Daffodil Computers Ltd.

E-Health / Protect Your Health => E- Health For Women => Topic started by: bbasujon on January 13, 2012, 10:33:58 AM

Title: কী করে বুঝবেন স্তন ক্যান্সার
Post by: bbasujon on January 13, 2012, 10:33:58 AM
সারা বিশ্বে মহিলাদের স্তন বা ব্রেষ্ট ক্যাসারের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। অথচ সময়মত ব্যবস্হা নিলে এ রোগের ভয়াবহ থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। সাধারণত ৩০ বছরের আগে এই রোগ কম হয়। বেশিরভাগ রোগী বুকে চাকা নিয়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়। বুকে চাকা সেই সাথে কিছু কিছু রোগী ব্যথার কথাও বলে থাকে। কখনো কখনো বুকে চাকা এবং বগলেও চাকা নিয়ে রোগী আসতে পারে। নিপল ডিসচার্জ এবং নিপল ভেতরের দিকে ঢুকে যাওয়াও এ রোগের লক্ষণ হিসেবে দেখা দিতে পারে। কিছু কিছু রোগী বুকে ফুলকপির মতো ঘা নিয়ে ডাক্তারের কাছে আসে। অনেক সময় যে বুকে ব্যথা, সেদিকের হাত ফোলা নিয়েও আসতে পারে। এগুলো ছাড়া ব্রেষ্ট ক্যাসার দুরবর্তী কোথাও ছড়িয়ে পড়েছে এমন উপসর্গ নিয়ে আসে; যেমনঃ হাড়ে ব্যথা, মাথা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট ও জন্ডিস ইত্যাদি।

কারণঃ
–জেনিটিক কারণ, যেমন-মা-খালা থাকলে সন্তানদের হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
–অবিবাহিত বা সন্তানহীনা মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যাসারের প্রকোপ বেশি।
–একইভাবে যারা সন্তানকে কখনো স্তন্য পান করাননি, তাদের ব্রেষ্ট ক্যাসার বেশি হয়।
–৩০ বছর পরে যারা প্রথম মা হয়েছেন, তাদের স্তন ক্যাসারের প্রবণতা একজন কমবয়সী মা হওয়া মহিলার থেকে অনেক বেশি।
–বয়স যত বাড়ে, স্তন ক্যাসারের ঝুঁকি তত বৃদ্ধি পায়।
–অল্প সময়ে বাচ্চা নিলে, দেরিতে মাসিক শুরু হলে, তাড়াতাড়ি মাসিক বন্ধ হলে স্তন ক্যাসারের প্রকোপ বেড়ে যায়।
–একাধারে অনেক দিন জন্মনিরোধক বড়ি খেলেও স্তন ক্যাসার হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

উপরোক্ত কারণগুলো ব্রেষ্ট ক্যাসারে সহায়ক ভুমিকা পালন করে। তবে এগুলোই একমাত্র কারণ নয়।

রোগ নির্ণয়ঃ
–মেমোগ্রাম বা স্তনের বিশেষ ধরনের এক্স-রে।
–স্তনের আলট্রাসনোগ্রাম।
–চাকা বা টিউমার থেকে রস নিয়ে পরীক্ষা করলে এই রোগ ধরা পড়বে।

ব্রেষ্ট ক্যান্সারে চিকিৎসাঃ
সম্ভব হলে সার্জারি করাই উত্তম। তাছাড়া কেমো থেরাপি, রেডিও থেরাপি, হরমোন থেরাপি ইত্যাদি।

প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয়
–৩০ বছরের বেশি বয়স হলে নিজ নিজ ব্রেষ্ট পরীক্ষা করতে হবে কোনো চাকা পাওয়া যায় কিনা। চাকা পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
–বয়স ৫০-এর উপরে হলে বছরে একবার মেমোগ্রাম করতে হবে।
–কোনো প্রকার সন্দেহ হলে ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করতে হবে।

রোগ প্রতিরোধের উপায়
যেহেতু রোগটির নির্দিষ্ট কোনো কারণ জানা যায়নি, তাই এই রোগ এড়ানোর জন্য কয়েকটি নিয়ম মেনে চলার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়ঃ

–৩০ বছর বয়স থেকে নিজ নিজ ব্রেষ্ট পরীক্ষা করুন।
–রিস্ক ফ্যাক্টর থাকলে সে ক্ষেত্রে মেমোগ্রাফি করুন। যেমনঃ ফ্যামিলিতে ব্রেষ্ট ক্যাসার থাকলে।
–৩০ বছর বয়সের মধ্যে প্রথম সন্তান জন্ম দেয়ার চেষ্টা করুন।
–সন্তানকে বুকের দুধ পান করান।
–টাটকা শাক-সবজি ও ফল খান।
–সন্দেহ হলে ক্যাসার সার্জনের শরণাপন্ন হন।

মনে রাখবেন প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নিরূপণ হলে এবং চিকিৎসা করালে আপনি অনেকদিন সুস্হ থাকবেন। সার্জারি করার সময় টিউমারটি বগলে লসিকা গ্রন্হিসহ অপসারণ করলে এই রোগ পুনরায় দেখা দেয়ার সম্ভাবনা খুব কম। অসম্পুর্ণভাবে টিউমার অপসারণ করলে এই রোগ আবার হতে পারে। বর্তমানে অপারেশন টেকনোলজি অনেক উন্নতি লাভ করেছে; যার ফলে এই রোগের চিকিৎসা এখন বাংলাদেশেই সম্ভব।

ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ
দৈনিক আমারদেশ, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০০৮