Author Topic: শ্রম সংক্রান্ত আইন ও বিধি  (Read 12439 times)

bbasujon

  • Administrator
  • VIP Member
  • *****
  • Posts: 1826
  • I want to show my performance at any where
    • View Profile
    • Higher Education
Re: শ্রম সংক্রান্ত আইন ও বিধি
« Reply #15 on: January 20, 2012, 08:55:30 AM »
অষ্টম অধ্যায়
মজুরীসহ অবকাশ ও ছুটি

ধারা-৭৭। এই অধ্যায়ের প্রয়োগ :

 এই অাইন  বলবত হওয়ার দিন অন্য কোনো প্রচলিত আইন অনুসারে বা কোনো রায়, চুক্তি, সমঝোতা, কন্ট্রাক্ট, রীতি বা প্রথা অনুসারে শ্রমিক যে সমস্ত অধিকার বা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করিতেছিল এবং উহা যদি তাহার নিকট অধিকতর সুবিধাজনক হয়, তবে এই অধ্যায়ের কোনো বিধান তাহা ক্ষুন্ন করিবে না।

ধারা-৭৮। মজুরীসহ বাত্সরিক ছুটি :

(১) কোনো কারখানায় অব্যাহত চাকরি এক বছর পূর্ণ হইয়াছে, এইরূপ প্রতিটি শ্রমিক পরবর্তী বারো মাসের মধ্যে নিম্নোক্ত হারে মজুরীসহ ছুটি পাইবে-

(ক) প্রাপ্তবয়স্ক হইলে পূর্ববর্তী বারো মাসের মধ্যে প্রতি বাইশ দিন কাজের জন্য একদিন;

(খ) শিশু হইলে পূর্ববর্তী বারো মাসের মধ্যে প্রতি পনেরো দিনের কাজের জন্য একদিন।

 তবে শর্ত এই যে, অনুরূপ মেয়াদের মধ্যে যে অবকাশ থাকিবে, তাহা আলোচ্য ছুটির অন্তর্ভুক্ত হইবে।

(২) কোনো শ্রমিক উপধারা (১) অনুসারে  প্রাপ্য ছুটি উক্ত বারো মাসের মধ্যে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভোগ না করিয়া থাকিলে বারো মাসে তাহার যে ছুটি পাওনা হইবে, তাহার সহিত উহা যোগ করিতে হইবে।

তবে শর্ত এই যে, কোনো প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিকের অর্জিত ছুটির পরিমাণ বিশ দিন হইলে আর ছুটি অর্জন করিবে না এবং শিশু হইলে তাহার অর্জিত ছুটির পরিমাণ ত্রিশ দিন হওয়ার পর আর ছুটি অর্জন করিবে না।

আরও শর্ত এই যে, শ্রমিক ছুটির জন্য দরখাস্ত করার পর মালিক বা ম্যানেজার বা তাহার ভারপ্রাপ্ত অফিসার কোনো কারণে উহা প্রত্যাখ্যান করিলে উক্ত ছুটি উপরোল্লিখিতি সীমার অতিরিক্ত সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের পাওনা ছুটি হিসাবে গণ্য হইবে।

(৩) এই ধারার উদ্দেশ্য সাধনের জন্য নিম্নোক্ত কোনো কারণে কাজ না করা সত্ত্বেও একজন শ্রমিক অব্যাহত চাকরির মেয়াদ পূর্ণ করিয়াছে বলিয়া গণ্য করিতে হইবে।

(ক) কোনো  সাধারণ অবকাশ;

(খ) মজুরীসহ কোনো ছুটি;

(গ) অসুস্থতা বা দুর্ঘটনার কারণে মজুরীসহ বা মজুরী ছাড়া ছুটি;

(ঘ) অনধিক বারো সপ্তাহ পর্যন্ত কোনো মাতৃত্বকল্যাণ ছুটি;

(ঙ) কয়লা, জ্বালানি বা কাঁচামালের  অভাবহেতু, অথবা পণ্য জমা হওয়ার কারণে, অথবা যন্ত্রপাতি বিকল হওয়ার কারণে, অথবা অন্য যে কোনো কারণে মালিক শ্রমিককে চাকরিতে রাখিতে অপারগ বা অনিচ্ছুক হইয়া যতদিন লে-অফ করিয়াছে, ততদিনের  জন্য যদি শ্রমিকের নাম সংশ্লিষ্ট কারখানার মাস্টার রোলে অন্তর্ভুক্ত থাকে;

(চ)  বে-আইনী নহে, এইরূপ ধর্মঘট বা বে-আইনী নহে, এইরূপ লে-অফ।

ধারা-৭৯। উত্সব ছুটি :

(১) প্রত্যেক শ্রমিককে বত্সরে অন্তত দশদিন মজুরীসহ উত্সব ছুটি মঞ্জুর করিতে হইবে। অনুরূপ উত্সবের দিন ও তারিখ কারখানার মালিক বা ম্যানেজার নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসারে নির্দিষ্ট করিয়া দিবেন।

(২) উত্সব উপলক্ষে যে কোনো ছুটির দিন প্রয়োজন হইলে শ্রমিককে কাজ করিতে হইবে; কিন্তু উহার বিনিময়ে ৫১ ধারা অনুসারে তাহাকে পূর্ণ বেতনসহ ক্ষতিপূরণমূলক দুই দিনের ছুটি এবং একদিনের বিকল্প ছুটির ব্যবস্থা করিতে হইবে।

ধারা-৮০। নৈমিত্তিক ও অসুস্থতার ছুটি :

(১) প্রত্যেক শ্রমিক বত্সরে পূর্ণ মজুরীসহ দশদিনের  নৈমিত্তিক ছুটি পাইবে।

(২) প্রত্যেক শ্রমিক বত্সরে গড় অর্ধমজুরীসহ চৌদ্দ দিনের অসুস্থতার  ছুটি জমা করিয়া পরবর্তী বত্সরে ভোগ করা যাইবে না।

ধারা-৮১। ছুটি বা অবকাশকালীন বেতন :

এই আইনের বিধান অনুসারে শ্রমিকের প্রাপ্য ছুটি বা অবকাশ বাবদ তাহাকে দিতে হইবে-

(ক) পূর্ণ মজুরীসহ ছুটির বেলায়, প্রতিদিনের কাজের জন্য সে যেই বেতন ও মহার্ঘ ভাতা পাইয়াছে, যদি মহার্ঘ ভাতা থাকে, তাহার সমান হারে, তবে অতিরিক্ত সময়ের মজুরী বা বোনাস পাইয়া থাকিলে, তাহা উক্ত হিসাবের অন্তর্ভুক্ত হইবে না; এবং

(খ) গড় অর্ধমজুরীসহ ছুটির বেলায়, অনুচ্ছেদ (ক)-এর পদ্ধতি মোতাবেক প্রতিদিনের কাজের জন্য সে যেই বেতন ও মহার্ঘ ভাতা পাইয়াছে, যদি মহার্ঘ ভাতা থাকে, তাহার গড় অর্ধ দিনের হিসাবের সমহারে।

ধারা-৮২। কতিপয় ক্ষেত্রে অগ্রিম বেতন প্রদান :

কোনো প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিককে অন্যূন চারদিনের ছুটি এবং শিশু শ্রমিককে অন্যূন  পাঁচদিনের ছুটি মঞ্জুরী করা হইয়া থাকিলে, ৭৮ ধারা অনুসারে উক্ত ছুটি শুরু হওয়ার পূর্বেই তাহাকে যত দিনের ছুটি মঞ্জুর করা হইয়াছে, ততদিনের বেতন অগ্রিম পরিশোধ করিতে  হইবে।

ধারা-৮৩। শ্রমিকদের পক্ষে কাজ করার জন্য ইন্সপেক্টরের ক্ষমতা :

এই অধ্যায় অনুসারে শ্রমিকের পাওনা টাকা কারখানার মালিক বা ম্যানেজার পরিশোধ না করিয়া থাকিলে সংশ্লিষ্ট যে কোনো শ্রমিকের পক্ষে একজন ইন্সপেক্টর  উহা আদায়ের জন্য মামলা দায়ের করিতে পারিবেন।

ধারা-৮৪। বিধিমালা প্রণয়নের ক্ষমতা :

(১) এই অধ্যায়ের বিধানসমূহ কার্যকর করার জন্য সরকার বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবেন।

(২) ইতিপূর্বে উল্লিখিত  ক্ষমতাসমূহ ক্ষুন্ন না করিয়া এই ধারা অনুসারে প্রণীত বিধিমালায় নির্দিষ্ট তথ্য সম্বলিত রেজিস্টার কারখানার ম্যানেজার কর্তৃক রাখা এবং উহা ইন্সপেক্টরদের পরীক্ষার উদ্দেশ্যে প্রস্তুত রাখার জন্য বিধান রাখা হইতে পারে।

ধারা-৮৫। কারখানাসমূহকে অব্যাহতি দানের ক্ষমতা :

সরকারের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, কোনো কারখানায় শ্রমিকদের ছুটির বিধিমালায় প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধা এই অধ্যায়ের বিহিত সুযোগ-সুবিধার তুলনায় কম সুবিধাজনক নহে, তাহা হইলে  সরকার লিখিত আদেশ জারি করিয়া আদেশে নির্ধারিত শর্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট কারখানাকে এই অধ্যায়ের সমুদয় বা আংশিক বিধানসমূহের আওতা হইতে অব্যাহতি দিতে পারিবেন।
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection

bbasujon

  • Administrator
  • VIP Member
  • *****
  • Posts: 1826
  • I want to show my performance at any where
    • View Profile
    • Higher Education
Re: শ্রম সংক্রান্ত আইন ও বিধি
« Reply #16 on: January 20, 2012, 08:55:55 AM »
নবম অধ্যায়
বিশেষ বিধানসমূহ

ধারা-৮৬। সরকারি  প্রতিষ্ঠানকে অব্যাহতি দানের ক্ষমতা :

উত্পাদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়, এমন কোনো কারখানা বা কার্যস্থল কোনো সরকারি  প্রতিষ্ঠানের সহিত সংযুক্ত হইয়া থাকিলে এবং উহা শিক্ষা, প্রশিক্ষণ বা সংস্কারমূলক কাজের উদ্দেশ্যে পরিচালিত হইলে উপযুক্ত শর্ত আরোপ সাপেক্ষে সরকার  উহাকে এই আইনের সমুদয় বা যে কোনো  বিধান হইতে অব্যাহতি দিতে পারিবে।

তবে শর্ত এই যে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ উহাতে নিযুক্ত ব্যক্তিদের কাজের  ঘণ্টা, বিশ্রাম বা আহারের জন্য বিরতি এবং ছুটির বিধিমালা  সংক্রান্ত পরিকল্পনা অনুমোদনের জন্য সরকারের নিকট প্রেরণ না করা পর্যন্ত এবং উক্ত পরিকল্পনার বিধানসমূহ এই আইনে বর্ণিত বিধানসমূহের তুলনায় কম সুবিধানজক নয় বলিয়া সরকার মনে না করিলে কাজের ঘন্টা ও ছুটি সংক্রান্ত এই আইনের বিধান হইতে উহাকে অব্যাহতি দেওয়া যাইবে না।

ধারা-৮৭। বিপদজন কাজ :

সরকারের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, একটি কারখানায় এমন ধরনের কাজ হইতেছে, যাহার ফলে উহাতে নিযুক্ত যে কোনো ব্যক্তির দৈহিক আঘাতপ্রাপ্ত, বিষক্রিয়া বা রোগাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রহিয়াছে, তবে  অনুরূপ কারখানার বা বিশেষ শ্রেণীর কারখানার জন্য সরকার নিম্নোক্ত  উদ্দেশ্যে বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবেন -

(ক) উক্ত কাজকে নির্দিষ্ট করিয়া উহাকে বিপদজনক কাজ বলিয়া ঘোষণা করিয়া;

(খ) উক্ত কাজে মহিলা, কিশোর বা শিশুদের নিয়োগ নিষিদ্ধ ঘোষণা করিয়া;

(গ) উক্ত কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিদের নিয়মিত ডাক্তারী পরীক্ষার ব্যবস্থা করিয়া এবং উক্ত কাজের জন্য সক্ষমতা সার্টিফিকেট যাহাদের নাই, তাহাদের নিযুক্তি নিষিদ্ধ ঘোষণা করিয়া;

(ঘ) উক্ত কাজে নিযুক্ত বা উহার সন্নিকটে অবস্থানকারী সকল ব্যক্তির নিরাপত্তার ব্যবস্থা করিয়া; এবং উক্ত কাজে নির্দিষ্ট  সরঞ্জাম বা প্রক্রিয়া ব্যবহারের নির্দেশ দান করিয়া।

ধারা-৮৮। কতিপয় দুর্ঘটনার নেটিশ :

কোনো কারখানায় সংঘটিত দুর্ঘটনার ফলে কেহ মারা গেলে বা শরীরে জখমপ্রাপ্ত হইলে এবং উক্ত জখমীর দরুন যদি পরবর্তী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ঐ ব্যক্তি আর কাজ করিতে সক্ষম না হয়, তবে সংশ্লিষ্ট কারখানার ম্যানেজার নির্ধারিত ফরমে ও নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে উক্ত দুর্ঘটনা সংক্রান্ত নোটিশ ইন্সপেক্টরের নিকট প্রেরণ করিবেন।

ধারা-৮৯। বিপদজনক ঘটনার নোটিশ :

সরকার গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করিয়া বিস্ফোরণ, অগ্নিকাণ্ড, দালান ধ্বসিয়া পড়া, যন্ত্রপাতি বা কারখানার কোনো কলকব্জায় সংঘটিত দুর্ঘটনা, উহাতে কাহারও প্রাণহানি বা দৈহিক ক্ষতি না হইলেও উক্ত বিশেষ শ্রেণীর দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে ৮৮ ধারার বিধান প্রযোজ্য করিতে পারিবেন।

ধারা-৯০।  কতিপয় রোগ সংক্রান্ত  নোটিশ :

(১) কোনো কারখানার কোনো শ্রমিক তফসিলে উল্লিখিত কোনো রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হইলে সংশ্লিষ্ট কারখানার ম্যানেজার নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে নির্ধারিত  পদ্ধতি অনুসারে তত্সংক্রান্ত  নোটিশ ইন্সপেক্টরের নিকট প্রেরণ করিবেন।

(২) কারখানায় কাজ করিতেছে বা কাজ করিয়াছে, এইরূপ কোনো ব্যক্তির স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর কোনো চিকিত্সক যদি দেখিতে পান যে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তফসিলে উল্লিখিত কোনো রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হইয়াছে, তাহা হইলে তিনি নিম্নোক্ত তথ্য সম্বলিত লিখিত রিপোর্ট চীফ ইন্সপেক্টরের নিকট প্রেরণ করিবেন।

(ক) রোগীর নাম ও ডাক যোগাযোগের পূর্ণ ঠিকানা;

(খ)  তাঁহার মতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যে রোগে ভুগিতেছে;

(গ)  রোগী যে কারখানায় কাজ করিয়াছে বা করিতেছে, তাহার নাম ও ঠিকানা।

(৩)  সরকার গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করিয়া তফসিল হইতে কোনো রোগের নাম বাদ দিতে  বা নূতন কোনো রোগের নাম তফসিলের অন্তর্ভুক্ত করিতে পারিবেন।

ধারা-৯১। দুর্ঘটনা বা রোগ-ব্যাধিসংক্রান্ত ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দানের ক্ষমতা :

(১) সরকার প্রয়োজন মনে করিলে কোনো কারখানায় সংঘটিত দুর্ঘটনার কারণ, অথবা তফসিলে উল্লিখিত কোনো

রোগ- ব্যাধির প্রকোপ সম্পর্কে তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অবহিত করিয়া কোনো যোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগ করিতে পারেন এবং ইহা ছাড়াও তদন্ত কার্যে অ্যাসেসর হিসাবে কাজ করিবার জন্য আইনগত জ্ঞান বা বিশেষ জ্ঞানের অধিকারী এক বা একাধিক ব্যক্তি নিয়োগ করিতে পারিবেন।

(২) এই ধারা অনুসারে তদন্তের জন্য নিযুক্ত ব্যক্তির সাক্ষীদের উপস্থিত হইতে বাধ্য করা এবং প্রয়োজনীয় দলিল ও জিনিসপত্র হাজির করিতে বাধ্য করার উদ্দেশ্যে ১ঌ০৮  সালের দেওয়ানী কার্যবিধির অধীনে একটি দেওয়ানী আদালতের যাবতীয় ক্ষমতা থাকিবে এবং ইহা ছাড়াও তদন্তের জন্য প্রয়োজন হইলে  এই ধারা অনুসারে একজন ইন্সপেক্টরের যে কোনো ক্ষমতাও প্রয়োগ করিতে পারিবেন; এবং তদন্তকারী ব্যক্তি কাহাকেও কোনো তথ্য পেশ করিতে বলিলে তিনি ১ঌ৬০ সালের দণ্ডবিধির ১৭৬ ধারা অনুসারে উক্ত তথ্য পেশ করতে বাধ্য থাকিবেন।

(৩) এই ধারা  অনুসারে তদন্তকারী ব্যক্তি দুর্ঘটনা বা রোগের প্রকোপ সংক্রান্ত ঘটনার কারণ ও আনুষাঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে  সরকারের নিকট একটি রিপোর্ট পেশ করিবেন এবং তিনি বা অ্যাসেসরগণ ঐ সম্পর্কে কোনো মতামত দেওয়া যুক্তিযুক্ত বিবেচনা করিলে, তাহাও উক্ত রিপোর্টের সহিত সংযুক্ত করিতে পারিবেন।

(৪) সরকার যথার্থ  বিবেচনা করিলে এই ধারা অনুসারে প্রদত্ত রিপোর্ট বা উহার কোনো অংশ প্রকাশ করিতে পারিবেন।

(৫) এই ধারা অনুসারে তদন্তের পদ্ধতি নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে সরকার বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবেন।

ধারা-৯২। নমুনা গ্রহণের ক্ষমতা :

(১) কারখানার স্বাভাবিক কাজ চলার সময় কারখানার মালিক বা ম্যানেজারকে, অথবা ঐ সময় ম্যানেজারের দায়িত্ব পালনকারী অন্য কোনো ব্যক্তিকে অবহিত করিয়া একজন ইন্সপেক্টর অতঃপর বর্ণিত পদ্ধতি অনুসারে কারখানায় ব্যবহৃত বা ব্যবহারের উদ্দেশ্যে রক্ষিত যে কোনো দ্রব্যের যথেষ্ট পরিমাণ নমুনা সংগ্রহ করিতে পারিবেন, যদি ইন্সপেক্টরের মতে, উক্ত দ্রব্যের ব্যবহারের দ্বারা-

(ক) এই অাইনের যে কোনো বিধান বা সেই অনুসারে  প্রণীত বিধিমালা লংঘিত হয়, অথবা

(খ) কারখানায় শ্রমিকদের দেহের বা স্বাস্থ্যের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

(২) নমুনা গ্রহণের জন্য যে ব্যক্তিকে অবহিত করা হইয়াছে, সে ইচ্ছাকৃতভাবে অনুপস্থিত না হইলে, উপধারা (১)  অনুসারে নমুনা সংগ্রহের সময় ইন্সপেক্টর  উক্ত ব্যক্তির উপস্থিতিতে  গৃহীত নমুনা তিনভাগে বিভক্ত  করিয়া উপযুক্তভাবে সীলমোহরান্কিত করিয়া চিহ্নিত করিবেন এবং উক্ত ব্যক্তিকেও তাহার সীলমোহর অন্কিত করিয়া চিহ্নিত করিবার অনুমতি দিবেন।

(৩) উপরোল্লিখিত ব্যক্তি, যাহাকে নমুনা গ্রহণের সংবাদ অবহিত করা হইয়াছে, প্রয়োজন হইলে এই ধারা অনুসারে গৃহীত নমুনা বিভক্তিকরণ এবং সীলমোহরান্কিত করার সরঞ্জামাদি ইন্সপেক্টরকে সরবরাহ করিবেন।

(৪) ইন্সপেক্টর তত্ক্ষণাত-

(ক) উপধারা (১) অনুসারে যেই ব্যক্তিকে অবহিত করা হইয়াছে, তাহাকে সংগৃহীত নমুনার এক ভাগ প্রদান করিবেন;

(খ) পরীক্ষা করা এবং পরীক্ষার ফলাফল সম্পর্কে রিপোর্টদান করার উদ্দেশ্যে দ্বিতীয় ভাগ একজন সরকারি  বিশ্লেষকের নিকট পাঠাইবেন; এবং

(গ) সংশ্লিষ্ট উপাদান সম্পর্কে অভিযোগ দায়ের করা হইলে আদালতে পেশ করার জন্য তৃতীয় ভাগ নিজের কাছে রাখিবেন।

(৫) সংশ্লিষ্ট উপাদান সম্পর্কে দায়েরকৃত মামলায় উপাদানের নমুনা পরীক্ষা করিয়া সরকারি  বিশ্লেষক কর্তৃক  প্রদত্ত রিপোর্ট সাক্ষ্য হিসাবে ব্যবহার করা যাইবে।

দশম অধ্যায়

দণ্ড ও কার্যবিধি

ধারা-৯৩। অপরাধের জন্য সাধারণ দণ্ড :

এই আইনে অন্য কোনো বিধান না থাকিলে এবং ঌ৪ ধারার বিধান সাপেক্ষে কোনো কারখানায় বা কোনো কারখানা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এই আইনের কোনো বিধান বা বিধান অনুসারে প্রণীত বিধিমালা, অথবা তদানুসারে প্রদত্ত কোনো আদেশ লংঘন করা হইলে, কারখানার মালিক ও ম্যানেজার প্রত্যেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা দণ্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং উক্ত  দন্ডের  পরও অপরাধ অব্যাহত থাকিলে যতদিন অব্যাহত থাকিবে,  ততদিনের মেয়াদে প্রতিদিন অনধিক পঁচাত্তর টাকা করিয়া জরিমানা দণ্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

ধারা-৯৪। কতিপয় অবস্থায় কারখানা প্রাঙ্গণের মালিকের দায়-দায়িত্ব :

(১) কোনো প্রাঙ্গণে পৃথক পৃথক কারখানা হিসাবে ব্যবহারের জন্য পৃথক পৃথক দালান বিভিন্ন মালিকের নিকট ভাড়া দেওয়া হইলে উক্ত প্রাঙ্গণের মালিক প্রবেশপথ, পয়ঃপ্রণালী, পানি সরবরাহ, আলো ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশের ব্যবস্থা প্রভৃতি সাধারণ সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত বিষয়ে দায়ী হইবেন।

(২) উপধারা (১)-এ বর্ণিত বিধানসমূহ পালনের জন্য প্রাঙ্গণের মালিকের উপর সরকারি  নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে চীফ ইন্সপেক্টরের আদেশ জারি করার ক্ষমতা থাকিবে।

(৩) কোনো প্রাঙ্গণে পৃথক পৃথক কারখানা হিসাবে ব্যবহারের জন্য স্বতন্ত্র ও স্বয়ংসম্পূর্ণ তলা বা ফ্ল্যাট বিভিন্ন  মালিকের নিকট  ভাড়া দেওয়া হইলে, নিম্নোক্ত বিষয়সমূহের ব্যাপারে এই আইনের বিধানসমূহ লঙ্ঘনের জন্য প্রাঙ্গনের মালিক বা ম্যানেজার দায়ী হইবেন, যেন তিনিই সংশ্লিষ্ট কারখানাসমূহের দখলদার বা ব্যবস্থাপক :

(ক) পায়খানা, প্রসাবখানা ও ধৌত করিবার সুবিধা এবং উক্ত উদ্দেশ্যে ঐ পানি সরবরাহের সুব্যবস্থা;

(খ) প্রাঙ্গণের মালিকের স্বত্বাধীন এবং কারখানার মালিকের স্বত্বাধীন বলিয়া নির্দিষ্ট নহে, এইরূপ যন্ত্রপাতি ও কলকব্জা ঘিরিয়া রাখিবার ব্যবস্থা;

(গ) সংশ্লিষ্ট তলায় বা ফ্ল্যাটসমূহে  নিরাপদে আসা-যাওয়ার পথ এবং অভিন্ন পথ ও সিঁড়ির ব্যবস্থা এবং উহা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা;

(৪) উপধারা (৩)-এর বিধানসমূহ পালনের ব্যাপারে প্রাঙ্গণের মালিকের উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে চীফ ইন্সপেক্টরের আদেশ জারি করার ক্ষমতা থাকিবে।

(৫) যেই সমস্ত প্রাঙ্গণে অভিন্ন পায়খানা, প্রস্রাবখানা ও ধৌত করার ব্যবস্থাসহ স্বতন্ত্র কামরা পৃথক পৃথক কারখানা হিসাবে ব্যবহারের জন্য ভিন্ন ভিন্ন মালিককে ভাড়া দেওয়া হইয়াছে, কেবল সেই সব ক্ষেত্রেই প্রাঙ্গণের মালিকের দায়-দায়িত্ব সংক্রান্ত উপধারা (৩)-এর বিধানসমূহ প্রযোজ্য হইবে :

তবে শর্ত এই যে, পায়খানা, প্রস্রাবখানা ও ধৌত করার সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত বিধান পালন ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারেও প্রাঙ্গণের মালিক দায়ী থাকিবেন।

(৬) ৪৫ বা ৪৭ ধারার বিধানসমূহ পালনের ব্যাপারে উপধারা (৫)-এ বর্ণিত প্রাঙ্গণের মালিকের উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে চীফ ইন্সপেক্টরের  আদেশ জারির ক্ষমতা থাকিবে।

(৭) কোনো প্রাঙ্গণে কোনো শেড বা কামরার বিভিন্ন অংশ পৃথক পৃথক কারখানা হিসাবে ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন মালিকের নিকট ভাড়া দেওয়া হইলে নিম্নোক্ত বিধানসমূহ লংঘনের দায়ে প্রাঙ্গণের মালিক দায়ী হইবে -

(ক) ১৫ ও ১৬ ধারা ব্যতিরেকে তৃতীয় অধ্যায়-

(খ)  ২৪, ২৫, ২ঌ, ৩৬,  ৩৭ ও ৪১ ধারা ব্যতিরেকে চতুর্থ অধ্যায়-

তবে শর্ত এই যে, ২৩, ২৬ ও ৩৪ ধারার ব্যাপারে প্রাঙ্গণের মালিকের দায়িত্ব কেবল সেইসব বিষয়েই সীমাবদ্ধ থাকিবে, যেই সমস্ত বিষয় তাঁহার নিয়ন্ত্রণে রহিয়াছে।

  আরও শর্ত এই যে, যেই সমস্ত কলকব্জা ও যন্ত্রপাতি মালিক সরবরাহ করিয়াছে বা তাঁহার মালিকানাধীন, কেবল সেই সব কলকব্জা ও যন্ত্রপাতির ব্যাপারে চতুর্থ অধ্যায়ের বিধানসমূহ পালনের জন্য উক্ত মালিক দায়ী হইবেন।

(৮) উপধারা (৭)-এর বিধানসমূহ পালনের ব্যাপারে প্রাঙ্গণের মালিকের উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে চীফ ইন্সপেক্টরের আদেশ জারির ক্ষমতা থাকিবে।

(৯) উপধারা (৫) ও (৭)-এর ব্যাপারে এই আইনের কোনো একটি বিধানের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য কর্মে নিযুক্ত শ্রমিদের  সাকুল্য সংখ্যা হিসাব করার সময় সমগ্র প্রাঙ্গণকে একটিমাত্র কারখানা হিসাবে গণ্য করিতে হইবে।
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection

bbasujon

  • Administrator
  • VIP Member
  • *****
  • Posts: 1826
  • I want to show my performance at any where
    • View Profile
    • Higher Education
Re: শ্রম সংক্রান্ত আইন ও বিধি
« Reply #17 on: January 20, 2012, 08:56:31 AM »
ধারা-৯৫।  পূর্ববর্তী দন্ডের পর বর্ধিত দণ্ড :

কোনো ব্যক্তি ঌ৩ ধারা অনুসারে দন্ডনীয় কোনো অপরাধের জন্য সাজা পাওয়ার পর একই ধারার বিধান অমান্য করার দায়ে পুনরায় দোষী সাব্যস্ত হইলে পরবর্তী অপরাধের জন্য ছয় মাস পর্যন্ত কারাদন্ডে, অথবা এক হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানায়, অথবা উভয় দণ্ডে দন্ডনীয় হইবে।

তবে শর্ত এই যে, এই ধারার উদ্দেশ্য সাধনের জন্য পরবর্তী অপরাধের দুই বত্সরের অধিক কাল পূর্বে কোনো সাজা পাইয়া থাকিলে তাহা ধর্তব্য হইবে না।

ধারা-৯৬। ইন্সপেক্টরের কাজে বাধা সৃষ্টির জন্য দণ্ড :

এই আইন অনুসারে বা এই আইনবলে প্রাপ্ত ক্ষমতা প্রয়োগের সময় ইন্সপেক্টরকে কেহ ইচ্ছাকৃতভাবে বাধা দান করিলে, অথবা ইন্সপেক্টর তলব করা সত্ত্বেও এই আইন অনুসারে রক্ষিত কোনো রেজিস্টার বা অন্য কোনো দলিল হাজির করিতে ব্যর্থ হইলে, অথবা কোনো তথ্য গোপন করিলে বা কোনো শ্রমিককে ইন্সপেক্টরের সম্মুখে হাজির হইতে বাধা দিলে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তিন মাস পর্যন্ত কারাদন্ড, অথবা পঁাচ শত টাকা পর্যন্ত জরিমানা, অথবা  উভয় দণ্ডে দন্ডনীয় হইবে।

ধারা-৯৭। বে-আইনীভাবে প্রকাশ বা ফাঁস করার দন্ড :

কেবল এই আইন অনুসারে দন্ডনীয় কোনো অপরাধের জন্য রুজুকৃত অভিযোগের ক্ষেত্র ছাড়া, যে কেহ ঌ২ ধারার অধীনে নমুনা পরীক্ষার ফল কোনো ব্যক্তির নিকট প্রকাশ বা ফাঁস করিলে তিন মাস পর্যন্ত কারাদন্ডে, অথবা পাঁচ শত টাকা পর্যন্ত জরিমানায়, অথবা উভয় দণ্ডে দন্ডনীয় হইবে।

ধারা-৯৮। তথ্য প্রকাশ বা ফাঁস করার উপর বিধি-নিষেধ :

(১) কেবল এই আইন অনুসারে কর্তব্য পালনের সময় ছাড়া, চাকরিতে থাকাকালে, অথবা চাকরি ত্যাগের পর কোনো ইন্সপেক্টর সরকারি  দায়িত্ব পালন উপলক্ষে লব্ধ কোনো উত্পাদনী বা বাণিজ্যিক কার্যসংক্রান্ত গোপন তথ্য কোথাও প্রকাশ বা ফাঁস করিবেন না।

(২) সংশ্লিষ্ট ব্যবসায় বা উত্পাদনী প্রক্রিয়ার মালিকের লিখিত পূর্ব অনুমতি লইয়া কোনো তথ্য প্রকাশ করিলে, কিংবা এই আইন অনুসারে কিংবা অন্য  কোনো আইন মোতাবেক পরিচালিত ফৌজদারী কার্যক্রম অথবা উপরোল্লিখিত কার্যক্রম মোতাবেক কোনো রিপোর্ট পেশের উদ্দেশ্যে  অনুরূপ  কোনো তথ্য প্রকাশ হইলে, সেই ক্ষেত্রে  উপধারা (১)-এর বিধান প্রযোজ্য হইবে না।

(৩) কোনো ইন্সপেক্টর উপধারা (১)-এর বিধানসূহ লংঘন করিলে ছয় মাস পর্যন্ত কারাদন্ডে, অথবা এক হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানায়, অথবা উভয় দণ্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

ধারা-৯৯। শ্রমিকদের অপরাধ :

(১) ১১১ ধারার বিধানসমূহ সাপেক্ষে কোনো কারখানায় নিযুক্ত কোনো শ্রমিক এই আইনের কোনো বিধান, অথবা  তদানুসারে প্রণীত কোনো বিধি বা আদেশ, অথবা তদানুসারে আরোপিত কোনো কর্তব্য বা দায়িত্ব লংঘন করিলে পঞ্চাশ টাকা পর্যন্ত জরিমানা দণ্ডে দন্ডনীয় হইবে।

(২) উপধারা (১) অনুসারে কৃত অপরাধের জন্য কোনো শ্রমিক দন্ডিত হইলে সংশ্লিষ্ট কারখানার মালিক বা ম্যানেজার উক্ত অপরাধ হইতে শ্রমিককে নিবৃত্ত করার জন্য যুক্তিসঙ্গত ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হইয়াছে, ইহা প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত তাহাদের কেহই উক্ত অপরাদের জন্য দোষী বিবেচিত হইবেন না।

ধারা-১০০। মিথ্যা সক্ষমতা সার্টিফিকেট ব্যবহারের জন্য দন্ড :

কোনো ব্যক্তি ৬৮ ধারা অনুসারে মঞ্জুরীকৃত নিজের সক্ষমতা সার্টিফিকেট অন্য কোনো ব্যক্তিকে জ্ঞাতসারে ব্যবহার করিতে দিলে বা ব্যবহার করিতে দেওয়ার চেষ্টা করিলে, অথবা কোনো ব্যক্তি অন্যের কোনো সক্ষমতা সার্টিফিকেট ব্যবহার করিলে  বা ব্যবহারের চেষ্টা করিলে, সে এক মাস পর্যন্ত কারাদন্ডে, অথবা পঞ্চাশ টাকা পর্যন্ত জরিমানায়, অথবা উভয় দণ্ডে দন্ডনীয় হইবে।

ধারা-১০১। শিশু শ্রমিকের দুই জায়গায় কাজ করার দন্ড :

কোনো শিশু যেদিন একটি কারখানায় কাজ করিয়াছে, সেইদিন সে অপর একটি কারখানায় কাজ করিলে সংশ্লিষ্ট শিশুর

মাতা-পিতা বা অভিভাবক, অথবা তাহার নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি, অথবা তাহার মঞ্জুরী হইতে সরাসরি উপকৃত হইতেছে, এইরূপ ব্যক্তি যদি না আদালতে ইহা প্রমাণিত হয় যে, শিশুটি উপরোক্ত মাতা-পিতা বা অভিভাবকের বা নিয়ন্ত্রক ব্যক্তির সম্মতি বা প্ররোচনা বা ইচ্ছাকৃত গাফিলতি ছাড়াই দুই জায়গায় কাজ করিয়াছে, তাহা হইলে পঞ্চাশ টাকা পর্যন্ত জরিমানায় দন্ডনীয় হইবে।

ধারা-১০২। অংশীদারী প্রতিষ্ঠান, কোম্পানী প্রভৃতির অপরাধ :

(১) এই অধ্যায়ের বিধানসমূহ অনুসারে কৃত অপরাধের জন্য কোনো কারখানার মালিক দন্ডনীয় হওয়ার অর্থ নিম্নোক্ত ব্যক্তিবৃন্দের দণ্ডের আওতায় আসা-

(ক) অংশীদারী প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিসমষ্টির যৌথ মালিকানায় পরিচালিত  প্রতিষ্ঠানের বেলায় উহার প্রত্যেক অংশীদার বা সদস্য; অথবা

(খ) প্রাইভেট কোম্পানি ব্যতীত কোনো কোম্পানী হইলে উহার প্রত্যেক ডাইরেক্টর; অথবা

(গ) প্রাইভেট কোম্পানি হইলে উহার প্রত্যেক শেয়ারহোল্ডার।

তবে শর্ত এই যে, সংশ্লিষ্ট  অংশীদারী প্রতিষ্ঠান, যৌথ প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি যদি উহার কোনো অংশীদার সদস্য বা   ডাইরেক্টরকে, অথবা প্রইভেট কোম্পানির বেলায়ও কোনো শেয়ারহোল্ডারকে, যদি বাংলাদেশের বাসিন্দা, এ অধ্যায়ের উদ্দেশ্যে  সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ডাইরেক্টর হিসাবে মনোনীত করিয়া ইন্সপেক্টরকে  নোটিশ পাঠাইয়া থাকে, তাহা হইলে উক্ত মনোনয়ন বাতিল হইয়াছে বা সংশ্লিষ্ট ডাইরেক্টর উক্ত দায়িত্ব ত্যাগ করিয়াছে, এই  মর্মে ইন্সপেক্টর পুনঃনোটিশ না পাওয়া পর্যন্ত উপরোক্ত মনোনীত ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ডাইরেক্টর বলিয়া গণ্য হইবেন।

 (২) ঌ৪ ধারা অনুসারে কোনো ব্যক্তি কোনো অপরাধে জন্য দোষী সাব্যস্ত হইলে উহার জন্য কোনো প্রাঙ্গণ বা দালানের মালিক অর্থে কোনো অংশীদারী প্রতিষ্ঠান, যৌথ প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি দোষী প্রতিপন্ন হইলে, এই ধারার বিধান মোতাবেক পরিচালক অর্থে মালিক বুঝিতে হইবে এবং তদআনুসারেই এই ধারার বিধানসমূহ প্রযোজ্য হইবে।

ধারা-১০৩। কতিপয় ক্ষেত্রে দায়-দায়িত্ব হইতে মালিক বা ম্যানেজারের অব্যাহতি :

(১) এই আইন অনুসারে কৃত কোনো অপরাধের দরুন কোনো কারখানার মালিক বা ম্যানেজার অভিযুক্ত হইলে তিনি যথাযথভাবে অভিযোগ দায়ের করিয়া সংশ্লিষ্ট  অপরাধের জন্য প্রকৃত দোষী ব্যক্তিকে অভিযোগের জন্য নির্ধারিত শুনানির সময় আদালতে হাজির করিতে পারিবেন।

(২) অপরাধের ঘটনা প্রমাণিত হওয়ার পর কারখানার মালিক বা ম্যানেজার যদি আদালতে প্রমাণ করিতে পারেন যে, অপরাধ সংঘটন নিরোধের জন্য তিনি যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করিয়াছেন এবং তাঁহার অজ্ঞাতে এবং সম্মতি বা সমর্থন ভিন্নই অন্য ব্যক্তি অপরাধটি করিয়াছে, তাহা হইলে সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তি উক্ত অপরাধের দায়ে দন্ডিত হইবে, যেন সেই ব্যক্তিই  ছিল কারখানার মালিক বা ম্যানেজার, এবং উক্ত অপরাধের দায়-দায়িত্ব হইতে  মালিক বা ম্যানেজার অব্যাহতি পাইবেন।

(৩) এই আইন অনুসারে কোনো অপরাধের দরুন কার্যক্রম রুজুর পূর্বে যে কোনো সময় ইন্সপেক্টরের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে-

(ক) অপরাধ সংঘটন নিরোধের জন্য কারখানার মালিক বা ম্যানেজার যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করিয়াছেন;

(খ) মালিক বা ম্যানেজারের অজ্ঞাতে এবং সম্মতি বা সমর্থন ছাড়াই এবং তাঁহাদের নির্দেশ লংঘন করিয়া অপরাধটি সংঘটিত হইয়াছে; এবং

(গ) অন্য কোনো ব্যক্তি অপরাধটি করিয়াছে; তাহা হইলে ইন্সপেক্টর সংশ্লিষ্ট উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কার্যক্রম রুজু করিবেন এবং উক্ত ব্যক্তি যেন কারখানার মালিক বা ম্যানেজার ছিল, সেই মোতাবেকই উক্ত অপরাধের জন্য দন্ডনীয় হইবে।

ধারা-১০৪। আদালত কর্তৃক আদেশ জারির ক্ষমতা :

(১) কোনো কারখানার মালিক বা ম্যানেজার এই আইন অনুসারে দন্ডনীয় কোনো অপরাধ করিবার দায়ে দন্ডিত হইলে, উক্ত দণ্ডদান ছাড়াও, আদালত লিখিত আদেশ জারি করিয়া আদেশে  উল্লেখিত  তারিখের মধ্যে অপরাধের  ক্ষতিপূরণ দানের জন্য সংশ্লিষ্ট মালিক বা ম্যানেজারকে নির্দেশ দিতে পারিবেন, এবং অপরাধ সংক্রান্ত  বিষয়ের প্রতিবিধান করার উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আবেদনক্রমে ক্ষতিপূরণদানের মেয়াদ বর্ধিতও করিতে পারিবেন।

(২) উপধারা (১) অনুসারে আদেশ জারির উক্ত আদেশে উল্লিখিত সময়সীমার মধ্যে বা বর্ধিত সময়সীমার মধ্যে কারখানার মালিক বা ম্যানেজার এই আইন অনুসারে যেই অপরাধের জন্য দন্ডপ্রাপ্ত হইয়াছেন, সে অপরাধ অব্যাহত থাকার কারণে আর দোষী সাব্যস্ত হইবে না।

(৩) নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে উপধারা (১)  অনুসারে প্রদত্ত আদালতের আদেশ  পুরোপুরিভাবে পালিত না হইলে , নির্ধারিত মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট  মালিক বা ম্যানেজার অতিরিক্ত অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে এবং তজ্জন্য ছয় মাস পর্যন্ত কারাদন্ডে, অথবা নির্ধারিত মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রতিদিনের জন্য একশত টাকা পর্যন্ত জরিমানা দন্ডে, অথবা উভয় দণ্ডে দন্ডনীয় হইবে।

ধারা-১০৫। চাকরিতে নিযুক্ত থাকা সম্পর্কে অনুমান  :

কেবল আহার বা বিশ্রামের জন্য বিরতির সময় ছাড়া কাজ চলাকালে বা মেশিন চালু থাকিবার সময় কোনো কারখানায় যেই সব ব্যক্তিকে উপস্থিত দেখা যাইবে, বিপরীত প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত, এই আইনের এবং এতদানুসারে প্রণীত বিধিমালার উদ্দেশ্য সাধনের জন্য তাহাদের প্রত্যেকে উক্ত সময় ঐ কারখানায় নিযু্ক্ত কর্মচারি বলিয়া গণ্য হইবে।

ধারা-১০৬। বয়স প্রমাণে দায়িত্ব :

(১) কোনো নির্দিষ্ট বয়সের অধিক বা কম বয়স্ক কোনো ব্যক্তির কৃত কোনো অপরাধ এই আইন অনুসারে দন্ডযোগ্য হইলে  এবং আদালতের মতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি দৃশ্যত উক্ত নির্দিষ্ট বয়সের অধিক বা কম বলিয়া প্রতিপন্ন  হইলে, সেই ব্যক্তির বয়স নির্দিষ্ট সীমার বেশি বা কম নহে, তাহা প্রমাণের দায়িত্ব অভিযুক্ত ব্যক্তির।

 (২) কোনো শ্রমিকের বয়স নির্দিষ্ট সীমার বেশি না কম, সেই সম্পর্কে সার্টিফিকেট দানকারী  সার্জন  কর্তৃক প্রদত্ত ঘোষণাপত্র এই আইনের উদ্দেশ্য  সাধনের জন্য সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের বয়স সম্পর্কে প্রমাণ হিসাবে  গ্রাহ্য হইবে।

ধারা-১০৭।  অপরাধ আমলে লওয়া :

(১) ইন্সপেক্টার  কর্তৃক সরাসরি বা তাঁহার কর্তৃত্বাধীনে বা তাঁহার লিখিত পূর্ব অনুমতি ব্যতীত অন্যভাবে এই আইন অনুসারে আনীত কোনো অপরাধ সংক্রান্ত অভিযোগ কোনো আদালত  আমলে লইবেন না।

তবে শর্ত এই যে, আদালতে বিচারাধীন কোনো মামলা কারখানাসমূহের চীফ ইন্সপেক্টরের পূর্ব অনুমতি ছাড়া প্রত্যাহার করা যাইবে না।

(২) এই আইনের বা তদানুসারে প্রণীত কোনো বিধিমালা বা প্রদত্ত কোনো আদেশ অনুসারে কৃত কোনো অপরাধের বিচার  প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নিম্ন পর্যায়ের কোনো আদালত বিচার করিবেন  না।

একাদশ অধ্যায়
পরিপূরক

ধারা-১০৮। আপীল :

(১) এই আইন অনুসারে ইন্সপেক্টরের কোনো লিখিত আদেশ কোনো কারখানার ম্যানেজারের উপর জারি হইলে উক্ত আদেশ প্রাপ্তির ত্রিশদিনের মধ্যে কারখানার ম্যানেজার বা মালিক উহার বিরুদ্ধে আপীল কর্তৃপক্ষের নিকট আপীল করিতে পারিবেন এবং আপীল কর্তৃপক্ষ এতদসংক্রান্ত বিধিমালা সাপেক্ষে উক্ত আদেশ বহাল, সংশোধন  বা পরিবর্তন করিতে পারিবেন।

(২) এতদসংক্রান্ত বিধিমালা সাপেক্ষে প্রয়োজন মনে করিলে আপীল কর্তৃপক্ষ  উপধারা (১) অনুসারে দায়েরকৃত আপীল অাবেদন দুইজন অ্যাসেসরের সহায়তায় শুনানি করিবেন এবং উক্ত অ্যাসেসরদ্বয় একজনকে আপীল কর্তৃপক্ষ ও অপরজনকে সংম্লিষ্ট শিল্পের নির্ধারিত কোনো প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থা নিয়োগ করিবেন।

    তবে শর্ত এই যে, অনুরূপ প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থা কোনো অ্যাসেসর নিয়োগ না করিলে, কিংবা তাহাদের নিয়োজিত বা অ্যাসেসর আপীলের  শুনানির জন্য নির্দিষ্ট  সময়ে নির্ধারিত স্থানে উপস্থিত হইতে ব্যর্থ হইলে, আপীল কর্তৃপক্ষ যদি মনে করেন যে,  যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই তিনি অনুপস্থিত রহিয়াছেন, তাহা হইলে  উক্ত অ্যাসেসরের সাহায্য ছাড়াই, অথবা প্রয়োজন মনে করিলে কোনো  অ্যাসেসরের সাহায্য ছাড়াই আপীল কর্তৃপক্ষ শুনানি চালাইয়া যাইবেন।

(৩) এই বিষয়ে সরকার প্রণীত কোনো বিধিমালা সাপেক্ষে আপীল কর্তৃপক্ষ প্রয়োজন মনে করিলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত যেই আদেশের বিরুদ্ধে আপীল দায়ের করা হইয়াছে, তাহা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখিতে পারিবেন।

(৪) এই ধারার উদ্দেশ্যে সরকার বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবেন এবং কোন্ কোন্ শ্রেণীর আপীল অ্যাসেসরদের সহায়তায় শুনানি করা হইবে না, তাহা উক্ত বিধিমালায় নির্দিষ্ট করিয়া দিতে পারিবেন।

(৫) এই ধারায় ‘আপীল কতৃপক্ষ’ বলিতে সরকার, অথবা সরকার কর্তৃক এই উদ্দেশ্যে নিযুক্ত কোনো কর্তৃপক্ষকে বুঝাইবে।

ধারা-১০৯। নোটিশ প্রদর্শন :

(১) এই আইনের বা এর আওতাধীনে প্রণীত বিধিমালা অনুসারে কারখানার প্রয়োজনীয় প্রদর্শনীয় অন্যান্য নোটিশের অতিরিক্ত ইন্সপেক্টর বা সিভিলসার্জনের কার্যালয়ের ঠিকানা এবং এই আইনের ও এই আইন অনুসারে প্রণীত বিধিমালায় নির্দিষ্ট করে দেয়া সার-সংক্ষেপে একটি নোটিশের আকারে প্রত্যেক কারখানায় প্রদর্শন করিতে হইবে।

 (২) এই আইন বা এতদানুসারে যে সমস্ত নোটিশ কারখানায় প্রদর্শন করা প্রয়োজন তাহা -

(ক) বাংলায় ও ইংরেজিতে, এবং যেখানে শ্রমিকদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের মাতৃভাষা বাংলা নহে, সেখানে ইংরেজিতে লিখিত হইতে হইবে;

(খ) কারখানার কোনো প্রকাশ্য বা সুবিধাজনক স্থানে, অথবা প্রধান ফটকের সন্নিকটে টাঙ্গাইতে হইব; এবং

(গ) পরিষ্কার ও বোধগম্য অবস্থায় রক্ষণাবেক্ষণ করিতে হইবে।

(৩) চীফ ইন্সপেক্টর যে কোনো কারখানার ম্যানেজারের উপর লিখিত আদেশ জারি করিয়া শ্রমিকদের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা বা কল্যাণ সম্পর্কে অন্য যেই কোনো নোটিশ বা পোস্টার কারখানায় প্রদর্শন করার নির্দেশ দিতে পারিবেন।

ধারা-১১০। নোটিস জারি ও রিটার্ন :

সরকার বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবেন -

(ক) এই আইন অনুসারে আদেশ জারির পদ্ধতি নির্ণয় করিয়া; এবং

 (খ) এই আইনের উদ্দেশ্যে মেয়া
Acquire the knowledge and share the knowledge so that knowing,learning then sharing - all are the collection