে দেওয়া হলো-
থ্রেটেন্ড গর্ভপাত (Threatened Abortion) : যে গর্ভপাত অল্পের জন্য হলো না কিন্তু হবার ভয় থাকে৷ এতে তলপেটে অল্প ব্যথা এবং সামান্য রক্তস্রাব হয়৷ তাড়াতাড়ি উপযুক্ত চিকিত্‌সা করালে গর্ভপাত বন্ধ করা যেতে পারে৷

অসম্পূর্ণ গর্ভপাত (Incomplete Abortion) : ভ্রুণের কিছু অংশ যদি জরায়ুর ভেতরে রয়ে যায় তবে তাকে অসম্পূর্ণ গর্ভপাত বলে৷
জীবাণুদুষ্ট গর্ভপাত (Septic Abortion) : অনেক সময় জীবাণু সংক্রমণের ফলে গর্ভপাত হয়, তলপেটে ব্যথা হয় সেই সাথে পেট ফুলে যেতে পারে৷ পায়খানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে৷ রোগী মারাও যেতে পারে৷

মিস্ড গর্ভপাত (Missed Abortion) : জরায়ুর ভেতরে ভ্রূণ নানা কারণে মরে যায় এবং ঐ অবস্থায় মমির মতো জমাট বেঁধে থাকে৷
ইনএভিটেবল গর্ভপাত (Inevitable Abortion) : যে গর্ভপাত এড়ানোর কোনও ব্যবস্থা থাকে না তাকে ইনএভিটেবল গর্ভপাত বলে৷ যথাযথ সুচিকিত্‌সার মাধ্যমে সারিয়ে না তুললে পরবর্তীকালে জরায়ুমুখ খুলে যায় এবং গর্ভপাত নিশ্চিত হয়ে দাড়ায়৷
গর্ভপাতের উল্লেখিত প্রকার ভেদের মধ্যে সেপটিক অ্যাবরশন বা জীবাণুদুষ্ট গর্ভপাত সবচেয়ে মারাত্মক এবং আমাদের দেশে গর্ভবতী মায়েদের অকাল মৃতু্যর জন্য এর ভূমিকা অনেকখানি৷

বিভিন্ন শ্রেণীর গর্ভপাতের লক্ষণ
থ্রেটেন্ড গর্ভপাত

    * কয়েকমাস মাসিক (পিরিয়ড) বন্ধ থাকবে৷
    * রক্তস্রাব অল্প সামান্য হতে পারে৷

    * পেটের ব্যথা নাও থাকতে পারে, থাকলেও খুব অল্প, কোমর বা তলপেটে সামান্য ব্যথা থাকতে পারে৷
    * প্রসবদ্বার দিয়ে ভ্রুণ, তার আস্তরণ ও ফুল বেরিয়ে আসবে না৷
    * জরায়ুর মুখ বন্ধ থাকবে (ডাক্তার পরীক্ষা করে বুঝবেন)৷

অসম্পূর্ণ গর্ভপাত

    * কয়েকমাস মাসিক (পিরিয়ড) বন্ধ থাকবে৷
    * রক্তস্রাব অনেকদিন একইভাবে হতে পারে৷
    * পেটে ব্যথা থাকতে পারে নাও পারে৷
    * প্রসবদ্বার দিয়ে ভ্রূণ, তার আস্তরণ ও ফুল বেরিয়ে আসবে৷
    * জরায়ুর মুখ খোলা থাকবে (ডাক্তার পরীক্ষা করে বুঝবেন)৷

জীবাণুদুষ্ট গর্ভপাত

    * কয়েকমাস মাসিক (পিরিয়ড) বন্ধ থাকবে৷
    * কট গন্ধযুক্ত রক্ত স্রাব হতে পারে৷
    * প্রথমদিকে পেটে ব্যথা না হলেও পরে তলপেটে খুব ব্যথা হবে৷

    * প্রসবদ্বার দিয়ে ভ্রূণ, তার আস্তরণ ও ফুল বেরিয়ে আসতেও পারে নাও পারে৷
    * জরায়ুর মুখ খোলা বা বন্ধ থাকতে পারে (ডাক্তার পরীক্ষা করে বুঝবেন)৷
    * শীত করে এবং কঁাপিয়ে জ্বর আসতে পারে৷
    * রক্ত চাপ কমে যায়৷
    * অত্যধিক রক্ত ক্ষরণের কারণে রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে৷ রোগী ফ্যাকাশে হয়ে পড়ে৷

মিস্ড গর্ভপাত

    * কয়েকমাস মাসিক (পিরিয়ড) বন্ধ থাকবে৷
    * প্রসবদ্বার দিয়ে ভ্রূণ, তার আস্তরণ ও ফুল বেরিয়ে আসবে না৷
    * পেটে ব্যথা থাকবে না৷
    * জরায়ুর মুখ সাধারণত বন্ধ থাকবে (ডাক্তার পরীক্ষা করে বুঝবেন)৷
    * রক্তস্রাব হবে না, সামান্য বাদামি দাগ লাগতে পারে৷

ইনএভিটেবল গর্ভপাত

    * কয়েকমাস মাসিক (পিরিয়ড) বন্ধ থাকবে৷
    * খুব বেশি পরিমাণে রক্তস্রাব হবে৷

    * তলপেটে প্রচণ্ড ব্যথা৷
    * প্রসবদ্বার দিয়ে ভ্রুণ, তার আস্তরণ ও ফুল বেরিয়ে আসবে না৷
    *  জরায়ুর মুখ খোলা থাকবে (ডাক্তার পরীক্ষা করে বুঝবেন)৷

চিকিত্‌সা

    * গর্ভপাত শনাক্ত করা সম্ভব হলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠাতে হবে৷

পরামর্শ

    * কমপক্ষে একমাস বিশ্রাম এবং পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত৷
    * বাড়ির হালকা কাজকর্ম করা যেতে পারে৷
    * একমাস স্বামী-সহবাস করা যাবে না৷
    * পরবর্তী বাচ্চা নেওয়ার আগে চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিতে হবে৷

প্রতিরোধ

    * সন্তান সম্ভাব হলেই চিকিত্‌সককেরকাছে পূর্বের সকল ইতিহাস খুলে বলতে হবে৷
    * নিয়মিত চেকআপ জরুরি৷
    * সন্তান সম্ভাব হওয়ার প্রথম দিকে রিকশা, বাস, ট্রাম, ট্রেন ইত্যাদির ঝঁাকুনি যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা উচিত৷
    * টিউবয়েল পাম্প করা, পানি ভর্তি ভারী বালতি তোলা, বাচ্চা কোলে নেওয়া ঠিক নয়৷
    * ছোঁয়াচে অসুখ থেকে গর্ভবতী মাকে দূরে রাখতে হবে৷
    * দোকান বা হোটেলের খাবার না খাওয়াই ভালো৷
    * প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে৷ |
       

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসুত্র-ড্রাগ ডিরেক্টরী,
নারী কিশোরী থেকে বৃদ্ধা, ডা. সুমন চৌধুরী :
 

bbasujon:
প্রি-একলাম্পশিয়া
প্রি-একলাম্পশিয়া গর্ভধারণের ২০ সপ্তাহ অর্থাত্‌ ৫ মাস পর থেকে দেখা দেয়৷

কারণ

    * একবার প্রি-একলাম্পশিয়া হলে
    * প্রি-একলাম্পশিয়া পরিবারে কারো হলে
    * পরিবারে কারো উচ্চ রক্তচাপ থাকলে
    * যাঁরা বেশি বয়সে মা হন তাদের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে
    * উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং নেফ্রাইটিস রোগীদের

লক্ষণ

    * রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া৷ রক্তচাপ সাধারণত ১৪০/ঌ০ (মিলিমিটার) এর বেশি থাকে
    * প্রস্রাবের সাথে প্রোটিন (আমিষ) জাতীয় পদার্থ শরীর থেকে বের হয়ে যাওয়া
    * হাত-পায়ে পানি আসা
    * মাথা ব্যথা
    * অনিদ্রা
    * চোখে ঝাপসা দেখা

    * প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া
    * বমি
    * পেটে ব্যথা
    * প্রি-একলাম্পসিয়া হওয়ার শুরুতেই শরীরে ওজন বাড়তে থাকে
    * সপ্তাহে আধা কেজি ওজন বৃদ্ধি পায়

চিকিত্‌সা

    * প্রি-একলাম্পশিয়া আক্রান্ত রোগীকে নিয়মিত চেকআপ করানো দরকার
    * খাবারের সঙ্গে আলাদা লবণ খাওয়া বন্ধ করতে হবে
    * প্রোটিন এবং ক্যালোরি যুক্ত খাবার খেতে হবে
    * পুষ্টিকর নরম খাবার খেতে হবে
    * রাতে গড়ে ৮ ঘণ্টা এবং দিনে ২ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে
    * পা ফুলে গেলে পা দুটো বালিশের উপর উঁচু করে রেখে ঘুমাতে হবে
    * ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঘুমের ওষুধ এবং প্রেসারের ওষুধ খেতে হবে
    * রক্তচাপ, ওজনের চার্ট তৈরি করতে হবে

    * প্রস্রাবের সঙ্গে প্রোটিন যাচ্ছে কি না তার চার্ট করতে হবে
    * বাচ্চার অবস্থাও বারবার দেখতে হবে
    * প্রয়োজনে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে

সঠিক সময়ে চিকিত্‌সা না করালে নিম্নলিখিত সমস্যা হতে পারে

মায়ের সমস্যা

    * প্রস্রাব না হওয়া অথবা অল্প হওয়া
    * চোখে কম দেখা এমনকি অন্ধ হয়ে যাওয়া
    * বাচ্চা প্রসবের পর অতিরিক্ত রক্তপাত হওয়া
    * একলাম্পশিয়া বা খিঁচুনি হওয়া

শিশুর সমস্যা

    * বাচ্চা মাতৃগর্ভে মারা যেতে পারে
    * বাচ্চার বৃদ্ধি ঠিকমত হবে না
    * জণ্মের সময় শ্বাসকষ্ট হবে

প্রতিরোধ

    * গর্ভবতী মায়েদের নিয়মিত প্রসবপূর্ব চেক-আপের ব্যবস্থা করা
    * গর্ভবতী মায়েদের পুষ্টিকর খাবার ও বিশ্রাম নিশ্চিত করা

প্রসবপূর্ব চেক-আপের সময় শারীরিক ওজন ও রক্তচাপ, পায়ে পানি আসে কিনা, প্রস্রাবে এলবুমিন যায় কিনা এগুলো পরীক্ষা করা উচিত৷

ল্যাব পরীক্ষা

    * প্রস্রাবের রুটিন পরীক্ষা
    * ২৪ ঘণ্টায় প্রস্রাবের প্রোটিন পরীক্ষা
    * রক্তে ইউরিয়া, ইউরিক এ্যাসিড এবং ক্রিয়েটিনিনের পরিমাণ দেখা
    * এসজিপিটি পরীক্ষা
    * পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে বাচ্চার অবস্থা দেখা৷
     

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসূত্র -
স্বাস্থ্যের টুকিটাকি ডা. রুমানা আহমদ
ড্রাগ ডিরেক্টরী
দেহের যত অসুখ বিসুখ, ডা. বরেন চক্রবর্তী

bbasujon:
এক্লাম্পশিয়া
এক্লাম্পশিয়া মূলত প্রি-এক্লাম্পশিয়ার গুরুতর অবস্থা৷ সাধারণত গর্ভধারণের ৬ মাস পর অথবা প্রসবের সময় অথবা প্রসবের কিছু সময় পর এটি হয়ে থাকে৷ তবে সহজভাবে বলা যায় যে প্রি-এক্লাম্পশিয়া রোগীদের যখন খিঁচুনি দেখা যায় তখন তাকে এক্লাম্পশিয়া বলে৷

কারণ

    * প্রি-এক্লাম্পশিয়া রোগীর চিকিত্‌সা না হলে
    * গর্ভবতী মায়ের সঠিক পরিচর্যা ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করলে

লক্ষণ

    * রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া৷ রক্তচাপ সাধারণত ১৪০/ঌ০ (মিলিমিটার পারদ চাপ) এর বেশি থাকে৷
    * হাত পায়ে পানি আসা
    * অসহ্য মাথা ব্যথা
    * অনিদ্রা
    * খিঁচুনি
    *

      েচাখে ঝাপসা দেখা
    *

      অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে (প্রসবের সময়, আগে এবং পরে)
    *

      প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া
    *

      বার বার বমি
    *

      পেটের উপর দিকে অসহ্য ব্যথা
    *

      শরীরে ওজন বাড়তে থাকে

চিকিত্‌সা

    * রোগীকে একটি আলাদা ঘরে বাম কাত হয়ে পূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে৷
    * রোগীকে অবশ্যই হাসপাতালে পাঠাতে হবে, না হলে গর্ভবর্তী মা ও শিশু উভয়ের মৃতু্য অনিবার্য৷

প্রতিরোধ

    *

      গর্ভবতী মায়েদের নিয়মিত প্রসবপূর্ব চেক-আপের ব্যবস্থা করা
    *

      গর্ভবতী মায়েদের পুষ্টিকর খাবার ও বিশ্রাম নিশ্চিত করা
    *

      প্রসবপূর্ব চেক-আপের সময় শারীরিক ওজন ও রক্তচাপ, পায়ে পানি আসে কিনা, প্রস্রাবে এলবুমিন যায় কিনা এগুলো পরীক্ষা করা উচিত৷
    *

      গর্ভাবস্থায় প্রি-এক্লাম্পশিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিত্‌সা করা৷ প্রি-এক্লাম্পশিয়া প্রতিরোধ করা সহজ৷ কিন্তু এক্লাম্পশিয়া হলে রোগীর ও বাচ্চার জীবন রক্ষা করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে৷

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসূত্র -
স্বাস্থ্যের টুকিটাকি, ডা. রুমানা আহমদ
ড্রাগ ডিরেক্টরী
দেহের যত অসুখ বিসুখ, ডা. বরেন চক্রবর্তী

bbasujon:
ফিস্টুলা
 
ফিস্টুলা হচ্ছে এক ধরনের অস্বাভাবিক নালী যার গায়ে কোষকলা থাকে এবং যা আবরণী কলা দিয়ে আবৃত শরীরের যে কোন দুটো অংশের মধ্যে সংযোগ ঘটায়৷ মানুষের দেহে নানা ধরনের রোগ-ব্যাধির পরিণতিতে বিভিন্ন রকম ফিস্টুলা হতে পারে৷ তবে সচরাচর যে সব ফিস্টুলা দেখা দেয় তা হচ্ছে -

১.এনাল ফিস্টুলা বা পায়খানার রাস্তার ফিস্টুলা

২.ভেসিকে ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা

৩.রেকটো ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা

এনাল ফিস্টুলা (Anal Fistula)
এনাল ফিস্টুলা বা পায়খানার রাস্তায় ফিস্টুলা হলে একটা নালী সৃষ্টি হয় যা পায়খানার রাস্তার ভেতরের কোনো অংশের সঙ্গে বাইরে সংযোগ স্থাপন করে দেয়৷ পায়খানার রাস্তায় দীর্ঘদিনের সংক্রমণ ও প্রদাহের ফলে এ রোগ দেখা দেয়৷

লক্ষণ

    * পায়খানার রাস্তার পাশ দিয়ে পুঁজ পড়ে, আক্রান্ত স্থানে ঘা হয়৷
    * জ্বর হয়
    * পায়খানার রাস্তার পাশে ছিদ্র পাওয়া যায় (চিকিত্‌সক পরীক্ষা করলে)
    * পায়খানার রাস্তার পাশের ছিদ্রে চাপ দিলে পুঁজ বের হয়ে আসে৷

চিকিত্‌সা
এ রোগের একমাত্র চিকিত্‌সা হচ্ছে শল্য চিকিত্‌সা বা অপারেশন৷ তাই রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতাল বা বিশেষজ্ঞ সার্জনের কাছে পাঠাতে হবে৷ না হলে পরবর্তী সময়ে নানাজটিলতা দেখা দিতে পারে৷
ভেসিকো ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা (Vesico Vaginal Fistula-VVF)
৪ ফুট ১০ ইঞ্চির কম উচ্চতাসম্পন্ন গর্ভবতীদের অনেক সময় প্রসবের পথ সরু থাকে এবং অনেক সময় প্রসবের সময় বাচ্চার মাথা প্রসব পথে আটকে যায়৷ আর এই প্রসব পথের চাপ যদি মূত্রথলির দিকে থাকে৷ তবে  যোনিপথ ও মূত্রথলির মাঝখানের দেয়াল ছিদ্র হয়ে সব সময় মূত্র যোনিপথ দিয়ে বের হয়ে আসে৷ ইহাকে ভেসিকো ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা বা ভিভিএফ বলে৷
রেকটো ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা (Recto Vaginal Fistula-RVF)
যোনি ও মলদ্বারের দেয়াল ছিদ্র হয়ে মল যোনি পথ দিয়ে বের হওয়াকে রেকটো ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা বলে৷

কারণ

    *

      জণ্মগত
    *

      বাইরের কোনও বস্তু যদি যোনিপথে ও মলদ্বারে আঘাত করে পথ সৃষ্টি করে৷
    *

      প্রসবকালে যদি দীর্ঘ সময় ধরে শিশুর মাথা যোনিপথে আটকে থাকার ফলে যোনিপথের দেয়ালের কোষকলাগুলিতে রক্ত চলাচল কমে গিয়ে কোষকলা নষ্ট হয়ে যায় এবং তার ফলে দেয়াল ছিদ্র হয়ে মল যৌনিপথে চলে আসে৷
    *

      বাধাপ্রাপ্ত প্রসবের কারণে ফরসেপ ব্যবহার করার সময় ফরসেপ সঠিকভাবে ব্যবহার করা না হলে৷
    *

      শিশুর মাথা তাড়াতাড়ি প্রসব করানোর জন্য ধাত্রী হাত দিয়ে বার বার প্রসবের রাস্তা প্রশস্ত করার   চেষ্টা করলে বা টানা হেঁচড়া করে প্রসবের চেষ্টা করলে৷
    *

      জরায়ুর মুখ পুরোপুরি খোলার আগেই এবং হঠাত্‌ করে প্রসবের ব্যথা আসার কারণে মা কেঁাথ দিয়ে প্রসব করার ফলে যোনিপথের দেয়াল ছিঁড়ে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে৷

লক্ষণ

    * যোনিপথে ব্যথা অনুভব হবে
    * যোনিপথের দেয়াল ঢিলে হয়ে যাওয়ার ফলে সহবাসে অসুবিধা হয়
    * সব সময় মল যোনিপথ দিয়ে বের হয়ে আসে

চিকিত্‌সা
যদি কোনও রোগীর উপরোক্ত লক্ষণগুলো ধরা পড়ে তবে তাকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে পাঠাতে হবে৷

পরামর্শ

    * প্রথবার প্রসবের সময় ১২ ঘণ্টার বেশি হলে এবং দ্বিতীয়বার বা পরবর্তী প্রসবের সময় ৬ ঘণ্টার বেশি হলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে অথবা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে৷
    * জরায়ুর মুখ ছোট হলে বাচ্চা প্রসবের জন্য টানা হিঁচড়া না করে দ্রুত হাসপাতালে বা ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত৷

প্রতিরোধ

    * গর্ভবতীর গর্ভকালীন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত৷
    * ৪ ফুট ১০ ইঞ্চির কম উচ্চতা সম্পন্ন গর্ভবতীদের হাসপাতালে প্রসব করানো উচিত৷
    * ডাক্তার বা দক্ষ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দাইয়ের হাতে প্রসব করানো উচিত৷
    * প্রসবের পর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত৷
     

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসুত্র :
ড্রাগ ডিরেক্টরী

Navigation

[0] Message Index

[#] Next page

Go to full version