Daffodil Computers Ltd.

General Category => Law of Bangladesh => Topic started by: bbasujon on January 23, 2012, 05:51:44 AM

Title: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 05:51:44 AM
বিবাহ ও ভরণপোষণ সংক্রান্ত[/color]

বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ১ঌ২ঌ

[ ১ঌ২ঌ সনের ১ঌ নং আইন]

বাল্য বিবাহ অনুষ্ঠান নিবারণ করিবার জন্য আইন: যেহেতু বাল্যবিবাহ অনুষ্ঠান প্রতিরোধ করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয় ;সেহেতু এই আইন  প্রনয়ন করা হল :


ধারা

১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, এলাকা ও প্রয়োগ :

(ক) এই আইনকে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ১৯২৯ নামে অভিহিত করা হবে।

(খ) সমগ্র বাংলাদেশ এর আওতাভুক্ত এবং বাংলাদেশের সকল নাগরিকের উপরই, তাহারা যেখানেই থাকুক না কেন, ইহা প্রযোজ্য হবে।

(গ) ১৯৩০ সনের এপ্রিলের প্রথম দিন হতে এই আইন বলবত্‍ হবে।
 

ধারা

২। সংজ্ঞা :

বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কিছু না থাকলে, এই আইনে -

    (ক) শিশু বলতে ঐ ব্যক্তিকে বুঝায়, যার বয়স পুরুষ হলে একুশ বত্রের নিচে এবং নারী হইলে আঠার বত্সরের নিচে।
    (খ) “বাল্যবিবাহ” বলতে ঐ বিবাহকে বুঝায় যার চুক্তিবদ্ধ পক্ষগণের যেকোন একপক্ষ শিশু ;

    (গ) বিবাহের চুক্তি পক্ষ বলতে পক্ষগণের যেকোন এক পক্ষকে বুঝায় যার বিবাহ তদ্দরা অনুষ্ঠিত হয়েছে বা হওয়ার জন্য প্রস্তুত ;

    (ঘ) “নাবালক” বলতে ঐ ব্যক্তিকে বুঝায় যার বয়স পুরুষ হলে একুশ বত্সরের নিচে এবং নারী হলে আঠার বত্সরের নিচে ;

    (ঙ) “মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন” বলতে ১ঌ৮২ সনের চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন অধ্যাদেশ (১ঌ৮২ সনের ৩৫ নং আইন) বা ১ঌ৮৩ সনে ঢাকা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন অধ্যাদেশ (১ঌ৮৩ সনের ৪০নং আইন) বা ১ঌ৮৪ সনের খুলনা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন অধ্যাদেশের অধীন গঠিত কর্পোরেশনকে বুঝায় যার এখতিয়ারের মধ্যে কোন বাল্য বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়েছে বা হওয়ার জন্য প্রস্তুত

    (চ) “পৌরসভা” বলতে ১ঌ৭৭ সনের পৌরসভা অধ্যাদেশের (১ঌ৭৭ সনের ২৬ নং আইন) অধীনে গঠিত পৌরসভাবে বুঝায় যার এখতিয়ারের মধ্যে কোন বাল্যবিবাহ অনুষ্ঠিত হয়েছে বা হওয়ার জন্য প্রস্তুত ; এবং

    (ছ) “ইউনিয়ন পরিষদ” বলতে ১ঌ৮৩ সনের স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) অধ্যাদেশের (১ঌ৮৩ সনের ৫১ নং আইন) অধীনে গঠিত ইউনিয়ন পরিষদকে বুঝায় যার এখতিয়ারের মধ্যে কোন বাল্য বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়েছে বা হওয়ার জন্য প্রস্তুত।

ধারা

৩। শিশু বিবাহকারী একুশ বত্সর বয়সের নিচে পুরুষ লোকের শাস্তি বালিত করা হয়েছে।

...

ধারা

৪। শিশু বিবাহকারীর শাস্তি:
যে কেউ একুশ বত্‍সর বয়সোর্ধ্ব পুরুষ বা আঠারো বয়সোর্ধ্ব মহিলা হয়ে কোন বাল্যবিবাহের চুক্তি করলে, একমাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাবাসে বা এক হাজার টাকা পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য জরিমানায় বা উভয়বিধ শাস্তিযোগ্য হবে।

ধারা

৫। বাল্যবিবাহ সম্পন্নকারীর শাস্তি :
যে কেউ যেকোন বাল্যবিবাহ অনুষ্ঠান, পরিচালনা বা নির্দেশ করলে তিনি এক মাস পর্যন্ত  বিনাশ্রম কারাবাসে, এক হাজার টাকা পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য জরিমানায় বা উভয়বিধ দন্ডে শাস্তিযোগ্য হবেন, যদি না তিনি প্রমাণ করেন যে, তার বিশ্বাস করার কারণ ছিল যে, উক্ত বিবাহ কোন বাল্যবিবাহ ছিল না।


ধারা

৬। বাল্যবিবাহ সংশ্লিষ্ট পিতা-মাতার বা অভিভাবকদের জন্য শাস্তি :
যেক্ষেত্রে কোন নাবালক কোন বাল্যবিবাহের চুক্তি করে, সেক্ষেত্রে ঐ নাবালকের ভারপ্রাপ্ত যেকোন ব্যক্তি, পিতা-মাতা হইক বা অভিভাবক হইক বা অন্য কোন সামর্থ্যে হউক, আইনসম্মত হউক বা বেআইনী হউক যদি উক্ত বিবাহে উত্সাহ প্রদানের কোন কাজ করেন, অথবা উহা অনুষ্ঠিত হওয়া হতে নিবারণ করতে অবহেলার দরুন ব্যর্থ হন, তিনি এক মাস পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য বিনাশ্রম কারাবাসে বা একহাজার টাকা পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য জরিমানায় বা উভয়বিধ দন্ডে শাস্তিযোগ্য হবেন :

তবে শর্ত থাকে যে, কোন মহিলাই কারাবাসে শাস্তিযোগ্য হবে না।

এই ধারার উদ্দেশ্যে যদি না এবং যতক্ষণ না বিপরীত কিছূ প্রমাণিত হয়, এই অনুমান করতে হবে যে, যেক্ষেত্রে কোন নাবালকের বাল্যবিবাহের চুক্তি করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে উক্ত নাবালকের ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি ঐ বিবাহ অনুষ্ঠিত হওয়া হতে নিবারণ করতে অবহেলার দরুণ ব্যর্থ হয়েছেন।

ধারা

৭। ৩ ধারা অধীনে অপরাধের জন্য কারাবাস প্রদান করা হবে না :
১৮ঌ৭ সনের সাধারণ দফা আইনের ২৫ ধারায় অথবা দন্ডবিধির ৪ ধারায় অন্তর্ভূক্ত যেকোন কিছু থাকা সত্ত্বেও ৩ ধারার অধীনে কোন অপরাধীকে দন্ডদানকারী আদালত (এই মর্মে) নির্দেশ দান করবে না যে, আরোপিত জরিমানা অনাদায়ে তাকে যেকোন মেয়াদের কারাবাস ভোগ করতে হবে।

 

ধারা

৮। এই আইনের অধীনে এখতিয়ার :
১৮ঌ৮ সনের ফৌজদারী কার্যবিধি কোডের ১ঌ০ ধারায় অন্তভুক্ত যে কোন কিছু থাকা সত্ত্বেও, প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালত ব্যতীত কোন আদালতই এই আইনের অধীন কোন অপরাধের অধিগ্রহণ বা বিচার করবে না।

ধারা

৯। অপরাধের বিচারার্থে অধিগ্রহণ করিবার পদ্ধতি :
কোন আদালতই ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা বা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন কর্তৃক অথবা যদি উক্ত এলাকায় কোন ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা বা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন না থাকে, তা হলে সরকার এতদপক্ষে নির্ধারণ করতে পারেন এমন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আনীত অভিযোগের ভিত্তি ব্যতীত এই আইনের কোন অপরাধের বিচারার্থে অধিগ্রহণ করবেন না, এবং ঐরূপ অধিগ্রহণ কোন ক্ষেত্রেই যে তারিখে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে বলা হয়, সেই তারিখ হতে এক বত্সর অতিবাহিত হওয়ার পর করা হবে না।

ধারা

১০। এই আইনের অধীন অপরাধের প্রারম্ভিক অনুসন্ধান :
এই আইনের অধীন কোন অপরাধের বিচারার্থে অধিগ্রহণকারী আদালত ১ঌঌ৮ সনের ফৌজদারী কার্যবিধি কোডের ২০৩ ধারা মোতাবেক সংশ্লিষ্ট অভিযোগ খারিজ না করলে, হয় ঐ কোডের ২০২ ধারা মোতাবেক স্বয়ং অনুসন্ধান করবে, অথবা উহার অধঃস্তন কোন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেটকে ঐরূপ অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দিবে।

ধারা

১১। অভিযোগকারীর নিকট হইতে জামানত গ্রহণের ক্ষমতা বাতিল করা হয়েছে।

...

ধারা

১২। এই আইন অমান্য করিয়া নিষেধাজ্ঞা জারির ক্ষমতা :
(১) এই আইনে অন্তর্গত বিপরীত কোন কিছু থাকা সত্ত্বেও আদালত এই আইন লংঘনক্রমে বাল্য বিবাহ ব্যবস্থিত হয়েছে বা অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য প্রস্তুত, এই মর্মে কোন অভিযোগের মাধ্যমে বা অন্যভাবে উহার নিকট উপস্থাপিত তথ্য হতে সন্তুষ্ট করে ঐরূপ বিবাহ নিষিদ্ধ করে এই আইনের ২, ৪, ৫ ও ৬ ধারায় উল্লিখিত যেকোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে।

(২) উপধারা (১) মোতাবেক কোন নিষেধাজ্ঞাই কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে জারি করা যাবে না, যদি না আদালত ঐরূপ ব্যক্তিকে পূর্বাহ্নে নোটিস প্রদান করে এবং তাহাকে নিষেধাজ্ঞা জারির বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর সুযোগ দেয়।

(৩) আদালত স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়েছে বা সংক্ষুব্ধ কোন ব্যক্তির আবেদনক্রমে (১) উপধারা মোতাবেক প্রদত্ত যেকোন আদেশ প্রত্যাহার করতে বা পরিবর্তন করতে পারে।

(৪) যেক্ষেত্রে এইরূপ আবেদনপত্র পাওয়া যায়, সেইক্ষেত্রে আদালত উহার সমক্ষে ব্যক্তিগতভাবে অথবা উকিল মারফত আবেদনকারীকে একটি আগ-শুনানির সুযোগ দিবেন এবং যদি আদালত আবেদনপত্র বা আংশিকভাবে প্রত্যাখ্যান করেন, তা হলে এইরূপ করার কারণ লিপিবদ্ধ করে রাখবেন।

(৫) যে কেউ এই ধারার (১) উপধারা অনুসারে তার বিরুদ্ধে প্রদত্ত নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়েও সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে, তাহা হলে তাকে তিনমাস পর্যন্ত মেয়াদের কারাদন্ডে অথবা এক হাজার টাকা পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য জরিমানায় অথবা উভয়দন্ডে দন্ডিত করা যাবে।

    তবে শর্ত থাকে যে, কোন মহিলাকে কারাদন্ডে দন্ডিত করা যাবে না।
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 05:52:49 AM
মুসলিম ব্যক্তিগত আইন (শরীয়ত)

প্রয়োগ আইন, ১৯৩৭

[১৯৩৭ সালের ২৬নং আইন]

------------------------------------------------------------------

 

বাংলাদেশের মুসলিমগণের বেলায় মুসলিম ব্যক্তিগত আইন (শরীয়ত) প্রয়োগের বিধান করার জন্য আইন । যেহেতু বাংলাদেশের মুসলিমগণের বেলায় মুসলিম ব্যক্তিগত আইন (শরীয়ত) প্রয়োগের বিধান করা যুক্তিযুক্ত; সেইহেতু এতদ্বারা ইহা নিম্নলিখিতরূপে বিধিবদ্ধ করা গেলঃ

 

ধারা-১ (সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রয়োগক্ষেত্র )

(১) অত্র আইনকে মুসলিম ব্যক্তিগত আইন (শরীয়ত) প্রয়োগ আইন, ১৯৩৭ নামে অভিহিত করা যায় ।

(২) ইহার প্রয়োগক্ষেত্র সমগ্র বাংলাদেশ ।

 

ধারা-২ (মুসলিমগণের বেলায় ব্যক্তিগত আইনের প্রয়োগ )

বিপরীত কোনো প্রথা অথবা রীতি থাকা সত্ত্বেও উইলবিহীন উত্তরাধিকার, উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত বা চুক্তি অথবা দান অথবা ব্যক্তিগত আইনের অপর কোনো বিধান মোতাবেক অর্জিত ব্যক্তিগত সম্পত্তিসহ নারীগণের বিশেষ সম্পত্তি, বিবাহ, তালাক, ইলা, যিহার, লিয়ান, খুলা এবং মুবারাতসহ, বিবাহবিচ্ছেদ, ভরণপোষণ, দেনমোহর, অভিভাবকত্ব দান, অছি, অছি, সম্পত্তি এবং (দাতব্যালয় এবং দাতব্য প্রতিষ্ঠান এবং দাতব্য ও ধর্মীয় সম্পত্তি ব্যতিত) ওয়াকফ সংক্রান্ত সমস্ত প্রশ্ন (কৃষি ভূমি সম্বন্ধীয় প্রশ্ন ব্যতিত) যে সকল মোকদ্দমায় পক্ষসমূহ মুসলিম সেই সকল মোকদ্দমার সিদ্ধান্ত-বিধি মুসলিম ব্যক্তিগত আইন (শরীয়ত) হইবে ।

 

ধারা-৩ ( ঘোষণা দেওয়ার ক্ষমতা )

(১) যে ব্যক্তি নির্ধারিত কতৃর্পক্ষকে এই মর্র্মে সন্তুষ্ট করে যে-

(ক) সে একজন মুসলমান এবং (খ) সে ১৮৭২ সালের চুক্তি আইনের ১১ ধারা অনুযায়ী চুক্তি করার যোগ্য ও (গ) সে বাংলাদেশের একজন বসবাসকারী, তবে সে নির্ধারিত ফরমে নির্ধারিত কতৃর্পক্ষের নিকট দাখিলকৃত ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে এই মর্মে ঘোষণা করিতে পারে যে, সে এই ধারার বিধানসমূহের সুবিধালাভে ইচ্ছুক এবং তত্পর ২ ধারার বিধানসমূহ ঘোষণাকারী এবং তাহার সকল নাবালক সন্তান এবং তাহার বংশধরদের বেলায় প্রযোজ্য হইবে; যেন তথায় ক্রমোল্লিখিত বিষয়সমূহ ব্যতীত দত্তক গ্রহণ, ইচ্ছাপত্র এবং উত্তরদায়ও উল্লেখিত ছিল ।

 

ধারা -৪ ( রুল (বিধি) প্রণয়ন করার ক্ষমতা )

(১) এই আইনের উদ্দেশ্যসমূহ কার্যকর করার জন্য সরকার বিধি প্রণয়ন করিতে পারেন ।

(২) বিশেষ করিয়া ও পূর্ববর্তী ক্ষমতার সাধারণত্বের হানি না ঘটাইয়া উক্ত বিধিসমূহ নিম্নরূপ বিষয়সমূহের সবগুলি অথবা যেকোনোটির নিমিত্ত বিধান করিতে পারে; যথাঃ

(ক) যেই কতৃর্পক্ষের নিকট এবং যেই ফরমে এই আইন মোতাবেক ঘোষণা করিতে হইবে উহা নির্ধারণের জন্য;

(খ) ঘোষণাপত্র দাখিল করার জন্যও এই আইন অনুযায়ী কর্তব্য পালনরত কোনো ব্যক্তির বেসরকারী আবাসে হাজিরার জন্য প্রদেয় ফী নির্ধারণের জন্য; এবং যে সময়ে উক্ত ফী প্রদেয় হইবে ও যেভাবে উহা ধার্য করা হইবে উহা নির্ধারণের জন্য ।

(৩) এই ধারার বিধানসমূহ অনুযায়ী প্রণীত বিধিসমূহ সরকারী বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশিত হইবে ও ইহার ফলে উহা এমনভাবে কার্যকর হইবে যেন উহা এই আইনে বিধিবদ্ধ করা হইয়াছে ।

 

ধারা -৫ ( কোন কোন পরিস্থিতিতে আদালত কতৃর্ক বিবাহ ভঙ্গ )

বাতিল ।

 

ধারা-৬ ( বাতিল )

নিম্নে উল্লেখিত আইন এবং প্রবিধানের নিম্নে উল্লেখিত বিধানসমূহ যতখানি পর্যন্ত এই আইনের বিধানসমূহের সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ ততখানি পর্যন্ত নিরসন করা হইবে; যথা

(১) ১৯২৭ সালের (চতুর্থ) বোম্বে প্রবিধানের ২৬ ধারা;

(২) বাতিল;

(৩) বাতিল;

(৪) নিরসন করা হইয়াছে;

(৫) ১৮৭২ সালের পাঞ্জাব আইনের ৫ ধারা; এবং

(৬) বাতিল।

তথ্য সূত্র : জনগূরুত্বপূর্ণ  আইন
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 05:55:48 AM
মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১

(১৯৬১ সনের ৮নং অধ্যাদেশ)
 

বিবাহ এবং পারিবারিক আইন কমিশনের কতিপয় সুপারিশ কার্যকর করার জন্য প্রণীত অধ্যাদেশ৷

যেহেতু, বিবাহ এবং পারিবারিক আইন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করা দরকার ও সমীচীন৷ সেহেতু, ১৯৫৮ সালের ৭ই অক্টোবরের ঘোষণা দ্বারা রাষ্ট্রপতি প্রদত্ত ক্ষমতা বলে, নিম্নলিখিত অধ্যাদেশটি প্রণয়ন ও জারী করলেন:

১৷ সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, সীমা, প্রয়োগ ও বলবতের সময় (Short title, extent, application and commencement):

এই অধ্যাদেশকে ১৯৬১ সনের 'মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ' নামে অভিহিত করা হবে।

ইহা সমগ্র বাংলাদেশে এবং যে যেখানেই থাকুক না কেন, বাংলাদেশের সকল মুসলিম নাগরিকের উপর প্রযোজ্য হবে।

সরকার, সরকারী গেজেটে বিজ্ঞপ্তি মারফত যে তারিখ নির্ধারণ করবেন, সেই তারিখ হতে উহা কার্যকর হবে।

(উল্লেখ্য যে, ১৯৬১ সনের ১৫ই জুলাই তারিখ হতে এই অধ্যাদেশটি বলবত হয়েছে)

২৷ সংজ্ঞাসমূহ (Definitions): এই অধ্যাদেশে, বিষয়বস্তু বা প্রসঙ্গ হতে বিপরীত কিছু প্রতীয়মান না হলে-

(ক) 'সালিসী পরিষদ' (Arbitration Council) বলতে চেয়ারম্যান এবং এই অধ্যাদেশে উল্লিখিত কোন বিষয়ের সংশ্লিষ্ট পক্ষগণের প্রত্যেকের একজন প্রতিনিধি নিয়ে গঠিত পরিষদকে বুঝাবে। তবে শর্ত থাকে যে, কোন পক্ষ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিনিধি মনোনয়ন করতে ব্যর্থ হলে অনুরূপ প্রতিনিধি ছাড়া গঠিত পরিষদই সালিসী পরিষদ হবে।

(খ) চেয়ারম্যান (Chairman) বলতে বুঝাবে-

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান;

পৌরসভার চেয়ারম্যান;

মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের মেয়র বা প্রশাসক;

সেনানিবাস এলাকায় অত্র অধ্যাদেশ অনুযায়ী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের জন্য সরকার কর্তৃক মনোনীত ব্যক্তি;

কোন ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা বা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন বাতিল করা হলে সেক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক অত্র অধ্যাদেশের অধীনে উক্ত ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা বা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালনের জন্য মনোনীত ব্যক্তি।

তবে শর্ত থাকে যে,যেখানে ইউনিয়ন পরিষদ অথবা পৌরসভার চেয়ারম্যান একজন অমুসলমান অথবা তিনি নিজেই সালিসী পরিষদের নিকট কোন দরখাস্ত করতে চাহেন এমন হলে,অথবা অসুস্থতা বা অন্য কোন কারণে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হলে, উক্ত ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা উহার একজন মুসলমান সদস্যকে এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্যাবলী পূরণকল্পে একজনকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবেন।

(গ) 'মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন' (Municipl Corporation) বলতে ১৯৮২ সালের চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন অধ্যাদেশ (১৯৮২ সনের ৩৫ নং অধ্যাদেশ) অথবা ১৯৮৩ সালের ঢাকা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন অধ্যাদেশ (১৯৮৩ সনের ৪০নং অধ্যাদেশ), অথবা ১৯৮৪ সালের খুলনা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন অধ্যাদেশ (১৯৮৪ সনের ৭২ নং অধ্যাদেশ) অনুযায়ী গঠিত মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন বুঝাবে এবং নির্ধারিত এখতিয়ার সম্পন্ন হবে।

(ঘ) 'পৌরসভা' (Paurashava) বলতে ১৯৭৭ সালের পৌরসভা অধ্যাদেশ (১৯৭৭ সনের ২৬ নং অধ্যাদেশ) অনুযায়ী গঠিত পৌরসভা বুঝাইবে এবং নির্ধারিত এখতিয়ার বুঝায়।

(ঙ) 'নির্ধারিত' (Prescribed) বলতে ১১ ধারার অধীনে প্রণীত বিধিমালা দ্বারা নির্ধারিত বুঝায়।

(চ) 'ইউনিয়ন পরিষদ' (Union Parishad) বলতে ১৯৮৩ সালের স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) অধ্যাদেশের (১৯৮৩ সনের ৫১ নং অধ্যাদেশ) এর অধীনে গঠিত এবং উক্ত বিষয়ে নির্ধারিত এখতিয়ার সম্পন্ন ইউনিয়ন পরিষদকে বুঝায়।

৩৷ অত্র অধ্যাদেশ অন্যান্য আইনের উপর প্রাধান্য লাভ করবে (Ordinance to override other laws):

অপর কোন আইন, বিধি অথবা প্রচলিত রীতিতে যাই থাকুক না কেন, এই অধ্যাদেশের বিধানাবলী কার্যকর হবে।

সন্দেহ দূরীকরণের উদ্দেশ্যে, এতদ্বারা ইহা ঘোষণা করা যাচ্ছে যে, ১৯৪০ সালের সালিসী আইন, ১৯০৮ সালের দেওয়ানী কার্যবিধি এবং আদালতের কার্যধারা নিয়ন্ত্রণকারী অপর কোন আইনের কোন ব্যবস্থা সালিশী পরিষদে প্রযোজ্য হবে না।

 

৪৷ উত্তরাধিকার (Succession): যাহার সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে বন্টিত হবে, তার পূর্বে তার কোন পুত্র বা কন্যা মারা গেলে এবং উক্ত ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার সম্পত্তি বন্টনের সময় উক্ত পুত্র বা কন্যার কোন সন্তানাদি থাকলে, তারা প্রতিনিধিত্বের হারে সম্পত্তির ঐ অংশ পাবে, যা তাদের পিতা অথবা মাতা জীবিত থাকলে পেতো।

 

৫৷ [বাতিল এই ধারাটি ১৯৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রেশন আইন দ্বারা বাদ দেওয়া হয়েছে]

 

৬৷ বহু বিবাহ (Polygamy):

(১) সালিশী পরিষদের লিখিত পূর্বানুমতি ছাড়া কোন ব্যক্তি একটি বিবাহ বলবত থাকলে আরেকটি বিবাহ করতে পারবে না এবং পূর্ব অনুমতি গ্রহণ না করে এই জাতীয় কোন বিবাহ হলে তা মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিষ্ট্রেশন) আইন, ১৯৭৪ (১৯৭৪ সনের ৫২নং আইন) অনুসারে রেজিষ্ট্রি হবে না।

(২) (১) উপ-ধারায় বর্ণিত অনুমতির জন্য নির্দিষ্ট ফিসসহ নির্ধারিত পদ্ধতিতে চেয়ারম্যানের নিকট আবেদন করতে হবে এবং আবেদনপত্রে প্রস্তাবিত বিবাহের কারণ এবং বর্তমান স্ত্রী বা স্ত্রীদের সম্মতি নেওয়া হয়েছে কিনা, তা উল্লেখ করতে হবে।

(৩) উপরোক্ত (২) উপ-ধারা মোতাবেক আবেদনপত্র পাওয়ার পর চেয়ারম্যান আবেদনকারী এবং বর্তমান স্ত্রী বা স্ত্রীদের প্রত্যেককে একজন করে প্রতিনিধি মনোনয়ন করতে বলবেন এবং এইরূপে গঠিত সালিশী পরিষদ যদি মনে করেন যে, প্রস্তাবিত প্রয়োজন এবং ন্যায়সঙ্গত, তা হলে কোন শর্ত থাকলে উহা সাপেক্ষে, প্রার্থিত বিবাহের অনুমতি মঞ্জুর করতে পারেন।

(৪) আবেদনটি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় সালিশী পরিষদ সিদ্ধান্তের কারণসমূহ লিপিবদ্ধ করবেন এবং যে কোন পক্ষ, নির্দিষ্ট ফিস জমা দিয়ে নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট মুন্সেফের নিকট রিভিশনের (Revision) জন্য আবেদন দাখিল করতে পারবেন এবং সালিসী পরিষদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে এবং কোন আদালতে উহার বৈধতা সম্পর্কে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না।

(৫) সালিশী পরিষদের অনুমতি ছাড়া কোন ব্যক্তি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে তাকে-

(ক) অবিলম্বে তার বর্তমান স্ত্রী বা স্ত্রীদের "তাত্ক্ষণিক" অথবা "বিলম্বিত" দেনমোহরের (Prompt or deferred dower) যাবতীয় টাকা পরিশোধ করতে হবে এবং উক্ত টাকা পরিশোধ করা না হলে উহা বকেয়া ভূমি রাজস্বের ন্যায় আদায়যোগ্য হবে।

(খ) অভিযোগক্রমে দোষী সাব্যস্ত হলে সে এক বত্সর পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা দশ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবে।

 

৭৷ তালাক (Talaq):

(১) কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তালাক দিতে চাইলে, তিনি যে কোন পদ্ধতির তালাক ঘোষণার পর যথাশীঘ্র সম্ভব চেয়ারম্যানকে লিখিতভাবে নোটিশ দিবেন এবং স্ত্রীকে উক্ত নোটিশের একটি অনুলিপি (নকল) প্রদান করবেন।

(২) কোন ব্যক্তি (১) উপ-ধারার বিধান লংঘন করলে তিনি এক বত্সর বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় প্রকার দণ্ডনীয় হবেন।

(৩) নিম্নের (৫) উপধারার বিধান অনুসারে প্রকাশ্যে বা অন্য কোনভাবে তালাক, আগে প্রত্যাহার করা না হয়ে থাকলে, (১) উপধারা মোতাবেক চেয়ারম্যানের কাছে নোটিশ প্রদানের তারিখ হতে নব্বই দিন অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত কার্যকরী হবে না।

(৪) উপরোক্ত (১) উপধারা অনুযায়ী নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট পক্ষদ্বয়ের মধ্যে পুনর্মিলন ঘটানোর উদ্দেশ্যে একটি সালিশী পরিষদ গঠন করবেন এবং উক্ত সালিসী পরিষদ এই জাতীয় পুনর্মিলনের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

(৫) তালাক ঘোষণার সময় স্ত্রী গর্ভবতী থাকলে, (৩) উপধারায় বর্নিত সময়কালে অথবা গর্ভাবস্থা, যেটি পরে শেষ হয়, অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত তালাক বলবত হবে না।

(৬) অত্র ধারা অনুযায়ী  তালাক দ্বারা যে স্ত্রীর বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটেছে সেই স্ত্রী, এই জাতীয় তালাক তিনবার এইভাবে কার্যকরী না হলে, কোন তৃতীয় ব্যক্তিকে বিবাহ না করে পুনরায় একই স্বামীকে বিবাহ করতে পারবে।

 

৮৷ তালাক ছাড়া অন্যভাবে বিবাহ-বিচ্ছেদ (Dissolution of marriage otherwise than by talaq):

যেক্ষেত্রে তালাক দেয়ার অধিকার যথাযথভাবে স্ত্রীকে অর্পণ করা হয়েছে এবং স্ত্রী সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে ইচ্ছুক বা স্ত্রী তালাক ব্যতীত অন্য কোন উপায়ে বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটাতে চাহে, সেক্ষেত্রে ৭ ধারার বিধানাবলী প্রয়োজনীয় পরিবর্তনসহ যথাসম্ভব প্রযোজ্য হবে।

 

৯৷ ভরণ-পোষণ (Maintenance):

(১) কোন স্বামী তার স্ত্রীকে পর্যাপ্ত ভরণ-পোষণ বা খোরপোষ দানে ব্যর্থ হলে বা একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে তাহাদিগকে সমভাবে খোরপোষ না দিলে, স্ত্রী বা স্ত্রীগণ কেহ, অন্য কোন আইনানুগ প্রতিকার প্রার্থনা ছাড়াও চেয়ারম্যানের নিকট দরখাস্ত করতে পারেন। এইক্ষেত্রে চেয়ারম্যান বিষয়টির নিষ্পত্তির জন্য সালিশী পরিষদ গঠন করবেন এবং ঐ পরিষদ স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে ভরণ-পোষণ বাবদ প্রদানের জন্য টাকার পরিমাণ নির্দিষ্ট করে সার্টিফিকেট জারী (ইস্যু) করতে পারবেন।

(২) কোন স্বামী বা স্ত্রী নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে এবং নির্দিষ্ট ফি প্রদান পূর্বক ঐ ইস্যুকৃত সার্টিফিকেট খানা পুর্নবিবেচনা জন্য সংশ্লিষ্ট মুন্সেফের নিকট আবেদন করতে পারবেন এবং তার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে এবং কোন আদালতে এই সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না।

(৩) উপরের (১) অথবা (২) উপ-ধারা মোতাবেক দেয় কোন টাকা যথাসময়ে বা সময়মত পরিশোধ করা না হলে বকেয়া ভূমি রাজস্ব হিসাবে আদায় করা চলবে।

 

১০৷ দেনমোহর (Dower):

নিকাহনামা বা বিবাহের চুক্তিতে দেনমোহর পরিশোধের পদ্ধতি নির্দিষ্টভাবে উল্লিখিত না থাকলে, দেনমোহরের সমগ্র অর্থ চাহিবামাত্র পরিশোধযোগ্য (দেয়) বলে ধরে নিতে হবে।

 

১১৷ বিধিমালা প্রণয়নের ক্ষমতা (Power to make rules):

(১) এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য কার্যে পরিণত করার জন্য সরকার বিধিমালা (নিয়মকানুন) প্রণয়ন করতে পারবেন।

(২) এই ধারায় বিধিমালা প্রণয়নের সময় সরকার এইরূপ বিধান রাখতে পারেন যে, বিধিমালার কোনটি   ভঙ্গের জন্য এক মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা পাচশত টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় প্রকার দণ্ড হতে পারে।

(৩) অত্র ধারা অনুসারে প্রণীত বিধিমালা সরকারী গেজেটে প্রকাশিত হবে এবং অতঃপর তা এই অধ্যাদেশে বিধিবদ্ধ হয়েছে বলে গণ্য হবে।

 

১১ ক৷ বিচারের স্থান (Place of trial):

বর্তমানে প্রচলিত অন্য যে কোন আইনে যাই থাকুক না কেন, এই অধ্যাদেশের অধীনে কোন অপরাধের বিচার হবে সেই আদালতে যে আদালতের স্থানীয় সীমারেখার মধ্যে-

(ক) অপরাধটি সংঘটিত হয়েছে; অথবা

(খ) অভিযোগকারী (বাদী) অথবা আসামী (বিবাদী) বসবাস করেন অথবা সর্বশেষ বসবাস করছিল।

 

১২৷ ১৯২৯ সনের বাল্য বিবাহ নিরোধ আইনের সংশোধন (Amendmeent of the Dissolution of Muslim Marriage Act, ১৯২৯):

১ঌ২ঌ সনের বাল্য বিবাহ নিরোধ আইনের -

(১) ২ ধারায় -

(ক) দফা (ক) তে 'চৌদ্দ' শব্দটির স্থলে 'ষোল' শব্দটি বসবে;

(খ) (গ) দফায় 'এবং' শব্দটি বাদ যাবে; এবং

(গ) (ঘ) দফার শেষের দিকে দাড়ির পরিবর্তে কমা বসবে এবং এরপর নিম্নলিখিত নুতন দফা (ঙ), (চ) এবং (ছ) যোগ হবে৷ যথা-

(ঙ) 'মিউনিসিপ্যাল করর্পোরেশন' বলতে ১৯৮২ সালের চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন অধ্যাদেশ (১৯৮২ সনের ৩৫নং অধ্যাদেশ) অথবা ১৯৮৩ সনের ঢাকা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন অধ্যাদেশ). (১৯৮৩ সনের ৪০ নং অধ্যাদেশ) বা ১৯৬৮৪ সালের খুলনা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন অধ্যাদেশ (১৯৮৪ সনের ৭২ নং অধ্যাদেশ)-এর অধীনে গঠিত মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনকে বুঝাবে যার এখতিয়ারের মধ্যে কোন বাল্য-বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়েছে বা হওয়ার উপক্রম হয়েছে;

(চ) 'পৌরসভা' বলতে ১৯৭৭ সনের পৌরসভা অধ্যাদেশের (১৯৭৭ সনের ২৬নং অধ্যাদেশ) অধীনে গঠিত পৌরসভাবে বুঝাবে, যাহার এখতিয়ারের মধ্যে কোন বাল্যবিবাহ হয়েছে বা হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

(ছ) 'ইউনিয়ন পরিষদ' বলতে ১৯৮৩ সনের স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) অধ্যাদেশ (১৯৮৩ সনের ৫১ নং অধ্যাদেশ) অনুসারে ইউনিয়ন পরিষদ, যা এখতিয়ারে মধ্যে কোন বাল্য বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়েছে বা হওয়ার উপক্রম হয়েছ।

(২) ৩ ধারাটি বাদ যাবে।

(৩) ৪ ধারায় 'একুশ' শব্দের পরিবর্তে 'আঠার' শব্দটি বসবে।

(৪) ৯ ধারায় …'অত্র আইনানুসারে'  শব্দগুলির পর 'ইউনিয়ন পরিষদ' অথবা সংশ্লিষ্ট এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা না থাকলে সরকার কর্তৃক উক্ত বিষয়ে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের অভিযোগ ব্যতীত কোন অবস্থায় এইরূপ মামলা বিচারার্থ গ্রহণ করা যাবে না৷ শব্দগুলি যুক্ত হবে; এবং

(৫) ১১ ধারাটি বাদ যাবে ।

 

১৩ ৷ ১৯৩৯ সনের মুসলিম বিবাহ-বিচ্ছেদ আইনের ( ১৯৩৯ সালের ৮ নং আইনের) সংশোধন:

১৯৩৯ সনের মুসলিম বিবাহ-বিচ্ছেদ আইনের (১৯৩৯ সালের ৮ নং আইন) এর ২ ধারায়-

(ক) দফা (ii)-এর পর নিম্নলিখিত নুতন উপ-দফা ( ii-ক) যুক্ত হবে, যথা:

(ii-ক) যেহেতু স্বামী ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ব্যবস্থাবলী লংঘন করা একজন অতিরিক্ত স্ত্রী গ্রহণ করেছে; এবং

(খ) (vii) দফায় 'পনের'  শব্দটির পরিবর্তে 'ষোল' শব্দটি বসবে।
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 05:57:26 AM
মুসলিম পারিবারিক আইন বিধিমালা, ১৯৬১

------------------------------------------------------------------

 

১৯৬১  সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ১১ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার নিম্নলিখিত বিধিমালা প্রণয়ন করিলেন; যথা

 

বিধি -১ :  অত্র বিধিমালা ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন বিধিমালা নামে অভিহিত হইবে ।

 

বিধি -২ : অত্র বিধিমালার বিষয়ে অথবা প্রসঙ্গে বিপরীত কোনো কিছু বর্তমানে থাকিলে-

(ক) ''চেয়ারম্যান'' বলিতে অধ্যাদেশে যেমন সংজ্ঞা প্রদান করা হইয়াছে সেইরূপ একই অর্থ বুঝাইবে;

(খ) ''ফরম'' বলিতে অত্র বিধিমালার সহিত সংযুক্ত ফরমকে বুঝাইবে;

(গ) ''স্থানীয় এলাকা'' বলিতে কোনো পৌর কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদের আওতাধীন এলাকাকে বুঝাইবে;

(ঘ) ''মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন'' বলিতে অধ্যাদেশে যেমন সংজ্ঞা প্রদান করা হইয়াছে তেমন একই অর্থ বুঝাইবে;

(ঙ) ''অধ্যাদেশ'' বলিতে মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ (১৯৬১ সালের ৮নং আইন)-কে বুঝাইবে;

(চ) ''পৌরসভা'' বলিতে অধ্যাদেশে যেমন সংজ্ঞা প্রদান করা হইয়াছে তেমন একই অর্থ বুঝাইবে;

(ছ) ''ধারা'' বলিতে অধ্যাদেশে কোন ধারাকে বুঝাইবে; এবং

(জ) ''ইউনিয়ন পরিষদ'' বলিতে অধ্যাদেশে যেমন সংজ্ঞা প্রদান করা হইয়াছে সেইরূপ একই অর্থ বুঝাইবে ।

 

বিধি-৩ : ধারার গ, ঘ অথবা চ অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্যে কথিত বিষয়ে যে পৌর কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদের আওতা বা এখতিয়ার থাকিবে তাহা নিম্নবর্ণিত রূপ হইবে :

(ক) ৬ ধারার ২ উপধারার দরখাস্তের বেলায় ইহা সেই পৌর কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদ হইবে যেখানে বর্তমান স্ত্রী অথবা যেক্ষেত্রে একাধিক স্ত্রী বর্তমান, সেইক্ষেত্রে যে স্ত্রীর সহিত স্বামী সর্বশেষে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হইয়াছিল সেই স্ত্রী স্বামীর দরখাস্ত দাখিলের সময় বসবাস করিতেছে ।

(খ) ৭ ধারার ১ উপধারার নোটিশের বেলায় ইহা সেই পৌর কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদ হইবে যেখানে যেই স্ত্রী সম্বন্ধে তালাক উচ্চারণ করা হইয়াছে সেই স্ত্রী তালাক উচ্চারণ করার সময় বসবাস করিতেছিল এবং

(গ) ৯ ধারার দরখাস্তের বেলায় ইহা সেই পৌর কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদ হইবে যেখানে স্ত্রী তাহার দরখাস্ত দাখিলের সময় বসবাস করিতেছে ও যদি একাধিক স্ত্রী উক্ত ধারায় দরখাস্ত দেয় তবে উহা সেই পৌর কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদ হইবে যেখানে সর্বপ্রথম দরখাস্তকারিণী স্ত্রী তাহার দরখাস্ত দাখিলের সময় বসবাস করিতেছে ।

 

বিধি-৪ : (১) যদি কোনো পৌর কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরূপে কোনো অমুসলিম, নির্বাচিত হয় তবে সেইক্ষেত্রে উক্ত কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদ যত শীঘ্র সম্ভব হইতে পারে তত শীঘ্র অধ্যাদেশের কার্যকারিতার্থে ইহার কোনো মুসলিম সদস্যকে চেয়ারম্যানরূপে নির্বাচিত করিবেন ।

(২) সালিশী পরিষদের কার্যক্রমে কোনো পক্ষ চেয়ারম্যানকে অপর পক্ষের অনুকূলে স্বার্থান্বিত বলিয়া মনে করিলে অন্য কাহাকেও চেয়ারম্যান নিযুক্তির নিমিত্ত লিখিতভাবে রেকর্ডতব্য হেতুসমূহসহ যেমন নির্ধারিত হইতে পারে তেমন ব্যক্তির নিকট দরখাস্ত করিতে পারেন যিনি যথাযথ মনে করিলে উক্ত কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদের অপর কোনো সদস্যকে অধ্যাদেশের কার্যকারিতার্থে হিসাবে নিযুক্ত করিতে পারে এবং এইরূপ নির্ধারিত ব্যক্তি উক্ত দরখাস্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সালিশী পরিষদের কার্যক্রম স্থগিত রাখিবেন ।

 

বিধি-৫ : (১) সালিশী পরিষদে আনীত কার্যব্যবস্থা চেয়ারম্যান যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরিচালনা করিবেন ।

(২) কোনো ব্যক্তির প্রতিনিধি মনোনয়নে ব্যর্থতার দরুন অথবা অন্য কোনোভাবে সালিশী পরিষদে কোনো পদ খালি হওয়ার কারণে এইরূপ কার্যক্রম ত্রুটিযুক্ত হইবে না ।

(৩) যদি মনোনয়ন প্রদানে ব্যর্থতার কারণ ব্যতীত অন্য কোনোভাবে পদশূন্য হয় তবে সেক্ষেত্রে চেয়ারম্যান নুতন মনোনয়ন দাবি করিবেন ।

(৪) সালিশী পরিষদের কার্যক্রমের কোনো পক্ষই উক্ত পরিষদের সদস্য হইতে পারিবে না ।

(৫) সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সালিশী পরিষদের সকল সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে এবং যদি কোনো সিদ্ধান্তই সালিশী পরিষদের সিদ্ধান্ত হিসাবে গণ্য হইবে ।

 

বিধি-৬ : (১) ৬ ধারার ২ উপধারায় অথবা ৯ ধারার ১ উপধারায় কোনো দরখাস্ত বা ৭ ধারার ১ উপধারায় কোনো নোটিশ প্রাপ্তির সাত দিনের ভিতর চেয়ারম্যান লিখিত আদেশ মাধ্যমে পক্ষগণের প্রত্যেককে তাহার প্রতিনিধি মনোনয়ন করিতে নির্দেশ দিবেন ও এইরূপ প্রত্যেক পক্ষ উক্ত আদেশ প্রাপ্তির সাত দিনের ভিতর লিখিতভাবে তাহার একজন প্রতিনিধি মনোনয়ন করিবে ও চেয়ারম্যানের নিকট মনোনয়ন দাখিল করিবে বা রেজিস্ট্রি ডাকযোগে চেয়ারম্যানকে ইহা পাঠাইবে ।

(২) যদি কোনো পক্ষের মনোনীত প্রতিনিধি মৃত্যুমুখে পতিত হয় বা অসুস্থতা বা অন্যবিধ কারণে সালিশী পরিষদের মিটিং-এ অনুপস্থিত থাকেন বা সংশ্লিষ্ট পক্ষের অনাস্থাভাজন হন তবে এইরূপক্ষেত্রে পক্ষটি চেয়ারম্যানের লিখিত পূর্বানুমতিক্রমে মনোনয়নটি প্রত্যাহার করিতে পারেও চেয়ারম্যান যে সময় মঞ্জুর করিতে পারেন সেই সময়ের ভিতর নূতন মনোনয়ন প্রদান করিতে হইবে ।

(৩) যদি ২ উপধারা অনুযায়ী নূতন মনোনয়ন প্রদান করা হয় তবে চেয়ারম্যান লিখিতভাবে রেকর্ডকৃতব্য কারণে ভিন্নরূপ নির্দেশ প্রদান না করিলে সালিশী পরিষদ উহার কার্যক্রম নূতনভাবে শুরু করার প্রয়োজন পড়িবে না ।

 

বিধি  ৭-১৩ ( বাতিল ।)

 

বিধি -১৪ : বহুবিবাহঃ একটি বর্তমান বিবাহ বলবত থাকাকালীন অন্য একটি প্রস্তাবিত বিবাহ ন্যায়সঙ্গত এবং প্রয়োজনীয় কিনা তাহা বিবেচনার সময় সালিশী পরিষদ ইহার সাধারণ ক্ষমতার ক্ষতি না করিয়া অন্যান্যের সহিত নিম্নলিখিত পরিস্থিতিগুলির দিকে নজর রাখিবেন-

কোনো বর্তমান স্ত্রীর বেলায় বন্ধাত্ব দৈহিক দৌর্বল্য, দাম্পত্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে দৈহিক অনুপযুক্ততা, দাম্পত্য জীবন পুনরুদ্ধারের নিমিত্ত একটি ডিক্রি ইচ্ছাকৃতভাবে এড়াইয়া চলা অথবা বর্তমান স্ত্রীর অপ্রকৃতিস্থতা ।

 

বিধি -১৫ : একটি বর্তমান বিবাহ বলবত্‍ থাকাকালীন অন্য একটি বিবাহ চুক্তি করার অনুমতি প্রদানের নিমিত্ত ৬ ধারার ১ উপধারায় কোনো দরখাস্ত লিখিতভাবে করিতে হইবে, ইহাতে বর্তমান স্ত্রী অথবা স্ত্রীগণের সম্মতি নেওয়া হইয়াছে কিনা উহা বর্ণনা করিতে হইবে, যে কারণসমূহের ভিত্তিতে নূতন বিবাহটি ন্যায়সঙ্গত এবং প্রয়োজনীয় বলা হইয়াছে সেইগুলি সংক্ষিপ্তভাবে দরখাস্তে বর্ণনা করিতে হইবে । দরখাস্তকারীর দস্তখত উহাতে থাকিতে হইবে এবং পঁচিশ টাকার ফী তত্সঙ্গে যুক্ত করিতে হইবে ।

 

বিধি -১৬ :রিভিশনঃ (১) ৬ ধারার ৪ উপধারায় প্রদত্ত সালিশী পরিষদের সিদ্ধান্ত বা ৯ ধারার ২ উপধারায় প্রদত্ত কোনো সার্টিফিকেট রিভিশনের নিমিত্ত কোনো দরখাস্ত সিদ্ধান্তটি অথবা সার্টিফিকেট, সে যাহাই হউক প্রদানের ত্রিশ দিনের ভিতর দাখিল করিতে হইবে ও তত্সহ দুই টাকার ফী সংযুক্ত করিতে হইবে ।

(২) দরখাস্তখানা লিখিত হইতে হইবে এবং যে সকল কারণসমূহের ভিত্তিতে সিদ্ধান্তটি অথবা সার্টিফিকেটটির রিভিশন চাওয়া হয় উহা বর্ণনা করিতে হইবে ও ইহাতে দরখাস্তকারীর দস্তখত থাকিতে হইবে ।

 

বিধি -১৭ : গোপন কার্যক্রমঃ চেয়ারম্যান অন্যরূপ নির্দেশ প্রদান না করিলে সালিশী পরিষদের সকল কার্যক্রম গোপনে অনুষ্ঠিত হইবে ।

 

বিধি -(১৮ - ২০ ) বাতিল ।
 

তথ্য সূত্র : জনগূরুত্বপূর্ণ  আইন
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:04:30 AM
মুসলিম পারিবারিক আইন বিধিমালা, ১৯৬১

------------------------------------------------------------------

 

১৯৬১  সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ১১ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার নিম্নলিখিত বিধিমালা প্রণয়ন করিলেন; যথা

 

বিধি -১ :  অত্র বিধিমালা ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন বিধিমালা নামে অভিহিত হইবে ।

 

বিধি -২ : অত্র বিধিমালার বিষয়ে অথবা প্রসঙ্গে বিপরীত কোনো কিছু বর্তমানে থাকিলে-

(ক) ''চেয়ারম্যান'' বলিতে অধ্যাদেশে যেমন সংজ্ঞা প্রদান করা হইয়াছে সেইরূপ একই অর্থ বুঝাইবে;

(খ) ''ফরম'' বলিতে অত্র বিধিমালার সহিত সংযুক্ত ফরমকে বুঝাইবে;

(গ) ''স্থানীয় এলাকা'' বলিতে কোনো পৌর কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদের আওতাধীন এলাকাকে বুঝাইবে;

(ঘ) ''মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন'' বলিতে অধ্যাদেশে যেমন সংজ্ঞা প্রদান করা হইয়াছে তেমন একই অর্থ বুঝাইবে;

(ঙ) ''অধ্যাদেশ'' বলিতে মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ (১৯৬১ সালের ৮নং আইন)-কে বুঝাইবে;

(চ) ''পৌরসভা'' বলিতে অধ্যাদেশে যেমন সংজ্ঞা প্রদান করা হইয়াছে তেমন একই অর্থ বুঝাইবে;

(ছ) ''ধারা'' বলিতে অধ্যাদেশে কোন ধারাকে বুঝাইবে; এবং

(জ) ''ইউনিয়ন পরিষদ'' বলিতে অধ্যাদেশে যেমন সংজ্ঞা প্রদান করা হইয়াছে সেইরূপ একই অর্থ বুঝাইবে ।

 

বিধি-৩ : ধারার গ, ঘ অথবা চ অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্যে কথিত বিষয়ে যে পৌর কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদের আওতা বা এখতিয়ার থাকিবে তাহা নিম্নবর্ণিত রূপ হইবে :

(ক) ৬ ধারার ২ উপধারার দরখাস্তের বেলায় ইহা সেই পৌর কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদ হইবে যেখানে বর্তমান স্ত্রী অথবা যেক্ষেত্রে একাধিক স্ত্রী বর্তমান, সেইক্ষেত্রে যে স্ত্রীর সহিত স্বামী সর্বশেষে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হইয়াছিল সেই স্ত্রী স্বামীর দরখাস্ত দাখিলের সময় বসবাস করিতেছে ।

(খ) ৭ ধারার ১ উপধারার নোটিশের বেলায় ইহা সেই পৌর কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদ হইবে যেখানে যেই স্ত্রী সম্বন্ধে তালাক উচ্চারণ করা হইয়াছে সেই স্ত্রী তালাক উচ্চারণ করার সময় বসবাস করিতেছিল এবং

(গ) ৯ ধারার দরখাস্তের বেলায় ইহা সেই পৌর কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদ হইবে যেখানে স্ত্রী তাহার দরখাস্ত দাখিলের সময় বসবাস করিতেছে ও যদি একাধিক স্ত্রী উক্ত ধারায় দরখাস্ত দেয় তবে উহা সেই পৌর কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদ হইবে যেখানে সর্বপ্রথম দরখাস্তকারিণী স্ত্রী তাহার দরখাস্ত দাখিলের সময় বসবাস করিতেছে ।

 

বিধি-৪ : (১) যদি কোনো পৌর কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরূপে কোনো অমুসলিম, নির্বাচিত হয় তবে সেইক্ষেত্রে উক্ত কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদ যত শীঘ্র সম্ভব হইতে পারে তত শীঘ্র অধ্যাদেশের কার্যকারিতার্থে ইহার কোনো মুসলিম সদস্যকে চেয়ারম্যানরূপে নির্বাচিত করিবেন ।

(২) সালিশী পরিষদের কার্যক্রমে কোনো পক্ষ চেয়ারম্যানকে অপর পক্ষের অনুকূলে স্বার্থান্বিত বলিয়া মনে করিলে অন্য কাহাকেও চেয়ারম্যান নিযুক্তির নিমিত্ত লিখিতভাবে রেকর্ডতব্য হেতুসমূহসহ যেমন নির্ধারিত হইতে পারে তেমন ব্যক্তির নিকট দরখাস্ত করিতে পারেন যিনি যথাযথ মনে করিলে উক্ত কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদের অপর কোনো সদস্যকে অধ্যাদেশের কার্যকারিতার্থে হিসাবে নিযুক্ত করিতে পারে এবং এইরূপ নির্ধারিত ব্যক্তি উক্ত দরখাস্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সালিশী পরিষদের কার্যক্রম স্থগিত রাখিবেন ।

 

বিধি-৫ : (১) সালিশী পরিষদে আনীত কার্যব্যবস্থা চেয়ারম্যান যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরিচালনা করিবেন ।

(২) কোনো ব্যক্তির প্রতিনিধি মনোনয়নে ব্যর্থতার দরুন অথবা অন্য কোনোভাবে সালিশী পরিষদে কোনো পদ খালি হওয়ার কারণে এইরূপ কার্যক্রম ত্রুটিযুক্ত হইবে না ।

(৩) যদি মনোনয়ন প্রদানে ব্যর্থতার কারণ ব্যতীত অন্য কোনোভাবে পদশূন্য হয় তবে সেক্ষেত্রে চেয়ারম্যান নুতন মনোনয়ন দাবি করিবেন ।

(৪) সালিশী পরিষদের কার্যক্রমের কোনো পক্ষই উক্ত পরিষদের সদস্য হইতে পারিবে না ।

(৫) সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সালিশী পরিষদের সকল সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে এবং যদি কোনো সিদ্ধান্তই সালিশী পরিষদের সিদ্ধান্ত হিসাবে গণ্য হইবে ।

 

বিধি-৬ : (১) ৬ ধারার ২ উপধারায় অথবা ৯ ধারার ১ উপধারায় কোনো দরখাস্ত বা ৭ ধারার ১ উপধারায় কোনো নোটিশ প্রাপ্তির সাত দিনের ভিতর চেয়ারম্যান লিখিত আদেশ মাধ্যমে পক্ষগণের প্রত্যেককে তাহার প্রতিনিধি মনোনয়ন করিতে নির্দেশ দিবেন ও এইরূপ প্রত্যেক পক্ষ উক্ত আদেশ প্রাপ্তির সাত দিনের ভিতর লিখিতভাবে তাহার একজন প্রতিনিধি মনোনয়ন করিবে ও চেয়ারম্যানের নিকট মনোনয়ন দাখিল করিবে বা রেজিস্ট্রি ডাকযোগে চেয়ারম্যানকে ইহা পাঠাইবে ।

(২) যদি কোনো পক্ষের মনোনীত প্রতিনিধি মৃত্যুমুখে পতিত হয় বা অসুস্থতা বা অন্যবিধ কারণে সালিশী পরিষদের মিটিং-এ অনুপস্থিত থাকেন বা সংশ্লিষ্ট পক্ষের অনাস্থাভাজন হন তবে এইরূপক্ষেত্রে পক্ষটি চেয়ারম্যানের লিখিত পূর্বানুমতিক্রমে মনোনয়নটি প্রত্যাহার করিতে পারেও চেয়ারম্যান যে সময় মঞ্জুর করিতে পারেন সেই সময়ের ভিতর নূতন মনোনয়ন প্রদান করিতে হইবে ।

(৩) যদি ২ উপধারা অনুযায়ী নূতন মনোনয়ন প্রদান করা হয় তবে চেয়ারম্যান লিখিতভাবে রেকর্ডকৃতব্য কারণে ভিন্নরূপ নির্দেশ প্রদান না করিলে সালিশী পরিষদ উহার কার্যক্রম নূতনভাবে শুরু করার প্রয়োজন পড়িবে না ।

 

বিধি  ৭-১৩ ( বাতিল ।)

 

বিধি -১৪ : বহুবিবাহঃ একটি বর্তমান বিবাহ বলবত থাকাকালীন অন্য একটি প্রস্তাবিত বিবাহ ন্যায়সঙ্গত এবং প্রয়োজনীয় কিনা তাহা বিবেচনার সময় সালিশী পরিষদ ইহার সাধারণ ক্ষমতার ক্ষতি না করিয়া অন্যান্যের সহিত নিম্নলিখিত পরিস্থিতিগুলির দিকে নজর রাখিবেন-

কোনো বর্তমান স্ত্রীর বেলায় বন্ধাত্ব দৈহিক দৌর্বল্য, দাম্পত্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে দৈহিক অনুপযুক্ততা, দাম্পত্য জীবন পুনরুদ্ধারের নিমিত্ত একটি ডিক্রি ইচ্ছাকৃতভাবে এড়াইয়া চলা অথবা বর্তমান স্ত্রীর অপ্রকৃতিস্থতা ।

 

বিধি -১৫ : একটি বর্তমান বিবাহ বলবত্‍ থাকাকালীন অন্য একটি বিবাহ চুক্তি করার অনুমতি প্রদানের নিমিত্ত ৬ ধারার ১ উপধারায় কোনো দরখাস্ত লিখিতভাবে করিতে হইবে, ইহাতে বর্তমান স্ত্রী অথবা স্ত্রীগণের সম্মতি নেওয়া হইয়াছে কিনা উহা বর্ণনা করিতে হইবে, যে কারণসমূহের ভিত্তিতে নূতন বিবাহটি ন্যায়সঙ্গত এবং প্রয়োজনীয় বলা হইয়াছে সেইগুলি সংক্ষিপ্তভাবে দরখাস্তে বর্ণনা করিতে হইবে । দরখাস্তকারীর দস্তখত উহাতে থাকিতে হইবে এবং পঁচিশ টাকার ফী তত্সঙ্গে যুক্ত করিতে হইবে ।

 

বিধি -১৬ :রিভিশনঃ (১) ৬ ধারার ৪ উপধারায় প্রদত্ত সালিশী পরিষদের সিদ্ধান্ত বা ৯ ধারার ২ উপধারায় প্রদত্ত কোনো সার্টিফিকেট রিভিশনের নিমিত্ত কোনো দরখাস্ত সিদ্ধান্তটি অথবা সার্টিফিকেট, সে যাহাই হউক প্রদানের ত্রিশ দিনের ভিতর দাখিল করিতে হইবে ও তত্সহ দুই টাকার ফী সংযুক্ত করিতে হইবে ।

(২) দরখাস্তখানা লিখিত হইতে হইবে এবং যে সকল কারণসমূহের ভিত্তিতে সিদ্ধান্তটি অথবা সার্টিফিকেটটির রিভিশন চাওয়া হয় উহা বর্ণনা করিতে হইবে ও ইহাতে দরখাস্তকারীর দস্তখত থাকিতে হইবে ।

 

বিধি -১৭ : গোপন কার্যক্রমঃ চেয়ারম্যান অন্যরূপ নির্দেশ প্রদান না করিলে সালিশী পরিষদের সকল কার্যক্রম গোপনে অনুষ্ঠিত হইবে ।

 

বিধি -(১৮ - ২০ ) বাতিল ।
 

তথ্য সূত্র : জনগূরুত্বপূর্ণ  আইন
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:05:30 AM
পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ, ১৯৮৫

[১৯৮৫ সালের ১৮ নং আইন]

পারিবারিক আদালত গঠনের ব্যবস্থাকল্পে প্রণীত অধ্যাদেশ, যেহেতু পারিবারিক আদালত স্থাপন এবং এতদসংশ্লিষ্ট বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা সমীচীন; সেহেতু ১৯৮২ সনের ২৪শে মার্চের ফরমান অনুসারে ও এই সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে সক্ষমকারী সমস্ত ক্ষমতা প্রয়োগক্রমে তিনি নিম্নোক্ত অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করিতে মর্জি করিয়াছেন:

ধারা

১৷ সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, আওতা এবং প্রবর্তন:

 (১) অত্র অধ্যাদেশ "পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ, ১৯৮৫" নামে অভিহিত হইবে ৷

 (২) ইহা রাঙ্গামাটি, বান্দরবান এবং খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাসমূহ ব্যতীত সমস্ত বাংলাদেশে প্রযোজ্য হইবে ৷

 (৩) সরকার সরকারী গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে যে তারিখ ধার্য্য করিবে সেই তারিখ হইতে ইহা কার্যকর হইবে ৷

ধারা

২৷ সংজ্ঞা সমূহ:

 (১) বিষয় অথবা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছুর অবর্তমানে, অত্র অধ্যাদেশে -

(ক) 'বিধি' (Code) বলিতে ১৯০৮ সনের দেওয়ানী কার্যবিধি (১৯০৮ সনের ৫ নং আইন)-কে   বুঝাইবে৷

(খ) 'পারিবারিক আদালত' বলিতে অত্র অধ্যাদেশের অধীনে স্থাপিত পারিবারিক আদালতকে

(গ) 'নির্ধারিত' বলিতে অত্র অধ্যাদেশের অধীনে প্রণীত বিধিসমূহ কর্তৃক নির্ধারিত বুঝাইবে৷

 (২) সংজ্ঞায়িত নহে অথচ অত্র অধ্যাদেশে ব্যবহৃত এমন শব্দ এবং শব্দসমষ্টি যথাক্রমে বিধিতে উল্লেখিত শব্দ এবং শব্দসমষ্টির অনুরূপ অর্থবহ হইবে৷

ধারা

৩৷ অন্যান্য আইনের উপর অত্র অধ্যাদেশের প্রাধান্য (কার্যকারিতা):

বর্তমান বলবত অন্য কোন আইনে যাহাই থাকুক না কেন, অত্র অধ্যাদেশের বিধানসমূহ কার্যকর হইবে৷

ধারা

৪৷ পারিবারিক আদালত স্থাপন:

 (১) যতগুলো সহকারী জজ আদালত আছে ততগুলো পারিবারিক আদালত থাকিবে৷

 (২) অত্র অধ্যাদেশের উদ্দেশ্যসমূহ সাধনার্থে সকল সহকারী জজ আদালত পারিবারিক আদালত হিসাবে গণ্য হইবে৷

সকল সহকারী জজ পারিবারিক আদালতের বিচারক হইবেন৷

ধারা

৫৷ পারিবারিক আদালতের এখতিয়ার:

১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ (১৯৬১ সনের ৮নং অধ্যাদেশ)- এর বিধানাবলী সাপেক্ষে কোন পারিবারিক আদালতের পাঁচটি বিষয়াদির সকল অথবা যেকোনটির সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়ে যেকোন মামলা গ্রহণ, বিচার এবং নিষ্পত্তি করার একক এখতিয়ার থাকবে ৷ বিষয়গুলো হলো:

(ক) বিবাহবিচ্ছেদ, (খ) দাম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধার, (গ) মোহরানা, (ঘ) ভরণপোষণ ও (ঙ) সন্তান-সন্ততিগণের অভিভাবকত্ব ও তত্ত্বাবধান ৷

ধারা

৬৷ মামলা দায়েরকরণ:

(১) এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী প্রত্যেক মোকদ্দমা সেই পারিবারিক আদালত আরজি উপস্থাপনের মাধ্যমে দায়ের করিতে হইবে যাহার স্থানীয় এখতিয়ারের মধ্যে  -

    (ক) নালিশের কারণটি সম্পূর্ণ অথবা আংশিকভাবে উদ্ভূত হইয়াছে; অথবা

    (খ) পক্ষগণ বসবাস করেন অথবা সর্বশেষ একসঙ্গে বসবাস করিয়াছিলেন৷

শর্ত থাকে যে, বিবাহবিচ্ছেদ, দেনমোহর অথবা ভরণপোষণের নিমিত্ত মামলার ক্ষেত্রে যে এলাকায় স্ত্রী সাধারণতঃ বসবাস করিতেছে সেই এলাকার আদালতেরও এখতিয়ার থাকিবে ৷

(২) যেক্ষেত্রে এখতিয়ারবিহীন কোন আদালত আরজি দাখিল করা হয় সেইক্ষেত্রে -

   (ক) আরজিটি যে আদালতে দাখিল করা উচিত ছিল সেই আদালতে উপস্থাপনের জন্য ফেরত দেওয়া হইবে;

  (খ) আরজি ফেরতদানকারী আদালত, তত্‍বরাবরে আরজি উপস্থাপনের ও ইহার প্রত্যর্পণের তারিখ, আরজি দাখিলকারী পক্ষের নাম ও প্রত্যর্পণের কারণসমূহের সংক্ষিপ্ত বিবরণ আরজির উপর লিপিবদ্ধ করিবেন৷

(৩)  আরজিতে বিরোধ সম্বন্ধীয় প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্যাবলী অন্তর্ভুক্ত থাকিবে ও একটি তফসিল অবশ্যই আরজির অন্তর্ভুক্ত থাকিবে যাহাতে আরজির সমর্থনে যে সকল সাক্ষীকে ডাকিতে ইচ্ছুক তাহাদের নাম ও ঠিকানাসমূহও থাকিবে৷

শর্ত থাকে যে, বাদী আদালতের অনুমতিক্রমে পরবর্তী যেকোন স্তরে যেকোন ডাকিতে পারে - যদি আদালত ন্যায়বিচারের স্বার্থে উক্তরূপ সাক্ষ্য গ্রহণ সমীচীন মনে করেন ৷

(৪) আরজিতে নিম্নোক্ত বিবরণসমূহ অন্তর্ভুক্ত থাকিবে; যথা:

    (ক) যেই আদালতে মামলা দায়ের করা হইল উহার নাম;

    (খ) বাদীর নাম, বর্ণনা এবং বাসস্থান;

    (গ) বিবাদীর নাম, বর্ণনা এবং বাসস্থান;

    (ঘ) যেক্ষেত্রে বাদী অথবা বিবাধী নাবালক কিংবা অপ্রকৃতিস্থ ব্যক্তি হয় সেইক্ষেত্রে উক্ত মর্মে বর্ণনা

   (ঙ) নালিশের কারণঘটিত তথ্যসমূহ ও যেই স্থানে এবং যেই তারিখ নালিশের কারণের উদ্ভব হইয়াছে সেই স্থান এবং তারিখ;

   (চ) আদালতের এখতিয়ার প্রদর্শনকারী তথ্যসমূহ;

   (ছ) বাদী কর্তৃক প্রার্থিত প্রতিকার ৷

(৫) বাদী তাহার দাবির সমর্থনে সাক্ষ্য হিসাবে তাহার দখলাধীন অথবা ক্ষমতা কোন দলিলের উপর নির্ভর করিলে তিনি আরজি উপস্থাপনকালে আদালত উহা পেশ করিবেন ও একই সঙ্গে উক্ত দলিল অথবা উহার অবিকল বা ফটোকৃত প্রতিলিপি আরজির সহিত নথিভুক্তির জন্য একটি লিস্টভুক্ত করিবেন ৷

(৬) যেক্ষেত্রে বাদী তাহার দাবির সমর্থনে সাক্ষ্য হিসাবে তাহার স্বীয় দখল বা আয়ত্তাধীন এমন কোন দলিলের উপর নির্ভর করেন সেইক্ষেত্রে তিনি উক্ত দলিলটি আরজির সহিত সংযোজন করণার্থে একটি ফিরিস্তিভুক্ত করতঃ সংশ্লিষ্ট দলিলটি কাহার দখলে অথবা আয়ত্তাধীনে রহিয়াছে তাহা বর্ণনা করিবেন ৷

(৭) মামলার বিবাদীগণের উপর জারি করার নিমিত্ত বিবাদীগণের সংখ্যার দ্বিগুণ সংখ্যক তফসিলসহ আরজির সত্যায়িত প্রতিলিপি এবং ৫ ও ৬ নং উপধারায় বর্ণিত দলিলের তালিকা দ্বিগুণ পরিমাণ আরজির সহিত থাকিবে ৷

(৮) নিম্নলিখিত কারণে আরজি অগ্রাহ্য বা নাকচ হইবে -

 (ক) ৭ উপধারা অনুযায়ী যেক্ষেত্রে আরজির সঙ্গে তফসিলও দেওয়া হয় ;

 (খ) যেক্ষেত্রে ৭(৫) ধারা অনুযায়ী সমন জারির খরচ এবং নোটিসের জন্য পোস্টাল খরচ পরিশোধ না   করা হয়;   (গ) যেক্ষেত্রে আরজি উপস্থাপনের সময় ২২ ধারা অনুযায়ী ফী পরিশোধ না করা হয়৷

(৯) যেক্ষেত্রে আরজি উপস্থাপনের সময় বাদী আদালতে কোন দলিল দাখিল করা উচিত অথবা উহা আরজির সহিত সংযুক্ত করার জন্য কোন লিস্টভুক্ত করা উচিত এবং যদি উহা উক্তরূপে দাখিল বা লিস্টভুক্ত না করা হয় তবে মামলার শুনানির সময় আদালতের অনুমতি ব্যতীত উহা আর তাহার পক্ষে সাক্ষ্য হিসাবে ব্যবহার করা যাইবে না৷

 শর্ত থাকে যে, বিশেষ অবস্থা ব্যতীত আদালত ঐরূপ অনুমতি প্রদান করিবেন না ৷

ধারা

৭৷ সমন ও নোটিসসমূহ ইস্যুকরণ:

(১) পারিবারিক আদালতে আরজি উপস্থাপন করা হইলে পর আদালত -

(ক) সাধারণভাবে অনধিক ত্রিশ দিনের মধ্যে বিবাদীর হাজির হওয়ার নিমিত্ত একটি তারিখ ধার্য্য করিবেন ;

(খ) বিবাদীর প্রতি নির্ধারিত তারিখে হাজির হওয়ার এবং উপস্থাপিত দাবির জবাব দানের নিমিত্ত সমন জারি করিবেন ;

(গ) বিবাদীর নিকট প্রাপ্তি স্বীকারপত্রসহ রেজিষ্ট্রি ডাকযোগে মামলার নোটিস প্রেরণ করিবেন ৷

 (২) (১) ১নং উপধারা অনুযায়ী ইস্যুকৃত প্রত্যেকটি সমন ও প্রেরিত প্রত্যেকটি নোটিসের সহিত আরজির নকল এবং ৬(৫) ও ৬(৬) ধারায় বর্ণিত দলিলসমূহের তালিকাসমূহ সংযোজিত থাকিবে৷

(৩) ১নং উপধারার খ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রেরিত সমন দেওয়ানী কার্যবিধি আইনের ৫নং আদেশের ৯, ১০, ১১, ১৬, ১৭, ১৮, ১৯-ক, ২০, ২১, ২৩, ২৪, ২৬, ২৭, ২৮ এবং ২৯ নং রুলসমূহে বর্ণিত উপায়ে জারি করা হইবে ; ও অনুরূপে জারিকৃত সমন বিবাদীর উপর যথোচিত জারি বলিয়া গণ্য হইবে৷

 (৪) ১ নং উপধারার গ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রেরিত নোটিস বিবাদীর উপর যথোচিতভাবে জারিকৃত বলিয়া গণ্য হইবে যখন বিবাদী কর্তৃক স্বাক্ষরিত বলিয়া প্রকাশকারী প্রাপ্তি স্বীকার পত্রটি আদালত গৃহীত হয় বা আদালত নোটিস বহনকারী ডাকটি ডাক কর্মচারীর এই মমেᐂ লিখিত মন্তব্যসহ ফেরত পায় যে, বিবাদীর গ্রহণাথেᐂ প্রেরিত বহনকারী ডাকটি তত্‍বরাবরে অপᐂণ করিলে পর তিনি উহা গ্রহণে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করিয়াছেন৷

শর্ত থাকে যে, যেক্ষেত্রে নোটিসটি সঠিক ঠিকানাযুক্ত, ডাকমাশুল পরিশোধিত এবং প্রাপ্তি স্বীকারপত্রসহ রেজিষ্ট্রি ডাকযোগে যথোচিতভাবে প্রেরিত হইয়াছিল সেক্ষেত্রে নোটিস প্রেরণের তারিখ হইতে ত্রিশদিন অতিবাহিত হইলে পর প্রাপ্ত স্বীকারপত্রটি  হারাইলে বিপথে চালিত হইলে বা অন্যবিধ যেকোন কারণে উক্ত সময় মধ্যে আদালত ফেরত না আসিলেও উহা যথোচিতভাবে জারি হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে৷

(৫) ১ নং  উপধারার খ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রেরিত সমন জারি খরচ দেওয়ানী কার্যবিধি আইনে এইরূপ সমনের জারি খরচের সমান হইবে ও ১নং উপধারার গ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রেরিত নোটিসের জন্য ডাক খরচ আরজি দাখিলকালে বাদী কর্তৃক প্রদত্ত হইবে৷

 সমন এবং নোটিস জারির উপায়: ইহা দুইভাবে জারি করা যাইবে:

(ক) বিবাদীর উপর ব্যক্তিগতভাবে সমন জারি এবং (খ) ডাকযোগে পত্র প্রেরণ করিয়া নোটিস জারি৷

(ক) বিবাদীর উপর ব্যক্তিগতভাবে সমন জারি : ব্যক্তিগতভাবে সমন জারির পদ্ধতি দেওয়ানী কার্যবিধি আইনের ৫নং আদেশের ৯-১৯ নিয়মে বর্ণিত আছে ৷ বিবাদী আদালতের এখতিয়ারভুক্ত এলাকার মধ্যে বসবাস করিলে অথবা বিবাদী পক্ষে উক্ত এলাকায় সমন গ্রহণ করিবার মত ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন প্রতিনিধি থাকিলে আদালতের পদাতিক বাদীর খরচে তাহার উপর সমন জারি করিতে হইবে ৷ শুধু তাহাই নহে, একাধিক বিবাদী থাকিলে প্রত্যেকের উপর সমন জারি করিতে হইবে৷ সংশ্লিষ্ট মামলার বিবাদীকে না পাওয়া গেলেও তাহার পক্ষে সমন গ্রহণের মত ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন প্রতিনিধি না থাকিলে বিবাদীর সহিত বসবাসকারী এক পরিবারভুক্ত যেকোন সাবালক পুরুষ ব্যক্তির উপর বিবাদীর পক্ষে সমন জারি করা যাইতে পারে ৷ স্মরণ রাখা কর্তব্য যে, পরিবারের কোন ভৃত্যকে পরিবারের লোক হিসাবে  গণ্য করা যাইবে না ৷

সমন জারিকারক সমন প্রদান করিবার সময় সমনের প্রাপ্তিস্বীকার স্বরূপ মূল সমনের উপর বিবাদীর বা তাহার প্রতিনিধির স্বাক্ষর গ্রহণ করিবেন ৷ উক্তরূপ স্বাক্ষর দিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করিলে অথবা বিবাদীর বাসস্থানে উপস্থিত হইয়া সকল চেষ্টা সত্ত্বেও বিবাদীকে না পাওয়া গেলে অথবা যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে তাহার ফিরিবার সম্ভাবনা না থাকিলেও তাহার পক্ষে সমন গ্রহণের কোন ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির সহিত ও সাক্ষাত্‍ না পাওয়া গেলে, জারিকারক যে গৃহে বিবাদী সাধারণতঃ বসবাস করে অথবা ব্যবসা করে সেই গৃহের বহির্দ্বারে অথবা গৃহের অন্য কোন প্রকাশ্য অংশে সমন লটকাইয়া জারি করিতে পারেন ৷ এইক্ষেত্রে যেই ব্যক্তি উক্ত গৃহ শনাক্ত করিয়াছে ও যাহাদের উপস্থিতিতে এইরূপভাবে সমন জারি করা হইয়াছে তাহাদের নাম ও ঠিকানা মূল সমনের পৃষ্ঠে লিখিত হইবে এবং সম্ভব হইলে তাহাদের স্বাক্ষর মূল সমনের পৃষ্ঠে গ্রহণ করিতে হইবে ৷ তত্‍পর জারিকারক এফিডেফিট সম্বলিত বিবৃতিসহ উহা আদালতে ফেরত দিতে হইবে৷

(খ) ডাকযোগে পত্র প্রেরণ করিয়া নোটিস জারি: ডাকযোগে সমন জারির পদ্ধতি দেওয়ানী কার্যবিধি আইনের ৫নং আদেশের ৫নং আদেশের ৫নং আদেশের ২১-৩০ নিয়মে বর্ণিত আছে৷ বিবাদী কারাগারে আটক থাকিলে কারাগারের কর্মচারীর মাধ্যমে অথবা ডাকযোগে সমন জারি করা যাইতে পারে৷ কোন বিবাদী বাংলাদেশের বাহিরে বসবাস করিলে এবং দেশে তাহার কোন ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি না থাকিলে তাহার বিদেশস্থিত ঠিকানায় ডাকযোগে সমন প্রেরণ করা যাইতে পারে৷

বিবাদী কোন সৈনিক, বৈমানিক বা নাবিক হইলে আদালত ঐ সমন এবং ইহার একটি নকল বিবাদীকে প্রদান করিবার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট ডাকযোগে পাঠাইবেন৷ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উহা বিবাদীর উপর জারি করিয়া ও সম্ভব হইলে বিবাদীর লিখিত প্রাপ্তিস্বীকারসহ ঐ সমন জারিকারক আদালতে পাঠাইবেন৷ বিবাদী কোন সরকারী কর্মচারী, রেল কর্মচারী, অথবা স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী, হইলে সমন ও ইহার একটি নকল বিবাদীর উপর জারি করার অনুরোধপত্রসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অথবা অফিস প্রধানের নিকট ডাকযোগে পাঠাইবেন৷ উক্ত কর্তৃপক্ষ বা অফিস প্রধান উক্তরূপে উহা জারি করিয়া উহা আদালতে ফেরত পাঠাইবেন৷

ধারা:

৮৷ লিখিত জবাব:

(১) বিবাদীর হাজিরার নিমিত্ত নির্ধারিত তারিখে বাদী এবং বিবাদী পারিবারিক আদালতে হাজির হইবেন ও বিবাদী আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত জবাব উপস্থাপন করিবেন৷

তবে শর্ত থাকে যে, বিবাদী প্রার্থনা করিলে এবং উপযুক্ত কারণ প্রদর্শন করিলে আদালত অনধিক ২১ দিন পর জবাব দেওয়ার জন্য অন্য একটি তারিখ ধার্য্ করিতে পারেন৷

(২) লিখিত জবাবে উক্ত আত্মরক্ষার সমর্থনে হাজির করা হইবে এমন সাক্ষীগণের নাম এবং ঠিকানাসমূহ লিখিত জবাবের অন্তর্ভুক্ত থাকিবে৷

শর্ত থাকে যে, বিবাদী আদালতের অনুমতিক্রমে পরবর্তী যেকোন স্তরে যেকোন সাক্ষী ডাকিতে পারেন; যদি ন্যায়বিচারের স্বার্থে আদালত উক্তরূপ সাক্ষ্যগ্রহণ সমীচীন মনে করেন ৷

(৩) বিবাদী তাহার লিখিত জবাবের সমর্থনে সাক্ষ্য হিসাবে তাহার দখলাধীন অথবা আয়ত্তাধীন কোন দলিলের উপর নির্ভর করিলে তিনি লিখিত জবাব উপস্থাপনকালে আদালতে পেশ করিবেন এবং একই সময় উক্ত দলিল অথবা উহার অবিকল বা ফটোস্ট্যাট প্রতিলিপি লিখিত জবাবের সহিত নথিভুক্তির জন্য একটি লিস্টভুক্ত করিবেন৷

(৪) যেক্ষেত্রে বিবাদী তাহার লিখিত জবাবের সমর্থনে সাক্ষ্য হিসাবে তাহার স্বীয় দখলাধীনে অথবা আয়ত্তাধীনে নাই এমন কোন দলিলের উপর নির্ভর করেন সেক্ষেত্রে তিনি উক্ত দলিলের বিষয়টি লিখিত জবাবের সহিত সংযোজন করণার্থে একটি তালিকাভুক্ত করতঃ দলিলটি কাহার দখলে অথবা আয়ত্তাধীনে রহিয়াছে তাহা বর্ণনা করিবেন৷

(৫) মামলায় যতজন বাদী রহিয়াছে তফসিলসহ লিখিত জবাবের ততগুলো অবিকল নকল তত্সহ ৩ ও ৪ নং উপধারায় বর্ণিত দলিলের ফিরিস্তির ততগুলো অবিকল নকল লিখিত জবাবের সহিত থাকিবে৷

 (৬) ৫ নং উপধারায় বর্ণিত তফসিলসহ লিখিত জবাব, দলিলসমূহ এবং দলিলসমূহের তালিকায় নকল আদালতে উপস্থিত বাদীকে অথবা তাহার প্রতিনিধি অথবা এডভোকেটকে প্রদান করিতে হইবে৷

 যেক্ষের(৭) যেক্ষেত্রে জবাব উপস্থাপনের সময় বিবাদী আদালতে কোন দলিল দাখিল করা উচিত অথবা উহা জবাবের সহিত সংযুক্ত করিবার জন্য কোন লিস্টভুক্ত করা উচিত এবং যদি উহা উক্তরূপে দাখিল বা ল
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:06:26 AM
পারিবারিক আদালত বিধিমালা, ১৯৮৫

------------------------------------------------------------------

 

১৯৮৫ সালের পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশের ২৬ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার নিম্নলিখিত বিধিমালা প্রণয়ন করিলেন; যথাঃ

 

বিধি -১ (সংক্ষিপ্ত শিরোনাম )

এই বিধিমালা 'পারিবারিক আদালত বিধিমালা, ১৯৮৫' নামে অভিহিত হইবে ।

 

বিধি-২ ( সংজ্ঞাসমূহ )

অত্র বিধিমালা বিষয়ে অথবা প্রসঙ্গে বিপরীত কিছু না থাকিলে-

(ক) 'ফরম' বলিতে অত্র বিধিমালার সঙ্গে সংযুক্ত ফরমকে বুঝাইবে ।

(খ) 'অধ্যাদেশ' বলিতে পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ, ১৯৮৫ (১৯৮৫ সনের ১৮নং আইন)-কে বুঝাইবে ।

 

বিধি -৩ (মামলার রেজিস্ট্রি বই)

কোনো আপিল জেলা জজের আদালতে দায়ের করা হইলে উহার বিবরণ 'খ' ফরমে রক্ষিতব্য রেজিস্ট্রি বইতে অন্তর্ভুক্ত করিতে হইবে ।

 

বিধি-৪ (আপীলের রেজিস্ট্র বই )

কোনো আরজি পারিবারিক আদালতে দায়ের করা হইলে উহার বিবরণ খ ফরমে রক্ষতব্য রেজিস্ট্রি বইতে অন্তর্ভুক্ত করিতে হইবে ।

 

বিধি -৫ ( ডিক্রির ফরম )

অত্র অধ্যাদেশের প্রত্যেক মামলার রায় প্রদানান্ত 'গ' ফরমে ডিক্রি লিখিতে হইবে ও ভারপ্রাপ্ত জজ উহাতে দস্তখত দিতে হইবে ও ডিক্রি পারিবারিক আদালতের সীলমোহর যুক্ত হইবে ।

 

বিধি-৬ (জরিমানার রসিদের ফরম)

যেক্ষেত্রে অত্র অধ্যাদেশের ১৮ অথবা ১৯ ধারা মোতাবেক কোনো জরিমানা প্রদান করা হয় বা অত্র অধ্যাদেশের আওতায় পারিবারিক আদালত কোনো অর্থ অথবা সম্পত্তি জমা নেয় অথবা আদায় করে সেক্ষেত্রে 'ঘ' ফরমে রসিদ প্রদান করিতে হইবে এবং উহা ক্রমিক নম্বর যুক্ত হইতে হইবে ও উহার চেকমুড়ি পারিবারিক আদালতে রক্ষিত হইবে ।

 

বিধি -৭ (জরিমানা ইত্যাদির রেজিস্ট্রি বই )

পারিবারিক আদালত কতৃর্ক জমা নেওয়া অথবা আদায়কৃত এবং ব্যয়কৃত সমস্ত জরিমানা, অর্থ অথবা সম্পত্তি 'ঙ' ফরমে কোনো রেজিস্ট্রি হইতে অন্তর্ভুক্ত করিতে হইবে ।

 

বিধি -৮ (পক্ষের উপর নোটিশ )

যদি পারিবারিক আদালত কোনো পক্ষের প্রাপ্য কোনো অর্থ গ্রহণ করেন তবে পারিবারিক উহা পাওয়ার পক্ষের প্রতি নোটিশ জারি করাইবেন ও উক্ত পক্ষকে উহা গ্রহণের নিমিত্ত তাহার দরখাস্তের ৭ দিনের ভিতর উহা প্রদান করিবেন ।

 

বিধি -৯ (পারিবারিক আদালতের রেকর্ডসমূহ এবং রেজিস্ট্রি বই )

দেওয়ানী আদালতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য সুপ্রীম কোর্টের বিধিসমূহ অনুযায়ী যথাবিধানকৃত সময়ের নিমিত্ত সংরক্ষণ করিতে হইবে ।

 

বিধি -১০ (রেকর্ডসমূহ ও উহা পরিদর্শন)

(১) বিরোধের কোনো পক্ষের দরখাস্তের ভিত্তিতে পারিবারিক আদালত চল্লিশ পয়সা ফী প্রদানের পর বিরোধ বিষয়ক পারিবারিক আদালতের রেকর্ডসমূহ পরিদর্শনের অনুমতি দিবেন ।

(২) মামলার কোনো পক্ষের দরখাস্তের ভিত্তিতে প্রতি একশত চল্লিশ অথবা উহার অংশবিশেষ শব্দের নিমিত্ত চল্লিশ পয়সা হারে ফী প্রদানের পর পারিবারিক আদালত উহার রায়, ডিক্রি অথবা আদেশের অথবা অপরাপর কার্যক্রমের অথবা অত্র বিধিসমূহ অনুযায়ী রক্ষিত কোনো রেজিস্ট্রি বইতে অন্তর্ভুক্তির অথবা ইহাদের কোনো অংশ বিশেষের প্রত্যায়িত প্রতিলিপি সরবরাহ করিতে হইবে ।

 

বিধি-১১ ( পারিবারিক আদালতের সীলমোহর )

(১) প্রতিটি পারিবারিক আদালতের অফিসে উক্ত আদালতের সীলমোহর রাখিতে হইবে এবং উহা আকারে বৃত্তাকারে হইবে ও পারিবারিক আদালত এবং স্থানের নাম থাকিবে ।

(২) অত্র অধ্যাদেশ অথবা বিধিমালার অধীনে দেওয়া সমস্ত সমন, আদেশ, ডিক্রি প্রতিলিপি এবং অপরাপর কাগজপত্রে পারিবারিক আদালতের সীলমোহর ব্যবহার করিতে হইবে ।

তথ্য সূত্র : জনগূরুত্বপূর্ণ  আইন
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:08:16 AM
মুসলিম বিবাহবিচ্ছেদ আইন, ১৯৬১

[১৯৩৯ সালের ৮নং আইন]

------------------------------------------------------------------

 

ধারা -১ (সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রয়োগযোগ্যতার সীমা )

(১) অত্র আইন মুসলিম বিবাহবিচ্ছেদ আইন, ১৯৩৯ নামে পরিচিত হইবে ।

(২) ইহা সমস্ত বাংলাদেশে কার্যকর হইবে ।

(৩) বিবাহবিচ্ছেদ ও ডিক্রি লাভের কারণসমূহঃ মুসলিম আইন অনুসারে কোনো বিবাহিতা স্ত্রীলোক নিম্নলিখিত এক বা একাধিক কারণে তাহার বিবাহবিচ্ছেদের ডিক্রি পাওয়ার অধিকারণী হইবে ।যথাঃ

(১) চার বত্‍সরকাল পর্যন্ত স্বামী নিখোঁজ;

(২) দুই বত্সরকাল পর্যন্ত স্বামী তাহাকে ভরণপোষণ প্রদানে অবহেলা করিয়াছে বা ব্যর্থ হইয়াছে ।

 

ধারা-২ (বিবাহবিচ্ছেদের ডিক্রির কারণসমূহ )

(১) ১৯৬১ সনের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের বিধান অমান্য করিয়া স্বামী অপর কোনো স্ত্রী গ্রহণ করিয়াছে;

(২) সাত বত্সর বা ততোধিক সময়ের জন্য স্বামী কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইয়াছে;

(৩) যুক্তসঙ্গত কারণ ব্যতীত স্বামী তিন বত্সরকাল যাবত তাহার বৈবাহিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হইয়াছে;

(৪) বিবাহের সময় স্বামী পুরুষত্বহীন ছিল এবং তাহার ঐরূপ অবস্থা অব্যাহত আছে;

(৫) দুই বত্সর পর্যন্ত স্বামী অপ্রকৃতিস্থ রহিয়াছে বা কুষ্ঠরোগ অথবা মারাত্মক যৌন রোগে ভুগিতে থাকে;

(৬) বয়স ১৬ বত্সর পূর্ণ হইবার আগে তাহাকে তাহার বাবা অথবা অন্য কোনো অভিভাবক বিবাহ দিয়াছে ও বয়স ১৮ বত্সর পূর্ণ হইবার আগে সে (স্ত্রীলোক) উক্ত বিবাহ নাকচ করিয়াছে । শর্ত থাকে যে, বিবাহে যৌনমিলন ঘটে নাই ।

(৭) স্বামী-স্ত্রীর সহিত নিষ্ঠুর আচরণ করে; যেমন-

(ক) তাহাকে স্বভাবতঃই আক্রমণ করে বা নিষ্ঠুর আচরণের মাধ্যমে তাহার জীবন দুর্বিসহ করিয়া তোলে যদি ঐরূপ আচরণ শারীরিক নির্যাতন নাও হয়; বা

(খ) খারাপ চরিত্রের নারীগণের সঙ্গে থাকে অথবা ঘৃণ্য জীবনযাপন করে; বা

(গ) তাহাকে নৈতিকতাহীন জীবনযাপনে বাধ্য করিতে চেষ্টার করে; বা

(ঘ) তাহার সম্পত্তি হস্তান্তর করে বা উক্ত সম্পত্তিতে তাহার আইনসঙ্গত অধিকার প্রয়োগে বাধা সৃষ্টি করে; বা

(ঙ) তাহাকে তাহার ধর্ম বিশ্বাস অথবা ধর্ম চর্চায় বাধা প্রদান করে; বা

(চ) যদি তাহার একাধিক স্ত্রী থাকে তবে কোরআনের নির্দেশ অনুযায়ী সে তাহার সহিত ন্যায়সঙ্গতভাবে ব্যবহার না করে;

(৮) মুসলিম আইন অনুযায়ী বিবাহবিচ্ছেদের নিমিত্ত বৈধ বলিয়া স্বীকৃত অপর কোন কারণে শর্ত থাকে যে-

(ক) কারাদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত ৩নং উপধারায় বর্ণিত কারণে ডিক্রি দেওয়া হইবে না;

(খ) ১নং উপধারায় বর্ণিত কারণে উহার তারিখ হইতে ছয় মাস কাল পর্যন্ত কার্যকর হইবে না; এবং স্বামী যদি উক্ত সময় মধ্যে ব্যক্তিগতভাবে বা কোনো ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধির মাধ্যমে উপস্থিত হইয়া আদালতকে সন্তোষজনক উত্তর দেয় যে সে দাম্পত্য দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত আছে তবে আদালত উক্ত ডিক্রি নাকচ করিবেন;

(গ) ৫নং উপধারায় বর্ণিত কারণে ডিক্রি দেওয়ার আগে আদালত স্বামীর আবেদনক্রমে তাহাকে আদেশ প্রদান করিতে পারেন যে, অত্র আদেশের তারিখ হইতে ১ বত্সরকালের মধ্যে সে আদালতের নিকট সন্তোষজনকভাবে প্রমাণ করিতে হইবে যে, সে পুরুষত্বহীনতা হইতে আরোগ্য লাভ করিয়াছে; এবং যদি স্বামী উক্ত সময় মধ্যে ঐরূপে আদালতকে সন্তুষ্ট করিতে পারে তবে উক্ত কারণে কোনো ডিক্রি দেওয়া হইবে না ।

 

ধারা-৩ (নিরুদ্দেশ স্বামীর উত্তরাধিকারদের উপর নোটিশ প্রদান )

২নং ধারার ১নং উপধারার প্রযোজ্য মামলায়-

(ক) আরজি দাখিল করিবার তারিখে স্বামীর যদি মৃত্যু ঘটিত তবে মুসলিম আইন অনুসারে যাহারা তাহার উত্তরাধিকারী হইতে তাহাদের নাম, ঠিকানা আরজিতে লিপিবদ্ধ করিতে হইবে;

(খ) ঐরূপ ব্যক্তিগণের উপর মামলার নোটিশ জারি করিতে হইবে; এবং

(গ) উক্ত মামলার শুনানিতে তাহাদের বক্তব্য পেশ করিবার অধিকার থাকিবে;

শর্ত থাকে যে, যদি স্বামীর কোনো চাচা এবং ভাই থাকে তবে সে অথবা তাহারা উত্তরাধিকারী না হইলেও মামলায় পক্ষভুক্ত হইবে ।

 

ধারা -৪ ( অন্য ধর্ম গ্রহণের পরিণতি )

বিবাহিতা মুসলিম মহিলা ইসলাম ধর্ম পরিত্যাগ অথবা উক্ত ধর্ম ব্যতীত অন্য কোনো ধর্ম গ্রহণ করিলে সেইজন্য তাহার বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে না ।

শর্ত থাকে যে, ঐরূপ ধর্ম ত্যাগ অথবা অন্য ধর্ম গ্রহণ করিবার পর উক্ত নারী ২ ধারায় উল্লেখিত যেকোন কারণে বিবাহবিচ্ছেদের ডিক্রি পাওয়ার অধিকারিণী হইবে ।

আরও শর্ত থাকে যে, কোনো বিধর্মী মহিলা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করিবার পর পুনরায় তাহার পূর্বে ধর্মে ফিরিয়া আসিলে অত্র ধারার বিধানসমূহ তাহার প্রতি প্রযোজ্য হইবে না ।

 

ধারা-৫ ( দেনমোহরের অধিকার খর্ব করিবে না )

অত্র আইনে বর্ণিত কোনো কিছু মুসলিম আইন অনুসারে বিবাহিতা কোনো মহিলার প্রাপ্য দেনমোহর অথবা উহার কোনো অংশের অধিকার তাহার বিবাহবিচ্ছেদ কতৃর্ক প্রভাবিত হইবে না ।

 

ধারা-৬ (১৯৩৭ সালের ১৬নং আইনের ৫ ধারা বাতিল )

১৯৩৭ সালের মুসলিম ব্যক্তিগত আইন (শরীয়ত) প্রয়োগ আইনের ৫ ধারা বাতিল ।

 

তথ্য সূত্র : জনগূরুত্বপূর্ণ  আইন
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:10:08 AM
মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিষ্ট্রীকরণ)

আইন, ১ঌ৭৪

(১ঌ৭৪ সনের ৫২ নম্বর অধ্যইন)

 

 [ মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রীকরণ সম্পর্কিত আইন একীকরণ ও সংশোধন করিবার জন্য আইন ]

 

যেহেতু মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রীকরণ সম্পর্কিত আইন একীকরণ ও সংশোধন করা সমীচীন;

সেহেতু উহা এতদ্বারা নিম্নরূপ বিধিবদ্ধ করা হইলঃ

 

১। সংক্ষিপ্ত শিরোণাম ও প্রয়োগ :

    (১) এই আইন মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিষ্ট্রীকরণ) আইন, ১ঌ৭৪ বলিয়া অভিহিত করা যাইতে পারে।

    (২) বাংলাদেশের সকল মুসলিম নাগরিকদের উপর যেখানেই তাহারা থাকুক না কেন, ইহা প্রযোজ্য হইবে।

২। সংজ্ঞা সমূহ : এই আইনে যদি বিষয়ে বা প্রসঙ্গে পরিপন্থী কোন কিছু না থাকে তাহা হইলেঃ-

    (ক) মহা-নিবন্ধন পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর জেনারেল অব রেজিষ্ট্রশন) ও নিবন্ধক (রেজিষ্টার) বলিতে যথাক্রমে ১ঌ০৮ সনের রেজিষ্ট্রীকরণ আইনের (১৯০৮ সনের ১৬) অধীনে ঐরূপ পদনামযুক্ত ও নিযুক্ত অফিসারদেরকে বুঝায়।

    (খ) নির্ধারিত বলিতে এই আইনের অধীনে প্রণীত বিধিমালা দ্বারা নির্ধারিত বুঝায়।

৩। বিবাহ রেজিষ্ট্রীকরণ : অন্য যে কোন আইন, প্রথা বা রীতিতে  যে কোন কিছু থাকা সত্ত্বেও মুসলিম আইন অনুযায়ী অনুষ্ঠিত প্রত্যেক বিবাহ এই আইনের বিধানাবলী অনুযায়ী রেজিষ্ট্রী করতে হবে।

 

৪। নিকাহ নিবন্ধক : এই আইনের অধীন বিবাহসমূহ রেজিষ্ট্রীকরণের উদ্দেশ্যে সরকার যেরূপ বিধিনির্দিষ্ট করিতে পারেন সেরূপ এলাকার জন্য যেরূপ প্রয়োজনীয় গণ্য করিতে পারে সেরূপ সংখ্যক নিকাহ নিবন্ধক বলিয়া অভিহিত ব্যক্তিকে অনুজ্ঞাপত্র মঞ্জুর করিবেন।
 

তবে শর্ত থাকে যে অনধিক একজন নিকাহ নিবন্ধক যে কোন একটি এলাকার জন্য অনুজ্ঞাপ্রাপ্ত হইবে।
 

৫। নিকাহ নিবন্ধকগণ কর্তৃক অনানুষ্ঠিত বিবাহ সম্পর্কে তাহাদের নিকট প্রতিবেদন করিতে হইবে :

    (১) নিকাহ নিবন্ধক কর্তৃক অনানুষ্ঠিত প্রত্যেক বিবাহ এই আইনের অধীনে রেজিষ্ট্রীকরণের উদ্দেশ্যে তাহার নিকট এইরূপ বিবাহ অনুষ্ঠিত করিয়াছেন এমন ব্যক্তি কর্তৃক প্রতিবেদন পেশ করিতে হইবে।

    (২) যে কেহ (১) উপ-ধারার বিধান লংঘন করিলে সে তিন মাস পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য মেয়াদের বিনাশ্রম কারাবাসে বা পাঁচশত টাকা পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য জরিমানায় বা উভয়বিধে শাস্তিযোগ্য হইবেন।

৬। তালাক রেজিষ্ট্রীকরণ :

    (১) কোন নিকাহ নিবন্ধক এখতিয়ারের মধ্যে মুসলিম আইন অনুযায়ী কার্যকরীকৃত তালাক রেজিষ্ট্রীকরণের জন্য তাহার নিকট পেশকৃত আবেদন পত্রের ভিত্তিতে উহা রেজিষ্ট্রী করিতে পারেন।

    (২) তালাক রেজিষ্ট্রিকরণের জন্য আবেদন তালাক কার্যকরী করিয়াছেন এমন ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণ কর্তৃক মৌখিকভাবে পেশকৃত হইবে ।

     

    তবে শর্ত থাকে যে, যদি মহিলা পর্দানশীল হন তাহা হইলে ঐরূপ আবেদন তাহার যথাযথভাবে কর্তৃত্বপ্রাপ্ত উকিল কর্তৃক পেশ করা যাইতে পারে।

     

    (৩) ১ঌ০৮ সনের রেজিষ্ট্রীকরণ আইনের (১৯০৮ সনের ১৬) অধীনে রেজিষ্ট্রীকৃত যে দলিলমুলে স্বামী স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা অর্পণ করিয়াছিল উক্ত দলিল অথবা ঐরূপ অর্পন করা হইয়াছে বলিয়া বিবাহ রেজিষ্ট্রী খাতায় অন্তভুক্তির সত্যায়িত প্রতিলিপি দাখিলকরণের ভিত্তিতে ব্যতীত নিকাহ নিবন্ধক তালাক-ই-তৌফিজ হিসাবে পরিচিত ধরনের কোন তালাক রেজিষ্ট্রী করিবেন না।

    (৪) যেক্ষেত্রে নিকাহ নিবন্ধক কোন তালাক রেজিষ্ট্রী করিতে অস্বীকার করেন, সেক্ষেত্রে ঐরূপ রেজিষ্ট্রীকরণের জন্য আবেদন করিয়াছিল এমন ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণ উক্ত অস্বীকৃতির ত্রিশ দিনের মধ্যে নিবন্ধকের নিকট আপীল পেশ করিতে পারেন এবং উক্ত আপীলের উপর নিবন্ধক কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত (বলিয়া গণ্য) হইবে।

৭। রেজিষ্ট্রীকরণের পদ্ধতি : নিকাহ নিবন্ধক  নির্ধারিত পদ্ধতিতে কোন বিবাহ বা তালাক রেজিষ্ট্রী করিবেন।

 

৮। রেজিষ্ট্রী খাতা : প্রত্যেক নিকাহ নিবন্ধক নির্ধারিত ফরমে বিবাহ ও তালাকের পৃথক রেজিষ্ট্রী খাতা রাখিবেন এবং ঐরূপ প্রত্যেক রেজিষ্ট্রী খাতায় প্রত্যেক বত্সরের শুরুতে নতুন সারির সূচনা ক্রমে সকল ভুক্তি ক্রমিক সারিতে সংখ্যাযুক্ত (করিতে) হইবে।
 

৯। পক্ষগণকে ভুক্তির প্রতিলিপি দিতে হইবে : কোন বিবাহ বা তালাকের রেজিষ্ট্রীকরণ সম্পূর্ন হওয়ার পর নিকাহ নিবন্ধক সংশ্লিষ্ট পক্ষগণকে খাতায় ভুক্তির সত্যায়িত প্রতিলিপি অর্পণ করিবেন এবং ঐরূপ প্রতিলিপির জন্য কোন খরচ আদায় করা হইবে না।
 

১০। নিয়ন্ত্রন ও তত্ত্বাবধান  :

    (১) প্রত্যেক নিকাহ নিবন্ধক তাহার অফিসের কর্তব্যাবলী নিবন্ধকের অধীক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণের অধীনে পালন করিবেন।

    (২) মহা-নিবন্ধন পরিদর্শক সকল নিকাহ নিবন্ধকগণের অফিসের উপর সাধারণ অধীক্ষণ চালাইবেন।

১১। অনুজ্ঞাপত্রের সংহরণ ও নিলম্বন : যদি সরকার বিশ্বাস করেন যে, নিকাহ নিবন্ধক তাহার কর্তব্যাবলী পালনে কোন অসদাচনের জন্য দোষী অথবা তাহার কর্তব্যাবলী পালনে অনুপযুক্ত বা দৈহিকভাবে অক্ষম, তাহা হইলে সরকার লিখিত আদেশবলে তাহার অনুজ্ঞাপত্র সংহরণ করিতে পারেন, অথবা আদেশের যেরূপ বিনির্দিষ্ট করা হইতে পারে সেরূপ অনধিক দুই বত্সর মেয়াদের জন্য তাহার অনুজ্ঞাপত্র নিলম্বিত করিতে পারেন।

     তবে শর্ত থাকে যে, ঐরূপ কোন আদেশ প্রদান করা হইবে না যদি নিকাহ নিবন্ধককে কেন ঐরূপ আদেশ প্রদান করা হইবে না উহার কারণ প্রদর্শনের যুক্তিসঙ্গত সুযোগ প্রদান করা হয়।
 

১২। রেজিষ্ট্রী খাতাসমূহের হেফাজত : প্রত্যেক নিকাহ নিবন্ধক ৮ ধারা অনুযায়ী তত্কর্তৃক রক্ষিত প্রত্যেকটি রেজিষ্ট্রী খাতা নিরাপদে রাখিবেন যতক্ষণ না উহা সম্পূর্ণ হয় এবং তিনি সংশ্লিষ্ট জিলা ত্যাগ করিলে বা অনুজ্ঞাপত্র ধারণ করা বন্ধ করিলে তখনই বা তত্পূর্বে নিরাপদ হেফাজতের জন্য নিবন্ধকের নিকট উহা হস্তান্তর করিবেন।
 

১৩। রেজিষ্ট্রী খাতাসমূহ পরিদর্শন : যে কোন ব্যক্তি নির্ধারিত ফি, যদি থাকে, প্রদানক্রমে নিকাহ নিবন্ধকের বা নিবন্ধকের অফিসে সেখানে রক্ষিত যে কোন রেজিষ্ট্রী খাতা পরিদর্শন করিতে পারেন অথবা উহাতে কোন ভুক্তির প্রতিলিপি পাইতে পারেন।
 

১৪। বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা :

    (১) সরকার অফিসিয়াল গেজেটে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই আইনের উদ্দেশ্যাবলী কার্যকরী করিবার জন্য বিধি প্রণয়ন করিতে পারেন।

    (২) বিশেষ করিয়া এবং পূর্ববর্তী ক্ষমতার সাধারণত্বের হানি না করিয়া উক্ত বিধিমালা-

        (ক) যে ব্যক্তিদেরকে ৪ ধারার অধীনে অনুজ্ঞাপত্র মঞ্জুর করা যাইতে পারে তা যাদের জন্য আবশ্যক যোগ্যতা সম্পর্কে,

        (খ) বিবাহ বা তালাক রেজিষ্ট্রীকরণের জন্য নিকাহ নিবন্ধককে প্রদেয় কি সম্পর্কে,

        (গ) বিধি প্রণয়ন আবশ্যক এমন অন্য যে কোন বিষয় সম্পর্কে বিধান করিতে পারে।

১৫। ১ঌ৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের (১ঌ৬১ সনের ৮অর্ডিন্যান্স) সংশোধন :
১৯৬১ সনের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের,

    (ক) ৩ ধারার (১) উপ-ধারায় কমা ও শব্দাবলী এবং মুসলিম বিবাহ রেজিষ্ট্রীকরণ শুধুমাত্র ঐ সকল বিধানাবলী অনুযায়ী সংঘটিত হইবে বাদ যাইবে।

    (খ) ৫ ধারা বাদ যাইবে।

    (গ) ৬ ধারার (১) উপ-ধারায় এই আইনের অধীন শব্দসমূহের পরিবর্তে ১ঌ৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিষ্ট্রীকরণ) আইনের (১ঌ৭৪ সনের ৫২ নম্বর আইন) অধীন শব্দসমূহ, কমা, অংক ও বন্ধকী বসিবে।

১৬। নিরসন :
১৮৭৬ সনের মুসলিম তালাক রেজিষ্ট্রীকরণ আইনের (১৮৭৬ সনের ১ নং বেঙ্গল আইন) এতদ্বারা নিরসন করা হইল।

 

১৭। বিদ্যমান নিকাহ নিবন্ধকগণ সম্পর্কিত বিধান :
এই আইনের প্রারম্ভের পূর্বে ১৯৬১ সনের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের (১৯৬১ সনের ৮) অধীনে অনুজ্ঞাপ্রাপ্ত সকল নিকাহ নিবন্ধকগণ এই আইনের অধীনে নিকাহ নিবন্ধক হিসাবে অনুজ্ঞাপ্রাপ্ত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:11:07 AM
সিলম বিবাহ আইন

(১৯৩৯ সালের ৮নং আইন)

[ ১৯৩৯ সালের ১৭ই মার্চ তারিখে গভর্ণর-জেনারেলের সম্মতিপ্রাপ্ত ]

    [ মুসলিম আইন অনুযায়ী বিবাহিতা মহিলার বিবাহ বিচ্ছেদের উপর আণীত মামলা সম্পর্কিত মুসলিম আইনের বিভিন্ন ব্যবস্থাবলীর একত্রীকরণ ও পরিস্কার ব্যাখ্যার জন্য এবং বিবাহিতা মুসলমান মহিলার ইসলাম ধর্ম পরিত্যাগের ফলে তাহার বিবাহ সম্পর্কের ক্ষেত্রে সৃষ্ট সন্দেহ দূরীকরণার্থে প্রণীত এাক্ট ]।

    যেহেতু, মুসলিম আইন অনুযায়ী বিবাহিতা মহিলার বিবাহ বিচ্ছেদের উপর আনীত মামলা সম্পর্কিত মুসলিম আইনের বিভিন্ন ব্যবস্থা একত্রীকরণ ও উহাদের পরিস্কার ব্যাখ্যার জন্য এবং বিবাহিতা মুসলমান মহিলার ইসলাম ধর্ম পরিত্যাগের ফলে তাহার বিবাহ সম্পর্কের ক্ষেত্রেও সৃষ্ট সন্দেহ দূরীকরণার্থে, এক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুভব করা যাইতেছে, সেইহেতু এতদ্বারা নিম্নলিখিত আইন পাশ করা হইতেছে :   

    ১।  (ক) সংক্ষিপ্ত শিরোনামঃ অত্র আইনকে ১৯৩৯ সালের মুসলমান বিবাহ বিচ্ছেদ আইন নামে অভিহিত করা যাইতে পারে।

           (খ) ইহা সমগ্র বাংলাদেশে প্রযোজ্য হইবে।

    ২। বিবাহ বিচ্ছেদের ডিক্রির হেতুবাদঃ নিম্নলিখিত যে কোন এক বা একাধিক হেতুবাদে মুসলিম আইন অনুযায়ী বিবাহিতা কোন মহিলা তাহার বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য ডিক্রি লাভের অধিকারিণী হইবেন, যথাঃ

        i) চার বত্‍সর যাবত্‍ স্বামী নিরুদ্দেশ হইলে;

        ii) স্বামী দুই বত্‍সর যাবত্‍ স্ত্রীর ভরণ-পোষণ দানে অবহেলা প্রদর্শন করিলে অথবা ব্যর্থ হইলে;

        ii-ক) স্বামী ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ব্যবস্থা লঙ্খন করিরা অতিরিক্ত স্ত্রী গ্রহণ করলে;

        iii) স্বামী সাত বত্‍সর বা তদুর্ধ্ব সময়ের জন্য কারাদন্ডে দন্ডিত হইলে;

        iv) স্বামী কোন যুক্তসঙ্গত কারণ ব্যতীত তিন বত্‍সর যাবত্‍ তাহার দাম্পত্য দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হইলে;

        v) বিবাহকালে স্বামীর পুরুষত্বহীনতা থাকিলে এবং উহা বর্তমানেও চলিতে থাকলে;

        vi) দুই বত্‍সর যাবত্‍ স্বামী পাগল হইয়া থাকিলে অথবা কুষ্ঠ ব্যাধিতে কিংবা ভয়ানক ধরণের উপদংশ রোগে ভুগিতে থাকলে;

       vii) আঠার বত্‍সর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে তাহাকে তাহার পিতা অথবা অন্য অভিভাবক বিবাহ করাইয়া থাকিলে এবং উণিশ বত্‍সর বয়স পূর্ণ হইবার পূর্বেই সে উক্ত বিবাহ অস্বীকার করিয়া থাকিলে; তবে, অবশ্য ঐ সময়ের মধ্যে যদি দাম্পত্য মিলন অনুষ্ঠিত না হইয়া থাকে;

       viii) স্বামী তাহার (স্ত্রীর) সহিত নিষ্ঠুর আচরণ করিলে, অর্থাত্‍   

        ক) অভ্যাসগতভাবে তাহাকে আঘাত করিলে বা নিষ্ঠুর আচরণ দ্বারা, উক্ত আচরণ দৈহিক পীড়নের পর্যায়ে না পড়িলও, তাহার জীবন শোচনীয় করিয়া তুলিয়াছে এমন হইলে;.

        খ) স্বামীর দূর্নাম রহিয়াছে বা কলঙ্কিত জীবন যাপন করে এমন স্ত্রীলোকদের সহিত মেলামেশা করিলে, অথবা

        গ) তাহাকে দূর্ণীত জীবন যাপনে বাধ্য করিবার চেষ্টা করিলে, অথবা

        ঘ) তাহার সম্পত্তি হস্তান্তর করিলে অথবা উহার উপর তাহার বৈধ অধিকার প্রয়োগে বাধা প্রদান করিলে, অথবা

        ঙ) তাহার ধর্মীয় কর্তব্য পালনে বাধা সৃষ্টি করিলে, অথবা

        চ) একাধিক স্ত্রী থাকিলে, সে কোরানের নির্দেশ অনুযায়ী ন্যায়পরায়নতার সহিত তাহার সঙ্গে আচরণ না করিলে;

        ix) মুসলিম আইন অনুযায়ী বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য বৈধ হেতু হিসাবে স্বীকৃত অন্য যে কোন কারণেঃ

        তবে অবশ্য-

        ক) কারাদন্ডাদেশ চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত ৩ নং হেতু বাদে কোন ডিক্রি প্রদান করা যাইবে না,

        খ) ১ নং হেতুবাদে প্রদত্ত ডিক্রিটি উহার প্রদানের তারিখ হইতে ৬ মাস পর্যন্ত কার্যকরী হইবে না এবং স্বামী উক্ত সময়ের মধ্যে স্বয়ং অথবা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কো এজেন্টের মাধ্যমে উপস্থিত হইয়া এই মর্মে যদি আদালতকে খুশী করিতে পারে যে, দাম্পত্য কর্তব্য পালনে প্রস্তুত রহিয়াছে, তাহা হইলে আদালত ডিক্রিটি রদ করিবেন; এবং

        গ) ৫ নং হেতুবাদে ডিক্রি প্রদানের পূর্বে, স্বামীর আবেদনক্রমে আদালতের আদেশের এক বত্‍সরের মধ্যে যে পুরুষত্বহীনতা হইতে মুক্তি লাভ করিয়াছে বা তাহার পুরুষত্বহীনতার অবসান ঘটিয়াছে এই মর্মে আদালতকে সন্তুষ্ট করিবার জন্য আদালত তাহাকে আদেশ দান করিতে পারেন এবং যদি সে উক্ত সময়ের মধ্যে আদালতকে এই মর্মে সন্তুষ্ট করিতে পারে, তাহা হইলে উক্ত হেতুবাদে কোন ডিক্রি প্রদান করা যাইবে না।   

    ৩। স্বামীর ঠিকানা জানা না থাকিলে তাহার উত্তরাধিকারীগণের উপর নোটিশ জারী করিতে হইবে

    যে মামলায় ২ ধারায় (১) উপ-ধারা প্রযোজ্য, সেখানে-

    ক) আর্জিতে ঐ সমস্ত লোকের নাম-ঠিকানা লিখিতে হইবে যাহারা আর্জি পেশ করিবার সময় স্বামী মারা গেলে মুসলিম আইনে স্বামীর উত্তরাধিকারী হইতেন;

    খ) ঐ ধরণের ব্যক্তিগণের উপর নোটিশ জারী করিতে হইবে, এবং

    গ) উক্ত মামলায় ঐ সকল ব্যক্তির বক্তব্য পেশ করিবার অধিকার থাকিবে।

    তবে অবশ্য ম্বামীর চাচা ও ভাই থাকিলে উহারা উত্তরাধিকারী না হইলেও উহাদিগকে অবশ্যই পক্ষভূক্ত করিতে হইবে।

    ৪। ধর্মান্তরের ফলঃ

কোন বিবাহিতা মুসলমান মহিলা ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করিলে অথবা ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্মে দীক্ষা গ্রহন করিলে উহাতেই তাহা বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটিবে না।

    তবে, অবশ্য এই জাতীয় ধর্ম ত্যাগ বা অন্য ধর্ম গ্রহণের পর মহিলাটি ২ ধারায় বর্ণিত অন্য কোন হেতুবাদে তাহার বিবাহ বিচ্ছিদের জন্য ডিক্রি গ্রহণের অধিকারিণী হইবেনঃ

    আরও এই যে, অত্র ধারার ব্যবস্থাবলী ঐ মহিলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না, যে কোন ধর্ম হইতে মুসলিম ধর্মে ধর্মান্তরিত হইয়াছিল এবং বর্তমানে স্বীয় পুরাতন ধর্মে পুনরায় দীক্ষা গ্রহণ করিল।

    ৫। দেহমোহরের অধিকার ক্ষুন্ন হইবে নাঃ

অত্র আইনে সন্নিবেশিত কোন কিছুই কোন বিবাহিতা মহিলার বিবাহ বিচ্ছেদের ফলে মুসলিম আইন অনুযায়ী তাহার প্রাপ্ত দেনমোহর অথবা উহার কোন অংশের উপর তাহার কোন অধিকারকেই ক্ষুন্ন করিবে না।

    ৬। ১৯৩৭ সালের মুসলিম ব্যক্তিগত আইন (শরিয়ত) প্রয়োগ আইনের ৫ ধারাটিকে এতদ্বারা বাতিল ঘোষণা করা হইল [ ১৯৪২ সালের ২৫ নং এ্যাক্ট দ্বারা বাতিল ঘোষিত হয় ]
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:12:16 AM
অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন, ১৮ঌ০

The Guardians and Wards Act, 1890

(১৮ঌ০ সনের ৮নং আইন)

 

অভিভাবক এবং প্রতিপাল্য সম্পর্কিত আইন একীকরণ ও সংশোধন করার আইন। যেহেতু অভিভাবক এবং প্রতিপাল্য সম্পর্কিত আইন একীকরণ ও সংশোধন করা সমীচীন; সেহেতু উহা এতদ্বারা নিম্নরূপ বিধিবদ্ধ করা হল।

 

 ১ম অধ্যায়

প্রারম্ভিক

 

ধারা-১। শিরোনাম, আওতা ও প্রারম্ভ :

         (১) এই আইনকে অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন, ১৮৯০ নামে অভিহিত করা যেতে পারে,

           (২) ইহা সমগ্র বাংলাদেশে প্রযোজ্য, এবং

           (৩) ১৮৯০ সনের ১ জুলাই হতে ইহা কার্যকর হবে।

ধারা-২। ১৯৩৮ সনের ১নং আইন দ্বারা বাতিল করা হয়েছে।

ধারা-৩। ১৯৭৩ সনের ৮নং আইনের ২ ধারা দ্বারা বাদ দেয়া হয়েছে।

ধারা-৪। সংজ্ঞা :

এই আইনের বিষয়ে বা প্রসঙ্গে পরিপন্থী কিছু না থাকলে-

(১)  "নাবালক" বলতে ১৮৭৫ সালের (১৮৭৫ সনের ৯নং আইন) সাবালকত্ব মর্ম মতে যে এখনো সাবালকত্ব লাভ করে নাই তাকে বুঝায়।

(২) "অভিভাবক" বলতে যে ব্যক্তি কোন নাবালকের শরীর অথবা সম্পত্তি অথবা সম্পত্তি ও শরীর উভয়ের তত্ত্বাবধানে নিযুক্ত তাকে বুঝায়।

(৩) "প্রতিপাল্য" বা "ওয়ার্ড" বলতে একজন নাবালক যার শরীর বা সম্পত্তি অথবা শরীর এবং সম্পত্তির জন্য একজন অভিভাবক আছে তাকে বুঝায়।

(৪) জেলা আদালত বলতে দেওয়ানী কার্যবিধিতে (১৯০৮ সনের ৫নং আইন) যে অর্থ বুঝান হয়েছে তা বুঝায় এবং হাইকোর্ট ডিভিশনের সাধারণ মূল দেওয়ানী অধিক্ষেত্র অন্তর্ভুক্ত করে;

 (৫) "আদালত"  বলতে-

(ক) এই আইনে কোন ব্যক্তিকে অভিভাবক নিযুক্ত অথবা ঘোষণা করার জন্য দরখাস্ত গ্রহণ করার বৈধ কর্তৃত্বসম্পন্ন জেলা আদালতকে বুঝায়, অথবা

(খ) যেখানে এরূপ কোন দরখাস্তের পরিপ্রেক্ষিতে অভিভাবক নিয়োগ বা ঘোষণা করা হয়েছে-

      (i) আদালত অথবা ঐ কর্মকর্তার আদালত যিনি অভিভাবক নিয়োগ অথবা ঘোষণা করেছেন অথবা এই আইনে অভিভাবক নিয়োগ বা ঘোষণা করেছেন বলে মনে করা হয়, অথবা

            (ii) নাবালকের শরীর সম্বন্ধে যেকোন ব্যাপারে নাবালক কিছু সময়ের জন্য সাধারণত যেখানে বসবাস করে সে এলাকার জেলা আদালত, অথবা

     (গ) ৪ক ধারায় বদলিকৃত কোন মামলা ঐ কর্মকর্তার আদালতে যার নিকট উক্ত মামলা বদলি উক্ত মামলা বদলি করা হয়েছে।

  (৬) "কালেক্টর" বলতে কোন জেলার রাজস্ব প্রশাসনের প্রধান কর্মকর্তাকে বুঝায় এবং সরকার গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে নামে বা পদ মর্যাদার বলে কাকে কোন স্থানীয় এলাকার জন্য বা এই আইনের সকল বা কোন উদ্দেশ্যে কোন শ্রেণীর লোকের জন্য কালেক্টর নিযুক্ত করলে তাও অন্তর্ভুক্ত করবে;

   (৭)  ১৯৭৩ সনের ৮নং আইনের ৩ ধারা, ২য় তফশিল দ্বারা বাদ দেয়া হয়েছে

   (৮) "নির্ধারিত" বলতে মহামান্য সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক নির্ধারিত কোন বিধিকে বুঝায়।

 

ধারা-৪ক। অধ:স্তন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার উপর কর্তৃত্ব আরোপ করার এবং মামলা বদলি করার ক্ষমতা :

(১)         হাইকোর্ট ডিভিশন সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা মূল দেওয়ানী কর্তৃত্ব প্রয়োগ করে জেলা আদালতের অধ:স্তন এমন কোন কর্মকর্তাকে বা কোন জেলা আদালতের জজকে তার অধ:স্তন কোন কর্মকর্তাকে তার নিকট বদলিকৃত যেকোন মামলা এই ধারা অনুসারে নিষ্পত্তি করবার জন্য ক্ষমতা অর্পণ করতে পারেন।

(২)         কোন জেলা আদালতের জজ লিখিত আদেশ দ্বারা নিষ্পত্তির জন্য তাঁর আদালতে অপেক্ষমান এই আইনের যেকোন মামলা (১) উপ-ধারার ক্ষমতাপ্রাপ্ত তার অধ:স্তন যেকোন আদালতে বদলি করতে পারেন।

(৩)         কোন জেলা আদালতের জজ (১) উপ-ধারায় ক্ষমতাপ্রাপ্ত তার অধ:স্তন যে কোন আদালতে বা এমন ধরনের অন্য কোন অধ:স্তন কর্মকর্তার আদালতে অপেক্ষমান এই আইনের কোন মামলা তার নিজ আদালতে বা এমন ধরনের অন্য কোন অধ:স্তন কর্মকর্তার আদালতে বদলি করতে পারেন।

(৪)   অভিভাবক নিযুক্ত বা ঘোষিত হয়েছে এমন ধরনের এই আইনের কোন মামলা বদলি করা হলে জেলা আদালতের জজ লিখিত আদেশ দ্বারা ঘোষণা করতে পারেন যে, সেখানে এমন ধরনের মামলা বদলি হয়েছে তেমন জজের আদালত বা অফিসকে এই আইনের কোন বা সব উদ্দেশ্য অভিভাবক নিয়োগ বা ঘোষিত হওয়ার আদালত মনে করা হবে।

 

২য় অধ্যায়

অভিভাবক নিয়োগ ও ঘোষণা

 

ধারা-৫। ১৯৭৩ সনের ৮নং আইন, ৩ ধারা ও ২য় তফশিল দ্বারা বাদ দেয়া হয়েছে।

 

ধারা-৬। অন্যক্ষেত্রে নিয়োগ ক্ষমতার ব্যতিক্রম:

 

এই ধারার কোন কিছু দ্বারাই কোন নাবালকের শরীর বা সম্পত্তির অভিভাবক নিয়োগের ক্ষমতা যা আইনে বৈধ তা নিয়ে যাওয়া বা কমিয়ে দেয়া ব্যাখ্যা করা যাবে না।

 

ধারা-৭। অভিভাবকত্বের ব্যাপারে আদেশ প্রদানে আদালতের ক্ষমতা:

 (১) যেখানে আদালত এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে নাবালকের মঙ্গলের জন্য আদেশ প্রদান করা প্রয়োজন-

 

        (ক) তার শরীর অথবা সম্পত্তি অথবা উভয়ের ব্যাপারে একজন অভিভাবক নিযুক্ত করে, অথবা

        (খ) কোন ব্যক্তিকে তেমন অভিভাবক ঘোষণা করে আদালত তদানুসারে আদেশ প্রদান করতে পারেন;

তবে শর্ত এই যে নাবালক বাংলাদেশের নাগরিক হলে বাংলাদেশী নাগরিক ছাড়া অন্য কাকেও তার অভিভাবক নিযুক্ত করা যাবে না।

(২) উইল বা অন্য কোন দলিল দ্বারা নিযুক্ত না হলে অথবা কর্তৃক ঘোষিত না হলে এই ধারাবলে কোন আদেশ কোন অভিভাবকের অপসারণ বুঝাবে।

(৩) যেক্ষেত্রে কোন অভিভাবক উইল বা অন্য দলিল দ্বারা অথবা আদালত কর্তৃক নিযুক্ত বা ঘোষিত হয়েছে সেক্ষেত্রে এ ধারায় অন্য কোন ব্যক্তিকে তার পরিবর্তে অভিভাবক নিযুক্ত বা ঘোষণা করা যাবে না যে পর্যন্ত না উক্তভাবে নিযুক্ত বা ঘোষিথ অভিভাবক এই আইন অনুসারে দায়িত্ব পালন বন্ধ করেছে।

 

ধারা-৮। আদেশ পাওয়ার জন্য আবেদন করতে যারা স্বত্ববান:

 শেষোক্ত ধারাগুলির অধীনে নিম্নোক্ত ব্যক্তিবর্গের দরখাস্ত ছাড়া কোন আদেশ দেয়া হবে না-

 

                    (ক) যে ব্যক্তি অভিভাবক হতে ইচ্ছুক বা অভিভাবক হবার দায়ী করে, অথবা

                    (খ) নাবালকের কোন আত্নীয় বা বন্ধু, অথবা

               (গ) জেলা কালেক্টর বা অন্য স্থানীয় এলাকার যেখানে নাবালক সাধারণত বসবাস করে অথবা যেখানে তার সম্পত্তি আছে, অথবা

                    (ঘ) নাবালক যেই শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত সেই শ্রেণীর উপর কর্তৃত্ব আছে এমন কালেক্টর।

       

       ধারা-৯। দরখাস্ত গ্রহণ করায় আদালতের এখতিয়ার :

(১) যদি দরখাস্ত নাবালকের বা প্রতিপাল্যের শরীরের  অভিভাবকত্বের ব্যাপারে হয় তা হলে নাবালক সাধারণত যেখানে বসবাস করে সে এলাকার জেলা আদালতে তা দাখিল করতে হবে।

(২) যদি দরখাস্ত নাবালকের বা প্রতিপাল্যের সম্পত্তির অভিভাবকত্বের ব্যাপারে হয় সে ক্ষেত্রে উহা এক হয় নাবালক যেখানে সাধারণত বসবাস করে বা যেখানে তার সম্পত্তি আছে সেই এলাকার জেলা আদালতে দাখিল করতে হবে।

(৩) নাবালকের বা প্রতিপাল্যের সম্পত্তির অভিভাবকত্বের ব্যাপারে নাবালক যেখানে সাধারণত বাস করে সে এলাকার জেলা আদালত ছাড়া অন্য আদালতে দরখাস্ত করলে, উক্ত আদালত এখতিয়ার সম্বলিত অন্য জেলা আদালত কর্তৃক উক্ত দরখাস্ত আরো ন্যায়ত ও সুবিধাজনকভাবে নিষ্পত্তি হবে বিবেচনা করলে উক্ত দরখাস্ত ফেরত দিতে পারবেন।

 

ধারা-১০। দরখাস্তের ধরন:

 (১) যদি কালেক্টর দরখাস্ত না দেন তা হলে দেওয়ানী কার্যবিধিতে (১৯৮০ সনের ৫নং আইন) আরজি দরখাস্ত ও প্রতিপাদনের জন্য নির্ধারিত নিয়মে ঐ দরখাস্তেও স্বাক্ষর ও প্রতিপাদন হতে এবং যতদূর পর্যন্ত নির্ণয় করা যায়-

 

                 (ক) নাবালকের নাম, লিঙ্গ, জণ্ম তারিখ এবং তাহার সাধারণ বাসস্থান;

                 (খ) নাবালক স্ত্রীলোক হলে সে বিবাহিতা কিনা এবং সেক্ষেত্রে তার স্বামীর নাম এবং বয়স;

     (গ) নাবালকের সম্পত্তির রকম, অবস্থান এবং আনুমানিক মূল্য, যদি থাকে;

     (ঘ) নাবালকের শরীর বা সম্পত্তির জিম্মাদার বা দখলকারের নাম এবং বাসস্থান;

     (ঙ) নাবালকের নিকট আত্নীয় কারা এবং তাদের বাসস্থান;

     (চ) নাবালকের শরীর বা সম্পত্তির বা উভয়ের অভিভাবক নিয়োগ দানে স্বত্বাধিকারী বা আইনগত নিযুক্তি দিতে অধিকারী বলে দাবীকারী কর্তৃক নিযুক্ত হয়েছে কি না;

     (ছ) নাবালকের শরীর বা সম্পত্তির বা উভয়ের অভিভাবকত্বের জন্য কোন সময়ে কোন আদালতে দরখাস্ত করা হয়েছিল কিনা এবং সেক্ষেত্রে কোন আদালতে এবং কি ফলাফল;

     (জ) দরখাস্ত নাবালকের শরীর বা সম্পত্তি বা উভয়ের অভিভাবক নিয়েগ বা ঘোষণার জন্য কি না;

     (ঝ) নাবালকের শরীর বা সম্পত্তির বা উভয়ের জন্য অভিভাবক নিযুক্তি বা ঘোষণার জন্য আবেদন কি না;

     (ঞ) অভিভাবকের নিযুক্তির আবেদন হলে প্রস্তাবিত অভিভাবকের যোগ্যতাসমূহ;

      (ট) কোন ব্যক্তিকে অভিভাবক ঘোষণার দরখাস্ত হলে উক্ত ব্যক্তির দাবীর ভিত্তিসমূহ;

      (ঠ) দরখাস্ত করার কারণসমূহ; এবং

      (ড) অন্যান্য বিবরণ যদি নির্ধারিত থেকে থাকে অথবা দরখাস্তের প্রকৃতির জন্য প্রয়োজন হয়, তা বর্ণনা করবেন।

(২) কালেক্টর কর্তৃক উক্ত দরখাস্ত করা হলে চিঠির আকারে আদালতে প্রেরণ করতে হবে এবং ডাক বা সুবিধাজনক মনে করা তেমন কোন উপায়ে পাঠাতে হবে এবং দরখাস্তে (১) উপধারায় বর্ণিত বিবরণগুলি যতদূর সম্ভব দিতে হবে।

(৩) দরখাস্তে প্রস্তাবিত অভিভাবকের কাজ করার ইচ্ছামুক্ত ঘোষণা থাকতে হবে এবং ঐ ঘোষণা তার স্বাক্ষরিত হতে হবে এবং দু'জন স্বাক্ষী দ্বারা সত্যায়িত হতে হবে।

 

ধারা-১১। দরখাস্ত গ্রহণের পর পদ্ধতি:

 (১) যদি আদালত এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে দরখাস্তটি নিয়ে অগ্রসর হওয়ার যথে কারণ আছে তা হলে উহা শুনানির জন্য একটি দিন ঠিক করবেন এবং দরখাস্ত ও শুনানির তারিখের নোটিশ দিবেন-

            (ক) দেওয়ানী কার্যবিধিতে নির্দেশিত মতে নিম্নোক্ত ব্যক্তিদের উপর জারি করাতে হবে।

                (১) নাবালকের মাতাপিতা যদি তারা বাংলাদেশ বাস করে;

               (২) নাবালকের শরীর বা সম্পত্তি জিম্মাদার বা দখলদার হিসাবে দরখাস্তে বা পত্রে কারো নাম উল্লেখ করা হয়ে থাকলে;

             (৩) উক্ত ব্যক্তি নিজে দরখাস্তকারী হয়ে থাকলে দরখাস্ত বা পত্রে যাকে অভিভাবক নিযুক্ত বা ঘোষণা করার প্রস্তাব করা হয়েছে; এবং

 

(খ) আদালতের কোন সুপ্রকাশ্য স্থানে এবং নাবালকের বাসস্থানে নোটিশ টাঙ্গাতে হবে এবং এই আইন অনুসারে সুপ্রীম কোর্টের কোন বিধি সাপেক্ষে আদালত যেভাবে উপযুক্ত মনে করে সেভাবে প্রচার করতে হবে।

(২) ১০ ধারার (১) উপধারা অনুযায়ী দরখাস্তে উল্লিখিত কোর্ট অব ওয়ার্ডস তত্ত্বাবধান গ্রহণ করতে পারে এই মর্মে সরকার সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দিতে পারে আদালত ও যে কালেক্টরের এলাকায় সাধারণত বসবাস করে এবং সব কালেক্টরের উপর যাদের জেলায় সম্পত্তির অংশবিশেষ অবস্থিত তাদের উপর উপরোল্লিখিত উপায়ে নোটিশ জারি করবেন, কালেক্টরও যেভাবে উপযুক্ত মনে করেন সেভাবে নোটিশ জারি করতে পারবেন।

(৩) (২) উপ-ধারা অনুযায়ী কোন নোটিশ জারির জন্য বা প্রচারের জন্য আদালত বা কালেক্টর কোন খরচ ধার্য করবেন না।

 

ধারা-১২। নাবালকের উপস্থাপনের জন্য এবং সম্পত্তি বা শরীরের মধ্যকালীন সংরক্ষণের জন্য অর্ন্তবর্তীকালীন আদেশ প্রদানের ক্ষমতা:

(১) প্রতিপাল্য বা নাবালককে কোন নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট সময়ে আদালতে নিযুক্ত ব্যক্তির সম্মুখে উপস্থিত করা বা করানোর জন্য তার জিম্মাদার কেহ থেকে থাকলে আদালত তাকে নির্দেশ দিতে পারবেন এবং নাবালকের শরীর বা সম্পত্তির অস্থায়ী জিম্মা সংরক্ষণের জন্য উপযুক্ত বিবেচনা করলে আদেশ দিতে পারবেন।

(২) যদি নাবালক "মেয়ে" হয় যাকে জনসম্মুখে উপস্থিত করান উচিত নয় সেক্ষেত্রে দেশের প্রচলিত প্রথা ও রীতিনীতি অনুসারে তাকে উপস্থিত করবার জন্য (১) উপধারা মোতাবেক আদেশ প্রদান করতে হবে।

(৩) এই ধারার কোন কিছুই ক্ষমতা প্রদান করবে না-

        (ক) স্বামী হওয়ার কারণে অভিভাবক হিসাবে দাবী করে এমন ব্যক্তির জিম্মায় কোন নাবালক মেয়েকে দেয়া যাবে না যদি না ইতোপূর্বেই তার পিতামাতার (যদি থেকে থাকে) সম্মতিতে সে তার জিম্মায় থেকে থাকে; অথবা

        (খ) কোন নাবালকের অস্থায়ী জিম্মাদার এবং সম্পত্তির সংরক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি আইন অধীনে ছাড়া অন্যভাবে কোন সম্পত্তির দখলদারকে বেদখল করবার।

 

ধারা-১৩। আদেশের পূর্বে সাক্ষ্য গ্রহণ:

দরখাস্ত শুনানীর দিন অথবা যথাশীঘ্র সম্ভব তত্পরে দরখাস্তের পক্ষে বিপক্ষে দেয়া সাক্ষ্যসমূহ আদালত শুনবেন।

 

ধারা -১৪। বিভিন্ন আদালতে যুগপত কার্যাবলী (প্রসিডিং):

 (১) অভিভাবক নিয়োগ বা ঘোষণার মামলা একাধিক আদালতে চলতে থাকলে প্রত্যেক আদালত অন্য আদালত বা আদালত সমূহের মামলার ব্যাপারে অবগত হওয়ার পর নিজ আদালতের মামলা স্থগিত রাখবেন।

(২) এরূপ উভয় বা সকল আদালত একই হাইকোর্ট ডিভিশনের অধস্তন হলে প্রত্যেক আদালত উক্ত মামলার ব্যাপারে হাইকোর্ট ডিভিশনের প্রতিবেদন দাখিল করবে এবং হাইকোর্ট ডিভিশন নাবালকের অভিভাবক নিয়োগ বা ঘোষণা সম্পর্কে উক্ত মামলা কোন আদালতে চলবে তা সিদ্ধান্ত নিবেন।

(৩) (১) উপধারা মোতাবেক স্থগিত মামলার ব্যাপারে আদালতগুলি সরকারের নিকট প্রতিবেদন দিবেন এবং এ ব্যাপারে স্ব স্ব সরকারের প্রদত্ত আদেশ অনুসারে পরিচালিত হবেন।

 

ধারা-১৫। বহু অভিভাবক নিযুক্তি বা ঘোষণা:

(১) নাবালক যে আইনের অধীন  উক্ত  আইন যদি তার শরীর, সম্পত্তি অথবা উভয়ের জন্য দুই বা ততোধিক যুগ্ন অভিভাবক অনুমোদন করে আদালত উপযুক্ত মনে করলে তাদেরকে অভিভাবক নিয়োগ বা ঘোষণা করতে পারেন।

(২) ও (৩) উপধারা ১ঌ৭৩ সনের ৮নং আইন দ্বারা বাদ দেয়া হয়েছে।

(৪) নাবালকের শরীর ও সম্পত্তির জন্য ভিন্ন অভিভাবক নিযুক্ত বা ঘোষণা করা যায়।

(৫) নাবালকের অনেক সম্পত্তি থাকলে আদালত উপযুক্ত মনে করলে উক্ত সম্পত্তির প্রত্যেকটির বা অনেকটির জন্য ভিন্ন ভিন্ন অভিভাবক নিযুক্ত করতে পারেন।

 

ধারা-১৬। আদালতের এখতিয়ার বহির্ভূত সম্পত্তির অভিভাবক নিয়োগ বা ঘোষণা:

কোন আদালত উহার স্থানীয়  এখতিয়ার বহির্ভূত সম্পত্তির জন্য কোন অভিভাবক নিয়োগ বা ঘোষণা করলে যে আদালতের এখতিয়ারের মধ্যে   সম্পত্তি অবস্থিত উক্ত আদালত অভিভাবক নিয়োগ বা ঘোষণার জাবেদা নকল উপস্থাপনের পর উক্ত অভিভাবককে বৈধভাবে নিযুক্ত বা ঘোষিত
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:14:36 AM
যৌতুক নিষিদ্ধকরণ আইন, ১৯৮০
[১৯৮০ সালের ৩৫ নং আইন]

বিবাহে যৌতুক প্রদান বা গ্রহণ নিষিদ্ধ করিবার জন্য আইন।যেহেতু বিবাহে যৌতুক প্রদান বা গ্রহণ নিষিদ্ধ করিবার জন্য বিধান করা সমীচীন ; সেইহেতু এতদ্বারা নিম্নরূপ আইন প্রণয়ন করা হইল :

 ১। সংক্ষিপ্ত শিরোনামা ও প্রারম্ভ (Short title and commencement) :

    (১) এই আইনকে যৌতুক নিষিদ্ধকরণ আইন, ১৯৮০ নামে অভিহিত করা হইল।

    (২) সরকার অফিসিয়াল গেজেটে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে যে তারিখ নির্দিষ্ট করিবেন সেই তারিখেই ইহা বলবত হইবে।

 ২। সংজ্ঞা (Definition) : এই আইন বিষয়ে বা প্রসঙ্গে প্রতিকূল কোন কিছু না থাকিলে যৌতুক বলিতে -

    (ক) বিবাহে একপক্ষ কর্তৃক অপর পক্ষকে ; অথবা

    (খ) বিবাহে কোন এক পক্ষের পিতা মাতা কর্তৃক বা অন্য যে কোন ব্যক্তি কর্তৃক অপর পক্ষকে বা অপর কোন ব্যক্তিকে, বিবাহকালে বা বিবাহের পূর্বে বা পরে যেকোন কালে উক্ত পক্ষগণের বিবাহে পণ হিসেবে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রদত্ত বা প্রদান করিতে সম্মত যে কোন সম্পত্তি বা মূল্যবান জামানতকে বুঝায়, তবে যে সকল ব্যক্তির ক্ষেত্রে মুসলিম ব্যক্তিগত আইন (শরিয়ত) প্রযোজ্য সে সকল ব্যক্তির দেনমোহর বা মোহর অন্তর্ভূক্ত করে না।

    ব্যাখ্যা-১। সন্দেহ নিরসনের জন্য এতদ্বারা ঘোষণা করা হইলো যে, কোন বিবাহের সময় বিবাহের কোন পক্ষকে বিবাহের পক্ষ নয় এমন যেকোন ব্যক্তি কর্তৃক অনধিক পাঁচশত টাকা মূল্যের দ্রব্য সামগ্রীর আকারে প্রদত্ত কোন উপহার এই ধারার অর্থানুসারে যৌতুক বলিয়া গণ্য হইবে না, যদি তাহা উক্ত পক্ষের বিবাহের পণ হিসেবে প্রদত্ত না হয়।

    ব্যাখ্যা -২। মূল্যবান জামানত অভিব্যক্তিটি দন্ডবিধির (১৮৬০ সালের ৪৫ নং আইন) ৩০ ধারায় যে অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে সেই একই অর্থ বহন করে।

৩। যৌতুক প্রদান বা গ্রহণের জন্য দন্ড (Penalty for giving or taking dowry) :

এই আইনের কার্যকারিতা আরম্ভ হওয়ার পর যদি কোন ব্যক্তি যৌতুক প্রদান বা গ্রহণ করে অথবা প্রদান বা গ্রহণে প্ররোচনা দেয়, তাহা হইলে সে কারাদন্ডে পাঁচ বত্সর পর্যন্ত হইতে পারে এবং এক বত্সরের কম নহে কারাদন্ডে বা জরিমানায় কিংবা উভয়বিধ দন্ডে দন্ডিত হইবে।

৪। যৌতুক দাবি করিবার জন্য দন্ড (Penalty for giving or taking dowry) :

এই আইনের কার্যকারিতা আরম্ভ হইবার পর যদি কোন ব্যক্তি ক্ষেত্রমতে বর বা কনের পিতামাতা বা অভিভাবকের নিকট হইতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোন যৌতুক দাবি করে, তাহা হইলে সে পাঁচ বত্সর মেয়াদ পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য এবং এক বত্সর মেয়াদের কম নহে, কারাদন্ডে বা জরিমানায় বা উভয়বিধ দন্ডে দন্ডিত হইবে।

৫। যৌতুক প্রদান বা গ্রহণের চুক্তি বাতিল গণ্য হইবে (Agreement for giving or taking dowry to be void) : যৌতুক প্রদান বা গ্রহণের যেকোন চুক্তিপত্র বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে।

৬। স্ত্রী বা তাহার উত্তরাধিকারীগণের উপকারার্থে যৌতুক :

(এই ধারাটি ১ঌ৮৪ সনের ৬৪ নং অধ্যাদেশ দ্বারা বাদ দেওয়া হইয়াছে।)

৭। অপরাধ আমলে লওয়া (Cognizance of offences) :

১৮ঌ৮ সনের ফৌজদারী কার্যবিধিতে (১৮ঌ৮ সনের ৫ নং আইন) যেকোন কিছু থাকা সত্ত্বেও-

    (ক) প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেটের অধঃস্তন কোন আদালতই এই আইনের অধীন কোন অপরাধের বিচার করিবেন না ;

    (খ) কোন আদালতই উক্ত অপরাধের তারিখ হইতে এক বত্সরের মধ্যে অভিযোগ আনয়ন করা ব্যতীত কোন অপরাধ আমলে আনিবেন না;

    (গ) এই আইনের অধীন কোন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত কোন ব্যক্তিকে এই আইন দ্বারা অনুমোদিত যেকোন দন্ড প্রদান করা প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেটের জন্য আইনসম্মত হইবে।

 ৮। অপরাধ আমল অযোগ্য, জামিন অযোগ্য এবং আপোসযোগ্য বলিয়া গণ্য হইবে (Offences to be non-cognizable, non-bailable and compoundable) :

এই আইনের অধীন প্রতিটি অপরাধ আমল অযোগ্য, জামিন অযোগ্য এবং আপোসযোগ্য বলিয়া গণ্য হইবে।

৯। বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা (Power to make Rules) :

    (১) সরকার অফিসিয়াল গেজেটে বিজ্ঞপ্তি মাধ্যমে এই আইনের উদ্দেশ্যাবলী সাধনে বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারেন।
    (২) এই ধারার অধীনে প্রণীত প্রত্যেক বিধি ইহা প্রণীত হওয়ার পর যত্ন তাড়াতাড়ি সম্ভব সংসদে উপস্থাপন করিতে হইবে এবং যে অধিবেশনে উহা উপস্থাপিত হইল সে অধিবেশন শেষ হওয়ার পূর্বেই যদি সংসদ উহাতে কোন পরিবর্তন আনিতে সম্মত হয় বা এই মর্মে সম্মত হয় যে বিধি প্রণয়ন করা হইবে না, তাহা হইলে  বিধি তদনুযায়ী ক্ষেত্রমতে শুধুমাত্র সেই পরিবর্তিত আকারে কার্যকর হইবে অথবা আদৌ কার্যকর হইবে না, এই সাপেক্ষে যে, উপরোক্ত যেকোন পরিবর্তন বা নাকচকরণ উক্ত বিধির অধীনে ইতিপূর্বে করা কোন কিছুর সিদ্ধতার হানি করিবে না।
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:16:11 AM
নারী ও শিশু নির্যাতনমূলক অপরাধসমূহ কঠোরভাবে দমনের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় বিধান প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন।
 

যেহেতু নারী ও শিশু নির্যাতনমূলক অপরাধসমূহ কঠোরভাবে দমনের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয় ; যেহেতু এতদদ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :

 

ধারা-১। সংক্ষিপ্ত শিরোনামা :

 

এই আইন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ নামে অভিহিত হইবে।


ধারা-২। সংজ্ঞা :

 

বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে -

    (ক) " অপরাধ " অর্থ এই আইনের অধীন শাস্তিযোগ্য কোন অপরাধ;

    (খ) " অপহরণ " অর্থ এই বলপ্রয়োগ বা প্রলুব্ধ করিয়া বা ফুসলাইয়া বা ভুল বুঝাইয়া বা ভীতি প্রদর্শন করিয়া কোন স্থান হইতে কোন ব্যক্তিকে অন্যত্র যাইতে বাধ্য করা ;

    (গ) " আটক " অর্থ কোন ব্যক্তিকে তাহার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন স্থানে আটকাইয়া রাখা ;

    (ঘ) " ট্রাইব্যুনাল " অর্থ এই আইনের অধীন গঠিত কোন ট্রাইবু্যনাল ;

    (ঙ) " ধর্ষণ " অর্থ ধারা ৯-এর বিধান সাপেক্ষে, Penal Code, 1860 (Act XLV of 1860) এর Section 375-  এ সংজ্ঞায়িত rape ;

    (চ) " নবজাতক " শিশু অর্থ অনূর্ধ চল্লিশ দিন বয়সের কোন শিশু;

    (ছ) " নারী " অর্থ যে কোন বয়সের নারী ;

    (জ) " মুক্তিপণ " অর্থ আর্থিক সুবিধা বা অন্য যে কোন প্রকারের সুবিধা ;

    (ঝ) " ফৌজদারী কার্যবিধি " অর্থ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898) ;

    (ঞ) " যৌতুক " অর্থ কোন বিবাহের কনে পক্ষ কর্তৃক বিবাহের বর বা বরের পিতা বা মাতা বর পক্ষের অন্য কোন ব্যক্তিকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উক্ত বিবাহের সময় বা তত্পূর্ব বা বৈবাহিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকাকালে, বিবাহ স্থির থাকার শর্তে, বা বিবাহের পণ হিসাবে, প্রদত্ত অথবা প্রদানে সম্মত অর্থ, সামগ্রী বা অন্যবিধ সম্পদ, এবং উক্ত শর্ত বা পণ হিসাবে বর বা বরের পিতা, মাতা বা বর পক্ষের অন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক কনে বা কনে পক্ষের কোন ব্যক্তির নিকট দাবিকৃত অর্থ, সামগ্রী বা অন্যবিধ সম্পদ ;

              [ এখানে ২০০৩ সালে কিছু সংশোধন আনা হয়েছে ]

     

    (ট) " শিশু " অর্থ অনধিক চৌদ্দ বয়সের কোন ব্যক্তি;

     

              [ এখানে ২০০৩ সালে কিছু সংশোধন আনা হয়েছে ]

     (ঠ) " হাইকোর্ট " বিভাগ অর্থ বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট-এর হাইকোর্ট বিভাগ।

ধারা-৩। আইনের প্রাধান্য :

 

আপাতত বলবত্‍ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলী কার্যকর থাকিবে।

 

ধারা-৪। দহনকারী, ইত্যাদি পদার্থ দ্বারা সংঘটিত অপরাধের শাস্তি:

    (১) যদি কোন ব্যক্তি দহনকারী, ক্ষয়কারী অথবা বিষাক্ত পদার্থ দ্বারা কোন শিশু বা নারীর মৃত্যু ঘটানো বা মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (২) যদি কোন ব্যক্তি দহনকারী, ক্ষয়কারী বা বিষাক্ত পদার্থ দ্বারা কোন শিশু বা নারীকে এমনভাবে অাহত করেন যাহার ফলে উক্ত শিশু বা নারীর দৃষ্টিশক্তি বা শ্রবণশক্তি নষ্ট হয় বা শরীরের কোন অঙ্গ, গ্রন্থি বা অংশ বিকৃত বা নষ্ট হয় বা তাহার শরীরের অন্য কোন স্থান আহত হয়, তাহা হইলে উক্ত শিশুর বা নারীর-

            (ক) দৃষ্টিশক্তি বা শ্রবণশক্তি , নষ্ট বা মুখমনন্ডল, স্তন বা যৌনাঙ্গ বিকৃত বা নষ্ট হওয়ার ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে যা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকার অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন ;
            (খ) শরীরের অন্য কোন অঙ্গ, গ্রন্থি বা অংশ বিকৃত বা নষ্ট হওয়ার বা শরীরের কোন স্থানে আঘাত পাওয়ার ক্ষেত্রে, উক্ত ব্যক্তি অনধিক চৌদ্দ বত্সর কিন্তু অন্যূন সাত বত্সরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব পঞ্চাশ হাজার টাকার অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (৩) যদি কোন ব্যক্তি কোন দহনকারী, ক্ষয়কারী অথবা বিষাক্ত পদার্থ কোন শিশু বা নারীর উপর নিক্ষেপ করেন বা করার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি, তাহার উক্তরূপ কার্যের দরুন সংশ্লিষ্ট শিশু বা নারীর শারীরিক, মানসিক বা অন্য কোনভাবে কোন ক্ষতি না হইলেও, অনধিক সাত বত্সর কিন্তু অন্যুন তিন বত্সরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব পঞ্চাশ হাজার টাকার অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (৪) এই ধারার অধীন অর্থদন্ডের অর্থ প্রচলিত আইনের বিধান অনুযায়ী দন্ডিত ব্যক্তির নিকট হইতে বা তাহার বিদ্যমান সম্পদ বা তাহার মৃত্যুর ক্ষেত্রে মৃত্যুর সময় রাখিয়া যাওয়া সম্পদ হইতে আদায় করিয়া অপরাধের দরুন যে ব্যক্তির মৃত্যু ঘটিয়াছে তাহার উত্তরাধিকারীকে বা ক্ষেত্রমত, যেই ব্যক্তি শারীরিক বা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছেন, সেই ব্যক্তিকে বা সেই ব্যক্তির মৃত্যুর ক্ষেত্রে, তাহার উত্তরাধিকারীকে প্রদান করা হইবে।

  ধারা-৫। নারী পাচার, ইত্যাদির শাস্তি :

    (১) যদি কোন ব্যক্তি পতিতাবৃত্তি বা বেআইনী বা নীতিবিগর্হিত কোন কাজে নিয়োজিত করার উদ্দেশ্যে কোন নারীকে বিদেশ হইতে আনয়ন করেন বা বিদেশে পাচার বা প্রেরণ করেন অথবা ক্রয় বা বিক্রয় করেন বা কোন নারীকে ভাড়ায় বা অন্য কোনভাবে নির্যাতনের উদ্দেশ্যে হস্তান্তর করেন, বা অনুরূপ কোন উদ্দেশ্যে কোন নারীকে তাহার দখলে, জিম্মায় বা হেফাজতে রাখেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (২) যদি কোন নারীকে কোন পতিতার নিকট বা পতিতালয়ের রক্ষণাবেক্ষণকারী বা ব্যবস্থাপকের নিকট বিক্রয়, ভাড়া বা অন্য কোনভাবে হস্তান্তর করা হয়, তাহা হইলে যে ব্যক্তি উক্ত নারীকে অনুরূপভাবে হস্তান্তর করিয়াছেন তিনি, ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হইলে, উক্ত নারীকে পতিতাবৃত্তিতে নিয়োজিত করার উদ্দেশ্যে বিক্রয় বা হস্তান্তর করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং তিনি উপ-ধারা (১) -এ উল্লিখিত দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

    (৩) যদি কোন পতিতালয়ের রক্ষণাবেক্ষণকারী বা পতিতালয়ের ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত কোন ব্যক্তি কোন নারীকে কোন নারীকে ক্রয় বা ভাড়া করেন বা অন্য কোনভাবে কোন নারীকে দখলে নেন বা জিম্মায় রাখেন, তাহা হইলে তিনি, ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হইলে, উক্ত নারীকে পতিতা  হিসাবে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে ক্রয় বা ভাড়া করিয়াছেন বা দখলে বা জিম্মায় রাখিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং উপ-ধারা (১) -এ উল্লিখিত দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:17:23 AM
ধারা-৬। শিশুপাচার, ইত্যাদির শাস্তি :

    (১) যদি কোন ব্যক্তি কোন বেআইনী বা নীতিবিগর্হিত উদ্দেশ্যে কোন শিশুকে বিদেশ হইতে আনয়ন করেন বা বিদেশ প্রেরণ বা পাচার করেন অথবা ক্রয় বা বিক্রয় করেন বা উক্তরূপ কোন উদ্দেশ্যে কোন শিশুকে নিজ দখলে, জিম্মায় বা হেফাজতে রাখেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (২) যদি কোন ব্যক্তি কোন নবজাতক শিশুকে হাসপাতাল, শিশু বা মাতৃসদন নার্সিং হোম, ক্লিনিক ইত্যাদি বা সংশ্লিষ্ট শিশুর অভিভাবকের হেফাজত হইতে চুরি করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি উপ-ধারা (১) -এ উল্লিখিত দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

ধারা-৭। নারী ও শিশু অপহরণের শাস্তি :

 

যদি কোন ব্যক্তি ধারা ৫-এ উল্লিখিত কোন অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশ্যে ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে কোন নারী বা শিশুকে অপহরণ করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ডে বা অন্যূন চৌদ্দ বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।
 

ধারা-৮। মুক্তিপণ আদায়ের শাস্তি :

 

যদি কোন ব্যক্তি মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে কোন নারী বা শিশুকে আটক করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে হইবেন।এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।
 

ধারা-৯। ধর্ষণ, ধর্ষণজনিত কারণে মৃত্যু, ইত্যাদির শাস্তি:

    (১) যদি কোন পুরুষ কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তাহা হইলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে  দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (২) যদি কোন ব্যক্তি কর্তৃক ধর্ষণ বা উক্ত ধর্ষণ পরবর্তী তাহার নিষেধ কার্যকলাপের ফলে ধর্ষিতা নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অন্যূন এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (৩) যদি একাধিক ব্যক্তি দলবদ্ধভাবে কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ফলে উক্ত নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে বা তিনি আহত হন, তাহা হইলে ঐ দলের প্রত্যেক ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অন্যূন এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (৪) যদি কোন ব্যক্তি কোন নারী বা শিশুকে-

    (ক) ধর্ষণ করিয়া মৃত্যু ঘটানোর বা আহত করার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন ;

    (খ) ধর্ষণের চেষ্টা করেন, তাহা হইলে ব্যক্তি অনধিক দশ বত্‍‌সর কিন্তু অন্যূন পাঁচ বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (৫) যদি পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন সময়ে নারী ধর্ষিতা হন, তাহা হইলে যাহাদের হেফাজতে থাকাকালীন উক্তরূপ ধর্ষণ সংঘটিত হইয়াছে, সেই ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণ ধর্ষিতা নারীর হেফাজতের জন্য সরাসরিভাবে দায়ী ছিলেন, তিনি বা তাহারা প্রত্যেকে, ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হইলে, হেফাজতের ব্যর্থতার জন্য, অনধিক দশ বত্সর কিন্তু অন্যূন পাঁচ বত্সরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অন্যূন দশ হাজার টাকা অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

     

     [ এই ধারাটির সাথে ২০০৩ সালে ৯ ক ধারা সংযোজিত করা হয়েছে  এবং কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে ]

ধারা-১০। যৌন পীড়ন, ইত্যাদির দন্ড :

    (১) কোন পুরুষ অবৈধভাবে তাহার যৌন কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে তাহার শরীরের যে কোন অঙ্গ বা কোন বস্তু দ্বারা কোন নারী বা শিশুর যৌনাঙ্গ বা অন্য কোন অঙ্গ স্পর্শ করেন তাহা হইলে তাহার এই কাজ হইবে যৌন পীড়ণ।তজ্জন্য উক্ত পুরুষ অনধিক দশ বত্সর কিন্তু অন্যূন তিন বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

     

    (২) কোন পুরুষ অবৈধভাবে তাহার যৌন কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে কোন নারীর শ্লীলতাহানি করিলে বা অশোন অঙ্গভঙ্গি করিলে তাহার এ্ই কাজ হইবে যৌন পীড়ণ এবং তজ্জন্য উক্ত পুরুষ অনধিক সাত বত্সর কিন্তু অন্যূন দুই বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

     

                   [ এই ধারাটি ২০০৩ সালে সংশোধন করা হয়েছে ]
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:19:27 AM
ধারা-১১।যৌতুকের জন্য মৃত্যু ঘটানো, ইত্যাদির শাস্তি :

    যদি কোন নারীর স্বামী অথবা স্বামীর পিতা, মাতা, অভিভাবক, আত্নীয় বা স্বামীর পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি যৌতুকের জন্য উক্ত নারীর মৃত্যু ঘটান বা মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টা করেন, উক্ত নারীকে আহত করেন বা আহত করার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত স্বামী, স্বামীর পিতা, মাতা, অভিভাবক, আত্নীয় বা ব্যক্তি
    (ক) মৃত্যু ঘটানোর জন্য মৃত্যুদন্ডে ঘটানোর চেষ্টার জন্য যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং উভয়  ক্ষেত্রে উক্ত দন্ডের অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন ;

    (খ) আহত করার জন্য যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে বা আহত করার চেষ্টা করার জন্য অনধিক চৌদ্দ বত্সর কিন্তু অন্যূন পাঁচ বত্সরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং উভয় ক্ষেত্রে উক্ত দন্ডের অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

     

     [ এই ধারাটি ২০০৩ সালে সংশোধন করা হয়েছে ]

ধারা-১২। ভিক্ষাবৃত্তি, ইত্যাদির উদ্দেশ্যে শিশুকে অঙ্গহানি করার শাস্তি :

    যদি কোন ব্যক্তি ভিক্ষাবৃত্তি বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রির উদ্দেশ্যে কোন শিশুর হাত, পা, চক্ষু বা অন্য কোন অঙ্গ বিনষ্ট করেন বা অন্য কোনভাবে বিকলাঙ্গ বা বিকৃত করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

ধারা-১৩। ধর্ষণের ফলশ্রুতিতে জণ্মলাভকারী শিশু সংক্রান্ত বিধান :

    (১) অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধর্ষনের কারণে কোন সন্তান জণ্মলাভ করিলে -

    (ক) উক্ত সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব ধর্ষণকারী পালন করিবেন ;

    (খ) উক্ত সন্তান জণ্মলাভের পর সন্তানটি কাহার তত্ত্বাবধানে থাকিবে এবং তাহার ভরণ-পোষণ বাবদ ধর্ষণকারী কি পরিমাণ খরচ তত্ত্বাবধানকারীকে প্রদান করিবে তাহা ট্রাইব্যুনাল নির্ধারণ করিয়া দিতে পারিবে ;

    (গ) উক্ত সন্তান পঙ্গু না হইলে, এই খরচ পুত্র সন্তানের ক্ষেত্রে ২১ বত্সর পর্যন্ত এবং কন্যা সন্তানের ক্ষেত্রে তাহার বিবাহ না হওয়া পর্যন্ত এবং পঙ্গু সন্তানের ক্ষেত্রে তিনি স্বীয় ভরণ-পোষণের যোগ্যতা অর্জন না করা পর্যন্ত প্রদেয় হইবে।

                        [ এই ধারাটিতে কিছু সংশোধন আনা হয়েছে ২০০৩ সালে ]                   

 

ধারা-১৪। সংবাদ মাধ্যমে নির্যাতিতা নারী ও শিশুর পরিচয় প্রকাশের ব্যাপারে বাধা-নিষেধ :

    (১) এই আইনে বর্ণিত অপরাধের শিকার হইয়াছেন এইরূপ নারী বা শিশুর ব্যাপারে সংঘটিত অপরাধ বা তত্সম্পর্কিত আইনগত কার্যধারার সংবাদ বা তথ্য বা নাম-ঠিকানা বা অন্যবিধ তথ্য কোন সংবাদপত্রে বা অন্য কোন সংবাদ মাধ্যমে এমনভাবে প্রকাশ বা পরিবেশন করা যাইবে যাহাতে উক্ত নারী বা শিশুর পরিচয় প্রকাশ না পায়।

    (২) উপ-ধারা (১)-এর বিধান লঙ্ঘনের জন্য দায়ী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের প্রত্যেকে অনধিক দুই বত্সর কারাদন্ডে বা অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

     

ধারা-১৫। ভবষিত্‍ সম্পত্তি হইতে অর্থদন্ড আদায় :

    এই আইনের ধারা ৪ হইতে ১৪ পর্যন্ত ধারাসমূহে উল্লিখিত অপরাধের জন্য ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক আরোপিত অর্থদন্ডকে, প্রয়োজনবোধে, ট্রাইব্যুনাল অপরাধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে গণ্য করিতে পারিবে এবং অর্থদন্ড বা ক্ষতিপূরণের অর্থ দন্ডিত ব্যক্তির নিকট হইতে বা তাহার বিদ্যমান সম্পদ হইতে আদায় করা সম্ভব না হইলে, ভবিষ্যতে তিনি যে সম্পদের মালিক বা অধিকারী হইবেন সেই সম্পদ হইতে আদায়যোগ্য হইবে এবং এইরূপ ক্ষেত্রে উক্ত সম্পদের উপর অন্যান্য দাবি অপেক্ষা উক্ত অর্থদন্ড বা ক্ষতিপূরণের দাবি প্রাধান্য পাইবে।
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:21:22 AM
নারী ও শিশু নির্যাতনমূলক অপরাধসমূহ কঠোরভাবে দমনের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় বিধান প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন।
 

যেহেতু নারী ও শিশু নির্যাতনমূলক অপরাধসমূহ কঠোরভাবে দমনের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয় ; যেহেতু এতদদ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :

 

ধারা-১। সংক্ষিপ্ত শিরোনামা :

 

এই আইন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ নামে অভিহিত হইবে।


ধারা-২। সংজ্ঞা :

 

বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে -

    (ক) " অপরাধ " অর্থ এই আইনের অধীন শাস্তিযোগ্য কোন অপরাধ;

    (খ) " অপহরণ " অর্থ এই বলপ্রয়োগ বা প্রলুব্ধ করিয়া বা ফুসলাইয়া বা ভুল বুঝাইয়া বা ভীতি প্রদর্শন করিয়া কোন স্থান হইতে কোন ব্যক্তিকে অন্যত্র যাইতে বাধ্য করা ;

    (গ) " আটক " অর্থ কোন ব্যক্তিকে তাহার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন স্থানে আটকাইয়া রাখা ;

    (ঘ) " ট্রাইব্যুনাল " অর্থ এই আইনের অধীন গঠিত কোন ট্রাইবু্যনাল ;

    (ঙ) " ধর্ষণ " অর্থ ধারা ৯-এর বিধান সাপেক্ষে, Penal Code, 1860 (Act XLV of 1860) এর Section 375-  এ সংজ্ঞায়িত rape ;

    (চ) " নবজাতক " শিশু অর্থ অনূর্ধ চল্লিশ দিন বয়সের কোন শিশু;

    (ছ) " নারী " অর্থ যে কোন বয়সের নারী ;

    (জ) " মুক্তিপণ " অর্থ আর্থিক সুবিধা বা অন্য যে কোন প্রকারের সুবিধা ;

    (ঝ) " ফৌজদারী কার্যবিধি " অর্থ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898) ;

    (ঞ) " যৌতুক " অর্থ কোন বিবাহের কনে পক্ষ কর্তৃক বিবাহের বর বা বরের পিতা বা মাতা বর পক্ষের অন্য কোন ব্যক্তিকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উক্ত বিবাহের সময় বা তত্পূর্ব বা বৈবাহিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকাকালে, বিবাহ স্থির থাকার শর্তে, বা বিবাহের পণ হিসাবে, প্রদত্ত অথবা প্রদানে সম্মত অর্থ, সামগ্রী বা অন্যবিধ সম্পদ, এবং উক্ত শর্ত বা পণ হিসাবে বর বা বরের পিতা, মাতা বা বর পক্ষের অন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক কনে বা কনে পক্ষের কোন ব্যক্তির নিকট দাবিকৃত অর্থ, সামগ্রী বা অন্যবিধ সম্পদ ;

              [ এখানে ২০০৩ সালে কিছু সংশোধন আনা হয়েছে ]

     

    (ট) " শিশু " অর্থ অনধিক চৌদ্দ বয়সের কোন ব্যক্তি;

     

              [ এখানে ২০০৩ সালে কিছু সংশোধন আনা হয়েছে ]

     (ঠ) " হাইকোর্ট " বিভাগ অর্থ বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট-এর হাইকোর্ট বিভাগ।

ধারা-৩। আইনের প্রাধান্য :

 

আপাতত বলবত্‍ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলী কার্যকর থাকিবে।

 

ধারা-৪। দহনকারী, ইত্যাদি পদার্থ দ্বারা সংঘটিত অপরাধের শাস্তি:

    (১) যদি কোন ব্যক্তি দহনকারী, ক্ষয়কারী অথবা বিষাক্ত পদার্থ দ্বারা কোন শিশু বা নারীর মৃত্যু ঘটানো বা মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (২) যদি কোন ব্যক্তি দহনকারী, ক্ষয়কারী বা বিষাক্ত পদার্থ দ্বারা কোন শিশু বা নারীকে এমনভাবে অাহত করেন যাহার ফলে উক্ত শিশু বা নারীর দৃষ্টিশক্তি বা শ্রবণশক্তি নষ্ট হয় বা শরীরের কোন অঙ্গ, গ্রন্থি বা অংশ বিকৃত বা নষ্ট হয় বা তাহার শরীরের অন্য কোন স্থান আহত হয়, তাহা হইলে উক্ত শিশুর বা নারীর-

            (ক) দৃষ্টিশক্তি বা শ্রবণশক্তি , নষ্ট বা মুখমনন্ডল, স্তন বা যৌনাঙ্গ বিকৃত বা নষ্ট হওয়ার ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে যা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকার অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন ;
            (খ) শরীরের অন্য কোন অঙ্গ, গ্রন্থি বা অংশ বিকৃত বা নষ্ট হওয়ার বা শরীরের কোন স্থানে আঘাত পাওয়ার ক্ষেত্রে, উক্ত ব্যক্তি অনধিক চৌদ্দ বত্সর কিন্তু অন্যূন সাত বত্সরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব পঞ্চাশ হাজার টাকার অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (৩) যদি কোন ব্যক্তি কোন দহনকারী, ক্ষয়কারী অথবা বিষাক্ত পদার্থ কোন শিশু বা নারীর উপর নিক্ষেপ করেন বা করার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি, তাহার উক্তরূপ কার্যের দরুন সংশ্লিষ্ট শিশু বা নারীর শারীরিক, মানসিক বা অন্য কোনভাবে কোন ক্ষতি না হইলেও, অনধিক সাত বত্সর কিন্তু অন্যুন তিন বত্সরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব পঞ্চাশ হাজার টাকার অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (৪) এই ধারার অধীন অর্থদন্ডের অর্থ প্রচলিত আইনের বিধান অনুযায়ী দন্ডিত ব্যক্তির নিকট হইতে বা তাহার বিদ্যমান সম্পদ বা তাহার মৃত্যুর ক্ষেত্রে মৃত্যুর সময় রাখিয়া যাওয়া সম্পদ হইতে আদায় করিয়া অপরাধের দরুন যে ব্যক্তির মৃত্যু ঘটিয়াছে তাহার উত্তরাধিকারীকে বা ক্ষেত্রমত, যেই ব্যক্তি শারীরিক বা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছেন, সেই ব্যক্তিকে বা সেই ব্যক্তির মৃত্যুর ক্ষেত্রে, তাহার উত্তরাধিকারীকে প্রদান করা হইবে।

  ধারা-৫। নারী পাচার, ইত্যাদির শাস্তি :

    (১) যদি কোন ব্যক্তি পতিতাবৃত্তি বা বেআইনী বা নীতিবিগর্হিত কোন কাজে নিয়োজিত করার উদ্দেশ্যে কোন নারীকে বিদেশ হইতে আনয়ন করেন বা বিদেশে পাচার বা প্রেরণ করেন অথবা ক্রয় বা বিক্রয় করেন বা কোন নারীকে ভাড়ায় বা অন্য কোনভাবে নির্যাতনের উদ্দেশ্যে হস্তান্তর করেন, বা অনুরূপ কোন উদ্দেশ্যে কোন নারীকে তাহার দখলে, জিম্মায় বা হেফাজতে রাখেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (২) যদি কোন নারীকে কোন পতিতার নিকট বা পতিতালয়ের রক্ষণাবেক্ষণকারী বা ব্যবস্থাপকের নিকট বিক্রয়, ভাড়া বা অন্য কোনভাবে হস্তান্তর করা হয়, তাহা হইলে যে ব্যক্তি উক্ত নারীকে অনুরূপভাবে হস্তান্তর করিয়াছেন তিনি, ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হইলে, উক্ত নারীকে পতিতাবৃত্তিতে নিয়োজিত করার উদ্দেশ্যে বিক্রয় বা হস্তান্তর করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং তিনি উপ-ধারা (১) -এ উল্লিখিত দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

    (৩) যদি কোন পতিতালয়ের রক্ষণাবেক্ষণকারী বা পতিতালয়ের ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত কোন ব্যক্তি কোন নারীকে কোন নারীকে ক্রয় বা ভাড়া করেন বা অন্য কোনভাবে কোন নারীকে দখলে নেন বা জিম্মায় রাখেন, তাহা হইলে তিনি, ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হইলে, উক্ত নারীকে পতিতা  হিসাবে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে ক্রয় বা ভাড়া করিয়াছেন বা দখলে বা জিম্মায় রাখিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং উপ-ধারা (১) -এ উল্লিখিত দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

ধারা-৬। শিশুপাচার, ইত্যাদির শাস্তি :

    (১) যদি কোন ব্যক্তি কোন বেআইনী বা নীতিবিগর্হিত উদ্দেশ্যে কোন শিশুকে বিদেশ হইতে আনয়ন করেন বা বিদেশ প্রেরণ বা পাচার করেন অথবা ক্রয় বা বিক্রয় করেন বা উক্তরূপ কোন উদ্দেশ্যে কোন শিশুকে নিজ দখলে, জিম্মায় বা হেফাজতে রাখেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (২) যদি কোন ব্যক্তি কোন নবজাতক শিশুকে হাসপাতাল, শিশু বা মাতৃসদন নার্সিং হোম, ক্লিনিক ইত্যাদি বা সংশ্লিষ্ট শিশুর অভিভাবকের হেফাজত হইতে চুরি করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি উপ-ধারা (১) -এ উল্লিখিত দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

ধারা-৭। নারী ও শিশু অপহরণের শাস্তি :

 

যদি কোন ব্যক্তি ধারা ৫-এ উল্লিখিত কোন অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশ্যে ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে কোন নারী বা শিশুকে অপহরণ করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ডে বা অন্যূন চৌদ্দ বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।
 

ধারা-৮। মুক্তিপণ আদায়ের শাস্তি :

 

যদি কোন ব্যক্তি মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে কোন নারী বা শিশুকে আটক করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে হইবেন।এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।
 

ধারা-৯। ধর্ষণ, ধর্ষণজনিত কারণে মৃত্যু, ইত্যাদির শাস্তি:

    (১) যদি কোন পুরুষ কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তাহা হইলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে  দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (২) যদি কোন ব্যক্তি কর্তৃক ধর্ষণ বা উক্ত ধর্ষণ পরবর্তী তাহার নিষেধ কার্যকলাপের ফলে ধর্ষিতা নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অন্যূন এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (৩) যদি একাধিক ব্যক্তি দলবদ্ধভাবে কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ফলে উক্ত নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে বা তিনি আহত হন, তাহা হইলে ঐ দলের প্রত্যেক ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অন্যূন এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (৪) যদি কোন ব্যক্তি কোন নারী বা শিশুকে-

    (ক) ধর্ষণ করিয়া মৃত্যু ঘটানোর বা আহত করার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন ;

    (খ) ধর্ষণের চেষ্টা করেন, তাহা হইলে ব্যক্তি অনধিক দশ বত্‍‌সর কিন্তু অন্যূন পাঁচ বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (৫) যদি পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন সময়ে নারী ধর্ষিতা হন, তাহা হইলে যাহাদের হেফাজতে থাকাকালীন উক্তরূপ ধর্ষণ সংঘটিত হইয়াছে, সেই ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণ ধর্ষিতা নারীর হেফাজতের জন্য সরাসরিভাবে দায়ী ছিলেন, তিনি বা তাহারা প্রত্যেকে, ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হইলে, হেফাজতের ব্যর্থতার জন্য, অনধিক দশ বত্সর কিন্তু অন্যূন পাঁচ বত্সরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অন্যূন দশ হাজার টাকা অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

     

     [ এই ধারাটির সাথে ২০০৩ সালে ৯ ক ধারা সংযোজিত করা হয়েছে  এবং কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে ]

ধারা-১০। যৌন পীড়ন, ইত্যাদির দন্ড :

    (১) কোন পুরুষ অবৈধভাবে তাহার যৌন কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে তাহার শরীরের যে কোন অঙ্গ বা কোন বস্তু দ্বারা কোন নারী বা শিশুর যৌনাঙ্গ বা অন্য কোন অঙ্গ স্পর্শ করেন তাহা হইলে তাহার এই কাজ হইবে যৌন পীড়ণ।তজ্জন্য উক্ত পুরুষ অনধিক দশ বত্সর কিন্তু অন্যূন তিন বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

     

    (২) কোন পুরুষ অবৈধভাবে তাহার যৌন কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে কোন নারীর শ্লীলতাহানি করিলে বা অশোন অঙ্গভঙ্গি করিলে তাহার এ্ই কাজ হইবে যৌন পীড়ণ এবং তজ্জন্য উক্ত পুরুষ অনধিক সাত বত্সর কিন্তু অন্যূন দুই বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

     

                   [ এই ধারাটি ২০০৩ সালে সংশোধন করা হয়েছে ]

 

ধারা-১১।যৌতুকের জন্য মৃত্যু ঘটানো, ইত্যাদির শাস্তি :

    যদি কোন নারীর স্বামী অথবা স্বামীর পিতা, মাতা, অভিভাবক, আত্নীয় বা স্বামীর পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি যৌতুকের জন্য উক্ত নারীর মৃত্যু ঘটান বা মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টা করেন, উক্ত নারীকে আহত করেন বা আহত করার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত স্বামী, স্বামীর পিতা, মাতা, অভিভাবক, আত্নীয় বা ব্যক্তি
    (ক) মৃত্যু ঘটানোর জন্য মৃত্যুদন্ডে ঘটানোর চেষ্টার জন্য যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং উভয়  ক্ষেত্রে উক্ত দন্ডের অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন ;

    (খ) আহত করার জন্য যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে বা আহত করার চেষ্টা করার জন্য অনধিক চৌদ্দ বত্সর কিন্তু অন্যূন পাঁচ বত্সরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং উভয় ক্ষেত্রে উক্ত দন্ডের অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

     

     [ এই ধারাটি ২০০৩ সালে সংশোধন করা হয়েছে ]

ধারা-১২। ভিক্ষাবৃত্তি, ইত্যাদির উদ্দেশ্যে শিশুকে অঙ্গহানি করার শাস্তি :

    যদি কোন ব্যক্তি ভিক্ষাবৃত্তি বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রির উদ্দেশ্যে কোন শিশুর হাত, পা, চক্ষু বা অন্য কোন অঙ্গ বিনষ্ট করেন বা অন্য কোনভাবে বিকলাঙ্গ বা বিকৃত করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

ধারা-১৩। ধর্ষণের ফলশ্রুতিতে জণ্মলাভকারী শিশু সংক্রান্ত বিধান :

    (১) অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধর্ষনের কারণে কোন সন্তান জণ্মলাভ করিলে -

    (ক) উক্ত সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব ধর্ষণকারী পালন করিবেন ;

    (খ) উক্ত সন্তান জণ্মলাভের পর সন্তানটি কাহার তত্ত্বাবধানে থাকিবে এবং তাহার ভরণ-পোষণ বাবদ ধর্ষণকারী কি পরিমাণ খরচ তত্ত্বাবধানকারীকে প্রদান করিবে তাহা ট্রাইব্যুনাল নির্ধারণ করিয়া দিতে পারিবে ;

    (গ) উক্ত সন্তান পঙ্গু না হইলে, এই খরচ পুত্র সন্তানের ক্ষেত্রে ২১ বত্সর পর্যন্ত এবং কন্যা সন্তানের ক্ষেত্রে তাহার বিবাহ না হওয়া পর্যন্ত এবং পঙ্গু সন্তানের ক্ষেত্রে তিনি স্বীয় ভরণ-পোষণের যোগ্যতা অর্জন না করা পর্যন্ত প্রদেয় হইবে।

                        [ এই ধারাটিতে কিছু সংশোধন আনা হয়েছে ২০০৩ সালে ]                   

 

ধারা-১৪। সংবাদ মাধ্যমে নির্যাতিতা নারী ও শিশুর পরিচয় প্রকাশের ব্যাপারে বাধা-নিষেধ :

    (১) এই আইনে বর্ণিত অপরাধের শিকার হইয়াছেন এইরূপ নারী বা শিশুর ব্যাপারে সংঘটিত অপরাধ বা তত্সম্পর্কিত আইনগত কার্যধারার সংবাদ বা তথ্য বা নাম-ঠিকানা বা অন্যবিধ তথ্য কোন সংবাদপত্রে বা অন্য কোন সংবাদ মাধ্যমে এমনভাবে প্রকাশ বা পরিবেশন করা যাইবে যাহাতে উক্ত নারী বা শিশুর পরিচয় প্রকাশ না পায়।

    (২) উপ-ধারা (১)-এর বিধান লঙ্ঘনের জন্য দায়ী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের প্রত্যেকে অনধিক দুই বত্সর কারাদন্ডে বা অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

     

ধারা-১৫। ভবষিত্‍ সম্পত্তি হইতে অর্থদন্ড আদায় :
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:23:35 AM
নারী ও শিশু নির্যাতনমূলক অপরাধসমূহ কঠোরভাবে দমনের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় বিধান প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন।
 

যেহেতু নারী ও শিশু নির্যাতনমূলক অপরাধসমূহ কঠোরভাবে দমনের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয় ; যেহেতু এতদদ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :

 

ধারা-১। সংক্ষিপ্ত শিরোনামা :

 

এই আইন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ নামে অভিহিত হইবে।


ধারা-২। সংজ্ঞা :

 

বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে -

    (ক) " অপরাধ " অর্থ এই আইনের অধীন শাস্তিযোগ্য কোন অপরাধ;

    (খ) " অপহরণ " অর্থ এই বলপ্রয়োগ বা প্রলুব্ধ করিয়া বা ফুসলাইয়া বা ভুল বুঝাইয়া বা ভীতি প্রদর্শন করিয়া কোন স্থান হইতে কোন ব্যক্তিকে অন্যত্র যাইতে বাধ্য করা ;

    (গ) " আটক " অর্থ কোন ব্যক্তিকে তাহার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন স্থানে আটকাইয়া রাখা ;

    (ঘ) " ট্রাইব্যুনাল " অর্থ এই আইনের অধীন গঠিত কোন ট্রাইবু্যনাল ;

    (ঙ) " ধর্ষণ " অর্থ ধারা ৯-এর বিধান সাপেক্ষে, Penal Code, 1860 (Act XLV of 1860) এর Section 375-  এ সংজ্ঞায়িত rape ;

    (চ) " নবজাতক " শিশু অর্থ অনূর্ধ চল্লিশ দিন বয়সের কোন শিশু;

    (ছ) " নারী " অর্থ যে কোন বয়সের নারী ;

    (জ) " মুক্তিপণ " অর্থ আর্থিক সুবিধা বা অন্য যে কোন প্রকারের সুবিধা ;

    (ঝ) " ফৌজদারী কার্যবিধি " অর্থ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898) ;

    (ঞ) " যৌতুক " অর্থ কোন বিবাহের কনে পক্ষ কর্তৃক বিবাহের বর বা বরের পিতা বা মাতা বর পক্ষের অন্য কোন ব্যক্তিকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উক্ত বিবাহের সময় বা তত্পূর্ব বা বৈবাহিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকাকালে, বিবাহ স্থির থাকার শর্তে, বা বিবাহের পণ হিসাবে, প্রদত্ত অথবা প্রদানে সম্মত অর্থ, সামগ্রী বা অন্যবিধ সম্পদ, এবং উক্ত শর্ত বা পণ হিসাবে বর বা বরের পিতা, মাতা বা বর পক্ষের অন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক কনে বা কনে পক্ষের কোন ব্যক্তির নিকট দাবিকৃত অর্থ, সামগ্রী বা অন্যবিধ সম্পদ ;

              [ এখানে ২০০৩ সালে কিছু সংশোধন আনা হয়েছে ]

     

    (ট) " শিশু " অর্থ অনধিক চৌদ্দ বয়সের কোন ব্যক্তি;

     

              [ এখানে ২০০৩ সালে কিছু সংশোধন আনা হয়েছে ]

     (ঠ) " হাইকোর্ট " বিভাগ অর্থ বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট-এর হাইকোর্ট বিভাগ।

ধারা-৩। আইনের প্রাধান্য :

 

আপাতত বলবত্‍ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলী কার্যকর থাকিবে।

 

ধারা-৪। দহনকারী, ইত্যাদি পদার্থ দ্বারা সংঘটিত অপরাধের শাস্তি:

    (১) যদি কোন ব্যক্তি দহনকারী, ক্ষয়কারী অথবা বিষাক্ত পদার্থ দ্বারা কোন শিশু বা নারীর মৃত্যু ঘটানো বা মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (২) যদি কোন ব্যক্তি দহনকারী, ক্ষয়কারী বা বিষাক্ত পদার্থ দ্বারা কোন শিশু বা নারীকে এমনভাবে অাহত করেন যাহার ফলে উক্ত শিশু বা নারীর দৃষ্টিশক্তি বা শ্রবণশক্তি নষ্ট হয় বা শরীরের কোন অঙ্গ, গ্রন্থি বা অংশ বিকৃত বা নষ্ট হয় বা তাহার শরীরের অন্য কোন স্থান আহত হয়, তাহা হইলে উক্ত শিশুর বা নারীর-

            (ক) দৃষ্টিশক্তি বা শ্রবণশক্তি , নষ্ট বা মুখমনন্ডল, স্তন বা যৌনাঙ্গ বিকৃত বা নষ্ট হওয়ার ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে যা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকার অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন ;
            (খ) শরীরের অন্য কোন অঙ্গ, গ্রন্থি বা অংশ বিকৃত বা নষ্ট হওয়ার বা শরীরের কোন স্থানে আঘাত পাওয়ার ক্ষেত্রে, উক্ত ব্যক্তি অনধিক চৌদ্দ বত্সর কিন্তু অন্যূন সাত বত্সরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব পঞ্চাশ হাজার টাকার অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (৩) যদি কোন ব্যক্তি কোন দহনকারী, ক্ষয়কারী অথবা বিষাক্ত পদার্থ কোন শিশু বা নারীর উপর নিক্ষেপ করেন বা করার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি, তাহার উক্তরূপ কার্যের দরুন সংশ্লিষ্ট শিশু বা নারীর শারীরিক, মানসিক বা অন্য কোনভাবে কোন ক্ষতি না হইলেও, অনধিক সাত বত্সর কিন্তু অন্যুন তিন বত্সরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব পঞ্চাশ হাজার টাকার অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (৪) এই ধারার অধীন অর্থদন্ডের অর্থ প্রচলিত আইনের বিধান অনুযায়ী দন্ডিত ব্যক্তির নিকট হইতে বা তাহার বিদ্যমান সম্পদ বা তাহার মৃত্যুর ক্ষেত্রে মৃত্যুর সময় রাখিয়া যাওয়া সম্পদ হইতে আদায় করিয়া অপরাধের দরুন যে ব্যক্তির মৃত্যু ঘটিয়াছে তাহার উত্তরাধিকারীকে বা ক্ষেত্রমত, যেই ব্যক্তি শারীরিক বা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছেন, সেই ব্যক্তিকে বা সেই ব্যক্তির মৃত্যুর ক্ষেত্রে, তাহার উত্তরাধিকারীকে প্রদান করা হইবে।

  ধারা-৫। নারী পাচার, ইত্যাদির শাস্তি :

    (১) যদি কোন ব্যক্তি পতিতাবৃত্তি বা বেআইনী বা নীতিবিগর্হিত কোন কাজে নিয়োজিত করার উদ্দেশ্যে কোন নারীকে বিদেশ হইতে আনয়ন করেন বা বিদেশে পাচার বা প্রেরণ করেন অথবা ক্রয় বা বিক্রয় করেন বা কোন নারীকে ভাড়ায় বা অন্য কোনভাবে নির্যাতনের উদ্দেশ্যে হস্তান্তর করেন, বা অনুরূপ কোন উদ্দেশ্যে কোন নারীকে তাহার দখলে, জিম্মায় বা হেফাজতে রাখেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (২) যদি কোন নারীকে কোন পতিতার নিকট বা পতিতালয়ের রক্ষণাবেক্ষণকারী বা ব্যবস্থাপকের নিকট বিক্রয়, ভাড়া বা অন্য কোনভাবে হস্তান্তর করা হয়, তাহা হইলে যে ব্যক্তি উক্ত নারীকে অনুরূপভাবে হস্তান্তর করিয়াছেন তিনি, ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হইলে, উক্ত নারীকে পতিতাবৃত্তিতে নিয়োজিত করার উদ্দেশ্যে বিক্রয় বা হস্তান্তর করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং তিনি উপ-ধারা (১) -এ উল্লিখিত দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

    (৩) যদি কোন পতিতালয়ের রক্ষণাবেক্ষণকারী বা পতিতালয়ের ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত কোন ব্যক্তি কোন নারীকে কোন নারীকে ক্রয় বা ভাড়া করেন বা অন্য কোনভাবে কোন নারীকে দখলে নেন বা জিম্মায় রাখেন, তাহা হইলে তিনি, ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হইলে, উক্ত নারীকে পতিতা  হিসাবে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে ক্রয় বা ভাড়া করিয়াছেন বা দখলে বা জিম্মায় রাখিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং উপ-ধারা (১) -এ উল্লিখিত দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

ধারা-৬। শিশুপাচার, ইত্যাদির শাস্তি :

    (১) যদি কোন ব্যক্তি কোন বেআইনী বা নীতিবিগর্হিত উদ্দেশ্যে কোন শিশুকে বিদেশ হইতে আনয়ন করেন বা বিদেশ প্রেরণ বা পাচার করেন অথবা ক্রয় বা বিক্রয় করেন বা উক্তরূপ কোন উদ্দেশ্যে কোন শিশুকে নিজ দখলে, জিম্মায় বা হেফাজতে রাখেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (২) যদি কোন ব্যক্তি কোন নবজাতক শিশুকে হাসপাতাল, শিশু বা মাতৃসদন নার্সিং হোম, ক্লিনিক ইত্যাদি বা সংশ্লিষ্ট শিশুর অভিভাবকের হেফাজত হইতে চুরি করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি উপ-ধারা (১) -এ উল্লিখিত দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

ধারা-৭। নারী ও শিশু অপহরণের শাস্তি :

 

যদি কোন ব্যক্তি ধারা ৫-এ উল্লিখিত কোন অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশ্যে ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে কোন নারী বা শিশুকে অপহরণ করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ডে বা অন্যূন চৌদ্দ বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।
 

ধারা-৮। মুক্তিপণ আদায়ের শাস্তি :

 

যদি কোন ব্যক্তি মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে কোন নারী বা শিশুকে আটক করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে হইবেন।এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।
 

ধারা-৯। ধর্ষণ, ধর্ষণজনিত কারণে মৃত্যু, ইত্যাদির শাস্তি:

    (১) যদি কোন পুরুষ কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তাহা হইলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে  দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (২) যদি কোন ব্যক্তি কর্তৃক ধর্ষণ বা উক্ত ধর্ষণ পরবর্তী তাহার নিষেধ কার্যকলাপের ফলে ধর্ষিতা নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অন্যূন এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (৩) যদি একাধিক ব্যক্তি দলবদ্ধভাবে কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ফলে উক্ত নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে বা তিনি আহত হন, তাহা হইলে ঐ দলের প্রত্যেক ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অন্যূন এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (৪) যদি কোন ব্যক্তি কোন নারী বা শিশুকে-

    (ক) ধর্ষণ করিয়া মৃত্যু ঘটানোর বা আহত করার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন ;

    (খ) ধর্ষণের চেষ্টা করেন, তাহা হইলে ব্যক্তি অনধিক দশ বত্‍‌সর কিন্তু অন্যূন পাঁচ বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (৫) যদি পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন সময়ে নারী ধর্ষিতা হন, তাহা হইলে যাহাদের হেফাজতে থাকাকালীন উক্তরূপ ধর্ষণ সংঘটিত হইয়াছে, সেই ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণ ধর্ষিতা নারীর হেফাজতের জন্য সরাসরিভাবে দায়ী ছিলেন, তিনি বা তাহারা প্রত্যেকে, ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হইলে, হেফাজতের ব্যর্থতার জন্য, অনধিক দশ বত্সর কিন্তু অন্যূন পাঁচ বত্সরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অন্যূন দশ হাজার টাকা অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

     

     [ এই ধারাটির সাথে ২০০৩ সালে ৯ ক ধারা সংযোজিত করা হয়েছে  এবং কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে ]

ধারা-১০। যৌন পীড়ন, ইত্যাদির দন্ড :

    (১) কোন পুরুষ অবৈধভাবে তাহার যৌন কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে তাহার শরীরের যে কোন অঙ্গ বা কোন বস্তু দ্বারা কোন নারী বা শিশুর যৌনাঙ্গ বা অন্য কোন অঙ্গ স্পর্শ করেন তাহা হইলে তাহার এই কাজ হইবে যৌন পীড়ণ।তজ্জন্য উক্ত পুরুষ অনধিক দশ বত্সর কিন্তু অন্যূন তিন বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

     

    (২) কোন পুরুষ অবৈধভাবে তাহার যৌন কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে কোন নারীর শ্লীলতাহানি করিলে বা অশোন অঙ্গভঙ্গি করিলে তাহার এ্ই কাজ হইবে যৌন পীড়ণ এবং তজ্জন্য উক্ত পুরুষ অনধিক সাত বত্সর কিন্তু অন্যূন দুই বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

     

                   [ এই ধারাটি ২০০৩ সালে সংশোধন করা হয়েছে ]

 

ধারা-১১।যৌতুকের জন্য মৃত্যু ঘটানো, ইত্যাদির শাস্তি :

    যদি কোন নারীর স্বামী অথবা স্বামীর পিতা, মাতা, অভিভাবক, আত্নীয় বা স্বামীর পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি যৌতুকের জন্য উক্ত নারীর মৃত্যু ঘটান বা মৃত্যু ঘটানোর চেষ্টা করেন, উক্ত নারীকে আহত করেন বা আহত করার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত স্বামী, স্বামীর পিতা, মাতা, অভিভাবক, আত্নীয় বা ব্যক্তি
    (ক) মৃত্যু ঘটানোর জন্য মৃত্যুদন্ডে ঘটানোর চেষ্টার জন্য যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং উভয়  ক্ষেত্রে উক্ত দন্ডের অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন ;

    (খ) আহত করার জন্য যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে বা আহত করার চেষ্টা করার জন্য অনধিক চৌদ্দ বত্সর কিন্তু অন্যূন পাঁচ বত্সরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং উভয় ক্ষেত্রে উক্ত দন্ডের অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

     

     [ এই ধারাটি ২০০৩ সালে সংশোধন করা হয়েছে ]

ধারা-১২। ভিক্ষাবৃত্তি, ইত্যাদির উদ্দেশ্যে শিশুকে অঙ্গহানি করার শাস্তি :

    যদি কোন ব্যক্তি ভিক্ষাবৃত্তি বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রির উদ্দেশ্যে কোন শিশুর হাত, পা, চক্ষু বা অন্য কোন অঙ্গ বিনষ্ট করেন বা অন্য কোনভাবে বিকলাঙ্গ বা বিকৃত করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

ধারা-১৩। ধর্ষণের ফলশ্রুতিতে জণ্মলাভকারী শিশু সংক্রান্ত বিধান :

    (১) অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধর্ষনের কারণে কোন সন্তান জণ্মলাভ করিলে -

    (ক) উক্ত সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব ধর্ষণকারী পালন করিবেন ;

    (খ) উক্ত সন্তান জণ্মলাভের পর সন্তানটি কাহার তত্ত্বাবধানে থাকিবে এবং তাহার ভরণ-পোষণ বাবদ ধর্ষণকারী কি পরিমাণ খরচ তত্ত্বাবধানকারীকে প্রদান করিবে তাহা ট্রাইব্যুনাল নির্ধারণ করিয়া দিতে পারিবে ;

    (গ) উক্ত সন্তান পঙ্গু না হইলে, এই খরচ পুত্র সন্তানের ক্ষেত্রে ২১ বত্সর পর্যন্ত এবং কন্যা সন্তানের ক্ষেত্রে তাহার বিবাহ না হওয়া পর্যন্ত এবং পঙ্গু সন্তানের ক্ষেত্রে তিনি স্বীয় ভরণ-পোষণের যোগ্যতা অর্জন না করা পর্যন্ত প্রদেয় হইবে।

                        [ এই ধারাটিতে কিছু সংশোধন আনা হয়েছে ২০০৩ সালে ]                   

 

ধারা-১৪। সংবাদ মাধ্যমে নির্যাতিতা নারী ও শিশুর পরিচয় প্রকাশের ব্যাপারে বাধা-নিষেধ :

    (১) এই আইনে বর্ণিত অপরাধের শিকার হইয়াছেন এইরূপ নারী বা শিশুর ব্যাপারে সংঘটিত অপরাধ বা তত্সম্পর্কিত আইনগত কার্যধারার সংবাদ বা তথ্য বা নাম-ঠিকানা বা অন্যবিধ তথ্য কোন সংবাদপত্রে বা অন্য কোন সংবাদ মাধ্যমে এমনভাবে প্রকাশ বা পরিবেশন করা যাইবে যাহাতে উক্ত নারী বা শিশুর পরিচয় প্রকাশ না পায়।

    (২) উপ-ধারা (১)-এর বিধান লঙ্ঘনের জন্য দায়ী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের প্রত্যেকে অনধিক দুই বত্সর কারাদন্ডে বা অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।

     

ধারা-১৫। ভবষিত্‍ সম্পত্তি হইতে অর্থদন্ড আদায় :
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:25:34 AM
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ

ঢাকা,৪ঠা শ্রাবণ,১৪১০/১ঌশে জুলাই,২০০৩

 

সংসদ কর্তৃক গৃহীত নিম্নলিখিত আইনটি ৪ঠা শ্রাবণ ,১৪১০ মোতাবেক ১ঌ শে জুলাই ,২০০৩ তারিখে রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করিয়াছে এবং এতদ্বারা এই আইনটি সর্বসাধারণের অবগতির জন্য প্রকাশ করা যাইতেছেঃ-

 

২০০৩ সনের ৩০ নং আইন

 

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন,২০০০ এর সংশোধন কল্পে প্রণীত আইন

 

যেহেতু নিম্নবর্ণেত উদ্দেশ্য পূরণকল্পে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন,২০০০(২০০০ সনের ৮ নং আইন) -এর সংশোধন সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

 

যেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইলঃ-

 

১।  সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন-

 

(১) এই আইন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) আইন,২০০৩ নামে অভিহিত হইবে।

(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

 

২।২০০০ সনের ৮ নং আইনের ধারা ২ এর সংশোধন-
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন,২০০০ (২০০০ সনের ৮ নং আইন),অতঃপর উক্ত আইন বলিয়া উল্লিখিত ,এর ধারা ২ এর দফা (ঞ) এবং (ট) এর পরিবর্তে নিম্নরূপ দফা (ঞ) এবং (ট) প্রতিস্থাপিত হইবে,যথাঃ-

           

            "(ঞ)" 'যৌতুক' অর্থ-

                         

(অ) কোন বিবাহের বর বা বরের পিতা বা মাতা বা প্রত্যক্ষভাবে বিবাহের  সহিত জড়িত বর পক্ষের অন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক উক্ত বিবাহের সময় বা তত্পূর্বে বা বৈবাহিক সর্ম্পক বিদ্যমান থাকাকালে ,বিবাহ স্থিও থাকার শর্তে ,বিবাহের পণ হিসেবে বিবাহের কনে পক্ষের নিকট দাবীকৃত অর্থ ,সামগ্রী বা অন্যবিধ সম্পদ:

 

অথবা

 

 (আ) কোন বিবাহের কনে পক্ষ কর্তৃক বিবাহের বর বা বরের পিতা বা মাতা বা প্রত্যক্ষভাবে বিবাহের সহিত জড়িত বর  পক্ষের অন্য কোন ব্যক্তিকে উক্ত বিবাহের সময় বা তত্‌পূর্বে বা বৈবাহিক সর্ম্পক বিদ্যমান থাকাকালে ,বিবাহ স্থির থাকার শর্তে, বিবাহের পণ হিসবে প্রদত্ত বা প্রদানে সম্মত অর্থ, সামগ্রী বা অন্যবিধ সম্পদ;

           

                  (ট)  'শিশু' অর্থ অনধিক ষোল বত্সর বয়সের কোন ব্যক্তি ।

 

৩। ২০০০ সনের ৮নং আইনের ধারা ৯ এর সংশোধনঃ-

 

উক্ত ধারা ৯ এর উপধারা (১) এর ব্যাখ্যাতে দুইবার উল্লিখিত ' চৌদ্দ বত্সরের ' শব্দগুলির পরিবর্তে উভয় স্থানে 'ষোল বত্সরের' শব্দগুলি প্রতিস্থাপিত হইবে।

 

৪। ২০০০ সনের  ৮নং আইনে নূতন ধারা ৯ক এর সন্নিবেশ :-

 

উক্ত আইনের ধারা ৯ এর পর নিম্নরূপ নতুন ধারা ৯ক সন্নিবেশিত হইবে,যথাঃ-

         

       "৯ক"। নারীর আত্নহত্যায় প্ররোচনা,ইত্যাদির শাস্তি :- কোন নারীর সম্মতি ছাড়া বা ইচ্ছার

                বিরুদ্ধে কোন ব্যক্তির ইচ্ছাকৃত (willful) কোন কার্য দ্বারা সম্ভমহানি হইবার প্রত্যক্ষ

                কারণে কোন নারী আত্নহত্যা করিলে উক্ত ব্যক্তি উক্ত নারীকে অনুরূপ কার্য আত্নহত্যা

                করিতে প্ররোচিত করিবার অপরাধে অপরাধী হইবেন এবং উক্ত অপরাধের জন্য তিনি

                অনধিক দশ বত্সর কিন্তু অন্যূন পাঁচ বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার

                অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডিত হইবেন।

 

৫।২০০০ সনের ৮ নং আইনের ধারা ১০ এর প্রতিস্থাপনঃ-
উক্ত আইনের ধারা ১০ এর পরিবর্তে নিম্নরূপ ধারা ১০ প্রতিস্থাপিত হইবে, যথাঃ-

     

       "১০"।যৌন পীড়ন ইত্যাদির দন্ডঃ- যদি কোন ব্যক্তি অবৈধভাবে তাহার যৌন কামনা চরিতার্থ করার

               উদ্দেশ্যে তাহার শরীরের যে কোন অঙ্গ বা কোন বস্তু দ্বারা কোন নারী বা শিশুর যৌন অঙ্গ

               বা অন্য কোন অঙ্গ স্পর্শ করেন বা কোন নারীর শ্লীলতাহানি করেন তাহা হইলে তাহার এই

               কাজ হইবে যৌন পীড়ন এবং তজ্জন্য উক্ত ব্যক্তি অনধিক দশ বত্সর কিন্তু অন্যূন তিন বছর

               সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

 

৬।২০০০ সনের ৮ নং আইনের ধারা ১১ এর সংশোধন :-
উক্ত আইনের ধারা ১১ এর

         

         (ক)  "উক্ত নারীকে আহত করেন বা আহত করার চেষ্টা করেন", কমাগুলি এবং শব্দগুলির

               পরিবর্তে "কিংবাউক্ত নারীকে মারাত্মক জখম ( grievous hurt) করেন বা সাধারণ

               জখম (simple hurt) করেন" শব্দগুলি এবং বন্ধনীগুলি প্রতিস্থাপিত হইবে;

 

         (খ) দফা (খ) এর পরিবর্তে নিম্নরূপ দফা (খ) ও (গ) প্রতিস্থাপিত হইবে,যথাঃ-

             

                 "(খ) মারাত্নক জখম (grievous hurt) করার জন্য যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে অথবা

                      অনধিক বার বত্সর কিন্তু অন্যূন পাঁচ বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং

                      উক্ত দন্ডের অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন ;

                  (গ) সাধারণ জখম (simple hurt) করার জন্য অনধিক তিন বত্সর কিন্তু  অন্যূন এক

                     বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং উক্ত দন্ডের অতিরিক্ত অর্থ দন্ডেও দন্ডনীয়

                      হইবেন"।

 

৭।২০০০ সনের ৮ নং আইনের ধারা ১৩ এর প্রতিস্থাপন :-
উক্ত আইনের  ধারা ১৩-এর পরিবর্তে নিম্নরূপ ধারা ১৩ প্রতিস্থাপিত হইবে, যথাঃ-

     

            "১৩ ধর্ষণের ফলশ্রুতিতে জণ্মলাভকারী শিশু সংক্রান্ত বিধান :-

             (১) অন্য কোন আইনে ভিন্নতর

             যাহা কিছুই থাকুক না কেন , ধর্ষণের কারণে কোন সন্তান জণ্মলাভ করিলে-

     

             (ক) উক্ত সন্তানকে তাহার মাতা কিংবা তাহার মাতৃস্থানীয় আত্নীয়স্বজনের তত্ত্বাবধানে রাখা

                   যাইবে ;

             (খ) উক্ত সন্তান তাহার পিতা বা মাতা,কিংবা উভয়ের পরিচয়ে পরিচিত হইবার অধিকারী

                  হইবে;

             (গ) উক্ত সন্তানের ভরণপোষণের ভার রাষ্ট্র বহন করবে;

             (ঘ) উক্ত সন্তানের ভরণপোষণের ব্যয় তাহার বয়স একুশ বত্সর পূর্তি না হওয়া পর্যন্ত

                  প্রদেয় হইবে, তবে একুশ বত্সরের অধিক বয়স্ক কন্যা সন্তানের ক্ষেত্রে তাহার

                  বিবাহ না হওয়া পর্যন্ত এবং পঙ্গু সন্তানের ক্ষেত্রে তিনি স্বীয় ভরণপোষণের যোগ্যতা

              অর্জন না করা পর্যন্ত প্রদেয়।

 

     (২) সরকার বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সন্তানের ভরণপোষণ বাবদ

               প্রদেয় অর্থেও পরিমাণ নির্ধারণ করিবে।

 

     (৩) এই ধারার অধীনে কোন সন্তানকে ভরণপোষণের জন্য প্রদেয় অর্থ সরকার ধর্ষকের নিকট

          হইতে আদায় করিতে পারিবে এবং ধর্ষকের বিদ্যমান সম্পদ হইতে উক্ত অর্থ আদায় করা

          সম্ভব না হইলে,ভবিষ্যতে তিনি যে সম্পদের মালিক বা অধিকারী হইবেন সেই সম্পদ হইতে

          উহা আদায়যোগ্য হইবে।"

 

৮। ২০০০ সনের ৮ নং আইনের ধারা ১৮-এর প্রতিস্থাপনঃ-
উক্ত আইনের ধারা ১৮ এর পরিবর্তে

    নিম্নরূপ ধারা ১৮ প্রতিস্থাপিত হইবে,যথাঃ-

 

     "১৮৷ অপরাধের তদন্ত -(১) ফৌজদারী কার্যবিধিতে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন ,এই

             আইনের অধীনে কোন অপরাধের তদন্ত --

           (ক) অভিযুক্ত ব্যক্তি অপরাধ সংঘটনের সময়ে হাতে নাতে পুলিশ কর্তৃক ধৃত হইলে বা অন্য

           কোন ব্যক্তি কর্তৃক ধৃত হইয়া পুলিশের নিকট সোপর্দ হইলে, তাহার ধৃত হইবার তারিখ

           হইতে পরবর্তী পনের কার্য দিবসের মধ্যে সম্পন্ন করিতে হইবে; অথবা

      (খ) অভিযুক্ত ব্যক্তি অপরাধ সংঘটনের সময়ে হাতে নাতে ধৃত না হইলে তাহার অপরাধ সংঘটন

           সংক্রান্ত প্রাথমিক তথ্য প্রাপ্তি বা ক্ষেত্রমত , সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতা

           প্রাপ্ত কর্মকর্তা অথবা ট্রাইব্যুনালের নিকট হইতে তদন্তের আদেশ প্রাপ্তিতে তারিখ হইতে

           পরবর্তী ষাট কার্য দিবসের মধ্যে সম্পন্ন করিতে হইবে।

           

(২) কোন যুক্তিসঙ্গত কারণে উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সময়ের মধ্যে তদন্তকার্য সমাপ্ত করা সম্ভব না হইলে ,তদন্তকারী কর্মকর্তা কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া অতিরিক্ত ত্রিশ কার্যদিবসের মধ্যে অপরাধের তদন্ত কার্য সম্পন্ন করিবেন এবং তত্সর্ম্পকে কারণ উল্লেখ পূর্বক তাহার নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা বা ক্ষেত্রমত,তদন্তেও আদেশ প্রদানকারী ট্রাইব্যুনালকে লিখিতভাবে অবহিত করিবেন।

 

(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত সময় সীমার মধ্যেও তদন্তকার্য সম্পন্ন করা না হইলে, সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তা উক্ত সময়সীমা অতিক্রান্ত হইবার চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে উক্তরূপ তদন্তকার্য সম্পন্ন না হওয়া সর্ম্পকে তাহার নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা কিংবা তদন্তের আদেশ প্রদানকারী ট্রাইব্যুনালকে লিখিতভাবে অবহিত করিবেন।

 

(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন তদন্তকার্য সম্পন্ন না হওয়া সর্ম্পকে অবহিত হইবার পর নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা কিংবা ,ক্ষেত্রমত, তদন্তের আদেশ প্রদানকারী ট্রাইব্যুনাল উক্ত অপরাধের তদন্তভার অন্য কোন কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর করিতে পারিবেন এবং উক্তরূপে কোন অপরাধের তদন্তভার হস্তান্তর করা হইলে তদন্তের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা -

 

                       (ক) অভিযুক্ত ব্যক্তি অপরাধ সংঘটনের সময়ে হাতে নাতে পুলিশ কর্তৃক ধৃত হইলে

                       বা অন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক ধৃত হইয়া পুলিশের নিকট সোপর্দ হইলে,তদন্তের

                       আদেশ প্রাপ্তির তারিখ হইতে পরবর্তী সাত কার্য দিবসের মধ্যে সম্পন্ন করিবেন;

                       অথবা

               

                       (ক) অন্যান্য ক্ষেত্রে তদন্তের আদেশ প্রাপ্তির তারিখ হইতে পরবর্তী ত্রিশ কার্যদিবসের

                                               মধ্যে সম্পন্ন করিতে হইবে।

       

          (৫) উপ-ধারা (৪) এ উল্লিখিত সময়সীমার মধ্যেও তদন্তকার্য সম্পন্ন করা না হইলে, সংশ্লিষ্ট তদন্ত কারী কর্মকর্তা উক্ত  সময়সীমা অতিক্রান্ত হইবার চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে উক্তরূপ তদন্ত কার্য সম্পন্ন না হওয়া সর্ম্পকে তাহার নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা কিংবা ,ক্ষেত্রমত ,তদন্তের আদেশ প্রদানকারী ট্রাইব্যুনালকে লিখিতভাবে অবহিত করিবেন।

 

        (৬) উপ-ধারা (২) বা উপ-ধারা (৪) এ উল্লিখিত সময়সীমার মধ্যে কোন তদন্তকার্য সম্পন্ন না করার ক্ষেত্রে ,তত্সর্ম্পকে ব্যাখ্যা  সমন্বিত প্রতিবেদন পর্যালোচনার পর নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা কিংবা,ক্ষেত্রমত,তদন্তের আদেশ প্রদানকারী ট্রাইব্যুনাল যদি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন না হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তাই দায়ী,তাহা হইলে উহা দায়ী ব্যক্তির অদক্ষতা ও অসদাচরণ বলিয়া বিবেচিত হইবে এবং এই অদক্ষতা ও অসদাচরণ তাহার বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনে লিপিবদ্ধ করা হইবেএবং উপযুক্ত ক্ষেত্রে চাকুরী বিধিমালা অনুযায়ী তাহার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে।

 

        (৭) তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর যদি ট্রাইব্যুনাল তদন্ত সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি পর্যালোচনা করিয়া এই

              মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, তদন্ত প্রতিবেদনে আসামী হিসেবে উল্লিখিত কোন ব্যক্তিকে ন্যায়

              বিচারের স্বার্থে সাক্ষী করা বাঞ্চনীয়, তবে উক্ত ব্যক্তিকে আসামীর পরিবর্তে সাক্ষী হিসাবে

              গন্য করিবার নির্দেশ দিতে পারিবে।

                             

          (৮) যদি মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ সমাপ্তির পর ট্রাইব্যুনালের নিকট প্রতীয়মান হয় যে,এই আইনের

               অধীনে কোন অপরাধের তদন্তকারী কর্মকর্তা কোন ব্যক্তিকে অপরাধের দায় হইতে রক্ষা

               কবারষ উদ্দেশ্যে বা তদন্তকার্যে গাফিলতির মাধ্যমে অপরাধটি প্রমাণে ব্যবহারযোগ্য কোন

               আলামত সংগ্রহ বা বিবেচনা না করিয়া বা মামলার প্রমাণের প্রয়োজন ব্যতিরেকে উক্ত

               ব্যক্তিকে আসামীর পরিবর্তে সাক্ষী করিয়া বা কোন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীকে পরীক্ষা না করিয়া

               তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করিয়াছেন ,তাহা হইলে উক্ত তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উক্ত

               কার্য বা অবহেলাকে অদক্ষতা বা ক্ষেত্রমত ,অসদাচরণ হিসেবে চিহ্নিত করিয়া ট্রাইব্যুনাল

               উক্ত কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকে তাহার বিরূদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহেনর

               নির্দেশ দিতে পারিবে।

 

          (৯) ট্রাইব্যুনাল কোন আবেদনের প্রেক্ষিতে বা কোন তথ্যের ভিত্তিতে কোন তদন্তকারী কর্মকর্তার

               পরিবর্তে অন্য কোন তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিতে

               পারিবে।

 

৯।২০০০ সনের ৮ নং আইনের ধারা ১৯-এর প্রতিস্থাপনঃ-
উক্ত আইনের ধারা ১ঌ এর পরিবর্তে নিম্নরূপ ধারা প্রতিস্থাপিত হইবে,যথাঃ-

   

 "১৯। অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণ, ইত্যাদি--(১) এই আইনের অধীন দন্ডনীয় সকল অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণীয় (Cognizable) হইবে।

 

(২) উপ-ধারা (৩) এর বিধান সাপেক্ষে,এই আইনের অধীন দন্ডনীয় শাস্তিযোগ্য অপরাধ সংঘটনে জড়িত মূল এবং প্রত্যক্ষভাবে অভিযুক্ত কোন ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হইবে না,যদি-

 

           (ক) তাহাকে মুক্তি দেওয়ার আবেদনের উপর অভিযোগকারী পক্ষকে শুনানীর সুযোগ দেওয়া না হয়;এবং

           (খ) তাহার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগে তিনি দোষী সাব্যস্ত হওয়ার যুক্তিসঙ্গত কারণ রহিয়াছে মর্মে ট্রাইব্যুনাল সন্তুষ্ট হন।

 

(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত কোন ব্যক্তি নারী বা শিশু হইলে কিংবা শারীরিকভাবে অসুস্থ (sick or infirm) হইলে সেই ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার কারণে ন্যায় বিচার বিঘ্নিত হইবে না মর্মে ট্রাইব্যুনাল সন্তুষ্ট হইলে তাহাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া যাইবে।

 

(৪) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত ব্যক্তি ব্যতীত এই আইনের অধীন অপরাধ সংঘটনের  জন্য অভিযুক্ত অন্য কোন ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তি দেওয়া ন্যায়সঙ্গত হইবে মর্মে ট্রাইব্যুনাল সন্তুষ্ট হইলে তদমর্মে কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ট্রাইব্যুনাল জামিনে মুক্তি দিতে পারিবে।"

 

 

১০।২০০০সনের ৮নং আইনের ধারা ২০ এর সংশোধন।-
 উক্ত আইনের ধারা ২০ এর -

   

    (ক) উপ-ধারা (৬) এর পরিবর্তে নিম্নরূপ উপ-ধারা (৬) প্রতিস্থাপিত হইবে,যথাঃ-

       

            "(৬) কোন ব্যক্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে কিংবা ট্রাইব্যুনাল স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত মনে

               করিলে এই আইনের ধারা ৯ এর অধীন অপরাধের বিচার কার্যক্রম রুদ্ধদ্বার a
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:26:37 AM
এসিড অপরাধ দমন আইন, ২০০২
(২০০২ সনের ২ নং আইন)
ঢাকা ১৭ই মার্চ, ২০০২/৩রা চৈত্র, ১৪০৮

এসিড অপরাধসমূহ কঠোরভাবে দমনের উদ্দেশ্যে বিধান করার লক্ষ্যে প্রণীত আইন।যেহেতু এসিড অপরাধসমূহ কঠোরভাবে দমনের উদ্দেশ্যে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়; সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :
 

১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম -

এই আইন এসিড অপরাধ দমন আইন, ২০০২ নামে অভিহিত হইবে।
 

২। সংজ্ঞা-

 

বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-

     " অপরাধ " অর্থ এই আইনের অধীন শাস্তিযোগ্য যে কোন অপরাধ;

     " এসিড " অর্থ দহনকারী, ক্ষয়কারী ও বিষাক্ত যে কোন পদার্থও অন্তভুক্ত হইবে ;

     " ট্রাইব্যুনাল " অর্থ এই আইনের অধীন গঠিত কোন ট্রাইবুনাল;

     " ফৌজদারী কার্যবিধি " অর্থ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898);

     " হাইকোর্ট বিভাগ " অর্থ বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ।

৩। আইনের প্রাধান্য-

আপাতত বলবত্‍  অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন? এই আইনের বিধানাবলী কার্যকর থাকিবে।

৪। এসিড দ্বারা মৃত্যু ঘটানোর শাস্তি-

    যদি কোন ব্যক্তি এসিড দ্বারা অন্য কোন ব্যক্তির মৃত্যু ঘটান তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

৫। এসিড দ্বারা আহত করার শাস্তি -

 

যদি কোন ব্যক্তি কোন এসিড দ্বারা অন্য কোন ব্যক্তিকে এমনভাবে আহত করেন যাহার ফলে তাহার-

    (ক) দৃষ্টিশক্তি বা শ্রবণশক্তি সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে নষ্ট হয় বা মুখমন্ডল, স্তন বা যৌনাংগ বিকৃত বা নষ্ট হয় তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকার অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন;

    (খ) শরীরের অন্য কোন অংগ, গ্রন্থি বা অংশ বিকৃত বা নষ্ট হয় বা শরীরের কোন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হন তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি অনধিক চৌদ্দ বত্সর কিন্তু অন্যূন সাত বত্‍সরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব পঞ্চাশ হাজার টাকার অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

৬। এসিড নিক্ষেপ করা বা নিক্ষেপের চেষ্টা করার শাস্তি-

    যদি কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তির উপর এসিড নিক্ষেপ করেন বা করিবার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে তাহার উক্তরূপ কার্যের দরুণ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক বা অন্য কোনভাবে কোন ক্ষতি না হইলেও, তিনি অনধিক সাত বত্সর কিন্তু অন্যূন তিন বত্সরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব পঞ্চাশ হাজার টাকার অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

৭। অপরাধে সহায়তার শাস্তি-
 

যদি কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সহায়তা করেন এবং সেই সহায়তার ফলে উক্ত অপরাধ সংঘটিত হয় বা অপরাধটি সংঘটনের চেষ্টা করা হয়, তাহা হইলে ঐ অপরাধ সংঘটনের জন্য বা অপরাধটি সংঘটনের চেষ্টার জন্য নির্ধারিত দন্ডে সহায়তাকারী ব্যক্তি দন্ডনীয় হইবেন।
 

 

৮। মিথ্যা মামলা, অভিযোগ দায়ের, ইত্যাদির শাস্তি-

    (১) যদি কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তির ক্ষতিসাধনের অভিপ্রায়ে উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই আইনের কোন ধারার অধীন মামলা বা অভিযোগ করার জন্য ন্যায্য বা আইনানুগ কারণ নাই জানিয়াও মামলা বা অভিযোগ দায়ের করেন বা করান তাহা হইলে মামলা বা অভিযোগ দায়েরকারী ব্যক্তি এবং যিনি অভিযোগ দায়ের করাইয়াছেন উক্ত ব্যক্তি অনধিক সাত বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (২) কোন ব্যক্তির লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ট্রাইবুনাল উপ-ধারা (১) এর অধীন সংঘটিত অপরাধের অভিযোগ গ্রহণ ও মামলার বিচার করিতে পারিবে।

৯। ক্ষতিগ্রস্তকে অর্থদন্ডের অর্থ প্রদান-
 

এই আইনের অধীন অর্থদন্ডের অর্থ প্রচলিত আইনের বিধান অনুযায়ী দন্ডিত ব্যক্তির নিকট হইতে বা তাহার বিদ্যমান সম্পদ, বা তাহার মৃত্যুর ক্ষেত্রে সময় রাখিয়া যাওয়া সম্পদ হইতে আদায় করিয়া অপরাধের দরুণ যে ব্যক্তির মৃত্যু ঘটিয়াছে তাহার উত্তরাধিকারীকে বা ক্ষেত্রমত, যেই ব্যক্তি শারীরিক বা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছেন সেই ব্যক্তিকে বা সেই ব্যক্তির মৃত্যুর ক্ষেত্রে, তাহার উত্তরাধিকারীকে প্রদান করা হইবে।

 

১০। অর্থদন্ড বা ক্ষতিপূরণ আদায়ের পদ্ধতি -
 

এই আইনের অধীনে কোন অর্থদন্ড আরোপ করা হইলে, ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্ট জেলার কালেক্টরকে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে বা অনুরূপ বিধি না থাকিলে ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে, অপরাধীর স্থাবর বা অস্থাবর বা উভয়বিধ সম্পত্তির তালিকা প্রস্তুতক্রমে ক্রোক ও নিলাম বিক্রয় ও ক্রোক ছাড়াই সরাসরি নিলামে বিক্রয় করিয়া বিক্রয়লব্ধ অর্থ ট্রাইব্যুনালে জমা দিবার নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে এবং ট্রাইব্যুনাল উক্ত অর্থ অপরাধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে প্রদানের ব্যবস্থা করিবে।

 

১১। অপরাধের তদন্ত -

    (১) এই আইনের অধীন অপরাধের তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসার কর্তৃক অপরাধটি সংঘটনের তথ্য প্রাপ্তি অথবা ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক অপরাধ তদন্তের আদেশ প্রদানের তারিখ হইতে পরবতী ত্রিশ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করিতে হইবে।

    (২) যেইক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সময়ীমার মধ্যে তদন্ত সমাপ্ত করা সম্ভব না হয় সেইক্ষেত্রে তদন্তকারী কর্মকর্তা যদি বিশেষ কারণ প্রদর্শন করিয়া ট্রাইব্যুনালকে সন্তুষ্ট করিতে পারেন যে, ন্যায়বিচারের স্বার্থে তদন্তের সময়সীমার বৃদ্ধি করা সমীচীন, তাহা হইলে ট্রাইব্যুনাল তদন্তের সময়সীমা অনধিক পনের দিন বর্ধিত করিতে পারিবে।

    (৩) যেইক্ষেত্রে (২) এ উল্লিখিত বর্ধিত সময়সীমার মধ্যে তদন্ত সমাপ্ত না হয়, সেইক্ষেত্রে উক্ত সময় সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পর বা মামলার বিচার চলাকালীন যে কোন সময় ট্রাইব্যুনাল কোন আবেদনের প্রেক্ষিতে বা ন্যায়বিচারের স্বার্থে যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, কোন অপরাধের তদন্ত সম্পন্ন করা বা ক্ষেত্রমত, তত্সম্পর্কে অধিকতর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন, তাহা হইলে ট্রাইব্যুনাল অনধিক পনের দিনের মধ্যে তদন্ত বা অধিকতর তদন্ত সমাপ্তির নির্দেশ দিতে পারিবেন।

    (৪) উপ-ধারা (২) বা ক্ষেত্রমত, উপধারা (৩) এর অধীন নির্দেশিত অতিরিক্ত সময়ের মধ্যে কোন তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত সমাপ্ত করিতে ব্যর্থ হইলে, ট্রাইব্যুনাল -

    (ক) অন্য কোন কর্মকর্তার দ্বারা অনধিক পনের দিনের মধ্যে তদন্ত সমাপ্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিতে পারিবেন; এবং

    (খ) এই ধারার অধীন নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে তদন্ত সমাপ্ত করিতে ব্যর্থ তদন্তকারী কর্মকর্তার ব্যর্থতার বিষয়টি অদক্ষতা হিসাবে চিহ্নিত করিয়া উক্ত কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের নিকট তাহার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্ত নির্দেশ দিতে পারিবেন।

    (৫) ট্রাইব্যুনাল কোন আবেদনের প্রেক্ষিতে বা অন্য কোন তথ্যের ভিত্তিতে কোন একজন তদন্তকারী কর্মকর্তার পরিবর্তে অন্য কোন তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিতে পারিবেন।

১২। ক্ষেত্রবিশেষে আসামীকে সাক্ষী গণ্য করা-

 

তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর যদি ট্রাইব্যুনাল তদন্ত সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি পর্যালোচনা করিয়া এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, তদন্ত প্রতিবেদনে আসামী হিসাবে উল্লিখিত কোন ব্যক্তিকে ন্যায়বিচারের স্বার্থে সাক্ষী করা বাঞ্ছনীয়, তবে উক্ত ব্যক্তিকে আসামীর পরিবর্তে সাক্ষী হিসাবে গণ্য করিবার নির্দেশ দিতে পারিবেন।

 

১৩। তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্তৃক আলামত, সাক্ষ্য ইত্যাদি সংগ্রহে গাফিলতি-

 

যদি মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ সমাপ্তির পর ট্রাইব্যুনালের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, এই আইনের অধীন কোন অপরাধের তদন্তকারী কর্মকর্তা কোন ব্যক্তিকে অপরাধের দায় হইতে রক্ষা করিবার উদ্দেশ্যে বা তদন্তকার্যে ইচ্ছাকৃত গাফিলতির মাধ্যমে অপরাধটি প্রমাণে ব্যবহারযোগ্য কোন আলামত সংগ্রহ বা বিবেচনা না করিয়া বা উক্ত ব্যক্তিকে আসামীর পরিবর্তে সাক্ষী করিয়া বা কোন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীকে পরীক্ষা না করিয়া তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করিয়াছেন, তাহা হইলে উক্ত তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উক্ত কার্য বা অবহেলাকে অদক্ষতা বা, ক্ষেত্রমত, অসদাচরণ হিসাবে চিহ্নিত করিয়া ট্রাইব্যুনাল উক্ত কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকে তাহার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিতে পারিবেন।

 

১৪৷ অপরাধের আমলযোগ্যতা, অ-আপোসযোগ্যতা ও অ-জামিনযোগ্যতা-

 

এই আইনের অধীন সকল অপরাধ আমলযোগ্য (Cognizable), অ-আপোষযোগ্য (Non-Compoundable) এবং অ-জামিনযোগ্য (Non-Bailable) হইবে।

 

১৫। জামিন সংক্রান্ত বিধান -

 

(১) এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, অভিযুক্ত বা শাস্তিযোগ্য কোন ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হইবে না, যদি-

    তাহাকে মুক্তি দেওয়ার আবেদনের উপর রাষ্ট্র বা, ক্ষেত্রমত, অভিযোগকারী পক্ষকে শুনানীর সুযোগ দেওয়া না হয়; এবং

     তাহার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগে তিনি দোষী সাব্যস্ত হওয়ার যুক্তিসঙ্গত কারণ রহিয়াছে মর্মে ট্রাইব্যুনাল সন্তুষ্ট হন; অথবা

      তিনি নারী বা শিশু অথবা শারীরিকভাবে বিকলাঙ্গ না হন এবং তাহাকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার কারণে ন্যায়বিচার বিঘ্নিত হইবে না মর্মে ট্রাইব্যুনাল সন্তুষ্ট না হন।

(২) কোন অপরাধের তদন্ত সমাপ্তির পর তদন্ত প্রতিবেদন বা সেই সূত্রে প্রাপ্ত অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে যদি ট্রাইব্যুনাল বা ক্ষেত্রমত, আপীল আদালত এইমর্মে সন্তুষ্ট হন যে, কোন ব্যক্তি উক্ত অপরাধের সহিত জড়িত নহেন বলিয়া বিশ্বাস করিবার যুক্তিসঙ্গত কারণ রহিয়াছে, তাহা হইলে ট্রাইব্যুনাল বা আপিল আদালত সংশ্লিষ্ট তথ্য ও কারণ উল্লেখপূর্বক উক্ত ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তির আদেশ দিতে পারিবেন।

 
 

১৬। বিচার পদ্ধতি -

 

(১) এই আইনের অধীন কোন অপরাধের বিচার কেবলমাত্র ধারা ২৩-এর অধীন গঠিত এসিড অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারযোগ্য হইবে।

(২) ট্রাইব্যুনালে কোন মামলার শুনানী শুরু হইলে উহা শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রতি কর্মদিবসে একটানা চলিবে।

(৩) ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য মামলার নথি প্রাপ্তির তারিখ হইতে নব্বই দিনের মধ্যে বিচারকার্য সমাপ্ত করিবেন।

(৪) কোন মামলার বিচারকার্য শেষ না করিয়া যদি কোন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বদলী হইয়া যান, তাহা হইলে তিনি বিচারকার্যের যেই পর্যায়ে মামলাটি রাখিয়া গিয়াছেন, সেই পর্যায়ে হইতে তাহার স্থলাভিষিক্ত বিচারক বিচার করিবেন এবং তাহার পূর্ববতী বিচারক যে সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করিয়াছেন সেই সাক্ষীর এবং তাহার পূর্ববতী বিচারক যে সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করিয়াছেন সেই সাক্ষীর এবং তাহার পূর্ববর্তী বিচারক যে সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করিয়াছেন সেই সাক্ষীর সাক্ষ্য পুনরায় গ্রহণ করার প্রয়োজন হইবে না।

      তবে শর্ত থাকে যে, ন্যায়বিচারের স্বার্থে যদি বিচারক কোন সাক্ষীর সাক্ষ্য পুনরায় গ্রহণ করা অপরিহার্য বলিয়া মনে করেন, তাহা হইলে তিনি সাক্ষ্য গ্রহণ করা হইয়াছে এমন যে কোন সাক্ষীকে তলব করিয়া পুনরায় তাহার সাক্ষ্য গ্রহণ করিতে পারিবেন।

(৫) ধারা ৪, ৫ ও ৬ এর অধীন কোন অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে, কোন আবেদনের প্রেক্ষিতে, ট্রাইবুনাল উপযুক্ত মনে করিলে অপরাধের শিকার কোন ব্যক্তি বা অন্য কোন সাক্ষীর জবানবন্দি রুদ্ধদ্বারা কক্ষে গ্রহণ করিতে পারিবেন৷

 

 

১৭। অভিযুক্ত শিশুর বিচার পদ্ধতি -

 

কোন শিশু এই আইনের অধীন অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে অভিযুক্ত হইলে তাহার ক্ষেত্রে Children Act, 1974 (Act XXXIX of 1974) এর বিধানাবলী যতদূর সম্ভব অনুসরণ করিতে হইবে।

 

১৮। আসামীর অনুপস্থিতিতে বিচার-

 

(১) যদি ট্রাইব্যুনাল এই মর্মে বিশ্বাস করিবার যুক্তিসংগত কারণ থাকে যে, -
      (ক) অভিযুক্ত ব্যক্তি তাহার গ্রেফতার বা তাহাকে বিচারের জন্য সোপর্দকরণ এড়াইবার জন্য পলাতক রহিয়াছে বা আত্নগোপন করিয়াছে; এবং
      (খ) তাহার আশু গ্রেফতারের কোন সম্ভাবনা নাই, তাহা হইলে ট্রাইব্যুনাল অন্তত দুইটি বাংলা দৈনিক খবরের কাগজে প্রজ্ঞাপিত আদেশ দ্বারা, আদেশে উল্লিখিত সময়, যাহা পনের দিনের বেশী হইবে না, এর মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিতে পারিবে এবং উক্ত সময়ের মধ্যে যদি অভিযুক্ত ব্যক্তি ট্রাইব্যুনালে হাজির হইতে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে ট্রাইব্যুনাল তাহার অনুপস্থিতিতে বিচার সম্পন্ন করিতে পারিবেন।

 

(২) যদি কোন অভিযুক্ত ব্যক্তি ট্রাইব্যুনালে হাজির হইবার পর বা তাহাকে ট্রাইব্যুনাল হাজির করিবার পর  বা তাহাকে ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক জামিনে মুক্তি দেওয়ার পর পলাতক হন, তাহা হইলে তাহার ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এর বিধান প্রযোজ্য হইবে না, এবং সেই ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া, অভিযুক্ত ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তাহার বিচার সম্পন্ন করিতে পারিবে।

 

১৯। ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক যে কোন স্থানে জবানবন্দি গ্রহণের ক্ষমতা

 

(১) এই আইনের অধীন সংঘটিত কোন অপরাধের তদন্তকারী কোন পুলিশ কর্মকর্তা বা তদন্তকারী অন্য কোন ব্যক্তি কিংবা অকুস্থলে কোন আসামীকে ধৃত করার সময় কোন পুলিশ কর্মকর্তা যদি মনে করেন যে, ঘটনা সম্পর্কে ওয়াকেবহাল বা ঘটনাটি নিজ চক্ষে দেখিয়াছেন এমন কোন ব্যক্তির জবানবন্দি অপরাধের ত্বরিত বিচারের স্বার্থে কোন ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক অবিলম্বে লিপিবদ্ধ করা প্রয়োজন, তাহা হইলে তিনি কোন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেটকে উক্ত ব্যক্তির জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করিবার জন্য লিখিতভাবে বা অন্য কোনভাবে অনুরোধ করিতে পারিবেন।

 

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লেখিত ম্যাজিষ্ট্রেট ঘটনাস্থলে বা অন্য কোন যথাযথ স্থানে উক্ত ব্যক্তির জবানবন্দি গ্রহণ করিবেন এবং উক্তরূপে গৃহীত জবানবন্দি তদন্ত প্রতিবেদনের সহিত সামিল করিয়া ট্রাইব্যুনালে দাখিল করিবার নিমিত্ত তদন্তকারী &#
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:27:41 AM
এসিড অপরাধ দমন আইন, ২০০২
(২০০২ সনের ২ নং আইন)
ঢাকা ১৭ই মার্চ, ২০০২/৩রা চৈত্র, ১৪০৮

এসিড অপরাধসমূহ কঠোরভাবে দমনের উদ্দেশ্যে বিধান করার লক্ষ্যে প্রণীত আইন।যেহেতু এসিড অপরাধসমূহ কঠোরভাবে দমনের উদ্দেশ্যে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়; সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :
 

১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম -

এই আইন এসিড অপরাধ দমন আইন, ২০০২ নামে অভিহিত হইবে।
 

২। সংজ্ঞা-

 

বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-

     " অপরাধ " অর্থ এই আইনের অধীন শাস্তিযোগ্য যে কোন অপরাধ;

     " এসিড " অর্থ দহনকারী, ক্ষয়কারী ও বিষাক্ত যে কোন পদার্থও অন্তভুক্ত হইবে ;

     " ট্রাইব্যুনাল " অর্থ এই আইনের অধীন গঠিত কোন ট্রাইবুনাল;

     " ফৌজদারী কার্যবিধি " অর্থ Code of Criminal Procedure, 1898 (Act V of 1898);

     " হাইকোর্ট বিভাগ " অর্থ বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ।

৩। আইনের প্রাধান্য-

আপাতত বলবত্‍  অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন? এই আইনের বিধানাবলী কার্যকর থাকিবে।

৪। এসিড দ্বারা মৃত্যু ঘটানোর শাস্তি-

    যদি কোন ব্যক্তি এসিড দ্বারা অন্য কোন ব্যক্তির মৃত্যু ঘটান তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

৫। এসিড দ্বারা আহত করার শাস্তি -

 

যদি কোন ব্যক্তি কোন এসিড দ্বারা অন্য কোন ব্যক্তিকে এমনভাবে আহত করেন যাহার ফলে তাহার-

    (ক) দৃষ্টিশক্তি বা শ্রবণশক্তি সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে নষ্ট হয় বা মুখমন্ডল, স্তন বা যৌনাংগ বিকৃত বা নষ্ট হয় তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদন্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব এক লক্ষ টাকার অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন;

    (খ) শরীরের অন্য কোন অংগ, গ্রন্থি বা অংশ বিকৃত বা নষ্ট হয় বা শরীরের কোন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হন তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি অনধিক চৌদ্দ বত্সর কিন্তু অন্যূন সাত বত্‍সরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব পঞ্চাশ হাজার টাকার অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

৬। এসিড নিক্ষেপ করা বা নিক্ষেপের চেষ্টা করার শাস্তি-

    যদি কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তির উপর এসিড নিক্ষেপ করেন বা করিবার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে তাহার উক্তরূপ কার্যের দরুণ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক বা অন্য কোনভাবে কোন ক্ষতি না হইলেও, তিনি অনধিক সাত বত্সর কিন্তু অন্যূন তিন বত্সরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব পঞ্চাশ হাজার টাকার অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

৭। অপরাধে সহায়তার শাস্তি-
 

যদি কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সহায়তা করেন এবং সেই সহায়তার ফলে উক্ত অপরাধ সংঘটিত হয় বা অপরাধটি সংঘটনের চেষ্টা করা হয়, তাহা হইলে ঐ অপরাধ সংঘটনের জন্য বা অপরাধটি সংঘটনের চেষ্টার জন্য নির্ধারিত দন্ডে সহায়তাকারী ব্যক্তি দন্ডনীয় হইবেন।
 

 

৮। মিথ্যা মামলা, অভিযোগ দায়ের, ইত্যাদির শাস্তি-

    (১) যদি কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তির ক্ষতিসাধনের অভিপ্রায়ে উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই আইনের কোন ধারার অধীন মামলা বা অভিযোগ করার জন্য ন্যায্য বা আইনানুগ কারণ নাই জানিয়াও মামলা বা অভিযোগ দায়ের করেন বা করান তাহা হইলে মামলা বা অভিযোগ দায়েরকারী ব্যক্তি এবং যিনি অভিযোগ দায়ের করাইয়াছেন উক্ত ব্যক্তি অনধিক সাত বত্সর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদন্ডেও দন্ডনীয় হইবেন।

    (২) কোন ব্যক্তির লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ট্রাইবুনাল উপ-ধারা (১) এর অধীন সংঘটিত অপরাধের অভিযোগ গ্রহণ ও মামলার বিচার করিতে পারিবে।

৯। ক্ষতিগ্রস্তকে অর্থদন্ডের অর্থ প্রদান-
 

এই আইনের অধীন অর্থদন্ডের অর্থ প্রচলিত আইনের বিধান অনুযায়ী দন্ডিত ব্যক্তির নিকট হইতে বা তাহার বিদ্যমান সম্পদ, বা তাহার মৃত্যুর ক্ষেত্রে সময় রাখিয়া যাওয়া সম্পদ হইতে আদায় করিয়া অপরাধের দরুণ যে ব্যক্তির মৃত্যু ঘটিয়াছে তাহার উত্তরাধিকারীকে বা ক্ষেত্রমত, যেই ব্যক্তি শারীরিক বা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছেন সেই ব্যক্তিকে বা সেই ব্যক্তির মৃত্যুর ক্ষেত্রে, তাহার উত্তরাধিকারীকে প্রদান করা হইবে।

 

১০। অর্থদন্ড বা ক্ষতিপূরণ আদায়ের পদ্ধতি -
 

এই আইনের অধীনে কোন অর্থদন্ড আরোপ করা হইলে, ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্ট জেলার কালেক্টরকে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে বা অনুরূপ বিধি না থাকিলে ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে, অপরাধীর স্থাবর বা অস্থাবর বা উভয়বিধ সম্পত্তির তালিকা প্রস্তুতক্রমে ক্রোক ও নিলাম বিক্রয় ও ক্রোক ছাড়াই সরাসরি নিলামে বিক্রয় করিয়া বিক্রয়লব্ধ অর্থ ট্রাইব্যুনালে জমা দিবার নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে এবং ট্রাইব্যুনাল উক্ত অর্থ অপরাধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে প্রদানের ব্যবস্থা করিবে।

 

১১। অপরাধের তদন্ত -

    (১) এই আইনের অধীন অপরাধের তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসার কর্তৃক অপরাধটি সংঘটনের তথ্য প্রাপ্তি অথবা ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক অপরাধ তদন্তের আদেশ প্রদানের তারিখ হইতে পরবতী ত্রিশ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করিতে হইবে।

    (২) যেইক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত সময়ীমার মধ্যে তদন্ত সমাপ্ত করা সম্ভব না হয় সেইক্ষেত্রে তদন্তকারী কর্মকর্তা যদি বিশেষ কারণ প্রদর্শন করিয়া ট্রাইব্যুনালকে সন্তুষ্ট করিতে পারেন যে, ন্যায়বিচারের স্বার্থে তদন্তের সময়সীমার বৃদ্ধি করা সমীচীন, তাহা হইলে ট্রাইব্যুনাল তদন্তের সময়সীমা অনধিক পনের দিন বর্ধিত করিতে পারিবে।

    (৩) যেইক্ষেত্রে (২) এ উল্লিখিত বর্ধিত সময়সীমার মধ্যে তদন্ত সমাপ্ত না হয়, সেইক্ষেত্রে উক্ত সময় সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পর বা মামলার বিচার চলাকালীন যে কোন সময় ট্রাইব্যুনাল কোন আবেদনের প্রেক্ষিতে বা ন্যায়বিচারের স্বার্থে যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, কোন অপরাধের তদন্ত সম্পন্ন করা বা ক্ষেত্রমত, তত্সম্পর্কে অধিকতর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন, তাহা হইলে ট্রাইব্যুনাল অনধিক পনের দিনের মধ্যে তদন্ত বা অধিকতর তদন্ত সমাপ্তির নির্দেশ দিতে পারিবেন।

    (৪) উপ-ধারা (২) বা ক্ষেত্রমত, উপধারা (৩) এর অধীন নির্দেশিত অতিরিক্ত সময়ের মধ্যে কোন তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত সমাপ্ত করিতে ব্যর্থ হইলে, ট্রাইব্যুনাল -

    (ক) অন্য কোন কর্মকর্তার দ্বারা অনধিক পনের দিনের মধ্যে তদন্ত সমাপ্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিতে পারিবেন; এবং

    (খ) এই ধারার অধীন নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে তদন্ত সমাপ্ত করিতে ব্যর্থ তদন্তকারী কর্মকর্তার ব্যর্থতার বিষয়টি অদক্ষতা হিসাবে চিহ্নিত করিয়া উক্ত কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের নিকট তাহার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্ত নির্দেশ দিতে পারিবেন।

    (৫) ট্রাইব্যুনাল কোন আবেদনের প্রেক্ষিতে বা অন্য কোন তথ্যের ভিত্তিতে কোন একজন তদন্তকারী কর্মকর্তার পরিবর্তে অন্য কোন তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিতে পারিবেন।

১২। ক্ষেত্রবিশেষে আসামীকে সাক্ষী গণ্য করা-

 

তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর যদি ট্রাইব্যুনাল তদন্ত সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি পর্যালোচনা করিয়া এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, তদন্ত প্রতিবেদনে আসামী হিসাবে উল্লিখিত কোন ব্যক্তিকে ন্যায়বিচারের স্বার্থে সাক্ষী করা বাঞ্ছনীয়, তবে উক্ত ব্যক্তিকে আসামীর পরিবর্তে সাক্ষী হিসাবে গণ্য করিবার নির্দেশ দিতে পারিবেন।

 

১৩। তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্তৃক আলামত, সাক্ষ্য ইত্যাদি সংগ্রহে গাফিলতি-

 

যদি মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ সমাপ্তির পর ট্রাইব্যুনালের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, এই আইনের অধীন কোন অপরাধের তদন্তকারী কর্মকর্তা কোন ব্যক্তিকে অপরাধের দায় হইতে রক্ষা করিবার উদ্দেশ্যে বা তদন্তকার্যে ইচ্ছাকৃত গাফিলতির মাধ্যমে অপরাধটি প্রমাণে ব্যবহারযোগ্য কোন আলামত সংগ্রহ বা বিবেচনা না করিয়া বা উক্ত ব্যক্তিকে আসামীর পরিবর্তে সাক্ষী করিয়া বা কোন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীকে পরীক্ষা না করিয়া তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করিয়াছেন, তাহা হইলে উক্ত তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উক্ত কার্য বা অবহেলাকে অদক্ষতা বা, ক্ষেত্রমত, অসদাচরণ হিসাবে চিহ্নিত করিয়া ট্রাইব্যুনাল উক্ত কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকে তাহার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিতে পারিবেন।

 

১৪৷ অপরাধের আমলযোগ্যতা, অ-আপোসযোগ্যতা ও অ-জামিনযোগ্যতা-

 

এই আইনের অধীন সকল অপরাধ আমলযোগ্য (Cognizable), অ-আপোষযোগ্য (Non-Compoundable) এবং অ-জামিনযোগ্য (Non-Bailable) হইবে।

 

১৫। জামিন সংক্রান্ত বিধান -

 

(১) এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, অভিযুক্ত বা শাস্তিযোগ্য কোন ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হইবে না, যদি-

    তাহাকে মুক্তি দেওয়ার আবেদনের উপর রাষ্ট্র বা, ক্ষেত্রমত, অভিযোগকারী পক্ষকে শুনানীর সুযোগ দেওয়া না হয়; এবং

     তাহার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগে তিনি দোষী সাব্যস্ত হওয়ার যুক্তিসঙ্গত কারণ রহিয়াছে মর্মে ট্রাইব্যুনাল সন্তুষ্ট হন; অথবা

      তিনি নারী বা শিশু অথবা শারীরিকভাবে বিকলাঙ্গ না হন এবং তাহাকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার কারণে ন্যায়বিচার বিঘ্নিত হইবে না মর্মে ট্রাইব্যুনাল সন্তুষ্ট না হন।

(২) কোন অপরাধের তদন্ত সমাপ্তির পর তদন্ত প্রতিবেদন বা সেই সূত্রে প্রাপ্ত অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে যদি ট্রাইব্যুনাল বা ক্ষেত্রমত, আপীল আদালত এইমর্মে সন্তুষ্ট হন যে, কোন ব্যক্তি উক্ত অপরাধের সহিত জড়িত নহেন বলিয়া বিশ্বাস করিবার যুক্তিসঙ্গত কারণ রহিয়াছে, তাহা হইলে ট্রাইব্যুনাল বা আপিল আদালত সংশ্লিষ্ট তথ্য ও কারণ উল্লেখপূর্বক উক্ত ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তির আদেশ দিতে পারিবেন।

 
 

১৬। বিচার পদ্ধতি -

 

(১) এই আইনের অধীন কোন অপরাধের বিচার কেবলমাত্র ধারা ২৩-এর অধীন গঠিত এসিড অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারযোগ্য হইবে।

(২) ট্রাইব্যুনালে কোন মামলার শুনানী শুরু হইলে উহা শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রতি কর্মদিবসে একটানা চলিবে।

(৩) ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য মামলার নথি প্রাপ্তির তারিখ হইতে নব্বই দিনের মধ্যে বিচারকার্য সমাপ্ত করিবেন।

(৪) কোন মামলার বিচারকার্য শেষ না করিয়া যদি কোন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বদলী হইয়া যান, তাহা হইলে তিনি বিচারকার্যের যেই পর্যায়ে মামলাটি রাখিয়া গিয়াছেন, সেই পর্যায়ে হইতে তাহার স্থলাভিষিক্ত বিচারক বিচার করিবেন এবং তাহার পূর্ববতী বিচারক যে সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করিয়াছেন সেই সাক্ষীর এবং তাহার পূর্ববতী বিচারক যে সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করিয়াছেন সেই সাক্ষীর এবং তাহার পূর্ববর্তী বিচারক যে সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করিয়াছেন সেই সাক্ষীর সাক্ষ্য পুনরায় গ্রহণ করার প্রয়োজন হইবে না।

      তবে শর্ত থাকে যে, ন্যায়বিচারের স্বার্থে যদি বিচারক কোন সাক্ষীর সাক্ষ্য পুনরায় গ্রহণ করা অপরিহার্য বলিয়া মনে করেন, তাহা হইলে তিনি সাক্ষ্য গ্রহণ করা হইয়াছে এমন যে কোন সাক্ষীকে তলব করিয়া পুনরায় তাহার সাক্ষ্য গ্রহণ করিতে পারিবেন।

(৫) ধারা ৪, ৫ ও ৬ এর অধীন কোন অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে, কোন আবেদনের প্রেক্ষিতে, ট্রাইবুনাল উপযুক্ত মনে করিলে অপরাধের শিকার কোন ব্যক্তি বা অন্য কোন সাক্ষীর জবানবন্দি রুদ্ধদ্বারা কক্ষে গ্রহণ করিতে পারিবেন৷

 

 

১৭। অভিযুক্ত শিশুর বিচার পদ্ধতি -

 

কোন শিশু এই আইনের অধীন অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে অভিযুক্ত হইলে তাহার ক্ষেত্রে Children Act, 1974 (Act XXXIX of 1974) এর বিধানাবলী যতদূর সম্ভব অনুসরণ করিতে হইবে।

 

১৮। আসামীর অনুপস্থিতিতে বিচার-

 

(১) যদি ট্রাইব্যুনাল এই মর্মে বিশ্বাস করিবার যুক্তিসংগত কারণ থাকে যে, -
      (ক) অভিযুক্ত ব্যক্তি তাহার গ্রেফতার বা তাহাকে বিচারের জন্য সোপর্দকরণ এড়াইবার জন্য পলাতক রহিয়াছে বা আত্নগোপন করিয়াছে; এবং
      (খ) তাহার আশু গ্রেফতারের কোন সম্ভাবনা নাই, তাহা হইলে ট্রাইব্যুনাল অন্তত দুইটি বাংলা দৈনিক খবরের কাগজে প্রজ্ঞাপিত আদেশ দ্বারা, আদেশে উল্লিখিত সময়, যাহা পনের দিনের বেশী হইবে না, এর মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিতে পারিবে এবং উক্ত সময়ের মধ্যে যদি অভিযুক্ত ব্যক্তি ট্রাইব্যুনালে হাজির হইতে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে ট্রাইব্যুনাল তাহার অনুপস্থিতিতে বিচার সম্পন্ন করিতে পারিবেন।

 

(২) যদি কোন অভিযুক্ত ব্যক্তি ট্রাইব্যুনালে হাজির হইবার পর বা তাহাকে ট্রাইব্যুনাল হাজির করিবার পর  বা তাহাকে ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক জামিনে মুক্তি দেওয়ার পর পলাতক হন, তাহা হইলে তাহার ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এর বিধান প্রযোজ্য হইবে না, এবং সেই ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া, অভিযুক্ত ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তাহার বিচার সম্পন্ন করিতে পারিবে।

 

১৯। ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক যে কোন স্থানে জবানবন্দি গ্রহণের ক্ষমতা

 

(১) এই আইনের অধীন সংঘটিত কোন অপরাধের তদন্তকারী কোন পুলিশ কর্মকর্তা বা তদন্তকারী অন্য কোন ব্যক্তি কিংবা অকুস্থলে কোন আসামীকে ধৃত করার সময় কোন পুলিশ কর্মকর্তা যদি মনে করেন যে, ঘটনা সম্পর্কে ওয়াকেবহাল বা ঘটনাটি নিজ চক্ষে দেখিয়াছেন এমন কোন ব্যক্তির জবানবন্দি অপরাধের ত্বরিত বিচারের স্বার্থে কোন ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক অবিলম্বে লিপিবদ্ধ করা প্রয়োজন, তাহা হইলে তিনি কোন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেটকে উক্ত ব্যক্তির জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করিবার জন্য লিখিতভাবে বা অন্য কোনভাবে অনুরোধ করিতে পারিবেন।

 

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লেখিত ম্যাজিষ্ট্রেট ঘটনাস্থলে বা অন্য কোন যথাযথ স্থানে উক্ত ব্যক্তির জবানবন্দি গ্রহণ করিবেন এবং উক্তরূপে গৃহীত জবানবন্দি তদন্ত প্রতিবেদনের সহিত সামিল করিয়া ট্রাইব্যুনালে দাখিল করিবার নিমিত্ত তদন্তকারী &#
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:28:40 AM
১৯৬৫ সালের
শ্রমিক নিয়োগ (স্থায়ী আদেশ আইন)
[The Employment of Labour (Standing Orders) Act, 1965]
[১৯৬৫ সালের ৮ নং আইন]

[১লা সেপ্টেম্বর, ১৯৬৫]

১৯৬০ সালের শিল্প ও বানিজ্যিক নিয়োগ (স্থায়ী আদেশ) অধ্যাদেশ বাতিল এবং কতিপয় সংশোধনীসহ পুন:প্রণয়নের উদ্দেশ্যে প্রণীত আইন।

যেহেতু দোকান ও বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত শ্রমিকদের চাকুরীর শর্তাবলী নিয়ন্ত্রনের জন্য ১৯৬০ সালের শিল্প ও বানিজ্যিক নিয়োগ (স্থায়ী অাদেশ) অধ্যাদেশটি বাতিল এবং কতিপয় সংশেধনীসহ পুন:প্রণয়ন করা সমীচীন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়াদির জন্য প্রয়োজন;
সেহেতু নিম্নোক্ত আইন প্রণয়ন করা হইলো:

ধারা-১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, আওতা, প্রবর্তন ও প্রয়োগ (Short title, extent, commencement and application): এই আইনকে ১৯৬৫ সালের শ্রমিক নিয়োগ স্থায়ী আদেশ আইন নামে অভিহিত করা হইবে।
(২) এই  আইন সমগ্র বাংলাদেশে প্রযোজ্য হইবে।
(৩) ইহা  অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
(৪) ইহা  প্রযোজ্য হইবে-
(ক) যে সকল   দোকান বা বানিজ্য প্রতিষ্ঠানের উপর [১৯৬৫ সালের দোকান ও প্রতিষ্ঠান আইন] প্রযোজ্য, তেমন সকল  দোকান ও বানিজ্যক প্রতিষ্ঠানে;
(খ) যে সকল   এলাকায় [১৯৬৫ সালের দোকান ও প্রতিষ্ঠান আইন] প্রযোজ্য, সেই সকল এলাকার সকল শিল্প প্রতিষ্ঠানে; এবং
(গ) [বাংলাদেশের] অন্যান্য এই লাকার প্রত্যেক শিল্প প্রতিষ্ঠানে, যেই ইখানে  পাঁচ বা ততোধিক শ্রমিক নিয়োজিত রহিয়াছেন অথবা পূর্ববর্তী বারো মাসের যে কোনো  দিনে নিয়োজিত ছিলেন।
তবে শর্ত হচ্ছে যে ,সরকারী মালিকানাধীন এবং [সরকার] কর্তৃক প্রত্যক্ষভাবে পরিচালিত কোনো দোকানে অথবা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে অথবা শিল্প প্রতিষ্ঠানে এই  আইনের বিধানসমূহ প্রযোজ্য হইবেনা এবং এই সকল  প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত ব্যক্তিগণ সরকারী কর্মচারী আচরণ বিধিমালা (Government Servant Conduct Rules) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হইবেন ।

ধারা-২। সংজ্ঞাসমূহ (Definitions) :
বিষয় ও প্রসঙ্গের বিপরীত না হইলে এই আইন অনুযায়ী -
(ক) ‘শিক্ষানবিস’  অর্থ, যে ব্যক্তি কাজ শিখিতেছে এবং শিক্ষাকালীন সময়ে ভাতা পাইয়া থাকে, তাহাকে বুঝাইবে;
(খ) ‘বদলী’ অর্থ, সাময়িকভাবে অনুপস্থিত স্থায়ী বা শিক্ষানবিস শ্রমিকের জায়গায় যে শ্রমিককে নিযুক্ত করা হইয়াছে;
(গ) ‘সাময়িক শ্রমিক’ অর্থ, যেই ই শ্রমিককে সাময়িকভাবে কাজে নিযুক্ত করা হইয়াছে;
(ঘ) ‘বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান’ অর্থ, বিজ্ঞাপন প্রচার, কমিশন অথবা মাল চালান দেওয়া ধরনের ব্যবসায় নিযুক্ত প্রতিষ্ঠান, অথবা কোনো বাণিজ্যিক এজেন্সী এবং তত্‍সহ যেই ই কোনো কারখানা বা বাণিজ্যিক সংস্থার কেরাণীর কাজ সংক্রান্ত বিভাগ, কোনো বাণিজ্যিক বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকের সহিত ব্যবসায়ের চুক্তিতে আবদ্ধ যে কোনো ব্যক্তি কর্মচারী নিয়োগ করিয়া ব্যবসায় করিয়া থাকে, তাহার অফিস, কোনো এজেন্ট, যুক্ত স্টক কোম্পানির যে কোনো ইউনিট, যে কোনো বীমা কোম্পানি, যেই  কোনো ব্যাংকিং কোম্পানি বা ব্যাংক, কোনো ব্রোকারের অফিস বা শেয়ার বাজার, কোনো ক্লাব, কোনো হোটেল বা রেস্তোরা বা খাবারের দোকান, কোনো সিনেমা বা থিয়েটার, কিংবা সরকার সরকারী গেজেটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করিয়া যেই  কোনো শ্রেণীর প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাকে এই আইনের আওতাভুক্ত বলিয়া ঘোষণা করিবেন;
(ঙ) ‘ডাইরেক্টর অব লেবার’ অর্থ, সরকার কর্তৃক উক্ত পদে নিযুক্ত অফিসার;
(চ) ‘চাকুরী  হইতে অপসারণ’ অর্থ, দৈহিক বা মানসিক দিক হইতে অক্ষমতা বা ক্রমাগত অসুস্থতা বা এই  ধরনের, অনুরূপ প্রকৃতির অন্য যেই  কোনো কারণে যাহা অসদাচারণ নহে, মালিক কর্তৃক কোনো শ্রমিককে কর্মচ্যুত করা;
(ছ) ‘বরখাস্তকরণ’ অর্থ, অসাদচরণের জন্য মালিক কর্তৃক কোনো শ্রমিককে কর্মচ্যুত করা;
(জ) ‘মালিক’ অর্থ কোনো দোকানে, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় ও ব্যবস্থাপনায় অধিষ্ঠিত কোনো ব্যক্তি, ব্যক্তিসমষ্টি, বিধিবদ্ধ সংস্থা, কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান, তাহাদের উত্তরাধিকারী বা বংশগত উত্তরাধিকারী (অবস্থানুযায়ী যেইরূপ হইবে), এবং তত্‍সহ নিম্নোক্ত ব্যক্তিগণ :-
(i) কোনো কারখানায় উহার ম্যানেজার;
(ii) কোনো স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, বা উহার পক্ষে পরিচালিত কোনো দোকানে, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত অফিসার, প্রধান নির্বাহী অফিসার; এবং
(iii) অন্য যেই  কোনো দোকান, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রত্যেক ডাইরেক্টর, ম্যানেজার, সেক্রেটারী, এজেন্ট ব্যবস্থাপনার সহিত সংশ্লিষ্ট এবং উহার তদারক ও নিয়ন্ত্রণের জন্য মালিকের নিকট দায়ী অন্য যেই  কোনো কর্মকর্তা বা ব্যক্তি;
(ঝ) ‘ধীরে কাজ করা’ অর্থ একদল শ্রমিক কর্তৃক সংঘবদ্ধভাবে উদ্দেশ্যমূলক ও ইচ্ছাকৃতভাবে স্বাভাবিক কাজের গতি বা উত্‍পাদন মন্থর করা এবং যাহা যান্ত্রিক গোলযোগ, যন্ত্রপাতি বিকল হওয়ার, বিজলী সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার বা খুচরা যন্ত্রপাতি বা স্বাভাবিক মাল-মশলা সরবাহের কারণে সংঘটিত হয়নি;

(ঞ) ‘শিল্প প্রতিষ্ঠান’ অর্থ কোনো কারখানা বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান, যেইখানে কোনো পণ্য উত্‍পাদন, সংযোজন বা প্রস্তুত করা হয়, অথবা যেইখানে ব্যবহার, পরিবহন, বিক্রয় বা চালান দেওয়ার উদ্দেশ্যে কোনো দ্রব্য বা দ্রব্যাংশ তৈয়ার করা, পরিবর্তন করা, মেরামত করা, ঝালাই করা, শ্রীবৃদ্ধি করা বা প্যাকিং করা হয়, অথবা নৌযানসহ অন্য যেই  কোনো শ্রেণীর যানবাহন, যাহাকে সরকার সরকারী গেজেটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে এই  আইনের আওতায় শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসাবে ঘোষণা করিবেন, এবং তত্‍সহ -
(i) যেই  কোনো মোটর বা বাস সার্ভিস;

‌(ii) যেই  কোনো ডক পোতাশ্রয় বা জেটি;
(iii) যেই  কোনো খনি, গ্যাসফিল্ড বা তৈল উত্তোলন ক্ষেত্র,
(iv) যেই  কোনো বাগান; অথবা
(v) ১৯৬৫ সালের কারখানা আইনে নির্দেশিত যেই  কোনো কারখানা বুঝাইবে;
(ট) ‘শ্রম আদালত’ অর্থ, ১৯৬৯ সালের শিল্প বিরোধ অধ্যাদেশ অনুসারে গঠিত যেই  কোনো আদালত ;
(ঠ) ‘লে-অফ’ অর্থ, কয়লা, বিজলী বা কাঁচামালের স্বল্পতা বা মওজুদ মালের জন্য বা যন্ত্রপাতি বিকল হওয়া বা অন্য কোনো কারণে মালিক কর্তৃক তাহার দোকান, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের মাস্টার রোলে নাম অন্তর্ভুক্ত  রহিয়াছে, এইরূপ শ্রমিককে চাকুরীতে বহাল রাখিতে ব্যর্থতা ও অস্বীকৃতি বা অক্ষমতা প্রকাশ করা;
(ড) ‘স্থায়ী শ্রমিক’ অর্থ, স্থায়ী ভিত্তিতে নিযুক্ত শ্রমিক বা সংশ্লিষ্ট দোকানে বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত যেই  শ্রমিক শিক্ষানবিসের মেয়াদ সন্তোষজনকভাবে সমাপ্ত করিয়াছে;
(ঢ) ‘বাগান’ অর্থ, সিংকোনা, রাবার, কফি বা চা উত্‍পাদনের উদ্দেশ্যে সংরক্ষিত বাগান এবং তত্‍সহ চিনিকলের অধীনস্থ ইক্ষু চাষের খামার, যেইখানে  উক্ত উদ্দেশ্যে পঁচিশ জন বা ততোধিক ব্যক্তিকে কাজে নিযুক্ত করা হইয়াছে;
(ণ) ‘সরকারী কর্মচারী’ অর্থ, ১৮৬০ সালের দন্ডবিধির ২১ ধারায় যাহাদিগকে বুঝানো হইয়াছে ;
(ত)’শিক্ষানবিস’ অর্থ, কোনো স্থায়ী পদ পূরণের জন্য অস্থায়ীভাবে কর্মে নিযুক্ত শ্রমিক, যাহার শিক্ষানবিস হিসাবে কার্যকালের মেয়াদ শেষ হয় নাই;
(থ) ‘ছাঁটাই’ অর্থ, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসাবে না হইয়া অনাবশ্যকতা হেতু মালিক কর্তৃক শ্রমিকের চাকুরীর অবসান ঘটানো;
(দ) ‘দোকান’ অর্থ, ইস্ট বেঙ্গল শপ্স এ্যান্ড এস্টাব্লিশমেন্টস অ্যাক্ট, ১৯৫১ দ্বারা যেই  সমস্ত দোকান বুঝানো হইয়াছে ;
(ধ) ‘অস্থায়ী শ্রমিক’ অর্থ, মূলত অস্থায়ী ধরনের কাজে নিযুক্ত শ্রমিক এবং অল্প কিছুদিন পর যাহার কাজ শেষ হইবে;
(ন) ‘ট্রেড ইউনিয়ন’ অর্থ, ১৯৬৯ সালের শিল্প সম্পর্ক অধ্যাদেশের অধীনে রেজিষ্ট্রিকৃত ইউনিয়ন;
(প) ‘মজুরী’ অর্থ, ১৯৩৬ সালের মজুরী প্রদান আইন অনুসারে সংজ্ঞায়িত মজুরী;
(ফ) ‘শ্রমিক’ অর্থ, কোনো দোকানে বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে কোনো দক্ষ, অদক্ষ, দৈহিক, কারিগরী, বাণিজ্য-সংক্রান্ত বা কেরাণীগিরী ধরনের কাজ করিবার জন্য মজুরী প্রদানের ভিত্তিতে নিযুক্ত ব্যক্তি (শিক্ষানবিশসহ), তাহার চাকুরীর শর্ত ব্যক্ত বা অব্যক্ত, যেই রূপ হইয়া থাকুক না কেন, কিন্তু নিম্নোক্ত ব্যক্তিগণ উহার অন্তর্গত হইবে না-
(i) প্রধানত ব্যবস্থাপনা -সংক্রান্ত প্রশাসনিক দায়িত্বে নিযুক্ত ব্যক্তি; অথবা,
(ii) তদারকির কাজে নিযুক্ত সেই ব্যক্তি, যেই ব্যক্তি তাহার দায়িত্ব হিসাবে, অথবা প্রাপ্ত ক্ষমতার বলে ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত বা প্রশাসনিক ধরনের দায়িত্ব পালন করিয়া থাকে।

ধারা-৩। চাকুরীর শর্তাবলী (Conditions of employment) :

(১) প্রত্যেক দোকানে বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের চাকুরী  এবং তত্‍সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয় এই  আইনের বিধান অনুসারে নিয়ন্ত্রিত হইবে।
তবে শর্ত এই যে, যেই  কোনো দোকানে, বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের বা যেই  কোনো শ্রেণীর কর্মচারীদের চাকুরী  নিয়ন্ত্রণের জন্য নিজস্ব বিধিমালা থাকিতে পারে, কিন্তু উক্ত বিধিমালা শ্রমিকদের নিকট এই  আইনের বিধান অপেক্ষা কম অনুকূল হইলে চলিবে না।
(২) উপধারা (১)-এর শর্তে বর্ণিত ব্যবস্থা অনুসারে কোনো দোকান, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের বা কোনো শ্রেণীর কর্মচারীদের চাকুরী  নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে কোনো চাকুরী-বিধি থাকিলে, উহা ৩০ ধারার অধীনে নিযুক্ত ইন্সপেক্টরের নিকট উক্ত দোকানের বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক অনুমোদনের জন্য পাঠাইবেন এবং ইন্সপেক্টরের অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত উক্ত চাকুরী-বিধি কার্যকর করা যাইবে না।
(৩) ইন্সপেক্টরের আদেশের ফলে অসন্তুষ্ট যে কোনো ব্যক্তি উক্ত নির্দেশ জারীর ত্রিশ দিনের মধ্যে চীফ ইন্সপেক্টরের নিকট আপিল করিতে পারিবেন এবং তিনি ইন্সপেক্টরের আদেশ বহাল রাখিতে, সংশোধন করিতে বা বাতিল করিতে পারিবেন।
(৪) চীফ ইন্সপেক্টরের আদেশের বিরুদ্ধে তাঁহার নির্দেশ জারির ত্রিশ দিনের মধ্যে সরকারের নিকট দ্বিতীয় আপিল করা যাইবে এবং সরকারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে।

ধারা-৪। শ্রমিকদের শ্রেণীবিভাগ এবং শিক্ষানবিশীর সময়-সীমা (Classification of workers and period of probation) :
(১) কোনো দোকানে বা বাণিজ্যে প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে চাকুরীতে নিযুক্ত শ্রমিককে তাহার কাজের প্রকৃতি ও শর্ত অনুযায়ী এবং এই  আইনের বিধানমতে নিম্নোক্ত যেই  কোনো শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত  করিতে হইবে :
(ক) শিক্ষানবিশ                   (ঘ) স্থায়ী
(খ) বদলী                         (ঙ) শিক্ষানবিশ এবং
(গ) সাময়িক                      (চ) অস্থায়ী।

(২) কেরানীগিরি ধরনের কাজে নিযুক্ত হইলে শ্রমিকের শিক্ষানবিশ থাকার সময়-সীমা ছয় মাস হইবে এবং অন্য ধরনের শ্রমিকদের বেলায় উক্ত সময়-সীমা তিন মাস হইবে। ছুটির জন্য কর্ম-বিরতি, বে-আইনী ‘লক-আউট’ বা ধর্মঘট (বে-আইনী ধর্মঘট নহে) চলাচালীন সময়ও উহার অন্তর্ভুক্ত  হইবে ।
তবে শর্ত এই  যে,  কোনো দক্ষ শ্রমিকের বেলায় তিন মাস  শিক্ষানবিশ থাকার সময় যদি কোনো কারণে তাহার যোগ্যতা যাচাই করা সম্ভব না হইয়া থাকে, তবে সেই ক্ষেত্রে তাহাকে শিক্ষানবিশ রাখার সময়-সীমা অতিরিক্ত তিন মাস বৃদ্ধি করা যাইতে পারে।
(৩) শিক্ষানবিশ থাকার সময়-সীমার মধ্যে উপধারার বিধানমতে দক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত তিন মাস কোনো শ্রমিককে চাকুরী  হইতে বরখাস্ত করা হইলে একই মালিক যদি তাহাকে পরবর্তী  তিন বত্‍সরের মধ্যে কোনো সময় চাকুরীতে নিযু্ক্ত করিয়া থাকেন, তবে স্থায়ী ভিত্তিতে নিযুক্ত না করা হইয়া থাকিলে তাহাকে শিক্ষানবিশ শ্রমিক বলিয়া গণ্য করিতে হইবে এবং তাহার মোট শিক্ষানবিশীর সময়-সীমার হিসাবের মধ্যে পূর্ববর্তী শিক্ষানবিশী সময়কালকে অন্তর্ভুক্ত  করিতে হইবে।
(৪) কোনো স্থায়ী শ্রমিককে কোনো নূতন পদে শিক্ষানবিশ নিয়োগ করা হইলে শিক্ষানবিশী সময়কালের মধ্যে যেই  কোনো সময় তাহার পুরাতন স্থায়ী পদে চলিয়া আসিতে পারে।
[১৯৯৪ সালের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং প্রশ্নের উত্তরের শেষ অংশ]।
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:29:55 AM
ধারা-৫। ছুটি ও অবকাশ (Leave and holidays) :
(১) দোকানে বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে চাকুরীতে নিযুক্ত শ্রমিকগণ ১৯৫১ সালের ইস্ট বেঙ্গল শপস এ্যান্ড এস্টাব্লিশমেন্টস অ্যাক্ট, ১৯৬৫ সালের ফ্যাক্টরীজ অ্যাক্ট এবং বর্তমানে প্রচলিত অন্য যে কোনো আইনে নির্দিষ্ট করা যাবতীয় সবেতন ছুটি ও অবকাশ ভোগ করিবার অধিকারী এবং তত্‍সহ সরকারী গেজেটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে সরকার শ্রমিকদের জন্য আরও যেই  সকল অবকাশ ঘোষণা করিবেন, তাহাসহ তাহারা সবেতন ভোগ করিতে পারিবে।
(২) কোনো শ্রমিক কাজে অনুপস্থিত থাকিয়া ছুটি লইতে চাহিলে উক্ত উদ্দেশ্যে তাহাকে মালিকের নিকট ছুটির ঠিকানা উল্লেখসহ লিখিতভাবে দরখাস্ত করিতে হইবে এবং মালিক বা তাহার ভারপ্রাপ্ত অফিসার দরখাস্ত দাখিলের এক সপ্তাহের মধ্যে এবং ছুটি আরম্ভের দুই দিন পূর্বে (যাহা পূর্বে  হয়) উক্ত দরখাস্তের উপর তাঁহার আদেশ লিপিবদ্ধ করিবেন।
তবে শর্ত এই যে,  জরুরী প্রার্থিত ছুটি যদি দরখাস্ত করিবার দিন হইতে বা উহার তিন দিনের মধ্যে শুরু হয়, তবে সেই ক্ষেত্রে মালিকের বা তাঁহার ভারপ্রাপ্ত অফিসারের আদেশে দরখাস্ত করিবার দিনই দিতে হইবে। প্রার্থিত ছুটি মঞ্জুর করা হইলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে ছুটির একটি ছাড়পত্র দিতে হইবে। আর ছুটির আবেদন প্রত্যাখ্যান করা বা মূলতবী রাখা হইলে তাহার কারণ উল্লেখসহ মালিককে উক্ত উদ্দেশ্যে রক্ষিত একটি রেজিষ্ট্রারে উহা লিপিবদ্ধ করিতে হইবে। ছুটিতে যাওয়ার পর শ্রমিক যদি ছুটির মেয়াদ বৃদ্ধি করিতে চায় এবং যদি বর্ধিত মেয়াদের জন্য ছুটি পাওনা থাকে, তবে তাহাকে মেয়াদ শেষ হওয়ার যথেষ্ট পূর্বে  মালিকের নিকট ছুটির মেয়াদ বাড়াইবার আবেদনপত্র লিখিয়া পাঠাইতে হইবে এবং মালিক যতদূর সম্ভব শ্রমিকের ছুটির ঠিকানায় বর্ধিত ছুটির আবেদন প্রত্যাখান বা মঞ্জুর করা সম্পর্কে স্বীয় সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে জানাইবেন।
(৩) প্রথমে মঞ্জুরকৃত ছুটির মেয়াদ বা পরে মঞ্জুরকৃত বর্ধিত মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও যদি শ্রমিক কাজে অনুপস্থিত থাকে, তবে ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী  দশ দিনের মধ্যে কাজে যোগদান না করিলে এবং যথাসময়ে কাজে যোগদান না করিবার সম্পর্কে মালিকের সন্তুষ্টি মোতাবেক কৈফিয়ত না দিলে তাহার চাকুরীর অধিকার হারাইবার সম্ভাবনা থাকিবে।
তবে শর্ত এই  যে, এই  ধারা অনুসারে শ্রমিক যদি তাহার চাকুরীর অধিকার হারায়, তাহা হইলে অতীত চাকুরীর জন্য আইন অনুযায়ী যেই সকল সুযোগ-সুবিধা তাহার প্রাপ্য হইয়াছে, তাহা হইতে তাহাকে বঞ্চিত করা যাইবে না এবং সম্ভব হইলে তাহাকে ‘বদলী’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত  করিয়া রাখিতে হইবে।
আরও শর্ত এই  যে , উক্ত শ্রমিক যদি ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে চাকুরীতে ফিরিয়া আসিতে না পারার কারণ দর্শাইয়া মালিকের নিকট সন্তোষজনক কৈফিয়ত দিতে ব্যর্থ হয়, তবে মালিক দোষ লাঘব করিবার মতো পরিস্থিতি থাকিলে উহা বিবেচনা করিয়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসাবে শ্রমিকের প্রত্যাবর্তনের তারিখ হইতে অনধিক সাত দিনের জন্য তাহাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করিতে পারিবেন এবং শ্রমিক ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর হইতে অনুপস্থিত থাকাকালীন সময়ের এবং সাময়িকভাবে বরখাস্ত থাকার সময়ের বেতন হইতে বঞ্চিত হইবে, তাহা হইলে উক্ত শ্রমিক চাকুরীর অধিকার হইতে বঞ্চিত হইবে না।

(৪) যদি একজন শ্রমিকের চাকুরীর, যাহার কোনো বার্ষিক ছুটি [১৯৬৫ সালের দোকান ও প্রতিষ্ঠান আইন], [১৯৬৫ সালের কারখানা অাইন] অথবা সাময়িকভাবে প্রযোজ্য অন্য যেই কোনো আইনের বিধান অনুযায়ী পাওনা থাকে এবং এই ছুটি উপভোগ করিবার আগে ছাঁটাই, কর্মচ্যুতি, বরখাস্ত, অবসান, অবসরগ্রহণ অথবা তাহার পদত্যাগের কারণে তাহার চাকুরীর অবসান হয়, তাহা হইলে অনুরূপ ভোগ্য ছুটির পরিবর্তে তিনি যে হারে মজুরী পাওয়ার অধিকারী ছিলেন, ছুটির সময়ে উক্ত আইনসমূহের বিধান অনুযায়ী সেই হারে মালিক তাহাকে মজুরী প্রদান করিবেন এবং এই মজুরী চাকুরীর অবসানের পরবর্তী দ্বিতীয় কর্মদিবস শেষ হইবার পূর্বে প্রদান করিতে হইবে।

 
ধারা-৬। কাজ বন্ধ রাখা (Stoppage of work) :
(১) যে কোনো সময় অগ্নিকান্ড, আকস্মিক বিপদ, যন্ত্রপাতি বিকল হওয়া, বিজলী সরবরাহ বন্ধ হওয়া, মহামারী, রাজনৈতিক গোলযোগ অথবা মালিকের আয়ত্ব বহির্ভুত অন্য যে কোনো কারণে মালিক তাহার দোকান, বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণভাবে বা উহার যে কোনো শাখা যে  কোনো সময়ের জন্য বন্ধ রাখিতে পারিবেন।
(২) কাজের সময়ের পরে উক্তরূপে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হইলে মালিক কারখানার বেলায় উহা সংশিষ্ট শাখার নোটিশ বোর্ডে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে কোনো প্রকাশ্য স্থানে নোটিশ লটকাইয়া কবে কাজ পুনঃআরম্ভ হইবে এবং বন্ধ থাকার সময় সংশ্লিষ্ট শ্রমিকগণ কর্মস্থলে থাকিবেন কিনা, তাহা স্পষ্ট করিয়া লিখিয়া জানাইবেন।
(৩) কাজের সময়ের মধ্যে উক্তরূপে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হইলে মালিক কারখানার বেলায় উহার সংশ্লিষ্ট শাখার নোটিশ বোর্ডে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে কোনো প্রকাশ্য স্থানে নোটিশ লটকাইয়া কাজ কবে পুনঃআরম্ভ হইবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্মচারীগণ তাহাদের কর্মস্থল ত্যাগ করিয়া যাইবে, না কর্মস্থলে উপস্থিত থাকিবে, তাহা স্পষ্ট করিয়া লিখিয়া জানাইবেন।
(৪) অনুরূপভাবে কাজ বন্ধ হওয়ার দরুন শ্রমিকগণ আটকা পড়িয়া গেলে-
(ক) আটকা পড়িবার মেয়াদ অনধিক এক ঘন্টা হইলে তজ্জন্য শ্রমিকের কিছুই পাওনা হইবে না;
(খ) এক ঘন্টার বেশি সময় আটকা থাকিলে শ্রমিক পুরা আটক থাকাকালীন সময়ের জন্য বেতন পাইবে।
(৫) কাজ বন্ধ রাখার মেয়াদ যদি একদিনের কাজের সময়ের অতিরিক্ত না হয়, তবে উপধারা (৪)-এর অনুচ্ছেদ (খ) অনুসারে বেতন পাওনা না হইলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকগণ উহার জন্য কোনো বেতন পাইবে না; কিন্তু কাজ বন্ধ রাখার মেয়াদ যদি একদিনের কাজের সময়ের অতিরিক্ত হইলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকগণ (বদলী ও সাময়িক শ্রমিক বাদে) একদিনের কাজের সময়ের অতিরিক্ত প্রতিদিনের জন্য বেতন পাইবে, এবং কাজ বন্ধ রাখার মেয়াদ একদিনের কাজের সময়ের অতিরিক্ত হইলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকগণ (বদলী ও সাময়িক শ্রমিক বাদে) একদিনের কাজের সময়ের অতিরিক্ত প্রতিদিনের জন্য বেতন পাইবে, এবং কাজ বন্ধ রাখার মেয়াদ তিন দিনের অতিরিক্ত হইলে ৯ ধারার বিধান মোতাবেক সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদিগকে লে-অফ করা যাইতে পারে এবং উক্ত লে-অফ কাজ বন্ধ হওয়ার দিন হইতে কার্যকরী হইবে, এবং প্রথম তিন দিনের জন্য শ্রমিকদিগকে কোনো বেতন দেওয়া থাকিলে, তাহা লে-অফ বাবদ তাহাদের পাওনা কাটিয়া লওয়া যাইবে।
তবে শর্ত এই  যে,  ঠিকা শ্রমিকের বেলায় পূর্ববর্তী মাসে তাহার প্রতিদিনের গড় আয়ের হিসাব করিয়া পূর্ববর্তী উপধারা মোতাবেক প্রাপ্য মজুরীর হার নির্ণয় করিতে হইবে।
(৬) কোনো দোকানের, বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের কোনো এক শাখায় বা বিভাগে ধর্মঘট চলিলে, উক্ত শাখা বা বিভাগ অথবা উহার দ্বারা প্রভাবিত অন্য যেই  কোনো শাখা বা বিভাগ মালিক সম্পূর্ণ বা আংশিকভাব বন্ধ রাখিতে পারিবেন  এবং অনুরূপ বন্ধ রাখার সময়ের জন্য শ্রমিকগণ কোনো বেতন পাইবে না।
তবে শর্ত এই  যে,  মালিক উক্ত বন্ধ রাখার বিষয়টি কারখানা হইলে উহার সংশ্লিষ্ট শাখায় বা বিভাগের নোটিশ বোর্ডে ও তত্‍সহ টাইম কিপারের অফিস থাকিলে, তাহার নোটিশ বোর্ডে এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বেলায় উহার কোনো প্রকাশ্য স্থানে বিজ্ঞপ্তির আকারে লটকাইয়া দিবেন এবং উক্ত বন্ধের মেয়াদ উত্তীর্ণ হইলে কোন তারিখ হইতে কাজ পুনঃআরম্ভ হইবে, উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে তাহারও উল্লেখ থাকিতে হইবে।

ধারা-৭। অব্যাহত চাকুরীর ‘এক বছর’ বা ‘ছয় মাস’ হিসাব (Calculation of ‘one year’ or ‘six months’ of continuous service) :
এই আইনের উদ্দেশ্যে কোনো শ্রমিক কোনো দোকানে বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে পূর্ববর্তী ১২ টি পঞ্জিকা মাসে প্রকৃতপক্ষে যথাক্রমে অন্যূন দুইশত চল্লিশ দিন ও একশত চল্লিশ দিন কাজ করিয়া থাকিলে যথাক্রমে এক বছর ও ছয় মাস কাজ করিয়াছে বলিয়া গণ্য করিতে হইবে এবং সেইভাবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে তাহার অব্যাহত চাকুরীর হিসাব গণনা করিতে হইবে।

ধারা-৮। ৬, ৯, ১০ এবং ১১ ধারা প্রয়োগে বিধি-নিষেধ (Restrictions of applications of sections6, 9, 10 and 11) :
এই আইনের অন্যত্র যাহাই থাকুক না কেন-
(ক) পাঁচজন বা ততোধিক সংখ্যক শ্রমিক যেইখানে  চাকুরীতে নিযুক্ত নাই, অথবা পূর্ববর্তী ১২ মাসে নিযুক্ত ছিল না, সেই সকল  দোকান, বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের বেলায় ৬, ৯, ১০ এবং ১১ ধারার বিধানসমূহ প্রয়োজন হইবে না;
(খ) চাকুরীতে নিযুক্ত শ্রমিকের সংখ্যা যাহাই হউক না কেন, সংশ্লিষ্ট দোকান, বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠান যদি মওসুমী ধরনের হয় এবং সেইখানে যদি মাঝে মাঝে কাজ হইয়া থাকে, তবে তাহাদের ক্ষেত্রেও ৯ হইতে ১১ পর্যন্ত ধারাগুলি প্রযোজ্য হইবে না।
তবে শর্ত এই  যে,  কোনো দোকান বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠান মওসুমী ধরনের কিনা এবং উহাতে মাঝে মাঝে কাজ চলে কিনা, এই  প্রশ্ন উত্থাপিত হইলে সেই সম্পর্কে সরকারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে।
আরও শর্ত এই যে, যেই সমস্ত দোকান বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের বেলায় এই ধারার (খ) অনুচ্ছেদ প্রযোজ্য, তাহাদের মালিককে ৬ ধারার (৫) উপধারার অধীনে কাজ বন্ধ হওয়ার কারণে লে-অফ হইলে ৯ হইতে ১১ ধারাগুলি অনুসরণের প্রয়োজন নাই।

ধারা-৯।‘লে-অফ’ শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের অধিকার (Rights of the laid-off workers for compensation):

(১) যে  শ্রমিকের নাম (বদলী বা সাময়িক শ্রমিক বাদে) কোনো দোকান বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের মাস্টার রোলের অন্তর্ভুক্ত রহিয়াছে এবং মালিকের অধীনে যাহার অব্যাহতভাবে অন্যূন এক বছর পূর্ণ হইয়াছে, তাহাকে লে-অফ করা হইলে মালিক তাহাকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলি বাদে লে-অফের অবশিষ্ট সমস্ত দিনগুলির জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ তাহার মোট মূল বেতন ও মহার্ঘ ভাতার অর্ধেক এবং আবাসিক ভাতা, যদি থাকে, পূর্ণ অংশ প্রদান করিবেন।
তবে শর্ত এই  যে , বদলী শ্রমিক যদি অব্যাহত চাকুরীর এক বত্‍সর পূর্ণ করিয়া থাকে এবং তাহার নাম যদি সংশ্লিষ্ট দোকান বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের মাস্টার রোলে অন্তর্ভূক্ত থাকে, তাহা হইলে তাহার ক্ষেত্রে এই  ধারার বিধান প্রযোজ্য হইবে না।
আরও শর্ত এই যে, মালিকের সহিত বিপরীত কোনো চুক্তিতে আবদ্ধ না হইয়া থাকিলে কোনো শ্রমিক উপরে বর্ণিত পদ্ধতি মোতাবেক কোনো পঞ্জিকা বত্‍সরের জন্য ৪৫ দিনের বেশি ক্ষতিপূরণ পাইবে না।
(২) উপধারা (১)-এর শর্তে যেই  বিধানই থাকুক না কেন, কোনো শ্রমিককে যদি একটি পঞ্জিকা বত্‍সরের একটানা বা বিরতিসহ ৪৫ দিনের বেশি লে-অফ করিয়া রাখা হইয়া থাকে এবং প্রথম ৪৫ দিন পর লে-অফের মেয়াদ যদি ১৫ দিন বা উহার বেশি হয়, তাহা হইলে (মালিকের সহিত তাহার বিপরীত কোনো চুক্তি না হইয়া থাকিলে) উক্ত শ্রমিককে পরবর্তী  ১৫ বা ততোধিক দিনের জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ তাহার মূল বেতনের ও মহার্ঘ ভাতার এক-চতুর্থাংশ এবং সম্পর্ণূ আবাসিক ভাতা, যদি থাকে, তাহা দিতে হইবে।
(৩) কোনো ক্ষেত্রে কোনো শ্রমিক একটি পঞ্জিকা বত্‍সরে প্রথম ৪৫ দিন লে-অফের পর পুনরায় ১৫ দিন বা তাহার অধিক দিনের জন্য লে-অফ করিবার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে, মালিক তাহাকে লে-অফ করিবার পরিবর্তে ১২ ধারা মোতাবেক ছাঁটাই করিতে পারিবেন।
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:31:01 AM
ধারা-১০। ‘লে-অফ’ শ্রমিকদের মাস্টার রোল  (Master-roll of laid –off workers) :
কোনো দোকান, বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের বা উহার কোনো শাখার শ্রমিকদের লে-অফ করা সত্ত্বেও মালিকের কর্তব্য হইবে, তাহাদের একটি মাস্টার রোল রাখা এবং লেইড-অফ শ্রমিকগণ যাহাতে নিজেরা উপস্থিত হইয়া বা তাহাদের প্রতিনিধিদের মারফত স্বাভাবিক কাজ চলিবার দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় উক্ত মাস্টার রোলে স্বাক্ষর করিতে পারে, তাহার ব্যবস্থা করা।
ধারা-১১। কতিপয় ক্ষেত্রে শ্রমিকরা ক্ষতিপূরণ পাইবে না (Workers not entitled to compensation in certain cases) :
এই  আইনের অন্যত্র যে বিধানই থাকুক না কেন, নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে লে- অফ শ্রমিক কোনোরূপ ক্ষতিপূরণ পাইবে না :-
(ক) একই দোকানে বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে, যেই  স্থানে তাহাকে লে-অফ করা হইয়াছে, অথবা একই মালিকের অধীনস্থ অন্য কোনো দোকানে বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে, যাহা একই শহরে বা গ্রামে অবস্থিত অথবা প্রথমোক্ত দোকান বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠান হইতে পাঁচ মাইলের মধ্যে অবস্থিত, যদি তাহাকে একই বেতনে কোনো বিকল্প চাকুরী  দেওয়া হয় এবং তজ্জন্য কোনো বিশেষ দক্ষতার বা পূর্ব অভিজ্ঞতার প্রয়োজন না হয়, তথাপি যদি সে উহা গ্রহণ করিতে অস্বীকার করিয়া থাকে;
(খ) মালিক চাহিলে সে যদি দিনে অন্তত কোনো নির্দিষ্ট সময়ে কাজের জন্য সংশিষ্ট দোকানে বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে হাজিরা না দিয়া থাকে; অথবা
(গ) সংশ্লিষ্ট দোকানের বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের অন্য অংশে ধর্মঘটের কারণে যদি উক্ত লে-লফ শুরু হইয়া থাকে।

ধারা-১২। ছাঁটাইয়ের শর্ত (Conditions of retrenchment) :
কোনো দোকানে বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত কোনো শ্রমিকের অব্যাহত চাকুরীর অন্যূন এক বত্‍সর পূর্ণ হইয়া থাকিলে নিম্নোক্ত শর্ত পূরণ ছাড়া মালিক তাহাকে ছাঁটাই করিতে পারিবে না।
(ক) ছাঁটাইয়ের কারণ উল্লেখপূর্বক শ্রমিককে এক মাসের লিখিত নোটিশ দিতে হইবে, অথবা তত্‍পরিবর্তে শ্রমিককে নোটিশ মেয়াদের বেতন দিতে হইবে;
(খ) ছাঁটাই সংক্রান্ত উক্ত নোটিশের একটি কপি চীফ ইন্সপেক্টর বা তত্‍কর্তৃক ভারপ্রাপ্ত অন্য কোনো অফিসারকে দিতে হইবে;
(গ) ছাঁটাই করিবার সময় শ্রমিককে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রতি সম্পূর্ণ এক বত্‍সরের চাকুরীর জন্য, অথবা ছয় মাসের অধিক সময়ের জন্য [৩০] দিনের বেতন অথবা গ্র্যাচুইটি, যদি পাওনা হয়, যাহা বেশি হইবে, পরিশোধ করিতে হইবে।
তবে শর্ত এই  যে, ৯ ধারার উপধারা (৩) অনুসারে কোনো শ্রমিককে ছাঁটাই করা হইলে অনুচ্ছেদ (ক) মোতাবেক তাহাকে নোটিশ দেওয়ার আবশ্যকতা নাই, কিন্তু অনুরূপ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে ক্ষতিপূরণ বা গ্র্যাচুইটি ছাড়াও অতিরিক্ত ১৫ দিনের বেতন অনুচ্ছেদ (গ) মোতাবেক পরিশোধ করিতে হইবে।

ধারা-১৩। ছাঁটাইয়ের পদ্ধতি (Procedure for retrenchments) :
কোনো বিশেষ শ্রেণীর শ্রমিক ছাঁটাই করিতে হইলে, শ্রমিক ও মালিকের মধ্যে অন্য কোনো চুক্তি না থাকিলে মালিক সাধারণত সংশ্লিষ্ট শ্রেণীর শ্রমিকদের মধ্যে সকলের শেষে যেই  ব্যক্তি চাকুরিতে নিযুক্ত হইয়াছে, তাহকে সর্বাগ্রে ছাঁটাই করিবেন; ছাঁটাইয়ের কারণ লিখিতভাবে জানাইবার আবশ্যকতা না থাকিলে মালিক অন্য যেই  কোনো শ্রমিককে ছাঁটাই করিতে পারিবেন।

ধারা-১৪। ছাঁটাইকৃত শ্রমিকের পুর্ননিয়োগ (Re-employment of retrenched workers) :
কোনো প্রতিষ্ঠানে যত শ্রমিক ছাঁটাই হইয়া থাকুক না কেন, উক্ত ছাঁটাইয়ের দিন থেকে এক বত্‍সরের মধ্যে মালিক তাঁহার প্রতিষ্ঠানে কোনো ব্যক্তিকে চাকুরীতে নিযুক্ত করিতে চাহিলে, তিনি সংশ্লিষ্ট শ্রেণীর ছাঁটাইকৃত শ্রমিকগণকে উক্ত নিয়োগের বিষয়ে সুযোগ প্রদান করিবেন এবং উক্ত উদ্দেশ্যে তাহাদের সর্বশেষ জানা ঠিকানায় নোটিশ প্রেরণ করিবেন এবং চাকুরীতে পুনর্নিযুক্তির উদ্দেশ্যে উক্ত নোটিশ প্রাপ্ত ছাঁটাইকৃত শ্রমিকগণ চাকুরীতে পুনর্নিযুক্তির ইচ্ছা প্রকাশ করিলে অন্যদের তুলনায় তাহাদিগকে অগ্রাধিকার দিতে হইবে এবং তাহাদের প্রত্যেককে উক্ত মালিকের অধীনে চাকুরীর মেয়াদের দৈর্ঘ্য অনুসারে অন্যের তুলনায় অগ্রাধিকার লাভের অধিকারী হইবে।

ধারা-১৫। জরিমানা (Fine) :
১৯৩৬ সালের মজুরী পরিশোধ আইনের বিধান মোতাবেক কোনো শ্রমিককে জরিমানা করা যাইতে পারে।
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:32:18 AM
ধারা-১৬। চাকুরী  হইতে অপসারণ (Discharge) :
দৈহিক বা মানসিক অক্ষমতার কারণে অসদাচরণের পর্যায়ে পড়ে না, অনুরূপ অন্য কোনো কারণে শ্রমিকদের চাকুরী  হইতে অপসারণ করা যাইতে পারে।
তবে শর্ত এই  যে,  অব্যাহত চাকুরী  অন্যূন এক বত্‍সর পূর্ণ হইয়া থাকিলে এবং সেই শ্রমিককে অপসারণ করা হইলে মালিক তাহাকে প্রতি এক বত্‍সরের বা ৬ মাসের অধিক চাকুরীর জন্য ৩০ দিনের করিয়া বেতন অথবা গ্র্যাচুইটি যদি উহা পাওনা হয়, এবং যাহা পরিমাণে অধিক, প্রদান করিবেন।

ধারা-১৭। চাকুরী  হইতে বরখাস্তকরণ (Dismissal from service) :
(১) এই  আইনের অন্যত্র লে-অফ, ছাঁটাই, চাকুরীচ্যুতি ও চাকুরি অবসান  সম্পর্কে যেইরূপ বিধানই থাকুক না কেন, একজন শ্রমিক-
(ক) কোনো অপরাধরে দরুন দন্ডাদেশপ্রাপ্ত হইলে তাহাকে পূর্বাহ্নে কোনো নোটিশ না দিয়া বা তত্‍পরিবর্তে বেতন বা কোনো ক্ষতিপূরণ না দিয়া বরখাস্ত করা যাইবে;
(খ) ১৮ নং ধারা অনুসারে অসদাচরণের দরুন দোষী সাব্যস্ত হইলে তাহাকে পূর্বাহ্নে কোনো নোটিশ না দিয়া বা তত্‍পরিবর্তে বেতন না দিয়া বরখাস্ত করা যাইবে।
তবে শর্ত এই  যে,  বরখাস্তকৃত শ্রমিকের একটানা চাকুরীর মেয়াদ এক বত্‍সরের কম না হইলে মালিক তাহাকে ক্ষতিপূরণস্বরূপ প্রতি এক বত্‍সরের বা ছয় মাসের অধিক চাকুরীর দরুন চৌদ্দ দিনের বেতন অথবা গ্র্যাচুইটি যাহা বেশি হয়, দিবেন।
(২) কোনো শ্রমিক অসদাচরণের জন্য দোষী সাব্যস্ত হইলে দন্ড লঘু করিবার যেই  কোনো অবস্থা বিবেচনা করিবার পর উপধারা (১)-এর বিধানমতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসাবে বরখাস্ত না করিয়া কর্মচ্যুত, কিংবা মজুরী, অথবা জীবিকা ভাতা ভিন্ন অনধিক সাতদিনের জন্য বরখাস্ত করা যাইতে পারে এবং এই  সময় ১৮ ধারার (২) উপধারা অনুযায়ী তদন্ত অনুষ্ঠানের জন্য (যদি এইরূপ তদন্ত হইয়া থাকে), শ্রমিকের সাময়িক বরখাস্তের অন্তর্ভুক্ত  বা অতিরিক্ত হইতে পারে, কিংবা তাহাকে অন্য প্রকার লঘু দন্ড দেওয়া যাইতে পারে।

ধারা-১৮। শাস্তিদানের পদ্ধতি (Procedure for punishment) :
(১) নিম্নোক্ত পদ্ধতি অনুসরণ ছাড়া কোনো শ্রমিককে চাকুরী  হইতে অপসারণ বা বরখাস্ত করিবার আদেশ জারি করা যাইবে না:
(ক) তাহার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহ লিখিতভাবে রেকর্ডভুক্ত করিতে হইবে;
(খ) লিখিত অভিযোগের একটি কপি তাহাকে দিতে হইবে এবং কৈফিয়ত দেওয়ার জন্য তাহাকে অন্যূন তিন দিনের সময় দিতে হইবে;
(গ) অনুরোধ করিলে তাহাকে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হইয়া বক্তব্য পেশের সুযোগ দিতে হইবে; এবং
(ঘ) অনুরূপ আদেশে মালিকের বা ম্যানেজারের অনুমোদন থাকিতে হইবে।
(২) অসদাচরণের দায়ে অভিযুক্ত শ্রমিককে তাহার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পর্কে তদন্ত সাপেক্ষে সাসপেন্ড করা যাইতে পারে এবং বিষয়টি কোনো আদালতে বিচারাধীন না থাকিলে উক্ত সাসপেনশনের মেয়াদ ষাট দিনের অধিক হইবে না।
তবে শর্ত এই যে,  যতদিন সাসপেন্ড করিয়া রাখা হইবে, ততদিন মালিক উক্ত শ্রমিককে মহার্ঘ ভাতা থাকিলে উহাসহ গড় বেতনের অর্ধেক হিসাবে জীবন ধারণের ভাতা প্রদান করিবেন।
(৩) সাসপেনশনের আদেশ লিখিতভাবে দিতে হইবে এবং শ্রমিককে, পেঁ ৌছাইয়া দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উহা কার্যকরী হইবে।
(৪) তদন্তের পর যদি আনীত অভিযোগসমূহের কোনো একটি সম্পর্কে শ্রমিক দোষী সাব্যস্ত হয় এবং ১৭ ধারার উপধারা (১) অনুসারে তাহাকে শাস্তি দেওয়া হয়, তাহা হইলে তদন্তের জন্য সাসপেনশনের সময়কালে কোনো বেতন সে পাইবে না, কিন্তু উপধারা (২)- এর শর্তে উল্লিখিত জীবন-ধারণ ভাতা তাহাকে দিতে হইবে।
(খ) শ্রমিক দোষী সাব্যস্ত না হইলে তদন্ত অনুষ্ঠানের জন্য যতদিন তাহাকে সাসপেন্ড করিয়া রাখা হইয়াছিল, ততদিন সে ডিউটিতে হাজির ছিল বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত সময়কালের বেতন তাহার প্রাপ্য হইবে এবং জীবন-ধারণ ভাতা হিসাবে তাহাকে যাহা দেওয়া হইয়াছে, তাহা উক্ত প্রাপ্য বেতন হইতে বাদ যাইবে।
(গ) শাস্তি দেওয়া হইলে উক্ত শাস্তি দানের আদেশ সম্বলিত পত্রের একটি কপি সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে দিতে হইবে।
(৫) মালিক কর্তৃক প্রদত্ত কোনো নোটিশ, চিঠি, অভিযোগনামা, আদেশ বা অন্য কোনো দলিল গ্রহণ করিতে যদি শ্রমিক অস্বীকার করিয়া থাকে,তবে ধরিয়া লইতে হইবে যে  উক্ত, নোটিশ, চিঠি, অভিযোগনামা, আদেশ বা দলিল উক্ত শ্রমিককে অর্পণ করা হইয়াছে, যদি উহার একটি কপি অফিসের নোটিশ বোর্ডে লটকাইয়া দেওয়া হইয়া থাকে এবং অপর একটি কপি মালিকের অফিসের রেকর্ডে প্রাপ্ত ঠিকানায় উক্ত শ্রমিকের নিকট রেজিষ্ট্রি ডাকযোগে পাঠানো হইয়া থাকে।
(৬) এই  আইন অনুসারে শাস্তি দানের সময় শ্রমিকের অসদাচরণের মাত্রা, তাহার চাকুরীর পূর্ববর্তী রেকর্ড (যদি কিছু থাকিয়া থাকে) এবং অন্য কোনো ক্ষমার যোগ্য বিষয় বা পরিস্থিতির অবনতি সাধক অবস্থা বিদ্যমান থাকিলে, তাহা মালিক বিবেচনা করিয়া দেখিবেন।
(৭) পূর্ববর্তী বর্ণিত উপধারাসমূহে বা এই  আইনের অন্যত্র যেই  বিধানই থাকুক না কেন, ধীরে কাজ করা বা বে-আইনী ধর্মঘটের ক্ষেত্রে মালিক শ্রম আদালতের অনুমতি লইয়া নোটিশ বোর্ডে নোটিশ লটকাইবার মাধ্যমে এক বা একাধিক শ্রমিককে একক বা যৌথভাবে চাকুরী  হইতে অপসারণ বা বরখাস্ত করিতে, অথবা অন্য কোনো শাস্তি দান করিতে পারিবেন।

ধারা-১৯। চাকুরীর অবসান (Termination of employment) :
(১) এই  আইনের অন্যত্র বর্ণিত বিধান অনুযায়ী না হইয়া অন্যভাবে মালিক কর্তৃক কোনো স্থায়ী শ্রমিকের চাকুরীর অবসান ঘটাইবার জন্য মাসিক বেতনে নিযুক্ত কর্মচারীর বেলায় * [একশত কুড়ি] দিনের নোটিশ এবং অন্যান্য কর্মচারীর বেলায় পঁয়তাল্লিশ দিনের নোটিশ মালিক কর্তৃক লিখিতভাবে দিতে হইবে।
তবে শর্ত এই  যে,  উক্ত নোটিশের পরিবর্তে যথাক্রমে *[একশত কুড়ি] দিনের বা *[ষাট] দিনের বেতন পরিশোধ করিলে চলিবে।
আরও শর্ত এই  যে, উপরোক্তরূপে যেই  শ্রমিকের চাকুরীর অবসান করা হইয়াছে, মালিক তাহাকে প্রতি পূর্ণ বত্‍সরের চাকুরীর জন্য, অথবা উহার যেই  কোনো অংশ ৬ মাসের অধিক হইলে *[ত্রিশ] দিন করিয়া বেতন ক্ষতিপূরণ বাবদ পরিশোধ করিবেন এবং ইহা ছাড়াও এই  আইন বা ঐ সময় প্রচলিত অন্য কোনো আইন অনুসারে তাহার অন্য কোনো সুযোগ-সুবিধা পাওনা হইলে তাহাও পরিশোধ করিবেন।
(২) কোনো স্থায়ী শ্রমিক নিজের চাকুরীর অবসান ঘটাইতে চাহিলে মাসিক বেতনপ্রাপ্ত শ্রমিকদের বেলায় এক মাসের এবং অন্য ধরনের শ্রমিকদের বেলায় ১৪ দিনের নোটিশ সংশ্লিষ্ট শ্রমিক কর্তৃক লিখিতভাবে মালিককে দিতে হইবে।
তবে শর্ত এই  যে,  উপধারা মতে কোনো শ্রমিক চাকুরীর অবসান ঘটাইলে উপধারা (১)-এর বর্ণিত কোনো ক্ষতিপূরণ পাইবার অধিকারী হইবে না, কিন্তু এই  আইন বা ঐ সময় প্রচলিত অন্য কোনো আইন অনুসারে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাওনা হইলে, তাহা তাহাকে পরিশোধ করিতে হইবে।
(৩) এই  আইনের অন্যত্র বর্ণিত বিধান অনুসারে না হইলে এবং যেই  অস্থায়ী কাজে তাহাকে নিয়োগ করা হইয়াছিল, সেই কাজের সমাপ্তি, অবসান, বিলুপ্তি বা বিচ্ছিন্নতার কারণপ্রসূত না হইলে, মালিক কর্তৃক অস্থায়ী শ্রমিকের চাকুরীর অবসান ঘটাইবার জন্য মাসিক বেতনে নিযুক্ত শ্রমিকের বেলায় এক মাসের নোটিশ এবং অন্যান্যদের বেলায় ১৪ দিনের নোটিশ লিখিতভাবে দিতে হইবে।

তবে শর্ত এই  যে, অবস্থানুয়ায়ী যথাক্রমে এক মাসের বা ১৪ দিনের বেতন নোটিশের পরিবর্তে পরিশোধ করিলে চলিবে।

ধারা-২০। প্রভিডেন্ট ফান্ড (Provident fund) :

কোনো প্রভিডেন্ট ফান্ডের সদস্য একজন শ্রমিক যদি উক্ত ফান্ডের বিধিমালা অনুসারে তাহা পাইবার অধিকারী হয়, তবে ছাঁটাই, বরখাস্ত, চাকুরীচ্যুত বা চাকুরী  অবসানের দরুন সে মালিকের চাঁদাসহ প্রভিডেন্ট ফান্ডের সুবিধা হইতে বঞ্চিত হইবে না।
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:33:23 AM
ধারা-২১। চাকুরীর সার্টিফিকেট (Certificate of service) :

প্রত্যেক শ্রমিক (সাময়িক ও বদলী শ্রমিক বাদে) চাকুরী হইতে ছাঁটাই, অপসারিত, বরখাস্ত, অবসর বা চাকুরীর অবসর হওয়াকালীন চাকুরী সংক্রান্ত এক ট ি সার্টিফিকেট পাইবার অধিকারী হইবে।

ধারা-২২। চাকুরীর বিদ্যমান শর্তাবলী সংরক্ষণ (Protection of existing conditions of employment) :
এই  আইন বলবত্‍ হওয়ার অব্যবহিত পূর্বে কোনো আইন, প্রথা, ব্যবস্থা, বা কোনো রায়, চুক্তি বা মীমাংসা কার্যকর থাকিলে উক্ত আইন, প্রথা, ব্যবস্থা বা রায়, চুক্তি বা মীমাংসার শর্ত মোতাবেক শ্রমিকের চাকুরীর শর্তাবলী যদি এই  আইনের বিধানের তুলনায় অধিকতর সুবিধাজনক হইয়া থাকে, তবে এই  আইনের কোনো বিধান দ্বারা তাহা ক্ষতিগ্রস্ত হইবে না।

ধারা-২৩। রেহাই দেওয়ার ক্ষমতা (Power to exempt) :
সরকার গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে নির্ধারিত শর্ত আরোপ করিয়া যেই  কোনো দোকান বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বা যেই  কোনো শ্রেণীর প্রতিষ্ঠানকে এই  আইনের যেই  কোনো বিধানের বা সামগ্রিকভাবে এই  আইনের আওতা হইতে রেহাই দিতে পারিবেন।

ধারা-২৪। আবাসিক গৃহ হইতে উচ্ছেদকরণ (Eviction from residential accomodation) :
(১) মালিক কর্তৃক প্রদত্ত আবাসিক সুযোগ ভোগ করিতেছে, এইরূপ শ্রমিক ছাঁটাই, অপসারিত, বরখাস্ত বা তাহার চাকুরীর অবসান হইলে, উক্ত ছাঁটাই, অপসারণ, বরখাস্তকরণ বা অবসান সম্পর্কে কোনো আদালতে কোনো মামলা মূলতবী না থাকিলে ছাঁটাই, অপসারিত, বরখাস্ত বা চাকুরীর অবসান হওয়ার তারিখ হইতে পনেরো দিনের মধ্যে উক্ত বাসগৃহ খালি করিয়া যাইবে।
(২) উপধারা (১) অনুসারে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক উক্ত বাসগৃহ খালি করিয়া যাইতে ব্যর্থ হইলে, উক্ত বিষয়ে এখতিয়ার রহিয়াছে, এইরূপ কোনো প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মালিক অভিযোগ দায়ের করিতে পারিবেন।
(৩) ঐ সময় প্রচলিত অন্য কোনো আইনে যেই রূপ বিধানই থাকুক না কেন, ম্যাজিস্টেট উভয় পক্ষের বক্তব্য শ্রবণের পর সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে মোকদ্দমা নিষ্পত্তি করিবেন এবং শ্রমিককে যুক্তিসঙ্গত সময় দান করিয়া তাহাকে উক্ত বাসগৃহ হইতে উচ্ছেদের আদেশ দিতে পারিবেন।
(৪) উপধারা (৩) অনুসারে প্রদত্ত সময়-সীমার মধ্যে বাসস্থান খালি না করিলে শ্রমিককে বলপুর্বক উচ্ছেদ করিবার জন্য ম্যজিস্ট্রেট প্রয়োজনবোধে কোনো পুলিশ অফিসারকে আদেশও দিতে পারিবেন।
(৫) উপধারা (৪) মতে ম্যাজিস্টেটের নির্দেশ পালনের সময় উক্ত পুলিশ অফিসার ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশের বিবরণসহ উক্ত গৃহে তাঁহার প্রবেশের ইচ্ছার কথা সংশ্লিষ্ট বাসিন্দাকে জানাইবেন এবং বাসিন্দাগণকে ঘর খালি করিয়া দিবার জন্য অন্যূন দুই ঘন্টা সময় দিবেন এবং উক্ত গৃহের দখল লইবার জন্য যদি বলপ্রয়োগ করিবার প্রয়োজনীতা দেখা দেয়, তবে সেইক্ষেত্রে শিশু ও মহিলা বাসিন্দাগণকে ঘর হইতে বাহির হইয়া যাওয়ার জন্য যুক্তিসঙ্গত সুযোগ দান করিবেন।

ধারা-২৫। অভিযোগ উত্থাপনের পদ্ধতি (Grivance procedure) :
(১) কোনো শ্রমিকের১ [বরখাস্ত, কর্মচ্যুত ছাঁটাই, লে-অফ বা অন্যভাবে চাকুরী  হইতে অপসারিত শ্রমিকসহ] এই  আইন অনুসারে কোনো বিষয়ে ব্যক্তিগত কোনো অভিযোগ করিবার থাকিলে এবং এই  ধারার অধীনে উহার প্রতিকার পাইতে ইচ্ছুক হইলে, নিম্নোক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করিতে হইবে :
(ক) অভিযোগের কারণ উদ্ভবের পনেরো দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক লিখিতভাবে ২[রেজিস্টার্ড ডাকযোগে] স্বীয় অভিযোগ মালিকের নিকট পেশ করিবে এবং মালিক উক্ত অভিযোগ প্রাপ্তির ত্রিশ দিনের মধ্যে বিষয়টি সম্পর্কে তদন্ত করিবেন এবং এই  শ্রমিককে তাহার বক্তব্য পেশের সুযোগ দিবেন এবং নিজের সিদ্ধান্ত উক্ত শ্রমিককে লিখিত ভাবে জ্ঞাপন করিবেন।
(খ) অনুচ্ছেদ (ক) অনুযায়ী যদি মালিক তাহার সিদ্ধান্ত জ্ঞাপন করিতে ব্যর্থ হন, অথবা শ্রমিক যদি মালিকের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট না হয় এবং ১৯৫৮ সালের শিল্প বিরোধ অধ্যাদেশের বিধান অনুসারে বিষয়টি যদি শ্রম বিরোধ হিসাবে ইতিমধ্যে উত্থাপিত না হইয়া থাকে বা উত্থাপনের উদ্যোগ না লইয়া থাকে, তাহা হইলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক অনুচ্ছেদে (ক) অনুসারে শেষ দিন হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে অথবা সিদ্ধান্তের তারিখ হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে শ্রম আদালতে (এই  বিষয়ে যাহার এই খতিয়ার রহিয়াছে) অভিযোগ দায়ের করিতে পারে।
তবে শর্ত এই  যে, সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের ট্রেড ইউনিয়ন কার্যকলাপের দরুন ১৯ ধারা অনুসারে তাহার চাকুরী  অবসানের অভিযোগ না থাকিলে বা সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে উক্ত ধারার নির্দিষ্ট সুবিধা হইতে বঞ্চিত করা না হইয়া থাকিলে, তাহার চাকুরীর অবসানের আদেশের বিরুদ্ধে কোনো নালিশ করিবে না।
(গ) অনুচ্ছেদ (খ) অনুসারে কোনো অভিযোগ প্রাপ্তির পর আদালত নোটিশ জারি এবং পক্ষসমূহের বক্তব্য শ্রবণের পর নিজ বিবেচনা মোতাবেক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবেন;
(ঘ) অভিযোগ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় আদালত নিজ বিবেচনা মোতাবেক যতটা ন্যায় সঙ্গত মনে করিবেন, বাদীকে বিবাদী কর্তৃক তদনুরূপ মামলার খরচ প্রদানের আদেশ দিতে পারিবেন এবং উক্ত নির্দেশ চূড়ান্ত হইবে।
তবে শর্ত এই  যে, এই  ধারা অনুসারে আনীত কোনো অভিযোগ এই  আইনের ২৭ ধারা অনুসারে ফৌজদারীতে সোপর্দকরণ বিবেচিত হইবে না;
(ঙ) আদালতে অভিযোগ দায়েরের জন্য বা কোনো কাগজপত্র দাখিল বা একজিবিট করিবার জন্য কোনোরূপ কোর্ট ফী দিতে হইবে না।
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:33:57 AM
ধারা-২৬। ২৫ ধারা অনুসারে আদালতের আদেশ অমান্য করিবার শাস্তি (Penalty for non-compliance of Court’s order under section 25) :
(১) ২৫ ধারা অনুসারে প্রদত্ত আদালতের আদেশ কেহ পালন করিতে অস্বীকার করিলে বা পালন করিতে ব্যর্থ হইলে, সে অনধিক তিন মাস পর্যন্ত বিনা শ্রমে কারাদণ্ড বা অনধিক এক হাজার টাকার পর্যন্ত জরিমানা, অথবা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবে।
(২) ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি কর্তৃক উত্থাপিত অভিযোগ ব্যতীত উপধারা (১) অনুসারে অপরাধ আদালত কর্তৃক আমলে গ্রাহ্য হইবে না।

ধারা-২৭। শাস্তি ও উহার পদ্ধতি (Penalties and procedure) :
(১) কোনো মালিক তাহার দোকানে বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে প্রযোজ্য এই  আইনের কোনো বিধান অমান্য করিলে প্রথমবারের অপরাধের জন্য অনধিক পাঁচশত টাকা পর্যন্ত জরিমানা দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং উপর্যুপরি অপরাধ করিতে থাকিলে, প্রথম অপরাধের পর পরবর্তী  অপরাধসমূহের জন্য প্রতিদিন অনধিক পঞ্চাশ টাকা করিয়া জরিমানায় দণ্ডনীয় হইবেন এবং পরবর্তী  দিনগুলির অপরাধের প্রতিটির জন্য অনধিক পাঁচশত টাকা জরিমানায়, অথবা অনধিক এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডে, অথবা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং উক্ত পরবর্তী  অপরাধ হইতে উদ্ভত অব্যাহত অপরাধের জন্য প্রতিদিন পঞ্চাশ টাকা করিয়া জরিমানায় দণ্ডনীয় হইবেন।
(২) এই  আইনের অন্যত্র বর্ণিত বিধান অনুসারে অন্য কোনোরূপ শাস্তির ব্যবস্থা না থাকিয়া থাকিলে, এই  আইনের যেই  কোনো বিধান যেই  কেহ ভঙ্গ করিলে প্রথম বারের অপরাধের জন্য দুইশত টাকা পর্যন্ত জরিমানাদণ্ডে এবং পরবর্তী  প্রতিটি অপরাধের জন্য দুইশত টাকা পর্যন্ত জরিমানা, অথবা অনধিক এক মাসে বিনাশ্রম কারাদণ্ডে অথবা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবে।
(৩) এই  ধারা অনুসারে দণ্ডনীয় কোনো অপরাধ সম্পর্কে কেবল চীফ ইন্সপেক্টর বা তাঁহার দ্বারা ভারপ্রাপ্ত কোনো অফিসার ছাড়া বা তাঁহার লিখিত পূর্ব অনুমতি ছাড়া অন্য কেহ বা অন্য কোনভাবে কেহ অভিযোগ দায়ের করিতে পারিবে না।
(৪) এই  ধারা এবং ২৬ ধারা অনুসারে দণ্ডনীয় কোনো অপরাধের বিচার প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে অধস্তন কোনো আদালতে করিতে পারিবেন না।

ধারা-২৮। এই  আইনের সংক্ষিপ্ত-সার বিজ্ঞাপিত করা (Display of notice of abstracts of the Act) :
এই  আইনের বিধানসমূহ এবং তদানুসারে প্রণীত বিধিমালা এবং ৩ ধারার শর্ত মোতাবেক চাকুরীর কোনো নিয়ন্ত্রণবিধি প্রণীত হইয়া থাকিলে, উহার সারমর্ম বাংলায় ও [ইংরেজিতে]* স্পষ্টাক্ষরে লিখিয়া মালিক কর্তৃক সংশ্লিষ্ট দোকানের বা বাণিজ্য বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের কোনো প্রকাশ্য স্থানে উক্ত উদ্দেশ্যে রক্ষিত বিশেষ বোর্ডে প্রাধান্য সহকারে লটকাইয়া রাখিতে হইবে।
তবে শর্ত এই  যে,  নিযুক্ত শ্রমিকের সংখ্যা সাত জনের কম হইলে সেই সকল  দোকান বা বাণিজ্য বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের বেলায় এইই ধারা প্রযোজ্য নয়।

ধারা-২৯। মালিকের দায়-দায়িত্ব (Liability of employer) :
এই  আইনের বিধানসমূহ যথাযথভাবে এবং বিশ্বস্ততার সহিত পালনের ব্যাপারে প্রত্যেক দোকানের বা বাণিজ্য বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক ব্যক্তিগতভাবে দায়ী থাকিবেন।

ধারা-৩০। চীফ ইন্সপেক্টর ও ইন্সপেক্টরগণ (Chief Inspector and inspectors) :
[কারখানা ও প্রতিষ্ঠানসমূহের চীফ ইন্সপেক্টর] এই ক্ষেত্রে চীফ ইন্সপেক্টর হইবেন এবং এই  আইন অনুসারে প্রদত্ত চীফ ইন্সপেক্টরের ক্ষমতা ছাড়াও [বাংলাদেশ] সর্বত্র এ ক জ ন ইন্সপেক্টরের ক্ষমতাও তাহার থাকিবে এবং অন্যান্য ইন্সপেক্টরের উপর নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির ক্ষমতাও তাহার থাকিবে।
তবে শর্ত এই যে,  চীফ ইন্সপেক্টর তাঁহার ক্ষমতা বা কোনো আংশিক ক্ষমতা তাহার অধীনস্থ যেই  কোনো অফিসার বা অফিসারদের উপর ন্যস্ত করিতে পারিবেন।
(২) এই  আইনের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে সরকার নিজ পছন্দ মোতাবেক ইন্সপেক্টর পদে লোক নিয়োগ করিতে এবং তাহাদের স্ব-স্ব স্থানীয় সীমানা নির্ধারণ করিয়া দিতে পারিবেন।
(৩) একজন ইন্সপেক্টর যেই  কোনো যুক্তিসঙ্গত সময়ে যেই  কোনো স্থানে প্রবেশ করিয়া এই  আইনের বিধানসমূহ কার্যকরকরণের সহিত সম্পর্কযুক্ত যেই  কোনো রেকর্ড, রেজিস্টার বা অন্য যেই  কোনো দলিলপত্র পরীক্ষা করিতে এবং উক্ত স্থানে বা অন্যত্র যেই  কোনো ব্যক্তির নিকট হইতে প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য গ্রহণ করিতে পারিবেন এবং সংশ্লিষ্ট মালিক বা দখলকারী এই  আইনের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য তাহাকে যেই  কোনো যুক্তিসঙ্গত সহায়তা প্রদানে বাধ্য থাকিবেন।

ধারা-৩১। বিধিমালা প্রণয়নের ক্ষমতা (Powers to make rules) :
(১) এই  আইনে উদ্দেশ্য সাধনের জন্য পূর্বাহ্নে গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের শর্ত সাপেক্ষে সরকার বিধানমালা প্রণয়ন করিতে পারিবেন।
(২) পূর্বে বর্ণিত কোনো ক্ষমতা ক্ষুন্ন না করিয়া এই  আইন অনুসারে নির্দিষ্ট সমস্ত বা যে কোনো বিষয় সম্পর্কে বিধিমালা প্রণয়ন করা যাইবে।
(৩) এই  ধারার অধীনে প্রণীত বিধিমালায় এই  বিধানও রাখা যাইতে পারে যে , বিধিমালা অমান্য করা হইতে অনধিক একশত টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যাইবে।

ধারা-৩২। বাতিল এবং সংরক্ষণ (Repeal and savings) :

(১) ১৯৬০ সালের দি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড কমার্শিয়াল এমপ্লয়মেন্ট (স্ট্যান্ডিং অর্ডার্স) অর্ডিন্যান্স এতদ্বারা বাতিল করা হইলো।

(২) বাতিল সত্ত্বেও  কোনো কিছু করা হইয়া থাকিলে, কার্যসম্পাদন হইয়া থাকিলে,বিধিমালা প্রণীত হইয়া থাকিলে অথবা উক্ত অধ্যাদেশের অধীনে বিজ্ঞপ্তি বা অআদেশ প্রদান করা হইয়া থাকিলে, যতখানি এই আইনের বিধানসমূহের সহিত অসঙ্গতিপূর্ নহে এই আইনের অনুরূপ বিধান মোতাবেক হইয়াছিল, সম্পাদন করা হইয়াছিল, প্রণীত হইয়াছিল, গণ করা হইবে।

(৩) সাময়িকভাবে কার্যকর অন্য যেই কোনো আইনে ১৯৬০ সালের দি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড কমার্শিয়াল এমপ্লয়মেন্ট (স্ট্যান্ডিং অর্ডার্স) অর্ডিন্যান্সের উল্লেখ থাকিলে এই আইনের উল্লেখস্বরূপ ব্যাখ্যা করিতে হইবে।

তথ্যসূত্র : শ্রম ও শিল্প অাইন
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:34:26 AM
মজুরী পরিশোধ আইন-১ঌ৩৬
[THE PAYMENT OF WAGES ACT, 1936]
[১ঌ৩৬ সালের ৪নং আইন]

[২৩শে এপ্রিল, ১ঌ৩৬]

শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত কতিপয় শ্রেণীর ব্যক্তিদের মজুরী প্রদান নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রণীত আইন।

যেহেতু শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহে নিযুক্ত কতিপয় শ্রেণীর ব্যক্তিদের মজুরী পরিশোধ নিয়ন্ত্রণ করা সমীচীন ;

অতএব, এতদ্বারা নিম্নোক্ত আইন প্রণীত হইলো :

 

ধারা-১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, আওতা, প্রবর্তন ও প্রয়োগ (Short title, commencement and applications) :

উপধারা-(১) এই আইনকে ১ঌ৩৬ সালের মজুরী পরিশোধ আইন নামে অভিহিত করা যাইতে পারে।

উপধারা- (২)  [ (২) সমগ্র [বাংলাদেশে] এটি কার্যকর হইবে।]

উপধারা- (৩)  [সরকার] [সরকারী গেজেটে] প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে যেই তারিখ নির্ধারণ করিবেন, সেই তারিখ হইতে ইহা কার্যকর হইবে।

উপধারা- (৪) প্রথমত কারখানার নিযুক্ত ব্যক্তি এবং (কারখানা ব্যতীত) [রেলওয়ে] প্রশাসন কর্তৃক [রেলওয়েতে] নিযুক্ত বা সরকারি বা রেল প্রশাসনের সহিত সম্পাদিত চুক্তি পূরণের উদ্দেশ্যে কোনো সাব-কন্ট্রাক্টর কর্তৃক নিযুক্ত ব্যক্তিদের মজুরী পরিশোধের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

উপধারা- (৫) উদ্দেশ্য অবহিত করিয়া [সরকারী] [সরকারী গেজেটে] তিনমাসের নোটিশ দিয়া অত্র আইনের বিধানসমূহ বা কোনো বিধান যেই কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানে বা কোনো শ্রেনীর বা শিল্প প্রতিষ্ঠানগুচ্ছে নিযুক্ত যেই কোনো শ্রেণীর ব্যক্তিদের মজুরী পরিশোধের ক্ষেত্রে সম্প্রসারিত করিতে পারিবেন।

উপধারা- (৬) কোনো দোকান, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে ভাড়ায় বা বখশিশের বিনিময়ে দক্ষ, অদক্ষ, কায়িক, কারিগরি, ব্যবসা উন্নয়নমূলক বা করণিক কাজে নিযুক্ত ব্যক্তি, চাকরির শর্ত ব্যক্ত বা অব্যক্ত যাহাই হোক না কেন, শিক্ষানবিশসহ  যেকোনো ব্যক্তির মজুরী পরিশোধের ক্ষেত্রে অত্র আইন প্রযোজ্য হইবে। তবে  নিম্নরূপ ব্যক্তি এর অন্তর্ভুক্ত হইবে না :

(ক) ব্যবস্থাপনা বা প্রশাসনিক কর্তৃত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি,

(খ) তদারকির কাজে নিযুক্ত হয়ে ন্যস্ত ক্ষমতার প্রকৃতি বা তাহার উপর আরোপিত ক্ষমতার কারণে ব্যবস্থাপনা বা তদারকি ধরনের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি।

ধারা-২। সংজ্ঞা (Definitions) :

প্রসঙ্গ বা বিষয়বস্তুতে পরিপন্থী কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে -

(i) ‘কারখানা’ (factory) বলিতে (১ঌ৬৫ সালের কারখানা আইনের ২ ধারার (চ) অনুচ্ছেদে বর্ণিত কারখানা] বুঝাইবে।

(ii) ‘শিল্প প্রতিষ্ঠান’ (industrial establishment) বলিতে বুঝাইবে যেই কোনো –

(ক) ট্রামওয়ে বা মোটর বাস সার্ভিস;

(খ) ডক, পোতাশ্রয় বা জেটি;

(গ) [১ঌ৭৬ সালের ইনল্যান্ড শিপিং অধ্যাদেশ (১ঌ৭৬ সালের ৭২ নং অধ্যাদেশ)-এ বর্ণিত অভ্যন্তরীন জাহাজ। ]

(ঘ) খনি, উত্তোলন কেন্দ্র বা তেল ক্ষেত্র;

(ঙ) বাগান;

(চ) ব্যবহার, পরিবহন বা বিক্রির উদ্দেশ্যে কোনো দ্রব্য তৈরি, সংযোজন বা উৎপন্ন হয়, এমন কারখানা বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান;

[(ছ) বিমান সংস্থা;]

 [(জ) দালান, রাস্তা, সুড়ঙ্গ, ড্রেন বা সেতু নির্মাণ, পুনঃনির্মাণ, মেরামত, পরিবর্তন বা বিলুপ্তিকরণের বা সংশ্লিষ্ট কাজে বা মালামাল পরিবহন, উত্তোলন বা খালাসকরণ বা সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত সাব-কন্ট্রাক্টরসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে যেই কোনো কন্ট্রাক্টরের প্রতিষ্ঠান;]]

(iii) বাগান (Plantation) বলতে সিংকোনা,রাবার, কফি বা চা উত্‍পাদনের উদ্দেশ্যে সংরক্ষিত সম্পত্তি যেখানে সে উদ্দেশে পঁচিশ বা ততোধিক ব্যক্তিকে কাজে নিয়োজিত করা হয় তাহাকে বুঝাবে;

(iv) নির্ধারিত (Prescribed) বলিতে এ অাইনের অাওতাধীনে প্রণীত বিধিমালা দ্বারা নির্ধারিত বুঝাবে;

(v) রেল প্রশাসন(Rail way Administration) বলিতে ১৮৯০ সালের রেলওয়ে অাইনের (১৮৯০ সালের ৯ নং অাইন) এর ৩ ধারার ৬ উপধারায় বর্ণিত অর্থবোধক বুঝায়; এবং

(vi) মজুরী(Wages) বলিতে প্রকাশযোগ্য যেকোনো পারিতোষিক যা চাকুরীর শর্ত, ব্যক্ত বা অারোপিত যাই হোক না কেন, পূরণ সাপেক্ষে কোনো ব্যক্তিকে প্রদেয় হয় বা যাহা কাজে নিযুক্ত ব্যক্তির উপস্থিতি, ভাল কাজ বা আচরণ বা ভাল ব্যবহার এর শর্ত সাপেক্ষে নিযুক্ত ব্যক্তিকে তাহার নিযুক্তির কারণে বা কৃত কর্মের জন্য পরিশোধযোগ্য তাহাকে বুঝায় এবং যে কোনো বোনাস বা উপরে বর্ণিত ধরনের পরিশোধযোগ্য অন্যান্য অতিরিক্ত পারিতোষিক বা এরূপ ব্যক্তির চাকুরীর অবসানের দরুন যে অর্থ প্রদেয় হয় তাও ইহার অন্তর্ভূক্ত; কিন্তু নিম্নলিখিত বিষয়গুলি ইহার অনর্র্ভুক্ত হইবে না :

(ক) অাবাসিক সুবিধা,সরবরাহকৃত আলো,পানি বা চিকিত্‍সা সুবিধা বা সরকারের সাধারণ বা বিশেষ নির্দেশে বাদ দেওয়া হইয়াছে এমন সুযোগ সুবিধা বাবদ মূল্য;

(খ) কোনো পেনশন ফান্ড বা প্রভিডেন্ট ফান্ডে মালিক কতৃর্ক প্রদত্ত চাঁদা;

(গ) যেকোনো যাতায়াত ভাতা বা যাতায়াত বাবদ প্রদত্ত সুবিধার মূল্য;

(ঘ)চাকুরীর ধরনের কারণে নিযুক্ত ব্যক্তির বিশেষ ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রদত্ত অর্থ; অথবা

(ঙ) ডিসচার্জ এর কারণে প্রদেয় গ্রাচুয়িটি ।

 

ধারা-৩। মজুরী পরিশোধের দায়িত্ব (Responsibility for payment of wages) : মালিক তত্‍কর্তৃক নিযুক্ত সকল ব্যক্তিকে আইনের অধীনে প্রাপ্য সকল মজুরী পরিশোধের জন্য দায়ী। শর্ত হইতেছে ,(কন্ট্রাক্টর কর্তৃক নিয়োগ ব্যতীত) নিম্নোক্ত নিযুক্ত ব্যক্তিগণ -

(ক) [কারখানার ক্ষেত্রে ১ঌ৬৫ সালের কারখানা আইনের ৬ ধারার (১) উপধারার (চ) অনুচ্ছেদ] অনুযায়ী ‘ম্যানেজার’ নামান্কিত ব্যক্তি;

(খ) শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে শিল্প প্রতিষ্ঠানের তদারকি ও নিয়ন্ত্রণের জন্য মালিকের নিকট দায়ী ব্যক্তি;

(গ) রেলওয়ের ক্ষেত্রে (কারখানা ব্যতীত), রেল প্রশাসন মালিক হইবে বা রেল প্রশাসন সংশ্লিষ্ট স্থানীয় এলাকার জন্য কোনো ব্যক্তিকে এইজন্য মনোনীত করিলে এই প্রকারের নামান্কিত ব্যক্তি, মালিকের নিকট এইরূপ দায়ী ব্যক্তি বা এইরূপ মনোনীত ব্যক্তি, ক্ষেত্রবিশেষে, এই রকম পরিশোধের জন্য দায়ী থাকিবেন ।

 

ধারা-৪। মজুরী মেয়াদ নির্ধারণ (Fixation of Wage-periods) :

(১) মজুরী পরিশোধের জন্য ৩ ধারায় দায়ী ব্যক্তি যেই মেয়াদের জন্য মজুরী পরিশোধযোগ্য, তাহার সময়সীমা (অত্র আইনের মজুরী মেয়াদ বলিয়া উল্লিখিত) নির্ধারণ করিবেন।

(২) কোনো মজুরীর মেয়াদ এক মাসের অতিরিক্ত হইবে না।

ধারা-৫। মজুরী পরিশোধের সময় (Time of payment of wages) :

উপধারা- (১) নিম্নোক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির মজুরী পরিশোধ করিতে হইবে -

(ক) এক হাজারের কম লোক নিয়োগ রহিয়াছে, এমন কোনো কারখানা বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে যেই মজুরী মেয়াদের জন্য      মজুরী প্রাপ্য, তাহার শেষ দিনের পর সাতদিন অতিক্রান্ত হইবার পূর্বে।

(খ) [রেলওয়ে বা অন্যান্য কারখানায়] বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে যেই মেয়াদের জন্য মজুরী প্রাপ্য, তাহার শেষ দিনের পর দশদিন অতিক্রান্ত হইবার পূর্বে।

উপধারা- (২) কোনো মালিক কর্তৃক বা তাহার পক্ষ হইতে কোনো ব্যক্তির চাকুরি অবসান করা হইলে, উক্ত ব্যক্তি কর্তৃক অর্জিত মজুরী যেইদিন চাকুরির অবসান করা হইয়াছে, তাহার পরবর্তী দ্বিতীয় দিন অতিক্রান্ত হইবার পূর্বে পরিশোধ করিতে হইবে।

উপধারা- (৩) যেই কোনো [রেলওয়ে]   (কারখানা ব্যতীত) নিযুক্ত ব্যক্তি বা কোনো শ্রেণীর ব্যক্তিদের মজুরী পরিশোধের বেলায় মজুরী পরিশোধের জন্য দায়ী ব্যক্তিকে [সরকার] বিশেষ বা সাধারণ আদেশ জারির মাধ্যমে অত্র ধারার আওতা হইতে রেহাই দিতে পারিবেন।

উপধারা- (৪)  সকল প্রকার মজুরী কার্য দিবসে পরিশোধ করিতে হইবে।
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:34:51 AM
ধারা-৬। প্রচলিত মুদ্রা বা কারেন্সী নোট দ্বারা মজুরী পরিশোধ করিতে হইবে (Wages to be paid in current coin or currency notes) :

সকল প্রকার মজুরী প্রচলিত মুদ্রা বা কারেন্ন্সী নোট বা [ব্যাংক চেক] দ্বারা পরিশোধ করিতে হইবে।

ধারা-৭। মজুরী হইতে যা কর্তন করা যাইবে (Deductions which may be made from wages) :

উপধারা- (১) ১৮ঌ০ সালের রেলওয়ে আইন (১৮ঌ০ সালের ঌ নং আইন)-এর ৪৭ ধারার (২) উপধারার বিধান সত্ত্বেও অত্র আইন দ্বারা বা অত্র আইনের অধীনে অনুমোদিত না হইলে সকল নিযুক্ত ব্যক্তিকে কোনো প্রকার কর্তন ছাড়াই মজুরী পরিশোধ করিতে হইবে।

ব্যাখ্যা : চাকুরিরত ব্যক্তি কর্তৃক মালিক বা মালিকের প্রতিনিধিকে কোনো কিছু পরিশোধ করা হইলে, অত্র আইনের উদ্দেশ্যে, তাহা তাহার মজুরী হইতে কর্তন বলিয়া ধরা হইবে।

উপধারা- (২) কেবলমাত্র অত্র আইনের বিধান অনুসারেই চাকুরিতে নিযুক্ত কোনো ব্যক্তির মজুরী হইতে কর্তন করা যাইবে। কর্তন নিম্নোক্ত প্রকারের হইতে পারিবে :

(ক) জরিমানা;

(খ) কর্তব্যে অনুপস্থিতির জন্য কর্তন;

(গ) নিযুক্ত ব্যক্তির বিশেষ তত্ত্বাবধানে অধীনস্থ মালামালের ক্ষতি সাধনের জন্য বা তাহার জবাবদিহি করিতে হয়, এমন অর্থের ক্ষতি হওয়া, খোয়া যাওয়া- যেখানে উক্ত ব্যক্তির গাফিলতি বা ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য উক্ত ক্ষিত বা খোয়া যাওয়ার ঘটনা ঘটে।

(ঘ) মালিক কর্তৃক আবাসিক সুযোগ প্রদান বাবদ কর্তন;

(ঙ) [সরকারের] সাধারণ বা বিশেষ নির্দেশ অনুসারে মালিক কর্তৃক সরবরাহকৃত অন্য কোনো সুযোগ-সুবিধা ও সার্ভিস বাবদ কর্তন;

ব্যাখ্যা : এরূপ অনুচ্ছেদে ‘সার্ভিস’ শব্দটি চাকুরির প্রয়োজনে মালিক কর্তৃক যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল সরবরাহ অন্তর্ভুক্ত হইবে না।

 (চ) প্রদত্ত অগ্রিম উসুলের জন্য বা অতিরিক্ত মজুরী প্রদান করা হইয়া থাকিলে তাহা সমন্বয় করিবার জন্য কর্তন;

 (ছ) চাকুরিতে নিযুক্ত ব্যক্তির প্রদেয় আয়কর বাবদ কর্তন;

 (জ) আদালতের নিদের্শ বা নির্দেশ দেয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক কর্তন করিবার প্রয়োজন হইলে;

 (ঝ) ১ঌ২২ সালের আয়কর আইনের (১ঌ২২ সনের ঌ নং আইন) ৫৮-ক ধারায়] বর্ণিত অপর কোনো অনুমোদিত প্রভিডেন্ট ফান্ড বা অনুমোদন বলবত থাকাকালীন এতদুদ্দেশ্যে সরকার অনুমোদিত অন্য কোনো প্রভিডেন্ট ফান্ড হইতে প্রদত্ত অগ্রিম উসুলের জন্য বা উক্ত ফান্ডের চাঁদা আদায়ের জন্য কর্তন;

(ঞ) [সরকার] অনুমোদিত সমবায় সমিতিসমূহের বা [বাংলাদেশ ডাক বিভাগ] পরিচালিত বীমা পরিকল্পে অর্থ প্রদানের জন্য কর্তন; এবং

(ট) [সরকার] অনুমোদিত কোনো যুক্ত সঞ্চয় পরিকল্পনার উন্নয়নকল্পে [বাংলাদেশ] [সরকার] বা যুক্তরাজ্য সরকারের ঋণপত্র ক্রয়ের জন্য চাকুরিতে নিযুক্ত ব্যক্তির লিখিত অনুমতি সাপেক্ষে কর্তন।

ধারা-৮। জরিমানা (Fines) :

উপধারা- (১) [সরকার] বা নির্ধারিত কর্তপক্ষের পূর্ব অনুমোদিত এবং (২) উপধারায় প্রদত্ত নোটিশের দ্বারা মালিক কর্তৃক বিজ্ঞাপিত কোনো কাজ বা ক্রটি-বিচ্যুতিসমূহ ব্যতীত অন্য কোনো কারণে নিযুক্ত ব্যক্তির জরিমানা আরোপ করা যাইবে না।

উপধারা- (২) অনুরূপ কাজ বা ক্রটি-বিচ্যুতিসমূহ নির্দিষ্ট করিয়া তাহা নোটিশ আকারে চাকুরিতে নিযুক্ত ব্যক্তির কর্মস্থলের আঙ্গিনায়  বা [রেলওয়েতে] কর্মরত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে (কারখানা ব্যতীত) নির্ধারিত স্থানে বা স্থানসমূহে প্রকাশ্যে বিজ্ঞাপিত করিতে হইবে।

উপধারা- (৩) জরিমানার বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর সুযোগ না দিয়া বা জরিমানা আরোপের জন্য নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ না করিয়া চাকুরিতে নিযুক্ত কোনো ব্যক্তির উপর জরিমানা আরোপ করা যাইবে না।

উপধারা- (৪) একটি মজুরী মেয়াদে কোনো নিযুক্ত ব্যক্তির উপর আরোপিত জরিমানার মোট পরিমাণ উক্ত মজুরী মেয়াদে নিযুক্ত ব্যক্তিকে প্রদেয় মজুরীর টাকা প্রতি [দশ] পয়সার অতিরিক্ত হইতে পারিবে না।

উপধারা- (৫) চাকুরিতে নিযুক্ত পনেরো বছরের কম বয়স্ক কোনো ব্যক্তির উপর জরিমানা করা যাইবে না।

উপধারা- (৬) কোনো নিযুক্ত ব্যক্তির নিকট হইতে কিস্তিতে বা জরিমানা আরোপের দিন হইতে ষাটদিন অতিক্রান্ত হইবার পর জরিমানা আদায় করা যাইবে না।

উপধারা- (৭) যেই কাজ বা ক্রটি-বিচ্যুতির জন্য জরিমানা আরোপ করা হয়েছে, উক্ত কাজ বা ক্রটি সংঘটনের দিনই জরিমানা আরোপ করা হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

উপধারা- (৮) ২ ধারায় মজুরী পরিশোধের জন্য দায়ী ব্যক্তি সকল জরিমানা এবং জরিমানা আদায়ের রেকর্ড নির্ধারিত ফরমে রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করিবেন এবং এই প্রকার সমস্ত আদায় নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত পন্থায় কারখানা বা প্রতিষ্ঠানের চাকুরিতে নিযুক্ত ব্যক্তিদের কল্যাণমূলক উদ্দেশ্যে প্রয়োগ করা হইবে।

ধারা-৯। কর্তব্যে অনুপস্থিতির জন্য কর্তন (Deductions for absence from duty) :

উপধারা- (১) চাকরির শর্ত অনুযায়ী যেইখানে কাজ করিবার কথা, চাকুরিতে নিযুক্ত ব্যক্তি সেই স্থান বা স্থানসমূহে অনুপস্থিত থাকিলে অনুরূপ অনুপস্থিতি কাজ করিবার সময়কালের পূর্ণ বা আংশিক সময়ের জন্য হইলেও ৭ ধারার (২) উপধারার (খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী উক্ত অনুপস্থিতির জন্য কর্তন করা যাইতে পারে।

উপধারা- (২) অনুরূপ কর্তনের পরিমান কোনো অবস্থাতেই নিযুক্ত ব্যক্তি যেই সময়ের জন্য কাজে অনুপস্থিত ছিলেন, চাকুরির শর্ত অনুযায়ী তাহার যতক্ষণ কাজ করিবার কথা ছিল, মোট মজুরী মেয়াদের সঙ্গে তাহার অধিক অনুপাতে করা যাইবে না।

তবে শর্ত থাকে যে, দশ বা ততোধিক চাকুরিরত ব্যক্তি প্রয়োজনীয় নোটিশ (চাকুরির শর্ত মোতাবেক প্রয়োজনীয় নোটিশ) ব্যতীত এবং যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতীত একযোগে সংঘবদ্ধভাবে কাজে অনুপস্থিত থাকিলে [সরকার] কর্তৃক এই উদ্দেশ্যে প্রণীত বিধিমালা সাপেক্ষে, অনুরূপ শর্ত মোতাবেক বা অনুরূপ নোটিশের পরিবর্তে অনধিক আটদিনের মজুরী কাটিয়া নেয়া যাইতে পারে।
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:35:17 AM
ধারা-১০। ক্ষয়ক্ষতির জন্য দন্ড (Deductions for damage or loss) :

উপধারা- (১) ৭ ধারার (২) উপধারার (গ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো কর্তনের ক্ষেত্রে তাহা চাকুরিতে নিযুক্ত ব্যক্তির অবহেলা বা ক্রটির দরুন মালিক ক্ষতির পরিমাণের তুলনায় বেশী হইতে পারিবে না বা উক্ত নিযুক্ত ব্যক্তিকে অনুরূপ কর্তনের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর সুযোগ না দিয়া বা অনুরূপ কর্তনের জন্য নির্ধারিত  পদ্ধতি ভিন্ন অন্যভাবে করা যাবে না।

উপধারা- (২) অনুরূপ সমস্ত কর্তন এবং আদায়ের হিসাব ৩ ধারায় মজুরী প্রদানের জন্য দায়ী ব্যক্তি কর্তৃক নির্ধারিত ফরমে রেজিস্টারে রেকর্ডভুক্ত করিতে হইবে।

ধারা-১১। প্রদত্ত সার্ভিসের জন্য কর্তন (Deductions for services rendered) :

চাকরিতে নিযুক্ত ব্যক্তি যতক্ষণ তাহার চাকুরির শর্ত অনুযায়ী বা অন্যভাবে আবাসিক সুবিধা বা সুযোগ বা সার্ভিস গ্রহণ না করিয়া থাকেন, ততক্ষণ তাহা মজুরী হইতে ৭ ধারার (২) উপধারার (ঘ) ও (ঙ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো প্রকার কর্তন করা যাইবে না এবং অনুরূপ কর্তন তাহাকে প্রদত্ত আবাসিক সুবিধা বা অন্য সুযোগ বা সার্ভিসের মূল্যের তুলনায় বেশী হইতে পারিবে না এবং (ঙ) অনুচ্ছেদের অধীনে কর্তন বা  [সরকার] কর্তৃক আরোপিত শর্ত অনুসারে করিতে হইবে।

ধারা-১২। প্রদত্ত অগ্রিম উসুলের জন্য কর্তন (Deductions for recovery of advances) :

৭ ধারার (২) উপধারায় (চ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কর্তন নিম্নোক্ত শর্ত সাপেক্ষে হইতে হইবে; যথা :

(ক) চাকুরি শুরু করিবার পূর্বে অগ্রিম বাবদ প্রদত্ত অর্থ একটি পূর্ণ মজুরী মেয়াদের জন্য প্রাপ্য প্রথম মজুরী পরিশোধের সময় উসুল করিয়া লইতে হইবে, কিন্তু ভ্রমণ খরচা  (traveling allowance) বাবদ প্রদত্ত অগ্রিম উসুল করা যাইবে না।

(খ) ইতিমধ্যে অর্জিত হয় নাই, এমন মজুরী বাবদ অগ্রিম উক্ত অগ্রিম  প্রদানের সীমা  এবং উসুলের জন্য কিস্তি নির্ধারণ করিয়া সরকার কর্তৃক প্রণীত বিধিমালা সাপেক্ষে উসুল করিতে হইবে।

ধারা-১৩। সমবায় সমিতি বা বীমা পরিকল্পনায় প্রদান বাবদ কর্তন (Deductions for payments to co-operative societies and insurance schemes) :

৭ ধারার (২) উপধারার (ঞ) এবং [(ট) অনুচ্ছেদ] অনুযায়ী কর্তন [সরকার] কর্তৃক আরোপিত হইতে পারে, এমন শর্ত সাপেক্ষে করিতে হইবে।

ধারা-১৪। পরিদর্শকবৃন্দ (Inspectors) :

উপধারা- (১) [১ঌ৬৫ সালের কারখানা আইনের ঌ ধারার (২) উপধারায়] নিযুক্ত কারখানা পরিদর্শক অত্র আইনের উদ্দেশ্য তাহার নির্ধারিত স্থানীয় এলাকার সকল কারখানাসমূহের জন্য পরিদর্শক।

উপধারা- (২) রেলওয়েতে (কারখানা ব্যতীত) নিযুক্ত সকল নিযুক্ত ব্যক্তিদের  (যাহাদের উপর এই আইন প্রযোজ্য) জন্য এই আইনের উদ্দেশ্যে সরকার পরিদর্শক নিযুক্ত করতে পারিবেন।

উপধারা- (৩) অত্র আইনের উদ্দেশ্যে [সরকার] [সরকারী গেজেটে) প্রজ্ঞাপন মারফত নিজ বিবেচনায় উপযুক্ত অন্যান্য ব্যক্তিদেরও পরিদর্শক নিযুক্ত করতে পারিবেন এবং তাঁহাদের স্থানীয় এলাকা এবং কোন শ্রেণীর কারখানা এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানে তাঁহারা তাঁহাদের ক্ষমতা প্রয়োগ করিবেন, তাহা নির্ধারিত করিয়া দিতে পারিবেন।

উপধারা- (৪) কোনো পরিদর্শক তাহার বিবেচনানুসারে অত্র আইনের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য যেই কোনো যুক্তিসঙ্গত সময়ে যেই কোনো ভবনে প্রবেশ করিতে এবং মজুরীর রেজিস্টার বা দলিলপত্র পরীক্ষা করিতে এবং সরেজমিনে বা অন্যভাবে যেই কোনো ব্যক্তির সাক্ষ্য লইতে এবং পরিদর্শকের অন্যান্য ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবেন।

উপধারা- (৫) সকল পরিদর্শক [দন্ডবিধির] (১৮৬০ সালের ৪৫নং আইন) মর্মানুযায়ী সরকারী কর্মচারী বলিয়া গণ্য  হইবেন।
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:35:44 AM
ধারা-১৫। মজুরী হইতে কর্তন বা মজুরী পরিশোধ বিলম্বজনিত দাবী এবং বিদ্বেষপূর্ণ ও বিরক্তিকর দাবির জন্য দন্ড ( Claims out of deductions from wages or delay in payment of wages and penalty for malicious or vexations claims) :

উপধারা- (১) কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় নিযুক্ত ব্যক্তির মজুরী পরিশোধের ক্ষেত্রে উক্ত মজুরী হইতে কর্তন বা মজুরী পরিশোধের বিলম্বজনিত সকল দাবির শুনানি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য [সরকার] [সরকারী গেজেটে] প্রজ্ঞাপন প্রকাশের মাধ্যমে যেই কোনো [শ্রম আদালতের চেয়ারম্যান বা কোনো জেলা জজকে] উক্ত এলাকার কর্তৃপক্ষ নিয়োগ করতে পারিবেন।

উপধারা- (২) অত্র আইনের বিধানের বরখেলাপ করিয়া কোনো নিযুক্ত ব্যক্তির মজুরী পরিশোধে বিলম্ব করা হইলে সংশ্লিষ্ট নিযুক্ত ব্যক্তি নিজে বা কোনো আইনজীবীর মারফত বা লিখিত দায়িত্ব প্রদানপূর্বক কোনো ট্রেড ইউনিয়ন কর্মকর্তার মাধ্যমে বা অত্র আইনের অধীনে নিযুক্ত কোনো পরিদর্শক অথবা (১) উপধারায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে অন্য কোনো ব্যক্তি উপধারা- (৩) উপধারায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করিতে পারিবেন।

তবে শর্ত থাকে যে, মজুরী হইতে অনুরূপ কর্তনের তারিখ হইতে বা মজুরী যেই দিন পরিশোধযোগ্য হইয়াছে, সেই তারিখ হইতে ৬ মাসের মধ্যে আবেদন পেশ করিতে হইবে।

আরও শর্ত হচ্ছে, উল্লিখিত সময়সীমার মধ্যে আবেদন না করিবার পিছনে যুক্তিসঙ্গত কারণ ছিল বলিয়া আবেদনকারী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সন্তষ্ট করিতে পারিলে উল্লিখিত সময়সীমার পরেও পেশকৃত আবেদন গ্রাহ্য করা যাইতে পারে।

উপধারা-(৩) উপধারা (২)-এর অধীনে পেশকৃত আবেদন বিবেচনার জন্য গৃহীত হইলে কর্তৃপক্ষ আবেদনকারী ও মালিকের বা (৩) উপধারার অধীনে মজুরী পরিশোধের জন্য দায়ী ব্যক্তির বক্তব্য শুনিবেন অথবা বক্তব্য শোনার সুযোগ দেবেন এবং প্রয়োজন হইলে অন্যান্য তদন্তানুষ্ঠানের পর অত্র আইনের অধীনে সংশ্লিষ্ট মালিক বা অন্য কোনো দায়ী ব্যক্তি কোনো দন্ড পাইয়া থাকিলে তাহার অন্যথা ব্যতীতই কর্তিত মজুরী সংশ্লিষ্ট নিযুক্ত ব্যক্তিকে প্রত্যর্পণের জন্য বা বিলম্বিত মজুরী সংশ্লিষ্ট নিযুক্ত ব্যক্তিকে প্রত্যর্পণের জন্য বা বিলম্বিত মজুরী সংশ্লিষ্ট নিযুক্ত ব্যক্তিকে প্রত্যপর্ণের জন্য পরিশোধের জন্য কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় সঠিক সাব্যস্ত হইলে অন্য কোনো ক্ষতিপূরণসহ প্রদানের জন্য নির্দেশ দিতে পারিবেন, তবে অন্য কোনো ক্ষতিপূরণের [পরিমাণ নিযুক্ত ব্যক্তির মজুরীর পঁচিশ শতাংশের বেশী হইবে না]।

তবে শর্ত থাকে যে, কর্তৃপক্ষ যদি নিশ্চিত হন যে, নিম্নোক্ত কারণে মজুরী পরিশোধে বিলম্ব ঘটিয়াছে, তাহা হইলে উক্ত বিলম্বের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দেবেন না :

(ক) নিযুক্ত ব্যক্তির পরিশোধযোগ্য মজুরীর ব্যাপারে প্রকৃত ভুল-ভ্রান্তি বা প্রকৃত কোনো বিরোধ থাকিলে; অথবা

(খ) এমন কোনো জরুরী পরিস্থিতি বা অস্বাভাবিক অবস্থার সৃষ্টি হইয়াছে, যাহার ফলে যুক্তিসঙ্গতভাবে চেষ্টা করা সত্ত্বেও দায়ী ব্যক্তি যথাসময়ে মজুরী পরিশোধ করিতে পারেন নাই; অথবা

(গ) মজুরী গ্রহণের জন্য উপস্থিতি হইতে বা মজুরী গ্রহণ করিতে সংশ্লিষ্ট নিযুক্ত ব্যক্তির ব্যর্থতা।

উপধারা- (৪) অত্র ধারার অধীনে আবেদন বিবেচনার জন্য নিযুক্ত কর্তৃপক্ষ যদি নিশ্চিত হন যে, আবেদনকারী দুরভিসন্ধিমূলক বা বানোয়াট বক্তব্য পেশ করিয়াছেন, তাহা হইলে কর্তৃপক্ষ আবেদনকারীকে অনধিক পঞ্চাশ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করিয়া উক্ত টাকা মালিককে বা মজুরী পরিশোধের জন্য দায়ী ব্যক্তিকে প্রদানের নির্দেশ দিতে পারিবেন।

উপধারা-(৫) অনুরূপ মজুরী পাওয়ার অধিকারী ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদনপত্র দাখিল করিলে অত্র ধারার অধীনে পরিশোধের জন্য নির্দেশিত যেই কোনো পরিমাণ অর্থ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত তারিখের মধ্যে সরকারী পাওনা হিসেবে উসুল করা যাইতে পারে]।

ধারা-১৬। একই শ্রেণীর অনাদায়ী ব্যক্তিদের দাবির ব্যপারে একক দরখাস্ত (Single application in respect of claims from an unpaid group) :

উপধারা-(১) একই প্রতিষ্ঠানের নিযুক্ত ব্যক্তিগণ, যাহাদের একই মজুরী মেয়াদের জন্য প্রাপ্য মজুরী ৫ ধারায় নির্ধারিত সময়ের পর অনাদায়ী রহিয়াছে, তাহাদের একই অনাদায়ী শ্রেণীভুক্ত বলিয়া গণ্য হয়।

উপধারা-(২) একই আনাদায়ী শ্রেণীভুক্ত শ্রমিকদের পক্ষে বা একই অনাদায়ী শ্রেণীভুক্ত চাকুরিরত যেই কোনো সংখ্যক ব্যক্তির ব্যাপারে ১৫ ধারায় একটি দরখাস্ত পেশ করা যাইবে এবং অনুরূপ ক্ষেত্রে ১৫ ধারার (৩) উপধারায় মাথাপিছু সর্বাধিক [একশত টাকা] পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ মঞ্জুর করা যাইবে।

উপধারা-(৩) একই অনাদায়ী শ্রেণীভুক্ত চাকুরিরত ব্যক্তিদের পক্ষে ১৫ ধারায় পৃথক পৃথকভাবে পেশকৃত মুলতবী দরখাস্তসহ কর্তৃপক্ষের অত্র ধারার (২) উপধারার অধীনে একক দরখাস্ত হিসাবে বিবেচনা করিতে পারিবেন এবং তদানুসারে উক্ত উপধারার বিধানসমূহ এক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে।

ধারা-১৭। আপিল (Appeal) :

উপধারা- (১) ১৫ ধারার (৩) উপধারায় প্রদত্ত নির্দেশের বিরুদ্ধে উক্ত নির্দেশ দেয়ার ত্রিশদিনের মধ্যে [শ্রম আপীল ট্রাইব্যুনালে] আপীল করা যাইতে পারে :

(ক) মালিক বা ৩ ধারায় মজুরী প্রদানের জন্য দায়ী ব্যক্তি কর্তৃক যদি মোট দেয় টাকা মজুরী হিসাবে প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয় এবং ক্ষতিপূরণের পরিমাণ তিনশত টাকার বেশী হয়; অথবা

(খ) নিযুক্ত শ্রমিক কর্তৃক যদি তাহার বা অনাদায়ী শ্রেণীভুক্ত ব্যক্তিদের অনাদায়ী মজুরীর পরিমাণ পঞ্চাশ টাকার বেশী হয়; অথবা

(গ) ১৫ ধারার (৪) উপধারায় জরিমানা প্রদানের নির্দেশ দেয়া হইলে নির্দেশপ্রাপ্ত যেই কোনো ব্যক্তি কর্তৃক।

 

উপধারা- (২) (১) উপধারার বিধান ব্যতীত অন্যান্য সকল বিষয়ে ১৫ ধারার (৩) উপধারা  অথবা [(৪) উপধারায়] প্রদত্ত যেই কোনো নির্দেশ চূড়ান্ত বলিয়া বিবেচিত হইবে।

ধারা-১৮। নিযুক্ত কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা (Powers of authorities appointed) :

১৫ ধারার (১) উপধারায় নিযুক্ত প্রত্যেক কর্তৃপক্ষ সাক্ষ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে এবং সাক্ষীদের হাজির করিবার ব্যাপারে এবং দলিলপত্র উপস্থাপনে বাধ্য করিবার ব্যাপারে দেওয়ানী কার্যবিধির (১ঌ০৮ সালের ৫ নং আইন) অধীনে দেওয়ানী আদালতে সমস্ত ক্ষমতার অধিকারী হইবেন এবং অনুরূপ কর্তৃপক্ষ সমস্ত ব্যাপারে ১ঌ৫ ধারা অনুসারে দেওয়ানী আদালত এবং ফৌজদারী কার্যবিধি (১৮ঌ৮ সালের ৫ নং আইন)-এর ৩৫তম অনুসারে আদালত বলিয়া গণ্য হইবেন।

ধারা-১ঌ। কতিপয় ক্ষেত্রে মালিকের নিকট হইতে আদায় করিবার ক্ষমতা (Power to recover from employer in certain cases) :

কখনও ১৫ ধারায় উল্লিখিত কর্তৃপক্ষ বা ১৭ ধারায় উল্লিখিত আদালত ৩ ধারার অধীনে মজুরী পরিশোধের জন্য দায়ী কোনো ব্যক্তির (মালিক ব্যতীত) নিকট হইতে ১৫ বা ১৭ ধারায় নির্দেশিত কোনো অর্থ আদায় করিতে ব্যর্থ হইলে সংশ্লিষ্ট দায়ী নিযুক্ত ব্যক্তির মালিকের নিকট হইতে কর্তৃপক্ষ আদায় করিবেন।

ধারা-২০। অত্র আইনে অপরাধের দন্ড (Penalty for offences under the Act) :

উপধারা- (১) নিযুক্ত ব্যক্তিদের মজুরী পরিশোধের জন্য দায়ী  যেই কোনো নিম্নবর্ণিত ধারাসমূহ, যথা ৫ ধারা এবং ৭ হইতে ১৩ ধারার যেই কোনো বিধান লংঘন করিলে (উভয় ধারাসহ) অনধিক পাঁচশত টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা [অনধিক ছয় মাস পর্যন্ত কারাদন্ড অথবা উভয় দন্ডে] দন্ডনীয় হইবেন।

উপধারা- (২) কোনো ব্যক্তি ৪ ধারা, ৬ ধারা অথবা ২৫ ধারা লঙ্ঘন  করিলে অনধিক দুইশত টাকা পর্যন্ত জরিমানায় দন্ডনীয় হইবেন।
Title: Re: নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন
Post by: bbasujon on January 23, 2012, 06:36:17 AM
ধারা-২১। অপরাধের বিচার পদ্ধতি (Procedure in trial of offences) :

[উপধারা- (১) ১৫ ধারার (১) উপধারার অধীনে নিযুক্ত কর্তৃপক্ষ ব্যতীত অন্য কোনো আদালত অত্র আইনে দন্ডনীয় কোনো অপরাধের জন্য কোনো ব্যক্তির বিচার করিবেন না]।

উপধারা- (২) ১৫ ধারায় ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ বা শ্রম আপীল ট্রাইব্যুনাল, যেইখানে প্রযোজ্য :

(ক) কোনো পক্ষ নিম্নোক্ত মর্মে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করিলে :

(i)  আইনের ব্যত্যয় ঘটার পিছনে কোনো যুক্তিসঙ্গত ভ্রান্তি বিদ্যমান ছিল বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পাওনা টাকার পরিমাণ নির্ধারণের ব্যাপারে কোনো যুক্তিগ্রাহ্য বিরোধ ছিল; অথবা

(ii)  মজুরী পরিশোধের জন্য দায়ী ব্যক্তি আপ্রাণ চেষ্টা করা সত্ত্বেও বিশেষ কোনো জরুরী পরিস্থিতি উদ্ভব হওয়ার কারণে তাত্‍ক্ষণিকভাবে মজুরী পরিশোধ করিতে ব্যর্থ হইয়াছেন; অথবা

(iii) সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মজুরীর জন্য আবেদন পেশ করিতে বা মজুরী গ্রহণে ব্যর্থ হইয়াছিলেন- তবে ২০ ধারার (১) উপধারার অধীনে দন্ডযোগ্য অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিচার শুরু করিবার পূর্বে সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে উক্ত ব্যত্যয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবেন।

(খ) অনুরূপ অপরাধ সংঘটনের জন্য অত্র আইনে দায়েরকৃত ঘটনার অভিযোগের প্রেক্ষিতে (ক) অনুচ্ছেদের বিধান সাপেক্ষে অপরাধটি আমলে আনিবেন।

উপধারা- (৩) পরিদর্শক কর্তৃক বা পরিদর্শকের অনুমোদনসহ অভিযোগ দায়ের করা না হইলে কোনো আদালত ৪ বা ৬ ধারা লঙ্ঘন বা ২৬ ধারায় আনীত বিধিমালা লঙ্ঘন সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ আমলে নিবেন না।

[শর্ত থাকে যে, কারখানাসমূহের প্রধান পরিদর্শকের পূর্ব অনুমোদন ব্যতীত আদালতে বিচারাধীন কোনো মামলা প্রত্যাহার করা যাইবে না।]

উপধারা- (৪) ২০ ধারার (১) উপধারায় অপরাধের ক্ষেত্রে জরিমানা আরোপ করিবার সময় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ১৫ ধারার কোনো কার্যক্রমে ইতিমধ্যে আরোপিত জরিমানার বিষয়টি বিবেচনা করিবেন।

ধারা-২২।  মামলা করার বিধি-নিষেধ (Bar of suits) :

উপধারা- (১) কোনো আদালত নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে মজুরী আদায় বা কর্তিত মজুরী আদায় সংক্রান্ত মামলা বিবেচনা করিবেন না। যদি দাবীকৃত অর্থ -

(ক) ১৫ ধারার অধীনে দায়েরকৃত আবেদনের বিষয়বস্তু হইয়া থাকে, বাদী কর্তৃক ইতিমধ্যে দাখিল করা হইয়াছে এবং যদি তাহা উক্ত ধারায় নিযুক্ত কর্তৃপক্ষের নিকট বা ১৭ ধারায় আপীল বিচারাধীন থাকিয়া থাকে; অথবা

(খ) ১৫ ধারায় প্রদত্ত কোনো নির্দেশের বিষয়বস্তু হইয়া থাকে, যদিও তা বাদীর প্রাপ্য নয়; অথবা

(গ) ১৫ ধারার কার্যক্রমে বাদীর প্রাপ্য নয় বলিয়া স্থিরীকৃত হইয়া থাকিলে; অথবা

(ঘ) যদি ৫ ধারার অধীনে দরখাস্তমূলে তাহা আদায় করা যাইত।

ধারা-২৩। চুক্তি নাকচ (Contracting out)

অত্র আইন বলবত হইবার পূর্বে বা পরে সম্পাদিত কোনো চুক্তি দ্বারা কোনো নিযুক্ত ব্যক্তি অত্র অাইনে তাহাকে চুক্তি প্রদত্ত কোনো অধিকার পরিত্যাগ করিয়া থাকেন, তবে ইহার ফলে তিনি যতটুকু হইতে বঞ্চিত হইয়াছেন, তাহা বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে।

 ধারা-২৪।  [বাতিল]

ধারা-২৫। অাইনের সার-সংক্ষেপ প্রদর্শন (Display by notice of abstracts of the Act) :

কোনো কারখানায় নিযুক্ত ব্যক্তিদের মজুরী পরিশোধের জন্য দায়ী ব্যক্তি অত্র আইনের এবং এর অধিনে প্রণীত বিধিমালার সার-সংক্ষেপ সম্বলিত নোটিশ বাংলা ভাষায় অনুরূপ কারখানায় টাঙ্গাইয়া রাখার ব্যবস্থা করিবেন।

ধারা-২৬। বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা (Rule-making power) :

উপধারা- (১) ১৫ ও ১৭ ধারায় উল্লিখিত কর্তৃপক্ষ এবং অাদালত কর্তৃক অনুসৃত পদ্ধতি নিয়ন্ত্রণের জন্য [সরকার] বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবেন।

উপধারা- (২) [সরকারী গেজেটে] প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অত্র আইনের বিধানসমূহ কার্যকরকরণের জন্য [সরকার] বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবেন।

উপধারা- (৩) পূর্বোক্ত ক্ষমতাসমূহের সাধারণত ব্যাহত না করিয়া এবং বিশেষত (২) উপধারা মোতাবেক বিধিসমূহ দ্বারা-

(ক) অত্র আইন প্রয়োগের রেকর্ডপত্র, রেজিস্টার, রিটার্ন এবং নোটিশ সংরক্ষণের নির্দেশ দিতে এবং এর প্রকার নির্ধারণ করা যাইতে পারে;

(খ) চাকরিস্থলে বা আঙ্গিনায় প্রকাশ্য স্থানে উক্ত নিযুক্ত ব্যক্তিদের মজুরী হার নির্দেশিত করিয়া নোটিশ প্রদর্শনের নির্দেশ দেয়া যাইতে পারে;

(গ) নিযুক্ত ব্যক্তিদের মজুরী নির্ণয়ের জন্য মালিক কর্তৃক ব্যবহৃত ওজন, পরিমাপ বা পরিমাপ যন্ত্রসমূহ নিয়মিত পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা যাইতে পারে;

(ঘ) কোন কোন দিনে মজুরী পরিশোধ করা হইবে, তাহা জানাইবার জন্য নোটিশ দেয়ার প্রকার নির্ধারণ করা যাইতে পারে;

(ঙ) ৮ ধারার (১) উপধারার অধীনে কোনো কাজ করা বা না করার দরুন জরিমানা আরোপ করা যাইতে পারে এবং তাহা অনুমোদনের জন্য উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারণ করা যাইতে পারে।

(চ) ৮ ধারায় জরিমানা আরোপ এবং ১০ ধারায় উল্লিখিত কর্তনের পদ্ধতি নির্ধারণ করিয়া দেয়া যাইতে পারে;

(ছ) ঌ ধারার (২) উপধারার শর্ত মোতাবেক যেই যেই অবস্থায় কর্তন করা যাইবে, তাহা নির্ধারণ করিয়া দেয়া যাইতে পারে;

(জ) যেই যেই উদ্দেশ্যে আদায়কৃত জরিমানা ব্যয় করা হইবে, তাহা অনুমোদন করিবার জন্য উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারণ করিয়া দেয়া যাইতে পারে;

(ঝ) ১২ ধারার (খ) অনুচ্ছেদে উল্লিখিত অগ্রিম প্রদানের সীমা এবং তাহা আদায়ের জন্য কিস্তির সীমা নির্ধারণ করিয়া দেয়া যাইতে পারে;

(ঞ) অত্র আইনের অধীনে কোনো কার্যক্রমের জন্য খরচার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা যাইতে পারে;

(ট) অত্র আইনের অধীনে কোনো কার্যক্রমের জন্য প্রদেয় কোর্ট ফির পরিমাণ নির্ধারণ করিয়া দেয়া যাইতে পারে এবং

(ঠ) ২৫ ধারায় প্রদেয় নোটিশে প্রদর্শনযোগ্য সারাংশ নির্ধারণ করিয়া দেয়া যাইতে পারে।

উপধারা- (৪) অত্র ধারায় কোনো বিধি প্রণয়নের সময় [সরকার] এইরূপ বিধান রাখিতে পারিবেন যে, এইরূপ বিধিমালার লঙ্ঘন দুইশত টাকা জরিমানায় দন্ডযোগ্য হইবে।

উপধারা- (৫) এই ধারায় প্রণীত সকল বিধিসমূহ পূর্ব প্রকাশের শর্ত  সাপ

তথ্যসূত্র : শ্রম ও শিল্প অাইন