Daffodil Computers Ltd.

E-Health / Protect Your Health => E- Health For Women => Topic started by: bbasujon on January 13, 2012, 08:24:28 AM

Title: গর্ভকালীন স্বাস্থ্য সমস্যা : করণীয়
Post by: bbasujon on January 13, 2012, 08:24:28 AM
গর্ভধারণ ব্যাপারটা প্রত্যেক মহিলার জন্য আনন্দের। কিন্তু আনন্দের পাশাপাশি প্রত্যেক ‘মা’ কেই পুরো গর্ভাবস্থায় কিছু ছোট খাটো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। কোন সমস্যা ছাড়া পুরো গর্ভাবস্থা শেষ করেছেন এমন ‘মা’ খুব কমই পাওয়া যাবে। গর্ভাবস্থা একটা প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। একটা শিশু যেমন শৈশব, যৌবন পার হয়ে পূণাঙ্গ মানুষে পরিণত হয় তেমনি গর্ভাবস্থায় ছোট্ট ভ্রুণ ধীরে ধীরে পরিপূর্ণ মানবশিশুতে রূপান-রিত হবে এটাও স্বাভাবিক।

গর্ভকালীন কিছু সমস্যা
০ বমিভাব ও বমি : এটা খুব সাধারণ সমস্যা এবং বলা হয়ে যে, এটা গর্ভধারণের প্রথম লক্ষণ। কি কারণে বমি হয় তার সঠিক কারণ জানা যায়নি, তবে গর্ভাবস্থায় কিছু হরমোনের উপস্থিতির জন্য এটা হয়। বমি বমি ভাব তিন-চার মাস পর্যন- থাকে ও পরে আসে- আসে- চলে যায়। কোন কারণ ছাড়া এমনকি কোন কিছু গন্ধ নাকে আসলেও বমি হতে পারে। সকালে উঠে খালি পেটে শুকনো টোস্ট খেলে এবং ক্ষিধে লাগার আগেই খেয়ে ফেললে বমির ভাব কম হয়। সাধারণ বমি ডাক্তারের পরামর্শ মতে কিছু ওষুধ খেলে সেরে যায় বা কমে যায়। কিন্তু কিছু রোগীর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত বমি হয় তখন চিকিৎসকের নির্দেশমত চিকিৎসা ও প্রয়োজনে হাসপাতালেও ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

০ তলপেটে ব্যথা : জরায়ু ধীরে ধীরে বড় হয়ে এর আশে-পাশের লিগামেন্টে টান পড়ার জন্য তলপেটে ও কুঁচকিতে হালকা ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা স্বাভাবিক। এই ব্যথা পাঁচ-ছয় মাসের দিকে হয়।

০ পিঠে ও কোমড়ে ব্যথা : গর্ভাবস্থার শেষের দিকে এধরনের ব্যথা হয়। হরমোনের কারণে হাড়ের জোড়াগুলো শিথিল হওয়ার জন্য এই ব্যথা হয়। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিলে, সঠিক নিয়মে উঠা-বসা করলে ও শুলে এই ব্যথা কমে যায়। এই ব্যথার জন্য সাধারণ কোন ব্যথা নাশক ওষুধ দেয়া হয় না তবে বেশী ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতে ওষুধ খেতে হবে।

০ সাদা শ্রাব : গর্ভাবস্থায় হরমোন ইস্ট্রোজেন ও রক্ত সরবরাহ বেড়ে যাওয়ার জন্য সাদা শ্রাব কোন কোন সময় যেতে পারে। ঢিলেঢালা পোষাক ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। সাদা শ্রাবের সাথে যদি দুর্গন্ধ থাকে বা চুলকানি হয় তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

০ গলা ও বুক জ্বালা : এটাও গর্ভকালীন একটা সাধারণ সমস্যা। অতিরিক্ত ঝাঁল, তেলচর্বিযুক্ত খাবার বাদ দিলে এসমস্যা কমে যায়। তবে গর্ভাবস্থার শেষের দিকে শুয়ে থাকলে বড় জরায়ু পাকস্থলীতে চাপ দেয়ার জন্য এটা হতে পারে। তখন উচুঁ বালিশে কাত হয়ে শোয়া, খাবার পর কিছুক্ষণ হাঁটা-হাঁটি করার পর পানি খেলে এন্টাসিড জাতীয় ওষুধ খেলে উপকার পাওয়া যায়।

০ পায়ে পানি আসা : গর্ভাবস্থার শেষের দিকে পায়ে কিছু পানি আসতে পারে। তবে অতিরিক্ত পা ফোলা বা পা ফোলার সাথে প্রেসার বেশী থাকলে প্রি-একলামসিয়া চিন-া করা হয়, তখন ডাক্তারের পরামর্শ মতে চিকিৎসা নিতে হবে।

উপরোক্ত এসব সাধারণ সমস্যা ছাড়াও আরও কিছু সমস্যা বিশেষ করে প্রথমদিকে মাথাঘোরা, অরুচি, দুর্বল লাগা, আলসেমি লাগা-শেষের দিকে ওঠতে বসতে বা শোয়া থেকে উঠতে কষ্ট লাগা, হাত-পা গরম ভাব, গায়ে মুখে বিশেষ করে গলায় কালো দাগ পড়া, পেঁটের চামড়া ফেটে যাওয়া বেশী পিপাসা লাগা বা ক্ষিধে পাওয়া এগুলো হতে পারে।

গর্ভাবস্থা একটা স্বাভাবিক প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। ভ্রুণ ধীরে ধীরে বাড়ার সাথে সাথে মায়ের শরীরে কিছু পরিবর্তন আসে। এ পরিবর্তন স্বাভাবিক। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে এসবের জন্য কোন ওষুধের প্রয়োজন হয় না। তবে গর্ভবতী মা নিজে সব সময় কোনটা স্বাভাবিক আর কোনটা অস্বাভাবিক সেটা নাও বুঝতে পারেন। অনেক সময় অসুখের কারণেও সাধারণ সমস্যা একটু অসাধারণ ভাবে দেখা দিতে পারে। সেজন্য গর্ভাবস্থায় অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মতে এবং নির্দেশ মত চলতে হবে।

ডা: আইরিন পারভীন আলম
প্রসূতী ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন
চেম্বার: সালাউদ্দিন স্পেশালাইজ্‌ড হাসপাতাল
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, জানুয়ারী ০৯, ২০১০