Daffodil Computers Ltd.

E-Health / Protect Your Health => E- Health For Women => Topic started by: bbasujon on January 13, 2012, 08:30:38 AM

Title: ডিম্বাশয়ের সব সিস্টই টিউমার নয়
Post by: bbasujon on January 13, 2012, 08:30:38 AM
আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টে ডিম্বাশয়ের সিস্ট ধরা পড়েছে। রোগী দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। কী হবে এখন? ক্যান্সার হলো না তো? অস্ত্রোপচার করতে হবে? ইত্যাদি প্রশ্ন করেন চিকিৎসককে। এ রকম চিত্র খুবই সাধারণ। সিস্ট যে শুধু ডিম্বাশয়ে হয় তা নয়, এটি শরীরের যেকোনো অঙ্গে হতে পারে। সহজ ভাষায় সিস্ট বলতে বোঝায় পানি বা তরলভর্তি থলে।
ডিম্বাশয়ে নানা কারণে সিস্ট হতে পারে। প্রথমত, ডিম্বাশয়ের কর্মকাণ্ড শরীরের যেসব গ্রন্থি নিয়ন্ত্রণ করে সেগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা। এর ফলে স্বাভাবিক ডিম্বস্কোটন না হয়ে সিস্ট তৈরি হয়। এগুলোকে বলা হয় ফিজিওলজিক্যাল বা ফাংকশনাল সিস্ট। দ্বিতীয়ত, প্রদাহ। ডিম্বাশয়ের প্রদাহের অন্যতম কারণ হলো সংক্রমণ। তবে অন্য কারণেও প্রদাহ হতে পারে; যেমন-তলপেটে পূর্ববর্তী অস্ত্রোপচার। তাই একটি বিষয় পরিষ্কার বোঝা যায়, সব ডিম্বাশয়ের সব সিস্ট কিন্তু টিউমার নয়।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে ফাংকশনাল ওভারিয়ান সিস্ট। এগুলোর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, সাধারণত পাঁচ সেন্টিমিটার বা এর চেয়ে ছোট আকারের হয়; কখনো কখনো মাসিকের সাময়িক সমস্যা হতে পারে এবং কিছুদিন পর আপনা-আপনি মিলিয়ে যায় বা ভালো হয়ে যায়। সাধারণত রোগীকে তিন মাস ‘বড়ি’ খেতে পরামর্শ দেওয়া হয় এবং এরপর আলট্রাসনোগ্রাম করালে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রতিবেদন স্বাভাবিক পাওয়া যায়। ফাংকশনাল ওভারিয়ান সিস্টের রোগীরা খুব সহজেই অপচিকিৎসার শিকার হতে পারেন, অর্থাৎ ‘টিউমার’ অপারেশনে রাজি হয়ে অতীব জরুরি অঙ্গটি অকালে হারাতে পারেন।
এ ক্ষেত্রে সচেতনতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। টিউমারের কারণে যে সিস্ট হয়, সেগুলোর আকার অপেক্ষাকৃত বড়। তাই বড় আকারের সিস্টগুলোকে সরাসরি ওভারিয়ান টিউমার হিসেবে অভিহিত করাই যুক্তিযুক্ত। এই সিস্টগুলো ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা যায় না, অস্ত্রোপচার করাতে হয়। অস্ত্রোপচারের কথা শুনেই ঘাবড়ে যাওয়ার কোনো কারণ নেই।
চিকিৎসক যদি ক্যান্সার সন্দেহ না করেন, তবে আজকাল ল্যাপারোস্কোপির মাধ্যমে এসব সিস্ট (টিউমার) অস্ত্রোপচার করলে রোগী সেদিন বা পরদিনই বাড়ি ফিরতে পারেন। রোগীর বয়স কম হলে এবং টিউমার যদি নির্দোষ প্রকৃতির হয়, তবে বেশির ভাগ সময়ই ডিম্বাশয়কে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করে শুধু সিস্টটুকু অপসারণ করা হয়।
শরীরের নারীসুলভ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে ডিম্বাশয়ের ভূমিকা অনেক। বর্তমানে আলট্রাসনোগ্রাফি যন্ত্র গ্রামাঞ্চলের ছোট ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতেও পৌঁছে গেছে। আলট্রাসনোগ্রাফি যন্ত্রে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি করা হয়ে থাকে তলপেটের পরীক্ষা। এর ফলে শুরুতেই ওভারির অনেক সমস্যা ধরা পড়ে। রোগ ধরা পড়ার পরই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

মো· এনামুল হক
স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ও ল্যাপারোস্কোপিক সার্জন
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, আগস্ট ১৯, ২০০৯